মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞান আলো প্রশ্নোত্তর - Madhyamik Physical Science

মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞান আলো প্রশ্নোত্তর PDF: প্রতিবছর বিভিন্ন সরকারি চাকরির পরীক্ষায় Madhyamik Physical Science আলো প্রশ্নোত্তর PDF থেকে অনেক প্রশ্ন আসে। তাই আমরা আপনাদের জন্য নিয়ে এসেছি মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞান আলো প্রশ্নোত্তর PDF

মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞান আলো প্রশ্নোত্তর - Madhyamik Physical Science

নিচে মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞান আলো প্রশ্নোত্তর PDF টি যত্নসহকারে পড়ুন ও জ্ঞানভাণ্ডার বৃদ্ধি করুন। মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞান আলো প্রশ্নোত্তর PDF টি সম্পূর্ণ বিনামূল্যে ডাউনলোড করতে এই পোস্টটির নীচে যান এবং ডাউনলোড করুন।


মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞান আলো প্রশ্নোত্তর - Madhyamik Physical Science


মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞান আলো প্রশ্নোত্তর PDF

Dear Students, Gksolves.com চাকরির পরীক্ষার প্রস্তুতির সেরা ঠিকানা, আজ আমরা আপনাদের জন্য নিয়ে এসেছি মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞান আলো প্রশ্নোত্তর PDF. প্রতিবছর বিভিন্ন সরকারি চাকরির যেমন Railway Group D | PSC Clerkship | WBCS | SSC CHSL | SSC CGL | SSC MTS | WBP Abgari Constable | WBP SI | WBP Constable | ICDS Supervisor | Railway Group D | RRB NTPC | PSC Miscellaneous | TET  | Upper Primary  | Group D ইত্যাদি পরীক্ষার মাধ্যমে নিয়োগ হয়ে থাকে। এই সমস্ত চাকরির পরীক্ষা ছাড়াও মাধ্যমিক, উচ্চমাধ্যমিক সম্বন্ধে আপনার সাধারণ ধারণা থাকা দরকার, তাই আমরা আপনাদের জন্য নিয়ে এসেছি মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞান আলো প্রশ্নোত্তর PDF যা আপনাদের পরীক্ষার প্রশ্নপত্র সম্পর্কে ধারণা গঠন করতে বিশেষ সাহায্য করবে। 



Google News এ আমাদের ফলো করুন


Gksolves Google News


মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞান আলো প্রশ্নোত্তর - Madhyamik Physical Science


আলো


1. গোলীয় দর্পণ কাকে বলে?

উঃ কোন প্রতিফলক তল কোন একটি গোলকের অংশ হলে তাকে গোলীয় দর্পণ (Spherical Mirror) বলে।


2. অবতল দর্পণ (Concave Mirror) কাকে বলে?

উঃ একটি গোলীয় দর্পণের ভেতরের তলটি অবতল প্রতিফলক রূপে কাজ করলে তাকে অবতল দর্পণ বলে।


3. উত্তল দর্পণ (Convex Mirror) কাকে বলে?

উঃ একটি গোলীয় দর্পণের বাইরের উত্তল তলটি প্রতিফলক রূপে কাজ করলে তাকে উত্তল দর্পণ বলে।


4. মেরু (Pole) কাকে বলে?

উঃ একটি গোলীয় দর্পণের প্রতিফলক তলের মধ্যবিন্দুকে অই দর্পণের মেরু বলে।


5. বক্রতা কেন্দ্র (Centre of Curvature) কাকে বলে?

উঃ একটি গোলীয় দর্পণ যে গোলকের অংশ সেই গোলকের কেন্দ্রকে ওই দর্পণের বক্রতা কেন্দ্র বলা হয়।


6. বক্রতা ব্যাসার্ধ (Radius of Curvature) কাকে বলে?

