কৃষি বনসৃজন বলতে কী বোঝো?: কৃষকের নিজের অধিকারভুক্ত কৃষি জমিতে বা কৃষি জমির পার্শ্ববর্তী পতিত জমিতে কৃষিজ ফসল উৎপাদনের পাশাপাশি জ্বালানি কাঠ, সবুজ সার, ফলমূল, ঔষধ ইত্যাদি আহরণের জন্য যে বনসৃজন করা হয়; তাকে কৃষি বনসৃজন বলে
নির্ধারিত স্থান: প্রধাণত কৃষি জমির আল বরাবর কৃষি বনসৃজন করা হয়। এছাড়া চা বাগানের মধ্যে, জমির পার্শ্ববর্তী পতিত জমিতে, বাড়ির পিছনের ফাঁকা জায়গাতে কৃষি বনসৃজন করা হয়।
নির্বাচিত গাছ: নারকেল, সুপারি ,তাল, কলা, লেবু, চালতা, কালমেঘ, ভুট্টা, মেহগিনি, কদম, নিম ইত্যাদি হল কৃষি বনসৃজনের জন্য নির্বাচিত উদ্ভিদ।
কৃষি বনসৃজনের উদ্দেশ্য
১)বনভূমির পরিমাণ বৃদ্ধি করা।
২)বনজ সম্পদের উৎপাদন বৃদ্ধি করা।
৩)পরিবেশ দূষণ নিয়ন্ত্রণ করা।
৪)জীব বৈচিত্র্য রক্ষা করা।
৫)কৃষকের আয় বৃদ্ধি করা ও জীবনযাত্রার মানোন্নয়ন ঘটানো।
কৃষি বনসৃজনের সুবিধা ও অসুবিধা কী কী?
কৃষি বনসৃজনের সুবিধা
১)কৃষি বনসৃজন কর্মসূচিতে অব্যবহৃত পতিত ও সাধারণ ভাবে কৃষিকাজের অনুপযুক্ত জমিতে বনসৃজন করা হয় বলে ওই জমি উৎপাদনশীল হয় এবং জমির অর্থনৈতিক মূল্য বৃদ্ধি পায়।
২)এই বনসৃজন কর্মসূচিতে কৃষি জমির সীমানায় বিভিন্ন গাছপালা লাগানো হয় বলে কৃষক ওই জমি থেকে একসঙ্গে কৃষিজ ফসল সহ নানা রকম ফলমূল ও কাষ্ঠ সংগ্রহ করতে পারে।ফলে কৃষকের আয় বৃদ্ধি পায় এবং জীবনযাত্রার মান উন্নত হয়।
৩)কৃষি বনসৃজনের মাধ্যমে ভূমিক্ষয় রোধ করা যায়।
৪)এই বনসৃজন কর্মসূচির মাধ্যমে পশু খাদ্যের যোগান বৃদ্ধি করা যায়।
৫)এই বনসৃজন কর্মসূচির মাধ্যমে পরিবেশ দূষণ নিয়ন্ত্রণ করা যায়।
৬)এই বনসৃজন কর্মসূচির মাধ্যমে প্রাকৃতিক পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করা যায়। ফলে পরিবেশ তন্ত্র সুরক্ষিত হয়।
কৃষি বনসৃজনের অসুবিধা
১)কৃষি বনসৃজন কর্মসূচিতে বনভূমি গড়ে তোলার জন্য অনেক সময় লাগে। ফলে কৃষকের তাৎক্ষণিক লাভের সুযোগ কম।
২)এই বনসৃজন কর্মসূচিতে সঠিক প্রজাতির গাছ নির্বাচন না হলে জমি ছায়াঘন হয়ে পড়ে। ফলে স্বাভাবিক কৃষি কাজ ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা থাকে।
৩)অনেকের মতে কৃষি বনসৃজনে ইউক্যালিপটাস জাতীয় গাছ লাগালে মাটি রুক্ষ হয়ে পড়ে।কারণ ইউক্যালিপটাস জাতীয় গাছ মাটির রস বেশি মাত্রায় শোষণ করে নেয়।
Please do not share any spam link in the comment box