মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞান পদার্থের ভৌত ও রাসায়নিক ধর্মসমূহ প্রশ্নোত্তর PDF: প্রতিবছর বিভিন্ন সরকারি চাকরির পরীক্ষায় দশম শ্রেনীর ভৌতবিজ্ঞান পদার্থের ভৌত ও রাসায়নিক ধর্মসমূহ প্রশ্নোত্তর PDF থেকে অনেক প্রশ্ন আসে। তাই আমরা আপনাদের জন্য নিয়ে এসেছি মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞান পদার্থের ভৌত ও রাসায়নিক ধর্মসমূহ প্রশ্নোত্তর PDF.
নিচে মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞান পদার্থের ভৌত ও রাসায়নিক ধর্মসমূহ প্রশ্নোত্তর PDF টি যত্নসহকারে পড়ুন ও জ্ঞানভাণ্ডার বৃদ্ধি করুন। মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞান পদার্থের ভৌত ও রাসায়নিক ধর্মসমূহ প্রশ্নোত্তর PDF টি সম্পূর্ণ বিনামূল্যে ডাউনলোড করতে এই পোস্টটির নীচে যান এবং ডাউনলোড করুন।
মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞান পদার্থের ভৌত ও রাসায়নিক ধর্মসমূহ প্রশ্নোত্তর - দশম শ্রেনীর ভৌতবিজ্ঞান প্রশ্নোত্তর
মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞান পদার্থের ভৌত ও রাসায়নিক ধর্মসমূহ প্রশ্নোত্তর PDF
Dear Students, Gksolves.com চাকরির পরীক্ষার প্রস্তুতির সেরা ঠিকানা, আজ আমরা আপনাদের জন্য নিয়ে এসেছি মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞান পদার্থের ভৌত ও রাসায়নিক ধর্মসমূহ প্রশ্নোত্তর PDF. প্রতিবছর বিভিন্ন সরকারি চাকরির যেমন Railway Group D | PSC Clerkship | WBCS | SSC CHSL | SSC CGL | SSC MTS | WBP Abgari Constable | WBP SI | WBP Constable | ICDS Supervisor | Railway Group D | RRB NTPC | PSC Miscellaneous | TET | Upper Primary | Group D ইত্যাদি পরীক্ষার মাধ্যমে নিয়োগ হয়ে থাকে। এই সমস্ত চাকরির পরীক্ষা ছাড়াও মাধ্যমিক, উচ্চমাধ্যমিক সম্বন্ধে আপনার সাধারণ ধারণা থাকা দরকার, তাই আমরা আপনাদের জন্য নিয়ে এসেছি মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞান পদার্থের ভৌত ও রাসায়নিক ধর্মসমূহ প্রশ্নোত্তর PDF যা আপনাদের পরীক্ষার প্রশ্নপত্র সম্পর্কে ধারণা গঠন করতে বিশেষ সাহায্য করবে।
Google News এ আমাদের ফলো করুন
মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞান পদার্থের ভৌত ও রাসায়নিক ধর্মসমূহ প্রশ্নোত্তর - দশম শ্রেনীর ভৌতবিজ্ঞান প্রশ্নোত্তর
পদার্থের ভৌত ও রাসায়নিক ধর্মসমূহ
1. এখন পর্যন্ত আবিষ্কৃত মৌলের সংখ্যা কত?
উঃ বর্তমানে (2019 খ্রিস্টাব্দ) প্রাকৃতিক ও মনুষ্যসৃষ্ট স্বীকৃত মৌলের সংখ্যা 118টি।
এর মধ্যে পর্যায় সারণির প্রথম 94টি মৌল প্রকৃতিতে পাওয়া যায়। পারমাণবিক ক্রমাঙ্ক 95-118 পর্যন্ত মৌলগুলি মানুষ শুধুমাত্র পরীক্ষাগারে (Laboratory) তৈরি করেছে।
2. পর্যায় সারণির আবিষ্কারক কে?
উঃ রাশিয়ান বিজ্ঞানী দিমিত্রি মেন্ডেলিভ (Dimitri Mendeleev) ।
3. মেন্ডেলিভের পর্যায় সূত্রটি লেখো।
উঃ বিভিন্ন মৌলগুলিকে বর্ধিত পারমাণবিক ভর অনুসারে সাজানো হলে তাদের ভৌত ও রাসায়নিক ধর্মগুলি পর্যায়ক্রমে পুনরাবৃত্ত হয়। অন্যভাবে বলা যায়-
মৌলসমূহের ভৌত ও রাসায়নিক ধর্মাবলি মৌলগুলির ক্রমবর্ধমান পারমাণবিক গুরুত্বের সঙ্গে পর্যায়ক্রমে পুনরাবৃত্ত হয়।
4. পর্যায় সারণি কাকে বলে?
উঃ মৌলগুলিকে বর্ধিত পারমাণবিক গুরুত্ব অনুসারে কয়েকটি পর্যায় ও শ্রেণিতে (বর্তমানে 7টি পর্যায় ও 9টি/18টি শ্রেণি) সাজালে যে সামগ্রিক বিন্যাস বা চার্ট পাওয়া যায় তাকে মৌলগুলির পর্যায় সারণি বলে।
5. পর্যায় সারণির পর্যায় কাকে বলে?
উঃ পর্যায় সারণির অনুভূমিক (Horizontal) সারিগুলিকে পর্যায় বা Period বলে।
6. পর্যায় সারণির শ্রেণি কাকে বলে?
উঃ পর্যায় সারণির উল্লম্ব (Vertical) সারিগুলিকে শ্রেণি বা Group বলে।
7. মেন্ডেলিভের পর্যায় সারণি মৌলের কোন ধর্মের ওপর ভিত্তি করে প্রস্তুত করা হয়েছে?
উঃ মৌলের পারমাণবিক ভর বা পারমাণবিক গুরুত্বের ওপর ভিত্তি করে।
8. মেন্ডেলিভের মূল পর্যায় সারণিতে শূন্য শ্রেণি ছিল না কেন?
উঃ মেন্ডেলিভের পর্যায় সারণি প্রকাশ করার সময় (1869 খ্রিস্টাব্দ) নিষ্ক্রিয় গ্যাসগুলি আবিষ্কৃত হয়নি। সেজন্য তাঁর সারণিতে শূন্য শ্রেণি (Gr-0) ছিল না।
9. পর্যায় সারণিতে মোট কয়টি পর্যায় ও কয়টি শ্রেণি আছে?
উঃ বর্তমানে প্রচলিত ক্ষুদ্র পর্যায় সারণিতে 7টি পর্যায় এবং 9টি শ্রেণি (Gr-I থেকে Gr-VIII এবং Gr-0) পাওয়া যায়। IUPAC প্রবর্তিত বর্তমান দীর্ঘ পর্যায় সারণিতে 7টি পর্যায় এবং 18টি শ্রেণি (Gr-1 থেকে Gr-18) পাওয়া যায়।
10. মেন্ডেলিভের পর্যায় সারণির ত্রুটিগুলি লেখো।
উঃ মেন্ডেলিভের পর্যায় সারণির ত্রুটিগুলি হল-
(১) কয়েকটি ক্ষেত্রে শ্রেণি সাদৃশ্য বজায় রাখার জন্য অপেক্ষাকৃত কম পারমাণবিক গুরুত্ব সম্পন্ন মৌলকে বেশি পারমাণবিক গুরুত্ব বিশিষ্ট মৌলের পরে স্থান দেওয়া হয়েছে।
যেমন-আর্গন (Ar)-এর পারমাণবিক গুরুত্ব 39.94 এবং পটাসিয়াম (K)-এর পারমাণবিক গুরুত্ব 39.1 । কিন্তু আর্গন নিষ্ক্রিয় গ্যাস এবং পটাসিয়াম সক্রিয় ক্ষারধাতু হওয়ার জন্য আর্গনকে নিষ্ক্রিয় গ্যাসের শ্রেণিতে (Gr-0) রেখে তার পরে পটাসিয়ামকে সক্রিয় ক্ষারধাতুগুলির শ্রেণিতে (Gr-1) স্থান দেওয়া হয়েছে।
11. মৌলের ধর্মের প্রকৃত নিয়ন্ত্রক কে?
উঃ মৌলের পরমাণু ক্রমাঙ্ক।
12. আধুনিক পর্যায় সূত্রটি লেখো।
উঃ মৌলসমূহের ভৌত ও রাসায়নিক ধর্মাবলি মৌলগুলির ক্রমবর্ধমান পরমাণু-ক্রমাঙ্কের সঙ্গে পর্যায়ক্রমে পুনরাবৃত্ত হয়।
13. কয়েকটি ক্ষার ধাতুর (Alkali metals) নাম লেখো। পর্যায় সারণিতে এদের অবস্থান কোথায়?
উঃ Li, Na, K, Rb, Cs প্রভৃতি। দীর্ঘ পর্যায় সারণিতে এরা Gr-1-এ অবস্থিত।
14. কয়েকটি ক্ষারীয় মৃত্তিকা ধাতুর (Alkaline earth metals) নাম লেখো। পর্যায় সারণিতে এদের অবস্থান কোথায়?
উঃ Be, Mg, Ca, Sr, Ba প্রভৃতি। দীর্ঘ পর্যায় সারণিতে এরা Gr-2-তে অবস্থিত।
15. কয়েকটি হ্যালোজেন মৌলের (Halogens) নাম লেখো। পর্যায় সারণিতে এদের অবস্থান কোথায়?
উঃ F, Cl, Br, I, At প্রভৃতি। দীর্ঘ পর্যায় সারণিতে এরা Gr-17-এ অবস্থিত।
16. কয়েকটি নিষ্ক্রিয় গ্যাসের (Inert or Noble gases) নাম লেখো। পর্যায় সারণিতে এদের অবস্থান কোথায়?
উঃ He, Ne, Ar, Kr, Xe প্রভৃতি। দীর্ঘ পর্যায় সারণিতে এরা Gr-18-এ অবস্থিত।
17. কয়েকটি সন্ধিগত মৌলের (Transitional elements) নাম লেখো। পর্যায় সারণিতে এদের অবস্থান কোথায়?
উঃ Sc, Ti, Zr, Fe, Co, Ni, Cu, প্রভৃতি। দীর্ঘ পর্যায় সারণিতে এরা Gr-3 থেকে Gr-11-এর মধ্যে অবস্থিত।
18. মেন্ডেলিভ দুষ্ট মৌল নামে কাকে অভিহিত করেন?
উঃ হাইড্রোজেনকে।
19. পদার্থের ধর্মের পর্যায়বৃত্ততা বলতে কাকে বলে?
উঃ মৌলসমূহের বিভিন্ন ভৌত ও রাসায়নিক ধর্মের পর্যায়ক্রমিক পুনরাবৃত্তিকে ধর্মের পর্যায়বৃত্ততা (periodicity of properties) বলা হয়।
20. পারমাণবিক ব্যাসার্ধ কাকে বলে? পর্যায় সারণিতে এটি কিভাবে পরিবর্তিত হয়?
উঃ পরমাণুর নিউক্লিয়াস থেকে বহিস্তম ইলেকট্রন কক্ষের সম্ভাব্য দূরত্বকে ওই পরমাণুর পারমাণবিক ব্যাসার্ধ বলা হয়।
পর্যায়ে পরিবর্তনঃ যে কোনো পর্যায়ের বামদিক থেকে ডানদিকে পারমাণবিক ব্যাসার্ধ বা পারমাণবিক আকার হ্রাস পায় কিন্তু নিষ্ক্রিয় গ্যাসের ক্ষেত্রে বৃদ্ধি পায়।
শ্রেণিতে পরিবর্তনঃ পর্যায় সারণির একই শ্রেণিতে অবস্থিত মৌলগুলির পারমাণবিক ব্যাসার্ধ উপর থেকে নীচের দিকে ক্রমশ বৃদ্ধি পায়।
21. আয়নন বিভব কাকে বলে? পর্যায় সারণিতে এটি কিভাবে পরিবর্তিত হয়?
উঃ সর্বনিম্ন শক্তিস্তরে অবস্থিত কোনো মৌলের একটি বিচ্ছিন্ন গ্যাসীয় পরমাণুর সর্ববহিস্থঃ কক্ষ থেকে একটি ইলেকট্রন অপসারণ করার জন্য যে নূন্যতম শক্তির প্রয়োজন তাকে আয়নন বিভব বা আয়নীয় শক্তি বলে।
পর্যায়ে পরিবর্তনঃ একই পর্যায়ের বামদিক থেকে ডানদিকে অগ্রসর হলে সাধারণভাবে মৌলসমূহের আয়নন শক্তির মান ক্রমাগত বৃদ্ধি পায়। তবে এর কিছু ব্যতিক্রম দেখা যায়।
শ্রেণিতে পরিবর্তনঃ একই শ্রেণিতে উপর থেকে নীচের দিকে নামলে মৌলসমূহের আয়নন বিভব ক্রমাগত হ্রাস পায়। তবে এর কিছু ব্যতিক্রম দেখা যায়।
22. তড়িৎ-ঋণাত্মকতা বলতে কী বোঝ? পর্যায় সারণিতে এটি কিভাবে পরিবর্তিত হয়?