উঃ একটি গোলীয় দর্পণ যে গোলকের অংশ সেই গোলকের ব্যাসার্ধকে ওই গোলকের বক্রতা ব্যাসার্ধ বলে।


7. প্রধান অক্ষ (Principal Axis) কাকে বলে?

উঃ একটি গোলীয় দর্পণের বক্রতা কেন্দ্র ও মেরুর মধ্য দিয়ে অঙ্কিত সরল রেখাকে ওই দর্পণের প্রধান অক্ষ বলে।


8. অবতল দর্পণের মুখ্য ফোকাস কাকে বলে?

উঃ একগুচ্ছ সমান্তরাল আলোকরশ্মি প্রধান অক্ষের সমান্তরালে এসে অবতল দর্পণে আপতিত হলে প্রতিফলনের পরে রশ্মিগুলি প্রধান অক্ষের উপর একটি নির্দিষ্টবিন্দুতে মিলিত হয়। এই নির্দিষ্ট বিন্দুকে অবতল দর্পণের মুখ্য ফোকাস (Principal Focus) বলে।


9. উত্তল দর্পণের মুখ্য ফোকাস কাকে বলে?

উঃ একগুচ্ছ সমান্তরাল আলোকরশ্মি প্রধান অক্ষের সমান্তরালে উত্তল দর্পণে আপতিত হলে প্রতিফলনের পরে রশ্মিগুলি প্রধান অক্ষের উপর একটি নির্দিষ্ট বিন্দু থেকে অপসৃত হচ্ছে বলে মনে হয়। এই নির্দিষ্ট বিন্দুকে উত্তল দর্পণের মুখ্য ফোকাস বলে।


10. ফোকাস দূরত্ব কাকে বলে?

উঃ দর্পণের মেরু থেকে মুখ্য ফোকাসের দুরত্বকে দর্পণের ফোকাস দূরত্ব (Focul Length) বলে।


11. উপাক্ষীয় রশ্মি কাকে বলে?

উঃ যে সব আলোকরশ্মি প্রধান অক্ষের সঙ্গে খুব কম কোণ করে দর্পণের মেরুর খুব কাছে আপতিত হয় তাদের উপাক্ষীয় রশ্মি বলে।


12. উপাক্ষীয় রশ্মির ক্ষেত্রে গোলীয় দর্পণের বক্রতা ব্যাসার্ধ ও ফোকাস দূরত্বের মধ্যে সম্পর্কটি লেখো।

উঃ গোলীয় দর্পণের বক্রতা ব্যাসার্ধ = r এবং ফোকাস দূরত্ব = f হলে,

উপাক্ষীয় রশ্মির ক্ষেত্রে r = 2f হবে।


13. দৈনন্দিন জীবনে ব্যবহৃত দুটি গোলীয় দর্পণের নাম লেখো।

উঃ স্টিলের চামচ, স্টিলের বাটি প্রভৃতি।


14. গোলীয় দর্পণের ফোকাস দূরত্ব কি আলোর বর্ণের উপর নির্ভর করে?

উঃ না, গোলীয় দর্পণের ফোকাস দূরত্ব সব বর্ণের আলোর ক্ষেত্রে সমান। এমনকি জলে নিমজ্জিত অবস্থাতেও দর্পণের ফোকাস দূরত্বের কোনো পরিবর্তন হয় না। অর্থাৎ দর্পণের ফোকাস দূরত্ব মাধ্যমের প্রকৃতির উপর নির্ভর করে না।


15. উত্তল দর্পণের দৃষ্টিক্ষেত্র কাকে বলে?

উঃ যে কৌণিক বিস্তারের মধ্যে উত্তল দর্পণের সামনে অবস্থিত কোনো বস্তুর প্রতিবিম্ব দর্পণটিতে তৈরি হয়, সেই কৌণিক বিস্তারকে উত্তল দর্পণটির দৃষ্টিক্ষেত্র বলে।


16. অবতল ও উত্তল দর্পণের একটি ব্যবহার লেখো।

উঃ দাঁতের ডাক্তাররা দাঁত পরীক্ষা করার জন্য অবতল দর্পণ ব্যবহার করেন, গাড়ির হেডলাইটে অবতল দর্পণ ব্যবহার করা হয়।

মোটরগাড়ি, স্কুটারের পিছনে থাকা গাড়িকে দেখার জন্য রিয়ার ভিউ মিরর হিসাবে উত্তল দর্পণ ব্যবহার করা হয়, রাস্তার আলোর প্রতিফলক হিসাবে উত্তল দর্পণ ব্যবহার করা হয়।


17. সমতল দর্পণের বক্রতা ব্যাসার্ধ ও ফোকাস দূরত্বের মান লেখ।

উঃ সমতল দর্পণের বক্রতা ব্যাসার্ধ ও ফোকাস দূরত্ব উভয়ই অসীম। তাই সমতল দর্পণের ক্ষমতা শূন্য।


18. অবতল দর্পণের প্রধান অক্ষের সমান্তরাল আলোকরশ্মির কীরূপ প্রতিফলন হয়?

উঃ অবতল দর্পণের প্রধান অক্ষের সমান্তরালে আগত আলোকরশ্মি প্রতিফলনের পর দর্পণটির ফোকাস বিন্দুর মধ্য দিয়ে যায়।


19. উত্তল দর্পণের বক্রতাকেন্দ্রের দিকে পরিচালিত রশ্মি প্রতিফলনের পর কোন পথে যায়?

উঃ এই রশ্মি যে পথে আপতিত হয় প্রতিফলিত হওয়ার পর সেই একই পথে ফিরে যাবে। কারণ বক্রতাকেন্দ্রের মধ্য দিয়ে গিয়ে দর্পণে আপতিত হওয়ার অর্থ হল দর্পণে লম্বভাবে আপতিত হওয়া।


20. অবতল দর্পণের সামনে কোথায় একটি বস্তু রাখলে বস্তুর বিবর্ধিত অসদ্‌বিম্ব গঠিত হয়?

উঃ বস্তুকে অবতল দর্পণের ফোকাস ও মেরুর মধ্যে রাখলে অসদ্‌ বিবর্ধিত প্রতিবিম্ব গঠিত হয়।


21. একটি বস্তুকে কোনো অবতল দর্পণের ফোকাস ও মেরুর মধ্যে রাখলে প্রতিবিম্বের প্রকৃতি কীরূপ হবে?

উঃ প্রতিবিম্বটি অসদ্, সমশীর্ষ এবং বিবর্ধিত হয়।


22. একটি বস্তুকে কোনো অবতল দর্পণের ফোকাস ও বক্রতাকেন্দ্রের মধ্যে রাখলে প্রতিবিম্বের প্রকৃতি কীরূপ হবে?

উঃ প্রতিবিম্বটি সদ্, অবশীর্ষ এবং বিবর্ধিত হয়।


23. অবতল দর্পণের সামনে কোথায় বস্তু রাখলে বস্তুর প্রতিবিম্ব বস্তুর আকৃতির সমান হবে?

উঃ বক্রতা কেন্দ্রে। এক্ষেত্রে প্রতিবিম্ব সদ্, অবশীর্ষ ও বস্তুর আকৃতির সমান হবে।


24. কোনো অবতল দর্পণের ক্ষেত্রে বস্তু বক্রতা কেন্দ্রে থাকলে প্রতিবিম্ব কোথায় গঠিত হবে?

উঃ বক্রতা কেন্দ্রে।


25. উত্তল দর্পণ দ্বারা গঠিত বস্তুর প্রতিবিম্বের প্রকৃতি কীরূপ হবে?

উঃ প্রতিবিম্বটি অসদ্, সমশীর্ষ এবং বস্তু অপেক্ষা আকারে ক্ষুদ্রতর হয়।


26. স্ট্রিটল্যাম্পের প্রতিফলক হিসাবে কী ধরণের দর্পণ ব্যবহার করা হয়?