উঃ অন্য কোনো মৌলের পরমাণুর সঙ্গে সমযোজী বন্ধনে আবদ্ধ অবস্থায়, বন্ধন সৃষ্টিকারী ইলেকট্রন-জোড়কে কোনো মৌলের পরমাণুর নিজের দিকে আকর্ষণ করার ক্ষমতা বা প্রবণতাকে মৌলটির তড়িৎ-ঋণাত্মকতা বলে।
পর্যায়ে পরিবর্তনঃ পর্যায় সারণির কোনো নির্দিষ্ট পর্যায়ে মৌলগুলির তড়িৎ-ঋণাত্মকতা বামদিক থেকে ডানদিকে ক্রমাগৎ বৃদ্ধি পায়।
শ্রেণিতে পরিবর্তনঃ পর্যায় সারণির কোনো নির্দিষ্ট শ্রেণিতে মৌলগুলির তড়িৎ-ঋণাত্মকতা উপর থেকে নীচের দিকে ক্রমাগত হ্রাস পায়।
23. জারণ কী?
উঃ কোনো মৌলের পরমাণু ইলেকট্রন বর্জন করে ক্যাটায়নে পরিণত হলে তার জারণ ঘটে বা সেটি জারিত হয়। অর্থাৎ ইলেকট্রন বর্জন করাকে জারণ বলা হয়।
24. বিজারণ কী?
উঃ কোনো মৌলের পরমাণু ইলেকট্রন গ্রহণ করে অ্যানায়নে পরিণত হলে তার বিজারণ ঘটে বা সেটি বিজারিত হয়। অর্থাৎ ইলেকট্রন গ্রহণ করাকে বিজারণ বলা হয়।
25. মৌলের জারণ ক্ষমতা পর্যায় সারণিতে কিভাবে পরিবর্তিত হয়?
উঃ পর্যায়ে পরিবর্তনঃ কোনো নির্দিষ্ট পর্যায়ে মৌলসমূহের জারণ ক্ষমতা বামদিক থেকে ডানদিকে ক্রমাগত বৃদ্ধি পায়।
শ্রেণিতে পরিবর্তনঃ কোনো নির্দিষ্ট শ্রেণিতে মৌলসমূহের জারণ ক্ষমতা উপর থেকে নীচের দিকে ক্রমাগত হ্রাস পায়।
26. মৌলের বিজারণ ক্ষমতা পর্যায় সারণিতে কিভাবে পরিবর্তিত হয়?
উঃ পর্যায়ে পরিবর্তনঃ কোনো নির্দিষ্ট পর্যায়ে মৌলসমূহের বিজারণ ক্ষমতা বামদিক থেকে ডানদিকে ক্রমাগত হ্রাস পায়।
শ্রেণিতে পরিবর্তনঃ কোনো নির্দিষ্ট শ্রেণিতে মৌলসমূহের বিজারণ ক্ষমতা উপর থেকে নীচের দিকে ক্রমাগত বৃদ্ধি পায়।
27. সবচেয়ে তীব্র ক্রিয়াশীল অধাতব মৌলটির নাম লেখো অথবা সবচেয়ে শক্তিশালী জারক পদার্থটির নাম লেখো অথবা সর্বাধিক তড়িৎ ঋণাত্মক মৌল কোনটি?
উঃ ফ্লোরিন (F2) ।
28. সবচেয়ে তীব্র ক্রিয়াশীল ধাতব মৌলটির নাম লেখো অথবা সবচেয়ে শক্তিশালী বিজারক পদার্থটির নাম লেখো অথবা সর্বাধিক তড়িৎ ধনাত্মক মৌল কোনটি?
উঃ ফ্লোরিন
29. সর্বাধিক তড়িৎ ধনাত্মক মৌল কোনটি?
উঃ সিজিয়াম (Cs) ।
30. পর্যায় সারণির সবচেয়ে সুস্থিত মৌলটির নাম লেখো অথবা কোন মৌলের আয়নন বিভব সবচেয়ে বেশি?
উঃ হিলিয়াম (He) ।
31. তড়িৎযোজ্যতা বা আয়নীয় যোজ্যতা বলতে কী বোঝ?
উঃ নিকটতম নিষ্ক্রিয় গ্যাসের সুস্থিত ইলেকট্রন বিন্যাস অর্জনের জন্য একটি পরমাণুর (তড়িৎ-ধনাত্মক) সবচেয়ে বাইরের কক্ষপথ (যোজ্যতা কক্ষ) থেকে ইলেকট্রন অন্য পরমাণুর (তড়িৎ-ঋণাত্মক) সবচেয়ে বাইরের কক্ষে স্থানান্তরের মাধ্যমে সৃষ্ট সুস্থিত আয়ন দুটির পরস্পর বিপরীত তড়িৎ আকর্ষণের সাহায্যে যৌগ গঠনের ক্ষমতাকে তড়িৎ যোজ্যতা বা আয়নীয় যোজ্যতা বলে। উৎপন্ন যৌগকে তড়িৎযোজী বা আয়নীয় যৌগ বলা হয়।
32. তড়িৎযোজী যৌগগুলির গলনাঙ্ক ও স্ফুটনাঙ্ক বেশি হয় কেন?
উঃ তড়িৎযোজী যৌগের আয়নগুলির মধ্যে আকর্ষণ বল তীব্র হওয়ার জন্য যৌগগুলি উচ্চ ঘনত্ব বিশিষ্ট কেলাস গঠন করে। এই কেলাসের আয়নগুলি দৃঢ়ভাবে আবদ্ধ। আয়নগুলিকে কেলাস থেকে মুক্ত করার জন্য অধিক তাপ শক্তি প্রয়োজন। সেজন্য তড়িৎযোজী যৌগগুলির গলনাঙ্ক ও স্ফুটনাঙ্ক খুব বেশি হয়।
33. সমযোজ্যতা বলতে কী বোঝ?
উঃ নিকটতম নিষ্ক্রিয় গ্যাসের সুস্থিত ইলেকট্রন বিন্যাস লাভের চেষ্টায় যখন দুটি পরমাণু তাদের যোজ্যতা কক্ষের অযুগ্ম ইলেকট্রনগুলির মিলনে গঠিত এক বা একাধিক ইলেকট্রন-জোড় সমভাবে ব্যবহার করে অণু গঠন করে তখন এরূপ রাসায়নিক মিলন ঘটানোর ক্ষমতাকে সমযোজ্যতা বলে।
34. সমযোজী বন্ধন বলতে কী বোঝ?
উঃ দুটি পরমাণুর প্রত্যেকটি থেকে আগত সমসংখ্যক ইলেকট্রন দিয়ে গঠিত এক বা একাধিক ইলেকট্রন-জোড় ওই দুটি পরমাণুর মধ্যে সমভাবে ব্যবহৃত হওয়ার ফলে যে রাসায়নিক বন্ধনের সৃষ্টি হয়, তাকে সমযোজী বন্ধন বলা হয়।
35. সমযোজী যৌগ বলতে কী বোঝ?
উঃ দুই বা ততোধিক পরমাণু পরস্পরের সঙ্গে এক বা একাধিক ইলেকট্রন জোড় সমভাবে ব্যবহার করে যে যৌগ উৎপন্ন করে তাকে সমযোজী যৌগ বলে।
36. সমযোজ্যতার পরিমাপ বলতে কী বোঝ?
উঃ সমযোজী যৌগের অণু গঠনের ক্ষেত্রে কোনো মৌলের পরমাণু যতগুলি ইলেকট্রন জোড় গঠন করে, সেই সংখ্যাই হয় মৌলটির সমযোজ্যতার পরিমাপ।
37. দৈনন্দিন জীবনে ব্যবহৃত হয় এমন তিনটি তড়িৎযোজী ও তিনটি সমযোজী যৌগের নাম লেখো।
উঃ তড়িৎযোজী যৌগঃ খাদ্যলবণ বা সোডিয়াম ক্লোরাইড (NaCl), চক (CaCO3), বেকিং সোডা (NaHCO3) ।
সমযোজী যৌগঃ জল (H2O), চিনি (C12H22O11), কার্বন ডাইঅক্সাইড (নরম পানীয়) ।
38. তড়িৎ পরিবাহী বলতে কী বোঝ?
উঃ যে সকল পদার্থ তড়িৎ পরিবহনে সক্ষম অর্থাৎ যে সকল পদার্থের ভিতর দিয়ে তড়িৎ চলাচল করতে পারে, তাদের তড়িৎ পরিবাহী পদার্থ বলে। যেমন-তামা, লোহা, গ্রাফাইট, গ্যাস-কার্বন প্রভৃতি।
39. তড়িৎ পরিবাহী কয় প্রকার ও কী কী?
উঃ তড়িৎ পরিবাহী পদার্থগুলিকে তিনভাগে ভাগ করা যায়। যথা-(১) ধাতব পরিবাহী, (২) অধাতব পরিবাহী ও (৩) তড়িৎবিশ্লেষ্য পদার্থ।
40. ধাতব পরিবাহী বলতে কী বোঝ?
উঃ যে সব ধাতব পদার্থের ভিতর দিয়ে তড়িৎ প্রবাহিত হলে পরিবাহীর উষ্ণতার পরিবর্তন ছাড়া এদের কোনো স্থায়ী রাসায়নিক পরিবর্তন ঘটে না। তড়িৎপ্রবাহ বন্ধ হলে পূর্বেকার অবস্থায় ফিরে আসে। এইসব ধাতব পদার্থকে ধাতব পরিবাহী বলে। যেমন-তামা, লোহা, রূপা প্রভৃতি।
41. অধাতব পরিবাহী বলতে কী বোঝ?
উঃ যে সমস্ত অধাতব পদার্থের মধ্য দিয়ে তড়িৎ প্রবাহিত হলে স্থায়ী রাসায়নিক পরিবর্তন হয় না, তাদের অধাতব পরিবাহী বলে। যেমন-গ্রাফাইট, গ্যাস-কার্বন প্রভৃতি।
42. তড়িৎবিশ্লেষ্য পদার্থ (Electrolytes) বলতে কী বোঝ?
উঃ যে সমস্ত যৌগিক পদার্থ জলে দ্রবীভূত বা গলিত অবস্থায় তড়িৎ পরিবহন করে এবং তার ফলে রাসায়নিকভাবে বিশ্লিষ্ট হয়ে নতুন পদার্থ উৎপন্ন করে তাদের তড়িৎবিশ্লেষ্য পদার্থ বলে। যেমন-অ্যাসিড, ক্ষার ও লবণের জলীয় দ্রবণ এবং গলিত ক্ষার ও গলিত লবণ তড়িৎবিশ্লেষ্য পদার্থ।
43. তড়িৎ-অবিশ্লেষ্য পদার্থ বলতে কী বোঝ?
উঃ যেসব যৌগ বিগলিত অবস্থায় বা জলীয় দ্রবণে তড়িৎ পরিবহন করে না, তাদের তড়িৎ-অবিশ্লেষ্য পদার্থ বলে। যেমন-চিনির জলীয় দ্রবণ, ইথানল প্রভৃতি সমযোজী যৌগ এই শ্রেণির অন্তর্গত।
44. তীব্র তড়িৎবিশ্লেষ্য (Strong electrolytes) পদার্থ কাদের বলে?
উঃ যেসব যৌগ জলীয় দ্রবণে প্রায় সম্পূর্ণরূপে বিপরীত তড়িৎযুক্ত আউনে বিয়োজিত হয়, তাদের তীব্র তড়িৎবিশ্লেষ্য বলা হয়। যেমন- HCl, NaCl, NaOH ইত্যাদি।
45. মৃদু তড়িৎবিশ্লেষ্য (Weak electrolytes) পদার্থ কাদের বলে?
উঃ যেসব যৌগ জলীয় দ্রবণে আংশিকভাবে বা সামান্য পরিমাণে বিপরীত তড়িৎযুক্ত আয়নে বিয়োজিত হয়, তাদের মৃদু তড়িৎবিশ্লেষ্য বলা হয়। যেমন-NH4OH, HCOOH, CH3COOH ইত্যাদি।
46. তড়িৎ বিশ্লেষণ (Electrolysis) বলতে কী বোঝ?
উঃ বিগলিত বা উপযুক্ত দ্রাবকে দ্রবীভূত অবস্থায় তড়িৎবিশ্লেষ্য পদার্থের ভেতর দিয়ে তড়িৎপ্রবাহ পরিচালিত করে নির্দিষ্ট তড়িৎদ্বারে পদার্থটির রাসায়নিক বিয়োজন ঘটানোর পদ্ধতিকে তড়িৎবিশ্লেষণ বলা হয়।
47. ভোল্টামিটার কী?