উঃ উত্তল দর্পণ। কারণ এই প্রতিফলক বিস্তীর্ণ জায়গা জুড়ে আলোকে ছড়িয়ে দেয়।


27. গাড়ির হেডলাইটে কোন দর্পণ ব্যবহার করা হয়?

উঃ অবতল দর্পণ।


28. একটি অবতল দর্পণ দ্বারা একটি বাতির প্রতিবিম্ব পর্দায় ফেলা হল। দর্পণটির কিছু অংশ আবৃত করে দিলে প্রতিবিম্বটির কী পরিবর্তন লক্ষ করা যাবে?

উঃ দর্পণটির কিছু অংশ আবৃত করে দিলে সমগ্র দর্পণটি প্রতিবিম্ব গঠনে কার্যকরী ভূমিকা নেয় না। দর্পণের অনাবৃত অংশ দ্বারাই প্রতিবিম্ব গঠিত হবে কিন্তু গঠিত প্রতিবিম্বের উজ্জ্বলতা কম হবে।


29. একই উচ্চতা বিশিষ্ট দুজন ব্যক্তির মধ্যে একজন দোকানের ভিতরে এবং অন্যজন দোকানের বাইরে দাঁড়িয়ে আছে। বাইরে থাকে ব্যক্তিটি জানালার কাচে প্রতিফলনের জন্য নিজের প্রতিবিম্বকে জানালার পিছনে দেখতে পেল এবং তা অন্য লোকটির তুলনায় আকারে বড়ো মনে হল। জানালার কাচটি কী প্রকৃতির?

উঃ বাইরের দিকের জানালার কাচটি অবতল দর্পণের মত কাজ করছে। আমারা জানি কোনো অবতল দর্পণের ফোকাস দূরত্বের মধ্যে কোনো বস্তু রাখলে দর্পণটির পিছনে অসদ্, সমশীর্ষ, বিবর্ধিত প্রতিবিম্ব গঠিত হয়। উত্তল দর্পণের ক্ষেত্রে বস্তু অপেক্ষা আকারে ছোটো এবং সমতল দর্পণেরর ক্ষেত্রে বস্তুর সমান আকারের প্রতিবিম্ব গঠিত হয়। স্পষ্টতই লোকটি জানালার কাছে অর্থাৎ অবতল দর্পণের ফোকাস দূরত্বের মধ্যে ছিল।


30. হাত দিয়ে স্পর্শ না করে একটি দর্পণ সমতল, উত্তল বা অবতল কীভাবে বুঝবে?

উঃ পরীক্ষাধীন দর্পণটির খুব কাছে একটি কলম বা হাতের একটি আঙুল খাড়াভাবে রাখলে যদি বস্তুর সমান আকারের সমশীর্ষ অসদ্ প্রতিবিম্ব দেখা যায় তাহলে বুঝতে হবে দর্পণটি সমতল। সমশীর্ষ অসদবিম্বটিকে অপেক্ষাকৃত বড়ো দেখালে বুঝতে হবে দর্পণটি অবতল, অন্যদিকে, অপেক্ষাকৃত ছোটো দেখালে বুঝতে হবে দর্পণটি উত্তল।


31. আলোর প্রতিসরণ (Refraction of Light) কী?