উঃ যে পাত্রে তড়িৎবিশ্লেষ্য পদার্থের তড়িৎবিশ্লেষণ করা হয়, তাকে ভোল্টামিটার বলে।
48. তড়িৎদ্বার কী?
উঃ ভোল্টামিটারে গলিত বা উপযুক্ত দ্রাবকে দ্রবীভূত তড়িৎবিশ্লেষ্য পদার্থ রেখে তার মধ্যে দুটি সুপরিবাহী ধাতব বা অধাতব পাত বা দণ্ড আংশিকভাবে নিমজ্জিত করে রাখা হয়। এই পাত দুটির সঙ্গে ব্যাটারির ধনাত্মক বা ঋণাত্মক মেরু যোগ করা হয়। এগুলিকে তড়িৎদ্বার বলে।
49. অ্যানোড কাকে বলে?
উঃ ব্যাটারির ধনাত্মক মেরুর সঙ্গে যুক্ত তড়িৎদ্বারকে অ্যানোড বলা হয়। অ্যানোডে জারণ হয়।
50. ক্যাথোড কাকে বলে?
উঃ ব্যাটারির ঋণাত্মক মেরুর সঙ্গে যুক্ত তড়িৎদ্বারকে ক্যাথোড বলা হয়। ক্যাথোডে বিজারণ হয়।
51. তড়িৎবিশ্লেষণের দুটি বৈশিষ্ট্য উল্লেখ করো।
উঃ তড়িৎ বিশ্লেষণের দুটি বৈশিষ্ট্য হল-
(১) তড়িৎ বিশ্লেষণে তড়িৎশক্তি রাসায়নিক শক্তিতে রূপান্তরিত হয়।
(২) তড়িৎ বিশ্লেষণে সমপ্রবাহ (DC) ব্যবহার করা হয়। পরিবর্তী প্রবাহ (AC) ব্যবহার করলে তড়িৎ বিশ্লেষণ হবে না।
52. ধাতব পরিবাহী ও তড়িৎবিশ্লেষ্য পদার্থের তড়িৎ পরিবহনে পার্থক্যগুলি লেখো।
উঃ ধাতব পরিবাহী ও তড়িৎবিশ্লেষ্য পদার্থের তড়িৎ পরিবহনে কেশ কিছু পার্থক্য দেখা যায়। যেমন-
(১) ধাতব পরিবাহীর মধ্য দিয়ে তড়িৎ প্রবাহিত হলে এদের কোনো স্থায়ী রাসায়নিক পরিবর্তন হয় না। কিন্তু তড়িৎবিশ্লেষ্য পদার্থের মধ্য দিয়ে তড়িৎ প্রবাহিত হওয়ার সময় রাসায়নিক পরিবর্তন ঘটে এবং নতুন পদার্থ উৎপন্ন হয়।
(২) ধাতব পরিবাহীর ক্ষেত্রে ইলেকট্রন কণার চলাচলই তড়িৎ পরিবাহিতার কারণ। কিন্তু তড়িৎবিশ্লেষ্যের ক্ষেত্রে তড়িৎ পরিবহন করে ধনাত্মক আধানযুক্ত ক্যাটায়ন এবং ঋণাত্মক আধানযুক্ত অ্যানায়ন।
(৩) তড়িৎপ্রবাহের সময় ধাতব পরিবাহীর কোনো অংশ স্থানান্তরিত হয় না। কিন্তু তড়িৎবিশ্লেষ্যের ক্ষেত্রে পদার্থের স্থানান্তর ঘটে।
(৪) উষ্ণতা বাড়লে সাধারণত ধাতব পরিবাহীর রোধ বাড়ে অর্থাৎ পরিবাহিতা কমে কিন্তু তড়িৎবিশ্লেষ্যের ক্ষেত্রে উষ্ণতা বাড়লে রোধ কমে এবং পরিবাহিতা বাড়ে।
(৫) ধাতব পরিবাহী কঠিন অবস্থায় তড়িৎ পরিবহনে সক্ষম কিন্তু তড়িৎবিশ্লেষ্য পদার্থ কেবলমাত্র গলিত বা দ্রবীভূত অবস্থায় তড়িৎ পরিবহন করে।
(৬) তড়িৎ বিশ্লেষণে আয়নগুলি তড়িৎ পরিবহন করে কিন্তু ইলেকট্রনগুলি দ্রবণের মধ্য দিয়ে গমন করে না।
53. বিশুদ্ধ জল তড়িৎ পরিবহন করে না, কিন্তু জলে সামান্য পরিমাণ অ্যাসিড বা লবণ মিশিয়ে দিয়ে তা তড়িৎ পরিবহন করে-এর কারণ কী?
উঃ বিশুদ্ধ জল সাধারণ উষ্ণতায় অতি অল্পমাত্রায় আয়নিত হয়ে H+(aq) ও OH-(aq) উৎপন্ন করে যা তড়িৎ পরিবহনের ক্ষেত্রে যথেষ্ট নয়। তাই বিশুদ্ধ জল তড়িৎ-এর কুপরিবাহী। কিন্তু বিশুদ্ধ জলে কোনো তীব্র তড়িৎবিশ্লেষ্য পদার্থ (যেমন-অ্যাসিড, ক্ষার, লবণ) যোগ করলে ঐ তড়িৎবিশ্লেষ্য পদার্থ প্রায় সম্পূর্ণভাবে আয়নিত হয়। ফলে জলীয় দ্রবণে আয়নের সংখ্যা বহুগুণে বেড়ে যায়, তাই এর তড়িৎ পরিবাহিতাও বেড়ে যায়। তখন জল তড়িৎ-এর সুপরিবাহী হয়।
54. কঠিন সোডিয়াম ক্লোরাইড তড়িৎবহনে অক্ষম। কিন্তু জলে দ্রবীভূত বা গলিত অবস্থায় তড়িৎ পরিবহনে সক্ষম কেন?
উঃ গলিত বা দ্রবীভূত অবস্থায় তড়িৎবিশ্লেষ্য পদার্থ স্বতঃস্ফূর্তভাবে ধনাত্মক বা ঋণাত্মক আয়নে বিয়োজিত হয় (NaCl→Na+ + Cl-) । এই আয়নগুলিই তড়িৎ পরিবহন করে। কিন্তু কঠিন অবস্থায় স্থির তড়িৎ আকর্ষণের জন্য আয়নগুলি পরস্পর থেকে বিচ্ছিন্ন হতে পারে না। তাই তড়িৎ পরিবহন করে না।
55. প্ল্যাটিনাম তড়িৎদ্বার ব্যবহার করে অ্যাসিডযুক্ত জলের তড়িৎ বিশ্লেষণ করলে অ্যানোডে ও ক্যাথোডে কী উৎপন্ন হয়?
উঃ প্ল্যাটিনাম তড়িৎদ্বার ব্যবহার করে অ্যাসিডযুক্ত জলের তড়িৎ বিশ্লেষণ করলে অ্যানোডে অক্সিজেন ও ক্যাথোডে হাইড্রোজেন গ্যাস উৎপন্ন হয়।
অ্যানোড বিক্রিয়াঃ OH- - e = OH, 4OH = 2H2O + O2↑
ক্যাথোড বিক্রিয়াঃ H+ + e = H, H + H = H2↑
56. কপার তড়িৎদ্বার ব্যবহার করে কপার সালফেটের জলীয় দ্রবণের তড়িৎ বিশ্লেষণ করলে অ্যানোডে ও ক্যাথোডে কী উৎপন্ন হয়?
উঃ কপার তড়িৎদ্বার ব্যবহার করে কপার সালফেটের জলীয় দ্রবণের তড়িৎ বিশ্লেষণ করলে অ্যানোডে কপার ধাতুর ক্ষয় হয় ও Cu2+ আয়ন দ্রবণে মিশে যায় ফলে দ্রবণে CuSO4-এর গাঢ়ত্ব একই থাকে এবং ক্যাথোডের গায়ে কপার ধাতু জমা হয়।
অ্যানোড বিক্রিয়াঃ Cu - 2e = Cu2+
ক্যাথোড বিক্রিয়াঃ Cu2+ + 2e = Cu
57. প্ল্যাটিনাম তড়িৎদ্বার ব্যবহার করে কপার সালফেটের জলীয় দ্রবণের তড়িৎ বিশ্লেষণ করলে অ্যানোডে ও ক্যাথোডে কী উৎপন্ন হয়?
উঃ প্ল্যাটিনাম তড়িৎদ্বার ব্যবহার করে কপার সালফেটের জলীয় দ্রবণের তড়িৎ বিশ্লেষণ করলে অ্যানোডে অক্সিজেন উৎপন্ন হয় ও ক্যাথোডে কপার ধাতু মুক্ত হয়।
CuSO4 = Cu2+ + SO42-, H2O = H+ + OH-
অ্যানোড বিক্রিয়াঃ OH- - e = OH, 4OH = 2H2O + O2↑
ক্যাথোড বিক্রিয়াঃ Cu2+ + 2e = Cu
58. কপার তড়িৎদ্বার ব্যবহার করে কপার সালফেটের জলীয় দ্রবণের তড়িৎ বিশ্লেষণ করলে অ্যানোডে অক্সিজেন উৎপন্ন হয় না কেন-ব্যাখ্যা করো।
উঃ কপার সালফেটের জলীয় দ্রবণে কপার সালফেট ও জলের বিয়োজনের ফলে উৎপন্ন চারপ্রকারের আয়ন থাকে। তড়িৎ প্রবাহের ফলে ক্যাটায়নগুলি ক্যাথোডে এবং অ্যানায়নগুলি অ্যানোডে গমন করে।
CuSO4 = Cu2+ + SO42-, H2O = H+ + OH-
ক্যাথোডে বিক্রিয়াঃ ক্যাথোডে উপস্থিত ধনাত্মক আয়ন দুটির (Cu2+ ও H+) মধ্যে Cu2+ আয়ন H+ আয়নের আগে ইলেকট্রন গ্রহণ করে ক্যাথোডে মুক্ত হয়। কারণ Cu2+ –এর মুক্ত হওয়ার বিভব (Discharge potential) H+ আয়নের চেয়ে কম।
Cu2+ + 2e = Cu
অ্যানোডে বিক্রিয়াঃ অ্যানোডে আগত ঋণাত্মক আয়ন দুটি অর্থাৎ SO42- ও OH- ইলেকট্রন বর্জন করে মুক্ত হওয়ার আগেই অ্যানোডের কপার ধাতু ইলেকট্রন বর্জন করে Cu2+ আয়নে পরিণত হয়। কারণ কপারের ইলেকট্রন বর্জন করার ক্ষমতা SO42- ও OH--এর চেয়ে বেশি।
Cu - 2e = Cu2+
যেহেতু অ্যানোডে Cu2+ উৎপন্ন হয় সে কারণে অ্যানোডের কপার ধাতু ক্ষয় হয়। ঠিক যে পরিমাণ কপার ধাতু কাথোডে জমা হয় তার তুল্য পরিমাণ কপার ধাতু অ্যানোডে ক্ষয় হয়ে Cu2+ আয়ন উৎপন্ন হয় এবং দ্রবণের সঙ্গে মিশে গিয়ে কপার সালফেটের গাঢ়ত্ব একই রাখে।
59. তড়িৎ বিশ্লেষণের কয়েকটি প্রয়োগ উল্লেখ করো।
উঃ তড়িৎ বিশ্লেষণের কয়েকটি প্রয়োগ হল-
(১) ধাতু নিষ্কাশনঃ Na, K, Ca, Mg, Al প্রভৃতি তীব্র তড়িত-ধনাত্মক ধাতু তড়িৎ বিশ্লেষণ পদ্ধতিতে নিষ্কাষণ করা হয়।
(২) ধাতু পরিশোধনঃ Cu, Al প্রভৃতি ধাতু তড়িৎ বিশ্লেষণ পদ্ধতিতে পরিশোধন করা হয়।
(৩) তড়িৎ লেপনঃ জল, বাতাস ও বিভিন্ন রাসায়নিক পদার্থের হাত থেকে ধাতব পদার্থকে রক্ষা করা জন্য তড়িৎ বিশ্লেষণ পদ্ধতিতে ধাতুগুলির ওপর অপেক্ষাকৃত কম সক্রিয় অন্য ধাতুর প্রলেপ দেওয়া হয়।
60. অ্যানোড মাড কী?
উঃ তড়িৎবিশ্লেষণ পদ্ধতিতে ধাতু পরিশোধন করার সময় অ্যানোড তড়িৎদ্বারের নীচে সঞ্চিত কাদার মত অংশকে অ্যানোড মাড বা অ্যানোড কাদা বলে।
উদাহরণঃ তড়িৎবিশ্লেষণ পদ্ধতিতে অবিশুদ্ধ কপার পরিশোধন করার সময় অশুদ্ধিরূপে কপারের সঙ্গে মিশ্রিত Ag, Au, Pt প্রভৃতি মূল্যবান ধাতুগুলি অ্যানোড মাড হিসাবে সঞ্চিত হয়।
61. তড়িৎ লেপন (Electroplating) বলতে কী বোঝ?
উঃ তড়িৎ বিশ্লেষণের সাহায্যে কোনো নিকৃষ্ট মানের ধাতু বা সংকর ধাতু নির্মিত বস্তুর উপর উৎকৃষ্ট মানের অপেক্ষাকৃত কম সক্রিয় ধাতুর প্রলেপ দেওয়ার পদ্ধতিকে তড়িৎ লেপন বলে।
62. তড়িৎ লেপনের শর্তগুলি উল্লেখ করো।
উঃ তড়িৎ লেপনের শর্তগুলি হল-
(১) তড়িৎ লেপনে যে ধাতুর প্রলেপ ব্যবহার করা হবে সেই ধাতুর কোনো লবণের জলীয় দ্রবণ তড়িৎবিশ্লেষ্য হিসাবে ব্যবহার করতে হবে।
(২) যে ধাতুর প্রলেপ ব্যবহার করা হবে সেই ধাতুর কোনো দণ্ড বা পাতকে অ্যানোড হিসাবে ব্যবহার করতে হবে।
(৩) যে ধাতুর বা বস্তুর ওপর প্রলেপ দেওয়া হবে সেটিকে ক্যাথোড হিসাবে ব্যবহার করতে হবে।
63. কোনো ধাতুর ওপর সোনার প্রলেপ দিতে হলে অ্যানোড, ক্যাথোড ও তড়িৎবিশ্লেষ্য হিসাবে কী কী ব্যবহার করতে হবে লেখো।
উঃ তড়িৎবিশ্লেষ্যঃ সামান্য পরিমাণে পটাশিয়াম হাইড্রোজেন ফসফেট (KHPO4) এবং পটাশিয়াম কার্বনেট (K2CO3) মিশ্রিত পটাশিয়াম অরোসায়ানাইড, K[Au(CN)2]-এর দ্রবণ।
অ্যানোডঃ বিশুদ্ধ সোনার (Au) দণ্ড বা পাত।
ক্যাথোডঃ যার ওপর প্রলেপ দেওয়া হবে সেই ধাতু বা বস্তু।
64. কোনো ধাতুর ওপর রূপোর প্রলেপ দিতে হলে অ্যানোড, ক্যাথোড ও তড়িৎবিশ্লেষ্য হিসাবে কী কী ব্যবহার করতে হবে লেখো।
উঃ তড়িৎবিশ্লেষ্যঃ সামান্য পরিমাণে পটাশিয়াম সায়ানাইড (KCN) এবং পটাশিয়াম কার্বনেট (K2CO3) মিশ্রিত পটাশিয়াম আর্জেন্টোসায়ানাইড, K[Ag(CN)2]-এর দ্রবণ।
অ্যানোডঃ বিশুদ্ধ সিলভার বা রূপার (Ag) দণ্ড বা পাত।
ক্যাথোডঃ যার ওপর প্রলেপ দেওয়া হবে সেই ধাতু বা বস্তু।
65. লাইকার অ্যামোনিয়া (Liquor Ammonia) কী?
উঃ অ্যামোনিয়ার গাঢ় সম্পৃক্ত জলীয় দ্রবণকে লাইকার অ্যামোনিয়া বলে।
66. হেবার পদ্ধতিতে অ্যামোনিয়ার (NH3) শিল্পোৎপাদনে পদ্ধতিগত শর্তগুলি কী কী?
উঃ হেবার পদ্ধতিতে 200 বায়ুমণ্ডলীয় চাপে এবং 550 ডিগ্রি C উষ্ণতায় উত্তপ্ত লৌহচূর্ণ অনুঘটক ও মলিবডেনাম উদ্দীপকের উপস্থিতিতে 1:3 আয়তনিক অনুপাতে নাইট্রোজেন ও হাইড্রোজেন গ্যাস সরাসরি বিক্রিয়া করে অ্যামোনিয়া প্রস্তুত করা হয়।
67. অ্যামোনিয়া গ্যাস কীভাবে শুষ্ক করা হয়?
উঃ অ্যামোনিয়া গ্যাস শুষ্ক করত হলে পোড়াচুন (CaO) ব্যবহার করা হয়, কারণ উভয়ই ক্ষারীয় পদার্থ, তাই পরস্পর বিক্রিয়া করে না।
কিন্তু অ্যামোনিয়া শুষ্ক করতে গাঢ় সালফিউরিক অ্যাসিড, ফসফরাস পেন্টক্সাইড বা অনার্দ্র ক্যালসিয়াম ক্লোরাইড ব্যবহার করা হয় না, কারণ এইসব পদার্থের সঙ্গে অ্যামোনিয়া বিক্রিয়া করে।
68. ঘন সালফিউরিক অ্যাসিডের সাহায্যে অ্যামোনিয়া শুষ্ক করা যায় না কেন?
উঃ অ্যামোনিয়া ক্ষারকীয় গ্যাস। ঘন সালফিউরিক অ্যাসিড আম্লিক জলশোষক পদার্থ। উভয়ের মধ্যে রাসায়নিক বিক্রিয়ায় অ্যামোনিয়াম সালফেট লবণ উৎপন্ন হয়। তাই ঘন সালফিউরিক অ্যাসিডের সাহায্যে অ্যামোনিয়া শুষ্ক করা যায় না।
2NH3 + H2SO4 → (NH4)2SO4
69. গলিত ক্যালসিয়াম ক্লোরাইডের সাহায্যে অ্যামোনিয়া শুষ্ক করা হয় না কেন?
উঃ গলিত ক্যালসিয়াম ক্লোরাইডের ভেতর দিয়ে আর্দ্র অ্যামোনিয়া পাঠালে উভয়ের বিক্রিয়ায় CaCl2.8H2O যুত যৌগ উৎপন্ন হয়। তাই ক্যালসিয়াম ক্লোরাইডের সাহায্যে অ্যামোনিয়া শুষ্ক করা যায় না।
CaCl2 + 8NH3 → CaCl2.8H2O
70. অ্যামোনিয়া গ্যাস শুষ্ক করতে ফসফরাস পেন্টক্সাইড ব্যবহার করা হয় না কেন?
উঃ অ্যামোনিয়া ক্ষারকীয় গ্যাস। ফসফরাস পেন্টক্সাইড আম্লিক জলশোষক পদার্থ। উভয়ের বিক্রিয়ায় অ্যামোনিয়াম ফসফেট লবণ উৎপন্ন হয়। তাই অ্যামোনিয়া গ্যাস শুষ্ক করতে ফসফরাস পেন্টক্সাইড ব্যবহার করা হয় না।
6NH3 + P2O5 + 3H2O → 2(NH4)3PO4
71. একটি গ্যাসজারে অ্যামোনিয়া আছে কিনা-কীভাবে শনাক্ত করবে?
উঃ ঘন হাইড্রোক্লোরিক অ্যাসিডে একটি কাচদণ্ডকে ডুবিয়ে সেটিকে পরীক্ষণীয় গ্যাসজারে প্রবেশ করালে যদি ঘন সাদা ধোঁয়া উৎপন্ন হয় তাহলে বোঝা যাবে যে গ্যাসজারে অ্যামোনিয়া গ্যাস আছে। কারণ অ্যামোনিয়া ও হাইড্রোক্লোরিক অ্যাসিডের বিক্রিয়ায় সাদা বর্ণের অ্যামোনিয়াম ক্লোরাইড উৎপন্ন হয়।
NH3 (g) + HCl (g) = NH4Cl (s) (সাদা)
72. অ্যামোনিয়ার জলীয় দ্রবণ মৃদু ক্ষার-প্রমাণ করো।
উঃ অ্যামোনিয়ার জলীয় দ্রবণ লাল লিটমাসকে নীল করে দেয়। এটা দেখে বলা যায় যে অ্যামোনিয়ার জলীয় দ্রবণ ক্ষারকীয়।
73. অ্যামোনিয়ার বিজারণ ধর্মের একটি উদাহরণ দাও।
উঃ লোহিততপ্ত কালো রং-এর কিউপ্রিক অক্সাইডের ওপর দিয়ে অ্যামোনিয়া পাঠালে লাল রং-এর কপার, নাইট্রোজেন ও জলীয় বাষ্প উৎপন্ন হয়। অ্যামোনিয়া কিউপ্রিক অক্সাইডকে কপারে বিজারিত করে এবং নিজে নাইট্রোজেনে জারিত হয়।
3CuO + 2NH3 → 3Cu + N2↑ + 3H2O
74. কপার সালফেটের জলীয় দ্রবণে অতিরিক্ত অ্যামোনিয়াম হাইড্রক্সাইড যোগ করলে উৎপন্ন ঘন নীল বর্ণের যৌগের নাম ও সংকেত লেখো।
উঃ কপার সালফেটের জলীয় দ্রবণে অতিরিক্ত অ্যামোনিয়াম হাইড্রক্সাইড যোগ করলে ঘন নীল বর্ণের কিউপ্রোঅ্যামোনিয়াম সালফেট, [Cu(NH3)4SO4] নামক জটিল লবণ উৎপন্ন হয়।
75. দুটি গ্যাস বিক্রিয়া করে একটি কঠিন পদার্থ উৎপন্ন হয়। সমীকরণসহ লেখো।
উঃ অ্যামোনিয়া ও গ্যাসীয় হাইড্রোজেন ক্লোরাইডের বিক্রিয়ায় কঠিন অ্যামোনিয়াম ক্লোরাইড উৎপন্ন হয়।
NH3 (g) + HCl (g) = NH4Cl (s)
76. অ্যামোনিয়া থেকে প্রস্তুত হয়–এমন দুটি রাসায়নিক সারের নাম লেখো।
উঃ অ্যামোনিয়াম সালফেট [(NH4)2SO4], অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট (NH4NO3) ইত্যাদি।
77. অ্যামোনিয়ার ক্ষতিকারক প্রভাবগুলি কী কী?
উঃ (১) অ্যামোনিয়া ক্ষারধর্মী ঝাঁঝালো গ্যাস। এজন্য এই গ্যাস চোখের পক্ষে ক্ষতিকর।
(২) শ্বাসের সঙ্গে এই গ্যাস শরীরে প্রবেশ করলে শ্লৈষ্মিক-ঝিল্লি আক্রান্ত হয়।
78. লাইকার অ্যামোনিয়ার বোতল খোলার আগে ঠান্ডা করা প্রয়োজন কেন?
উঃ অ্যামোনিয়ার সম্পৃক্ত জলীয় দ্রবণকে লাইকার অ্যামোনিয়া বলা হয়। উষ্ণতা বৃদ্ধি পেলে জলের মধ্যে অ্যামোনিয়ার দ্রাব্যতা কমে যায়। লাইকার অ্যামোনিয়ার বোতল খোলার সময় উষ্ণতা বেশি হলে দ্রবণ থেকে অতিরিক্ত অ্যামোনিয়া বেরিয়ে এসে দ্রবণের উপর সঞ্চিত থাকে। বোতুলের ছিপি খোলার সঙ্গে সঙ্গে এই গ্যাস সজোরে বেরিয়ে আসে। ক্ষারধর্মী এই গ্যাস চোখের পক্ষে মারাত্মক ক্ষতিকর। শ্বাসনালীর ভেতর এই গ্যাস প্রবেশ করলে শ্লৈষ্মিক-ঝিল্লি আক্রান্ত হয়। তাই লাইকার অ্যামোনিয়ার বোতল খোলার আগে সেটিকে ভালো করে ঠান্ডা করে নেওয়া উচিৎ। উষ্ণতা হ্রাস পেলে জলে অ্যামোনিয়ার দ্রাব্যতা বেড়ে যায়। ফলে দ্রবণ থেকে বেড়িয়ে আসা গ্যাসের বেশিরভাগটাই আবার জলে দ্রবীভূত হয়। এর ফলে দুর্ঘটনা এড়ানো যায়।
79. কোনো জায়গায় অ্যামোনিয়া গ্যাস ছড়িয়ে পড়লে কী ব্যবস্থা নেওয়া উচিৎ?
উঃ কোনো জায়গায় অ্যামোনিয়া গ্যাস ছড়িয়ে পড়লে সেখানে ভালোভাবে জল ছেটানো দরকার। কারণ অ্যামোনিয়া গ্যাস জলে অতিমাত্রায় দ্রবণীয়। ফলে নির্গত গ্যাস জলে দ্রবীভূত হয়ে যায়, ফলে ক্ষতির মাত্রা কম হয়। এছাড়া কোনো ব্যক্তি অ্যামোনিয়া গ্যাসের দ্বারা আক্রান্ত হলে তার চোখে-মুখে অনবরত জলের ঝাপটা দেওয়া উচিৎ এবং জলে ভেজানো রুমাল দিয়ে নাক-মুখ ঢেকে রাখা উচিৎ। কখনোই চোখে অ্যাসিডের ঝাপটা দেওয়া উচিৎ নয়। অ্যাসিডের ঝাপটা দিলে আমাদের ত্বকের ক্ষতি হতে পারে, চোখ নষ্ট হয়ে যেতে পারে।
80. পরীক্ষাগারে H2S প্রস্তুতিতে বিজারকগুলির নাম লেখো।
উঃ ফেরাস সালফাইড (FeS) ।
81. পরীক্ষাগারে H2S প্রস্তুতিতে HNO3 ব্যবহার করা হয় না কেন?
উঃ পরীক্ষাগারে H2S প্রস্তুতিতে HNO3 ব্যবহার করা হয় কারণ নাইট্রিক অ্যাসিড একটি শক্তিশালী জারক দ্রব্য। এটি উৎপন্ন হাইড্রোজেন সালফাইডকে জারিত করে সালফারে পরিণত করে।
FeS + 2HNO3 = Fe(NO3)2 + H2S
3H2S + 2HNO3 = 2NO + S + 4H2O
82. হাইড্রোজেন সালফাইডের অস্তিত্ব কীভাবে প্রমাণ করবে?
উঃ হাইড্রোজেন সালফাইড পচা ডিমের গন্ধযুক্ত বর্ণহীন বিষাক্ত গ্যাস। এই গ্যাসটি লেড অ্যাসিটেট সিক্ত ফিল্টার পেপারকে কালো করে দেয়।
Pb(CH3COO)2 + H2S → PbS (কালো) + 2CH3COOH
83. H2S একটি বিজারক দ্রব্য-একটি উদাহরণ সহযোগে প্রমাণ করো।
উঃ লঘু সালফিউরিক অ্যাসিড মিশ্রিত কমলা বর্ণের পটাশিয়াম ডাইক্রোমেট দ্রবণে হাইড্রোজেন সালফাইড গ্যাস পাঠালে পটাশিয়াম ডাইক্রোমেট বিজারিত হয়ে সবুজ বর্ণের ক্রোমিক সালফেট, পটাশিয়াম সালফেট, জল এবং হলুদ বর্ণের সালফার উৎপন্ন হয়।
K2Cr2O7 + 4H2SO4 + 3H2S → K2SO4 + Cr2(SO4)3 (সবুজ) + 7H2O + 3S
84. এমন তিনটি লবণের নাম করো যাদের সঙ্গে H2S-এর বিক্রিয়ায় কালো বর্ণের অধঃক্ষেপ পড়ে।
উঃ কপার সালফেট (CuSO4), লেড নাইট্রেট (Pb(NO3)2), সিলভার নাইট্রেট (AgNO3) ।
85. ক্লোরিন জলের সঙ্গে H2S বিক্রিয়া করে হলুদ বর্ণের অধঃক্ষেপ উৎপন্ন করে। অধঃক্ষেপটি কী?
উঃ সালফার (S) বা গন্ধক।
86. নাইট্রোলিম কী? এটি কী কাজে লাগে?
উঃ 1100oC উষ্ণতায় উত্তপ্ত ক্যালসিয়াম কার্বাইডের ওপর দিয়ে নাইট্রোজেন গ্যাস পাঠালে ক্যালসিয়াম ও সায়ানামাইড ও কার্বনের বাদামি রঙের মিশ্রণ উৎপন্ন হয়। একে নাইট্রোলিম বলে। এটি জমিতে রাসায়নিক সার হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
CaC2 + N2 = CaCN2 + C
87. দুটি বর্ণহীন গ্যাস মেশালে একটি বাদামী বর্ণের গ্যাস উৎপন্ন হয়। গ্যাস তিনটি কী কী?
উঃ অক্সিজেন নাইট্রিক অক্সাইডের সঙ্গে বিক্রিয়া করে বাদামী রঙের নাইট্রিক অক্সাইড উৎপন্ন করে।
2NO + O2 = 2NO2 (বাদামী)
88. পরীক্ষাগারে H2SO4-এর সাহায্যে প্রস্তুত করা হয় এমন তিনটি গ্যাসের নাম লেখো।
উঃ হাইড্রোজেন সালফাইড (H2S), হাইড্রোজেন (H2), ও কার্বন ডাই অক্সাইড (CO2) ।
89. মিউরিয়েটিক অ্যাসিড এর রাসায়নিক নাম ও সংকেত কী?
উঃ হাইড্রোজেন ক্লোরাইড (HCl) ।
90. দুটি ধাতুর নাম করো যারা লঘু HCl-এর সঙ্গে বিক্রিয়া করে H2 গ্যাস উৎপন্ন করে।
উঃ কপার (Cu), জিঙ্ক (Zn) ।
91. অ্যাকোয়া ফর্টিস বা শক্তিশালী জল কাকে বলা হয়?
উঃ প্রাচীনকালে অ্যালকেমিস্টগণ নাইট্রিক অ্যাসিডকে (HNO3) অ্যাকোয়া ফর্টিস বা শক্তিশালী জল নামে অভিহিত করতো। কারণ বেশিরভাগ ধাতু ও অধাতু এতে দ্রবীভূত হয়।
92. HNO3 কোন লবণের সঙ্গে বিক্রিয়া করে CO2 উৎপন্ন করে?
উঃ ক্যালসিয়াম কার্বনেট (CaCO3) ।
CaCO3 + 2HNO3 = Ca(NO3)2 + H2O + CO2
93. অয়েল অফ ভিট্রিয়ল কাকে বলা হয়?
উঃ সালফিউরিক অ্যাসিড (H2SO4)-কে। কারণ বহুকাল আগে ফেরাস সালফেট (ভিট্রিয়ল) ও ফটকিরি মিশিয়ে এই অ্যাসিডটি তৈরি করা হত।
94. কোন অ্যাসিডের প্রতি জলের তীব্র আসক্তি আছে?
উঃ গাঢ় সালফিউরিক অ্যাসিড (H2SO4) ।
95. রসায়নের রাজা কাকে বলা হয়?
উঃ অজৈব অ্যাসিডগুলির মধ্যে সালফিউরিক অ্যাসিডের ব্যবহার সবচেয়ে বেশি। তাই এই অ্যাসিডটি রসায়নের রাজা নামে পরিচিত।
96. ওলিয়াম কী?
উঃ সালফার ট্রাইঅক্সাইড (SO3) ও 98% সালফিউরিক অ্যাসিড (H2SO4)-এর মিশ্রণকে ওলিয়াম (H2S2O7) বা পাইরোসালফিউরিক অ্যাসিড বা ধূমায়মান সালফিউরিক অ্যাসিড বলে।
H2SO4 (98%) + SO3 = H2S2O7
97. খনিজ কাকে বলে?
উঃ ভূগর্ভে বা ভূপৃষ্ঠে শিলারূপে প্রাপ্ত প্রাকৃতিক অজৈব পদার্থসমূহ যার মধ্যে ধাতুগুলি মুক্ত অবস্থায় বা যৌগরূপে অন্যান্য অশুদ্ধির সঙ্গে মিশ্রিত অবস্থায় থাকে, তাদের খনিজ বলে।
উদাহরণঃ রেড হিমাটাইট (Fe2O3), আয়রন পাইরাইটস (FeS2) হল লোহার খনিজ, বক্সাইট হল অ্যালুমিনিয়ামের খনিজ।
98. আকরিক বলতে কী বোঝ?
উঃ কোনো ধাতুর যেসব খনিজ পদার্থ থেকে সহজে এবং সস্তায় ধাতুটিকে নিষ্কাশণ করা যায় তাকে ধাতুটির আকরিক বলে।
উদাহরণঃ বক্সাইট হল অ্যালুমিনিয়ামের আকরিক, জিঙ্ক ব্লেন্ড হল জিঙ্কের আকরিক।
99. আকরিক মাত্রই খনিজ কিন্তু সব খনিজ আকরিক নয়-ব্যাখ্যা করো।
উঃ আকরিক বলতে বোঝায় কোনো ধাতুর যেসব খনিজ থেকে সহজে এবং সস্তায় ধাতুটিকে নিষ্কাষণ করা যায় সেই খনিজটি। এখন রেড হিমাটাইট (Fe2O3), এবং আয়রন পাইরাইটস (FeS2) উভয়ই লোহার খনিজ। এদের মধ্যে রেড হিমাটাইট থেকে সহজে এবং কম খরচে উচ্চমানের লোহা নিষ্কাশন করা যায়। তাই রেড হিমাটাইট হল লোহার আকরিক। কিন্তু আয়রন পাইরাইট্সে প্রচুর পরিমাণে লোহা থাকলেও তা থেকে সহজে এবং কম খরচে লোহা নিষ্কাষণ করা যায় না । তাই আয়রন পাইরাইট্স লোহার খনিজ হলেও আকরিক নয়।
100. লোহার দুটি আকরিক-এর নাম লেখো।
উঃ রেড হিমাটাইট (Fe2O3), ম্যাগনেটাইট (Fe3O4) ।
101. লোহার কয়েকটি ব্যবহার উল্লেখ করো।
উঃ বিশুদ্ধ লোহার ব্যবহার খুব কম। লোহার সঙ্গে কার্বন ও সামান্য পরিমাণে অন্যান্য মৌল মিশিয়ে তিন প্রকারের লোহা তৈরি করে ব্যবহার করা হয়।
(১) কাস্ট আয়রন বা ঢালাই লোহার ব্যবহারঃ জলের পাইপ, ল্যাম্পপোস্ট এবং কড়াই, রেলিং, রড প্রভৃতি প্রস্তুতিতে ব্যবহার করা হয়।
(২) রট আয়রন বা পেটাই লোহার ব্যবহারঃ ছোটো শিকল, নোঙ্গর, তড়িৎচুম্বক, বাদ্যযন্ত্রের তার, দরজা, পেরেক বল্টু প্রভৃতি তৈরিতে ব্যবহার করা হয়।
(৩) স্টিল বা ইস্পাতের ব্যবহারঃ করাত, ছুরি, কাঁচি, অস্ত্রপচারের যন্ত্রপাতি, ঘড়ি, চুম্বক, রেললাইন, রেল ইঞ্জিন, রেলের চাকা, সেতু, বন্দুক, মেশিনগান প্রভৃতি তৈরি করতে ব্যবহার করা হয়।
102. তামার দুটি আকরিক-এর নাম লেখো।
উঃ কিউপ্রাইট (Cu2O), কপার গ্ল্যান্স বা চ্যালকোসাইট (Cu2S) ।
103. তামার কয়েকটি ব্যবহার উল্লেখ করো।
উঃ তড়িত-এর সুপরিবাহিতার জন্য বৈদ্যুতিক তার, বৈদ্যুতিক মোটর, জেনারেটর, ট্রান্সফরমার প্রভৃতি নির্মাণে, তাপের সুপরিবাহীতার জন্য বয়লার, রান্নার বাসনপত্র, ক্যালোরিমিটার ইত্যাদি তৈরিতে, পিতল ব্রোঞ্জ, কাঁসা প্রভৃতি সংকর ধাতু তৈরিতে তামা ব্যবহার করা হয়।
104. জিঙ্কের দুটি আকরিক-এর নাম লেখো।
উঃ জিঙ্ক ব্লেন্ড (ZnS), জিঙ্কাইট (ZnO) ।
105. গ্যালভানাইজেশন কী?
উঃ লোহার ওপর জিঙ্কের প্রলেপ দেওয়াকে গ্যালভানাইজেশন বা জিঙ্ক লেপন বলে।
106. জিঙ্কের কয়েকটি ব্যবহার উল্লেখ করো।
উঃ মরিচা নিবারণের জন্য লোহার ওপর জিঙ্কের প্রলেপ দেওয়া হয়, বৈদ্যুতিক সেল বা ড্রাই সেল প্রস্তুতিতে, জিঙ্ক হোয়াইট নামক সাদা রং প্রস্তুতিতে, গোল্ড, সিলভার নিষ্কাশনে, পিতল জার্মান সিলভার প্রভৃতি প্রস্তুতিতে জিঙ্ক ববহার করা হয়।
107. অ্যালুমিনিয়ামের দুটি আকরিক-এর নাম লেখো।
উঃ বক্সাইট (Al2O3), গিবসাইট (Al2O3, 3H2O) ।
108. অ্যালুমিনিয়ামের কয়েকটি ব্যবহার উল্লেখ করো।
উঃ রান্নার বাসনপত্র, দরজা জানলার ফ্রেম, চেয়ার-টেবিল প্রভৃতি নির্মাণে, বৈদ্যুতিক তার ও বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতি নির্মাণে, থার্মিট পদ্ধতিতে ভাঙা লোহা জোড়া দিতে বিজারক হিসেবে, রং ও বাজি তৈরিতে, ডুলারমিন, ম্যাগনেলিয়াম প্রভৃতি সংকর ধাতু প্রস্তুত করতে অ্যালুমিনিয়াম ব্যবহার করা হয়।
109. ধাতু সংকর বা সংকর ধাতু বলতে কী বোঝ?
উঃ দুই বা ততোধিক ধাতুর সমসত্ত্ব বা অসমসত্ত্ব যে-কোনো ধরণের সংযোগে উৎপন্ন যে পদার্থ অধিকাংশ ভৌতধর্মে একটি মাত্র ধাতুর ন্যায় আচরণ করে, তাকে ধাতু সংকর বলা হয়।
110. লোহার দুটি সংকর ধাতুর নাম ও তাদের ব্যবহার উল্লেখ করো।
উঃ নিকেল স্টিল (Ni 3.25%, স্টিল) – রেলের লাইন ও বিভিন্ন গঠনকার্যে ব্যবহার করা হয়।
স্টেনলেস স্টিল (Cr 15-20%, Ni 8-20%, C 0.05-1.5%, স্টিল) – বাসনপত্র, অস্ত্রোপচারের ছুরি, কাঁচি প্রভৃতি তৈরি করতে ব্যবহার করা হয়।
111. তামার দুটি সংকর ধাতুর নাম ও তাদের ব্যবহার উল্লেখ করো।
উঃ
পিতল (Cu 60-80%, Zn 20-40%) – বাসনপত্র, মূর্তি, জলের কল, তালা প্রভৃতি তৈরিতে ববহার করা হয়।
কাঁসা (Cu 60-80%, Sn 20-40%) – বাসনপত্র, মুদ্রা, ঘন্টা, মুর্তি নির্মাণে ব্যবহার করা হয়।
112. জিঙ্কের দুটি সংকর ধাতুর নাম ও তাদের ব্যবহার উল্লেখ করো।
উঃ
জার্মান সিলভার (Cu 50%, Zn 30%, Ni 20%) – চারুশিল্পে, ফুলদানি, বাসনপত্র প্রভৃতি তৈরিতে ব্যবহার করা হয়।
পিতল বা ব্রাস (Cu 60-80%, Zn 20-40%) – বাসনপত্র, মূর্তি ইত্যাদি তৈরিতে ব্যবহার করা হয়।
113. অ্যালুমিনিয়ামের দুটি সংকর ধাতুর নাম ও তাদের ব্যবহার উল্লেখ করো।
উঃ
ডুলারমিন (Al 95%, Cu 4%, Mg 0.5%, Mn 0.5%) – বিমানের কাঠামো, মোটরগাড়ি ও অন্যান্য যানবাহনের বিভিন্ন যন্ত্রাংশ নির্মাণে ব্যবহার করা হয়।
ম্যাগনেলিয়াম (Al 98%, Mg 2%) – হালকা যন্ত্রপাতি, তুলাদণ্ড, বিমানের যন্ত্রাংশ প্রভৃতি তৈরিতে ব্যবহৃত হয়।
114. গোল্ডস্মিথের থার্মিট পদ্ধতিতে কিভাবে রেললাইন বা জাহাজের ভাঙা অংশ জোড়া দেওয়া হয়?
উঃ রেললাইন বা জাহাজের যেখানে ভেঙেছে সেখানে তলায় ছিদ্রযুক্ত একটি ক্রুসিবল রাখা হয়। এই ক্রুসিবলে ফেরিক অক্সাইড ও অ্যালুমিনিয়াম চূর্ণ পরিমাণমত নেওয়া হয়। ম্যাগনেসিয়াম রিবনকে জ্বালালে যে তাপ উৎপন্ন হয় তা ক্রুসিবলকে উত্তপ্ত করে এবং উচ্চতাপে অ্যালুমিনিয়াম ফেরিক অক্সাইডকে বিজারিত করে ধাতব লোহা উৎপন্ন করে। এই লোহা গলিত অবস্থায় ক্রুসিবলের তলার ছিদ্র দিয়ে বেরিয়ে এসে রেললাইন বা জাহাজের ভাঙা অংশে পড়ে এবং এবং ঠান্ডা হয়ে জমাট বেঁধে ওই ভাঙ্গা অংশটি জুড়ে দেয়।
Fe2O3 + 2Al → 2Fe + Al2O3
115. তড়িৎ রাসায়নিক শ্রেণি বা ধাতুর সক্রিয়তা শ্রেণি বলতে কী বোঝ?
উঃ ধাতুগুলিকে তড়িৎ নিরপেক্ষ পরমাণুর ইলেকট্রন বর্জন করে ক্যাটায়ন উৎপন্ন করার ক্ষমতার তারতম্য অনুসারে উপর থেকে নীচে পর পর সাজিয়ে যে শ্রেণি পাওয়া যায় তাকে তড়িৎ রাসায়নিক শ্রেণি (Electro Chemical Series) তা ধাতুর সক্রিয়তা শ্রেণি বলে।
তড়িৎ রাসায়নিক শ্রেণিতে উপরের দিকে অবস্থিত ধাতুগুলি তার নীচে অবস্থিত ধাতুগুলির চেয়ে শক্তিশালী বিজারক। যেমন-পটাসিয়াম, ক্যালসিয়াম অপেক্ষা শক্তিশালী বিজারক, ম্যাগনেসিয়াম, অ্যালুমিনিয়াম অপেক্ষা তীব্রতর বিজারক।
116. লোহায় মরচে ধরা ও তার নিবারণ সম্পর্কে আলোচনা করো।
উঃ অবিশুদ্ধ লোহা বা লোহার দ্বারা নির্মিত কোনো দ্রব্যকে সাধারণ উষ্ণতায় আর্দ্র বাতাসে ফেলে রাখলে তার গায়ে লালাভ বাদামী বর্ণের শিথিল আস্তরণ পড়ে, একে মরচে বলে এবং ঘটনাটিকে মরচে ধরা বলে। এটি আসলে জলযুক্ত ফেরিক অক্সাইড (2Fe2O3, 3H2O) ।
মরচে নিবারণের উপায়ঃ নিম্নলিখিত উপায়ে লোহায় মরচে পড়া নিবারণ করা যায়-
(১) লোহার গায়ে আলকাতরা, ঘন রং, বার্নিশ, অ্যালুমিনিয়াম চূর্ণের প্রলেপ দিয়ে।
(২) লোহার ওপর জিঙ্কের বা টিনের প্রলেপ দিয়ে।
(৩) লোহার সঙ্গে ক্রোমিয়াম, নিকেল প্রভৃতির ধাতু সংকর তৈরি করে।
(৪) স্টিল নির্মিত কাঠামো বা মাটির নীচের জলবাহী পাইপের সঙ্গে ম্যাগনেসিয়াম ব্লক যুক্ত করে।
(৫) লোহিততপ্ত লোহার ওপর দিয়ে স্টিম পাঠিয়ে তার ওপর Fe3O4-এর আস্তরণ তৈরি করে।
117. ক্লোরাইড আয়নের (Cl-) উপস্থিতিতে লোহায় দ্রুত মরচে পড়ে কেন?
উঃ ক্লোরাইড আয়ন (Cl-) ধাতব আয়রনের (Fe) জারণে সাহায্য করে এবং পরবর্তী বিক্রিয়ায় পুনরুৎপন্ন হয়, এর ফলে ক্লোরাইড আয়নের উপস্থিতিতে লোহায় দ্রুত মরচে পড়ে। সমুদ্রের লবণাক্ত জলে (NaCl) জাহাজের তলদেশে দ্রুত মরচে পড়ে বলে বারবার জাহাজের তলদেশ রং করতে হয়।
118. তামা (Cu), অ্যালুমিনিয়াম (Al), জিঙ্ক (Zn) প্রভৃতি নির্মিত পাত্রে আম, তেঁতুল ইত্যাদি টকজাতীয় ফল রাখা উচিৎ নয় কেন?
উঃ আম, তেঁতুল ইত্যাদি টকজাতীয় ফলে জৈব অ্যাসিড থাকে। তামা, অ্যালুমিনিয়াম, জিঙ্ক প্রভৃতি ধাতুগুলি জৈব অ্যাসিডের সঙ্গে বিক্রিয়া করে দ্রাব্য ধাতব যৌগ উৎপন্ন করে। Cu, Al, Zn-এর এই সব যৌগগুলি মানব স্বাস্থ্যের পক্ষে ক্ষতিকারক। তাই Cu, Al, Zn নির্মিত পাত্রে আম, তেঁতুল, চাটনি, আচার প্রভৃতি রাখা উচিৎ নয়।
119. জৈব যৌগ কাকে বলে?
উঃ কার্বনের অক্সাইড, ধাতব কার্বনেট, বাই কার্বনেট, হাইড্রোজেন সায়ানাইড এবং ধাতব সায়ানাইড লবণগুলি ছাড়া কার্বন দ্বারা গঠিত যৌগকে জৈব যৌগ বলে। জৈব যৌগের রসায়নকেই জৈব রসায়ন বলে।
120. জৈব যৌগের মূল উপাদান কী?
উঃ কার্বন (C)
121. জৈব যৌগ ও অজৈব যৌগের কয়েকটি পার্থক্য লেখো।
উঃ জৈব ও অজৈব যৌগের মধ্যে বেশ কিছু পার্থক্য দেখা যায়। যেমন-
(১) প্রত্যেকটি জৈব যৌগের অণুতে কার্বন থাকে এবং সমস্ত যৌগে কার্বনের যোজ্যতা 4, অজৈব যৌগে কার্বনের মত নির্দিষ্ট কোনো মৌলের উপস্থিতি দেখা যায় না, সমস্ত স্থায়ী মৌলের দ্বারাই অজৈব যৌগ গঠিত হয়।
(২) জৈব যৌগগুলি প্রধানত সমযোজী, অজৈব যৌগগুলি প্রধানত তড়িৎযোজী।
(৩) জৈব যৌগগুলি সাধারণত জলে অদ্রাব্য কিন্তু জৈব দ্রাবকে দ্রবণীয়, অজৈব যৌগগুলি সাধারণত জলে দ্রাব্য এবং জৈব দ্রাবকে অদ্রবণীয়।
(৪) জৈব যৌগুগুলির গলনাঙ্ক ও স্ফুটনাঙ্ক অপেক্ষাকৃত কম, অজৈব যৌগগুলির গলনাঙ্ক ও স্ফুটনাঙ্ক অপেক্ষাকৃত বেশি।
(৫) জলীয় দ্রবণে বা গলিত অবস্থায় জৈব যৌগগুলি সাধারণত আয়নিত হয় না এবং তড়িৎ পরিবহন করে না, অজৈব যৌগগুলি জলীয় দ্রবণে বা গলিত অবস্থায় সাধারণত আয়নিত হয় এবং তড়িৎ পরিবহণ করে।
(৬) জৈব যৌগগুলির রাসায়নিক বিক্রিয়া মন্থর গতিতে হয় এবং বিক্রিয়ার প্রকৃতি জটিল ও সাধারণত উভমুখী, অজৈব যৌগগুলির রাসায়নিক বিক্রিয়া দ্রুত গতিতে হয় এবং বিক্রিয়ার প্রকৃতি সরল ও একমুখী।
(৭) জৈব যৌগগুলির মধ্যে সমগণীয় শ্রেণি, সমাবয়বতা, কার্যকরী মূলক প্রভৃতি ধর্ম দেখা যায়, অজৈব যৌগগুলির মধ্যে এই সব ধর্ম দেখা যায় না।
122. পরীক্ষাগারে মানুষের সৃষ্ট প্রথম জৈব যৌগ কোনটি?
উঃ ইউরিয়া।
123. ক্যাটিনেশন (Catenation) কী?
উঃ যে বিশেষ ধর্মের জন্য একাধিক কার্বন পরমাণু পরস্পরের সঙ্গে সমযোজী বন্ধন দ্বারা যুক্ত হয়ে সুস্থিত কার্বন-শৃঙ্খল গঠন করতে পারে তাকে ক্যাটিনেশন বা শৃঙ্খলায়ণ বলে।
124. সম্পৃক্ত যৌগ (Saturated Compound) কাকে বলে?
উঃ যে সব জৈব যৌগে কার্বন পরমাণুগুলি পরস্পর সমযোজী একবন্ধন দ্বারা যুক্ত থাকে, তাদের সম্পৃক্ত যৌগ বলে। যেমন-মিথেন (CH4), ইথেন (C2H6), ইথানল (C2H5OH) ইত্যাদি।
125. অসম্পৃক্ত যৌগ (Unsaturated Compound) বলতে কী বোঝ?
উঃ যেসব জৈব যৌগে অন্তত দুটি কার্বন পরমাণু পরস্পরের সঙ্গে সমযোজী দ্বি-বন্ধন বা ত্রি-বন্ধন দ্বারা যুক্ত থাকে, তাদের অসম্পৃক্ত জৈব যৌগ বলে। যেমন-ইথিলিন, অ্যাসিটিলিন ইত্যাদি।
126. কার্যকরী মূলক (Functional Group) কাকে বলে?
উঃ জৈব যৌগের অণুতে উপস্থিত যে সব সক্রিয় পরমাণু বা পরমাণুপুঞ্জ জৈব যৌগের প্রকৃতি ও রাসায়নিক ধর্ম নিয়ন্ত্রণ করে, তাদের কার্যকরী মূলক বলে। যেমন-সমস্ত অ্যালকোহল জাতীয় জৈব যৌগের কার্যকরী মূলক ‘–OH’, ইথার জাতীয় যৌগের কার্যকরী মূলক ‘–O–’ ইত্যাদি।
127. সমাবয়বতা (Isomerism) বলতে কী বোঝ?
উঃ একই রাসায়নিক সংকেতবিশিষ্ট কিন্তু পৃথক ভৌত ও রাসায়নিক ধর্মযুক্ত যৌগগুলিকে পরস্পরের সমাবয়ব বা আইসোমার বলা হয় এবং এই ঘটনাকে সমাবয়বতা বা আইসোমেরিজম বলা হয়।
128. গঠনগত সমাবয়বতা বলতে কী বোঝ?
উঃ একই আণবিক সংকেতবিশিষ্ট কিন্তু অণুর মধ্যে পরমাণু বা মূলকগুলির পারস্পরিক সংযোজনের পার্থক্যের জন্য পৃথক গঠনমূলক সংকেত ও পৃথক ভৌত ও রাসায়নিক ধর্মযুক্ত জৈব যৌগগুলিকে পরস্পরের গঠনগত সমাবয়ব এবং এই ঘটনাকে গঠনগত সমাবয়বতা বলা হয়।
129. অবস্থানঘটিত সমাবয়বতা (Positional Isomerism) বলতে কী বোঝ?
উঃ একই গঠন কাঠামোবিশিষ্ট কার্বন শৃঙ্খলযুক্ত যৌগসমূহে একই প্রতিস্থাপক বা কার্যকরী মূলকের অবস্থানের বিভিন্নতার জন্য যে ধরণের সমাবয়বতার সৃষ্টি হয় তাকে অবস্থানঘটিত সমাবয়বতা বলা হয়।
উদাহরণঃ সাধারণ প্রোপাইল ক্লোরাইড ও আইসোপ্রোপাইল ক্লোরাইড একে অপরের অবস্থানঘটিত সমাবয়ব।
130. কার্যকরী মূলকঘটিত সমাবয়বতা (Functional Group Isomerism) কাকে বলে?
উঃ একই আণবিক সংকেতবিশিষ্ট জৈব যৌগে ভিন্ন ভিন্ন কার্যকরী মূলকের উপস্থিতির জন্য যে সমাবয়বতার সৃষ্টি হয়, তাকে কার্যকরী মূলকঘটিত সমাবয়বতা বলা হয়।
উদাহরণঃ ইথাইল অ্যালকোহল ও ডাইমিথাইল ইথার একে অপরের কার্যকরী মূলকঘটিত সমাবয়ব।
131. সমগণীয় শ্রেণি (Homologous Series) বলতে কী বোঝ?
উঃ একই উপাদান মৌলসমূহের দ্বারা গঠিত, একই সাধারণ সংকেত দ্বারা প্রকাশযোগ্য এবং একই কার্যকরী মূলকবিশিষ্ট সমধর্মী যৌগগুলিকে আণবিক ওজন বৃদ্ধির ক্রমানুসারে সাজালে যদি একটি শ্রেণির উদ্ভব হয়, যার পরপর দুটি সদস্যের মধ্যে আণবিক সংকেতের মধ্যে পার্থক্য CH2 হয় তাহলে ঐ শ্রেণিকে সমগণীয় শ্রেণি বলা হয়। সমগণীয় শ্রেণির প্রত্যেক সদস্যকে সমগণ (Homologue) বলা হয়।
132. সমগণীয় শ্রেণির কয়েকটি বৈশিষ্ট্য উল্লেখ করো।
উঃ সমগণীয় শ্রেণির বৈশিষ্ট্যগুলি হল-
(১) একটি সাধারণ সংকেতের সাহায্যে একই শ্রেণির যৌগগুলিকে প্রকাশ করা যায়।
(২) সমগণীয় শ্রেণির অন্তর্ভুক্ত সব যৌগের উপাদান মৌল অভিন্ন।
(৩) পরপর অবস্থিত একই শ্রেণির দুটি যৌগের আণবিক সংকেতের মধ্যে পার্থক্য CH2।
(৪) সমগণগুলির অধিকাংশের রাসায়নিক ধর্ম এক রকমের।
(৫) আণবিক গুরুত্ব বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে ঘনত্ব, গলনাঙ্ক, স্ফুটনাঙ্ক বৃদ্ধি পায়।
(৬) যেসব কার্যকরী মূলকের জন্য তারা একটি সমগণীয় শ্রেণিতে অন্তর্ভুক্ত সেই কার্যকরী মূলকই রাসায়নিক ধর্ম নিয়ন্ত্রণ করে।
(৭) একই রকম রাসায়নিক বিক্রিয়ার দ্বারা একই শ্রেণির প্রতিটি যৌগ তৈরি করা যায়।
133. কয়েকপ্রকার সমগণীয় শ্রেণি ও তাদের সাধারণ সংকেত উল্লেখ করো।
উঃ
- অ্যালকেন বা প্যারাফিন – CnH2n+2
- অ্যালকিন বা অলিফিন – CnH2n
- অ্যালকাইন – CnH2n-2
- ইথার – CnH2n+2O
- অ্যালকোহল – CnH2n+1OH
- অ্যালডিহাইড – CnH2n+1CHO
- কিটোন – CnH2nO
- কার্বক্সিলিক অ্যাসিড – CnH2n+1COOH
134. হাইড্রোকার্বন কাকে বলে?
উঃ শুধুমাত্র কার্বন ও হাইড্রোজেন দ্বারা গঠিত জৈব যৌগগুলিকে হাইড্রোকার্বন নামে অভিহিত করা হয়। যেমন-অ্যালকেন, অ্যালকিন ও অ্যালকাইন শ্রেণির সমস্ত যৌগগুলি হল হাইড্রোকার্বন।
135. 1o, 2o এবং 3o কার্বন পরমাণু কাকে বলে।
উঃ জৈব যৌগের অণুতে উপস্থিত কোনো কার্বন পরমাণু যদি অন্য একটিমাত্র কার্বন পরমাণুর সঙ্গে যুক্ত থাকে তাহলে সেই কার্বন পরমাণুটিকে প্রাইমারি কার্বন বা 1o কার্বন বলা হয়।
জৈব যৌগের অণুতে উপস্থিত কোনো কার্বন পরমাণু যদি অন্য দুটি কার্বন পরমাণুর সঙ্গে যুক্ত থাকে তাহলে সেই কার্বন পরমাণুটিকে সেকেন্ডারি কার্বন বা 2o কার্বন বলা হয়।
জৈব যৌগের অণুতে উপস্থিত কোনো কার্বন পরমাণু যদি অন্য তিনটি কার্বন পরমাণুর সঙ্গে যুক্ত থাকে তাহলে সেই কার্বন পরমাণুটিকে টারসিয়ারি কার্বন বা 3o কার্বন বলা হয়।
136. ইথিলিনের উৎস ও কয়েকটি ব্যবহার লেখো।
উঃ উৎসঃ পেট্রোলিয়াম বিভাজন (Cracking)-এর উপজাত হিসেবে প্রচুর পরিমাণে ইথিলিন পাওয়া যায়।
ব্যবহারঃ (১) পলিথিন তৈরি করতে প্রচুর পরিমাণে ইথিলিন ব্যবহার করা হয়।
(২) কৃত্রিম রাবার, মাস্টার্ড গ্যাস (বিষাক্ত), ইথিলিন ডাইক্লোরাইড, ইথাইল অ্যালকোহল, গ্লাইকল ইতাদি প্রস্তুতিতে ইথিলিন ব্যবহার করা হয়।
(৩) কাঁচা ফল পাকাতে ও ফল সংরক্ষণে ইথিলিন ব্যবহার করা হয়।
(৪) চেতনানাশক হিসেবে ইথিলিন ব্যবহার করা হয়।
137. অ্যাসিটিলিনের উৎস ও কয়েকটি ব্যবহার উল্লেখ করো।
উঃ উৎসঃ 2500-3000oC তাপমাত্রায় কোককয়লা ও চুনাপাথর চূর্ণ উত্তপ্ত করলে ক্যালসিয়াম কার্বাইড উৎপন্ন হয়। এই ক্যালসিয়াম কার্বাইডের সঙ্গে জলের বিক্রিয়ায় অ্যাসিটিলিন গ্যাস উৎপন্ন হয়।
CaO + 3C → CaC2 + CO, CaC2 + 2H2O → C2H2 + Ca(OH)2
ব্যবহারঃ (১) ওয়েল্ডিং-এর কাজে অক্সি অ্যাসিটিলিন শিখা উৎপাদনে অ্যাসিটিলিন ব্যবহৃত হয়।
(২) অ্যাসিট্যালডিহাইড, অ্যাসিটিক অ্যাসিড, ইথাইল অ্যালকোহল, অ্যাসিটোন ইত্যাদি তৈরিতে অ্যাসিটিলিন ব্যবহার করা হয়।
(৩) কৃত্রিম রাবার এবং প্লাস্টিক শিল্পে অ্যাসিটিলিনের ব্যবহার আছে।
(৪) চেতনানাশক হিসেবে অ্যাসিটিলিনের ব্যবহার আছে।
138. LPG-এর পুরো কথা কী?
উঃ Liquified Pertoleum Gas
139. LPG-র কয়েকটি ব্যবহার উল্লেখ করো।
উঃ (১)LPG সিলিন্ডারে ভরে প্রধানত রান্নার জ্বালানি হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
(২) বর্তমানে মোটরগাড়ি, বাস, ট্রাক, অটোরিকশা প্রভৃতি যানবাহনের জ্বালানি হিসেবেও LPG ব্যবহার করা হয়।
140. রান্নার গ্যাসে ইথাইল মারক্যাপটান যোগ করা হয় কেন?
উঃ রান্নার গ্যাসের (LPG) প্রধান উপাদান প্রোপেন ও বিউটেন। এগুলি বর্ণহীন, গন্ধহীন, দাহ্য গ্যাস। কোনো কারণে এই গ্যাস নিঃসৃত হলে যাতে সহজে বোঝা যায় তাই এর সাথে পরিমাণ মত ইথাইল মারক্যাপটান যোগ করা হয়। ইথাইল ম্যারক্যাপটানের বিশেষ গন্ধ থেকে আমরা সহজে বুঝতে পারি যে গ্যাস ছড়িয়ে পড়ছে এবং সাবধান হতে পারি।
141. CNG-এর পুরো কথা কী?
উঃ Compressed Natural Gas
142. CNG-র প্রধান উপাদান কী?
উঃ মিথেন।
143. CNG-র কয়েকটি ব্যবহার লেখো।
উঃ (১) CNG মূলত জ্বালানি হিসাবে ব্যবহার করা হয়।
(২) বর্তমানে মোটরগাড়ি, বাস, ট্রাক, অটোরিকশা প্রভৃতি যানবাহনের জ্বালানি হিসেবেও CNG ব্যবহার করা হয়।
144. পলিমার কাকে বলে?
উঃ কতকগুলি নিম্ন আণবিক ভরবিশিষ্ট সরল জৈব যৌগকে বিশেষ প্রক্রিয়ায় উচ্চ আণবিক ভরবিশিষ্ট বৃহদাকার জোইব যৌগে পরিণত করা যায়। এই উচ্চ আণবিক ভরবিশিষ্ট বৃহদাকার যৌগগুলিকে পলিমার বলে।
145. পলিমার কয় প্রকার ও কী কী?
উঃ তাপের প্রতি আচরণের ভিত্তিতে পলিমারগুলিকে দুভাগে ভাগ করা হয়-(১) থার্মোপ্লাস্টিক পলিমার এবং (২) থার্মোসেটিং পলিমার বা প্লাস্টিক।
146. থার্মোপ্লাস্টিক পলিমার কাকে বলে?
উঃ যেসব পলিমার তাপ প্রয়োগে নমনীয় হয় কিন্তু তাপ অপসারণ করলে পুনরায় শক্ত অবস্থায় ফিরে আসে এবং এই প্রক্রিয়া বারবার সম্পন্ন করলেও পলিমারের ধর্ম অপরিবর্তিত থাকে, সেইসব পলিমারকে থার্মোপ্লাস্টিক পলিমার বলা হয়। যেমন-পুলিথিন, পলিভিনাইল ক্লোরাইড, পলিস্টাইরিন প্রভৃতি।
147. থার্মোসেটিং পলিমার কাকে বলে?
উঃ যেসব পলিমার তাপ প্রয়োগে নমনীয় হয় এবং তাপ অপসারণ করলে পুনরায় শক্ত অবস্থায় ফিরে আসে কিন্তু দ্বিতীয়বার তাপ প্রয়োগে আর নমনীয় করা যায় না, তাদের থার্মোসেটিং পলিমার বলা হয়। যেমন-ইপোক্সি রেজিন, অসম্পৃক্ত পলিএস্টার, ফেনল-ফরম্যালডিহাইড রেজিন প্রভৃতি।
148. মনোমার কী?
উঃ যে একক অণুগুলি পুনঃবৃত্তাকারে সংযোজিত হয়ে পলিমার গঠন করে তাকে মনোমার বলে। অথবা
পলিমারের যে ক্ষুদ্রতম এককটি পর্যায়ক্রমে বারবার সংযোজিত হয়ে পলিমারটি তাকে ওই পলিমারের মনোমার বলা হয়। উদাহরণ-পলিথিনের মনোমার ইথিলিন।
149. পলিথিনের মনোমারের নাম লেখো।
উঃ ইথিলিন।
150. PVC-এর পুরো কথা কী?
উঃ Polyvinyl chloride
151. PVC-এর মনোমারের নাম লেখো।
উঃ ভিনাইল ক্লোরাইড।
152. টেফলন-এর রাসায়নিক নাম কী?
উঃ পলিটেট্রাফ্লুরোইথিলিন।
153. টেফলন-এর মনোমারের নাম লেখো।
উঃ টেট্রাফ্লুরোইথিলিন।
154. জৈব ভঙ্গুর বা Biodegradable পলিমার কাকে বলে?
উঃ যেসব পলিমার মাটিতে উপস্থিত ব্যাকটেরিয়া, ছত্রাক প্রভৃতি অণুজীবের দ্বারা বিশ্লিষ্ট হয়ে CO2, H2O প্রভৃতি সরল অজৈব অণুতে পরিণত হয় তাদের জৈব বিশ্লেষ্য বা বায়োডিগ্রেডেবল পলিমার বলা হয়। যেমন-পলিল্যাকটিক অ্যাসিড (PLA), পলি অ্যাডিপেট (PEA) ইত্যাদি।
155. পলিমারের কয়েকটি ব্যবহার উল্লেখ করো।
উঃ পলিথিনের ব্যবহারঃ বস্তা, বড় ড্রাম, বোতল, জলের ট্যাঙ্ক বালতি, ডাস্টবিন প্রভৃতি প্রস্তুত করতে, ফিল্ম, টেবিলের ঢাকনা, খেলনা তৈরি করতে, বিভিন্ন জিনিসের মোড়ক হিসাবে, ইলেকট্রিক তারের অন্তরক হিসাবে পলিথিন ব্যবহৃত হয়।
PVC-এর ব্যবহারঃ রাসায়নিক রোধী ক্ষমতার জন্য জন্য, তেল, পেট্রোল, ক্ষয়কারী রাসায়নিক পদার্থ PVC পাইপ মারফৎ সরবরাহ করা হয়। কেব্ল, হোসপাইপ, বর্ষাতি, জুতো প্রভৃতি তৈরিতে PVC ব্যবহার করা হয়।
টেফলনের ব্যবহারঃ রান্না করার জিনিস প্রস্তুতিতে টেফলন ব্যবহার করা হয়। চশমায় ব্যবহৃত পদার্থ হিসাবে এবং ডাক্তারিশাস্ত্রে ব্যবহৃত জিনিসপত্রে টেফলনের ব্যবহার আছে। তড়িৎ সামগ্রীর উত্তম অন্তরক হিসাবে টেফলন ব্যবহার করা হয়।
156. জৈব অবিশ্লেষ্য (Non-biodegradable) পলিমারের কয়েকটি ক্ষতিকর প্রভাব উল্লেখ করো।
উঃ জৈব অবিশ্লেষ্য পলিমারগুলি প্রকৃতিতে ব্যাকটেরিয়া, ছত্রাক প্রভৃতি অণুজীবের দ্বারা বিয়োজিত হয় না। ফলে এইসব বর্জ্য পদার্থ ক্রমে ক্রমে জমি, নর্দমা, নালা, খাল নদী ইত্যাদিতে সঞ্চিত হয়। দীর্ঘ দিন ধরে সঞ্চিত থাকলে জলবায়ুর প্রভাবে এই প্লাস্টিকগুলি থেকে বিভিন্ন ধরণের বিষাক্ত পদার্থ নিঃসৃত হয়, যা পরিবেশকে দূষিত করে। এই বর্জ্য পদার্থগুলিকে পুড়িয়ে ফেললে উৎপন্ন বিষাক্ত গ্যাস বায়ুদূষণ ঘটায়। নালা, নর্দমায় এগুলি জমার ফলে জলনিকাশি ব্যবস্থা ভীষণভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয় এবং রাস্তাঘাট জলে ডুবে যায়। এভাবে জৈব অবিশ্লেষ্য পলিমারগুলি মৃত্তিকা, জুল ও বায়ুদূষণ ঘটায়।
157. ইথানলের কয়েকটি ব্যবহার লেখো।
উঃ ইথিলিন, ক্লোরোফর্ম, আয়োডোফর্ম, ইথার, এস্টার, বিভিন্ন রঞ্জক দ্রব্য, সুগন্ধি যৌগ ইত্যাদি প্রস্তুতিতে; কৃত্রিম রাবার, বলকারক টনিক, স্বচ্ছ সাবান প্রভৃতি তৈরি করতে; রজন, আঠা, রং, বার্নিশ ইত্যাদির দ্রাবকরূপে প্রচুর পরিমাণে ইথানল ব্যবহৃত হয়।
158. গ্লেসিয়াল অ্যাসিটিক অ্যাসিড কী?
উঃ অ্যাসিটিক অ্যাসিড 16.7oC তাপমাত্রায় বরফের ন্যায় কেলাসাকার কঠিনে পরিণত হয়। একে গ্লেসিয়াল অ্যাসিটিক অ্যাসিড বলে।
159. অ্যাসিটিক অ্যাসিডের কয়েকটি ব্যবহার উল্লেখ করো।
উঃ কৃত্রিম সিল্ক উৎপাদনে ব্যবহৃত সেলুলোজ অ্যাসিটেট প্রস্তুতিতে; অ্যাসিটোন, অ্যাসিটিক অ্যানহাইড্রাইড, অ্যাসিটাইল ক্লোরাইড, ইথাইল অ্যাসিটেট প্রভৃতি প্রস্তুতিতে; ল্যাটেক্স থেকে রাবার এবং দুধ থকে ছানা উৎপাদনে; অ্যাসপিরিন, ফেনাসিটিন প্রভৃতি ওষুধ প্রস্তুতিতে অ্যাসিটিক অ্যাসিড ব্যবহৃত হয়।
160. ইথাইল অ্যালকোহল (মদ) পান করলে মস্তিষ্কে যে রাসায়নিক পদার্থটির পরিমাণ বেড়ে যায় সেটির নাম কী?
উঃ ডোপামিন।
161. ডিনেচার্ড স্পিরিট কী?
উঃ রেক্টিফায়েড স্পিরিটে 95% ইথানল থাকে। এই রেক্টিফায়েড স্পিরিটকে পানের অযোগ্য করার জন্য এর সঙ্গে প্রায় 10 ভাগ বিষাক্ত মিথানল এবং সামান্য উৎকট স্বাদযুক্ত পদার্থ ন্যাপথা, পিরিডিন প্রভৃতি মেশানো হয়। এই বিষাক্ত মিশ্রণকে ডিনেচার্ড স্পিরিট বা মেথিলেটেড স্পিরিট বলা হয়।
162. ডিনেচার্ড স্পিরিটের ব্যবহারগুলি লেখো।
উঃ কাঠের আসবাবপত্র পালিশের কাজে ব্যবহৃত মোম, গালা, রজন, বার্নিশ প্রভৃতি পদার্থের দ্রাবকরূপে, স্পিরিট ল্যাম্প, স্টোভ প্রভৃতিতে তরল জ্বালানিরূপে, রং প্রস্তুতিতে, বিভিন্ন জৈব পদার্থের দ্রাবকরূপে ডিনেচার্ড স্পিরিট ব্যবহৃত হয়।
163. মার্স গ্যাস কী?
উঃ আবদ্ধ জলাভূমিতে মৃত উদ্ভিদ এবং জীবজন্তুর পচনে উৎপন্ন মিথেন গ্যাসকেই মার্স গ্যাস বলা হয়।
164. র্যানি নিকেল কী?
উঃ Ni-Al-এর সংকর ধাতু ও NaOH-এর মিশ্রণকে উত্তপ্ত করলে অ্যালুমিনিয়াম দ্রবীভূত হয়ে যায়। অবশেষরূপে প্রাপ্ত নিকেল হল র্যানি নিকেল।
165. IUPAC-এর পুরো কথা কী?
উঃ International Union of Pure and Applied Chemistry
নীচে কতকগুলি জৈব যৌগের সংকেত ও তাদের IUPAC নাম দেওয়া হল। তৃতীয় বন্ধনীর [] মধ্যে যৌগগুলির প্রচলিত নাম দেওয়া হল।
- CH3 – CH3 ⇒ ইথেন (Ethane)
- CH3 – CH2 – CH3 ⇒ প্রোপেন (Propane)
- CH2 = CH2 ⇒ ইথিন (Ethene)
- CH3 – CH = CH2 ⇒ প্রোপিন (Propene)
- HC ≡ CH ⇒ ইথাইন (Ethyne), [অ্যাসিটিলিন]
- CH3 – C ≡ CH ⇒ প্রোপাইন (Propyne)
- CH3Cl ⇒ মিথাইল ক্লোরাইড (Methyl chloride)
- CH3CH2Cl ⇒ ইথাইল ক্লোরাইড (Ethyl chloride)
- CH3 – CH2 – CH2Cl ⇒ প্রোপাইল ক্লোরাইড (Propyl chloride)
- CH3CH(Cl)CH3 ⇒ 2-ক্লোরোপ্রোপেন (2-Chloropropane), [আইসোপ্রোপাইল ক্লোরাইড]
- CH3CH2CH2Br ⇒ ব্রোমোপ্রোপেন (Bromopropane), [আইসোপ্রোপাইল ব্রোমাইড]
- CH3OH ⇒ মিথানল/মিথাইল অ্যালকোহল (Methanol)
- CH3CH2OH ⇒ ইথানল/ইথাইল অ্যালকোহল (Ethanol)
- CH3CH2CH2OH ⇒ প্রোপানল (Propanol)
- CH3CH(OH)CH3 ⇒ 2-প্রোপানল/প্রোপান-2-অল (2-Propanol/Propan-2-ol), [আইসোপ্রোপানল/আইসোপ্রোপাইল অ্যালকোহল]
- HCHO ⇒ মিথান্যাল (Methanal), [ফর্ম্যালডিহাইড]
- CH3CHO ⇒ ইথান্যাল (Ethanal), [অ্যাসিট্যালডিহাইড]
- CH3CH2CHO ⇒ প্রোপান্যাল (Propanal)
- CH3COCH3 ⇒ প্রোপানোন (Propanone), [অ্যাসিটোন]
- HCOOH ⇒ মিথানোয়িক অ্যাসিড (Methanoic acid), [ফর্মিক অ্যাসিড]
- CH3COOH ⇒ ইথানোয়িক অ্যাসিড (Ethanoic acid), [অ্যাসিটিক অ্যাসিড]
- CH3CH2COOH ⇒ প্রোপানোয়িক অ্যাসিড (Propanoic acid)
- CH3 – O – CH3 ⇒ মিথোক্সিমিথেন (Methoxymethane), [ডাইমিথাইল ইথার]
Download মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞান পদার্থের ভৌত ও রাসায়নিক ধর্মসমূহ প্রশ্নোত্তর PDF
File Details:-
File Format:-PDF
Quality:- High
File Size:- 5 Mb
File Location:- Google Drive
Click Here to Download
আরও পড়ুন:
Others Important Link
Syllabus Link: Click Here
Questions Paper Link: Click Here
Admit Card Link: Click Here
Result Link: Click Here
Latest Job: Click Here
Age Calculator: Click Here
ঘোষণা: বিনামূল্যে আমাদের দেওয়া নোটস, সাজেশান, প্রশ্ন উত্তর ইত্যাদি স্টাডি ম্যাটেরিয়াল PDF এবং ভিডিও ক্লাস ভালো লাগলে, আমাদের এই পোস্টের লিংক আপনার বন্ধুদের ফেসবুক, WhatsApp এ শেয়ার করে তাদের পড়ার সুযোগ করে দিন।
Please do not share any spam link in the comment box