উঃ দুটি মাধ্যমের বিভেদ তলের মধ্য দিয়ে আলো যদি আনত ভাবে এক মাধ্যম থেকে অপর মাধ্যমে প্রবেশ করে তবে এই বিভেদ তলে আলোকরশ্মির অভিমুখের পরিবর্তন ঘটে। এই ঘটনাকে আলোর প্রতিসরণ বলা হয়।


32. আলোর প্রতিসরণের সূত্রগুলি লেখ।

উঃ আলোর প্রতিসরণ দুটি সূত্র মেনে চলে। এদের প্রতিসরণের সূত্র বলা হয়।

১। আপতিত রশ্মি, প্রতিসৃত রশ্মি এবং আপতন বিন্দুতে দুই মাধ্যমের বিভেদ তলের উপর অঙ্কিত অভিলম্ব সর্বদা একই সমতলে থাকে।

২। নির্দিষ্ট দুটি মাধ্যমে ও নির্দিষ্ট বর্ণের আলোর ক্ষেত্রে আপতন কোণের সাইন ও প্রতিসরণ কোণের সাইনের অনুপাত সর্বদা ধ্রুবক হয়। এই সূত্রটিকে স্নেলের সূত্রও বলা হয়।


33. প্রতিসরাঙ্ক বা আপেক্ষিক প্রতিসরাঙ্ক কাকে বলে?

উঃ যখন কোন আলোকরশ্মি একটি মাধ্যম a থেকে অপর একটি মাধ্যম b-তে প্রতিসৃত হয়, তখন আপতন কোণের সাইন ও প্রতিসরণ কোণের সাইনের অনুপাতকে ‘a মাধ্যমের সাপেক্ষে b মাধ্যমের প্রতিসরাঙ্ক’ বলা হয়। এই প্রতিসরাঙ্ককে aµb লেখা হয়। অর্থাৎ aµb = sin i/sin r, i= আপতন কোণ, r= প্রতিসরণ কোণ। এই প্রতিসরাঙ্ককে আপেক্ষিক প্রতিসরাঙ্কও (Relative refractive index) বলা হয়।


34. পরম প্রতিসরাঙ্ক (Absolute refractive index) বলতে কি বোঝ?

উঃ যখন কোন আলোকরশ্মি শূন্যস্থান থেকে অন্য কোন মাধ্যমে প্রতিসৃত হয়, তখন আপতন কোণের সাইন ও প্রতিসরণ কোণের সাইনের অনুপাতকে ওই মাধ্যমের পরম প্রতিসরাঙ্ক বলা হয়।


35. শূন্যস্থানের প্রতিসরাঙ্ক কত?

উঃ শূন্যস্থানের প্রতিসরাঙ্ক 1 ধরা হয়।


36. বায়ুর প্রতিসরাঙ্ক কত?

উঃ বায়ুর প্রতিসরাঙ্ক শূন্যস্থানের প্রতিসরাঙ্কের (1) প্রায় সমান ধরা হয়।


37. কৌণিক চ্যুতি (δ) বলতে কী বোঝ?

উঃ প্রতিসরণের ফলে আপতিত রশ্মির অভিমুখ এবং প্রতিসৃত রশ্মির অভিমুখের মধ্যে যে কোন উৎপন্ন হয় তাকে আলোকরশ্মির কৌণিক চ্যুতি (δ) বলে।


38. মাধ্যমের প্রকৃতি বা ঘনত্বের উপর নির্ভর করে প্রতিসরণের প্রকৃতি কেমন হয়?

উঃ আলোকরশ্মি লঘু মাধ্যম থেকে ঘন মাধ্যমে (যেমন বায়ু থেকে জল বা কাচে) গেলে প্রতিসরণের পর প্রতিসৃত রশ্মি অভিলম্বের দিকে সরে যায়। লঘু মাধ্যম থেকে ঘন মাধ্যমে প্রতিসরণের ক্ষেত্রে আপতন কোণ (i), প্রতিসরণ কোণ (r)-এর চেয়ে বড়ো হয়, এক্ষেত্রে চ্যুতি (δ) = i - r হয়।

আলোকরশ্মি ঘন মাধ্যম থেকে লঘু মাধ্যমে (যেমন কাচ থেকে জল বা বায়ুতে) গেলে প্রতিসরণের পর প্রতিসৃত রশ্মি অভিলম্ব থেকে দূরে সরে যায়। ঘন মাধ্যম থেকে লঘু মাধ্যমে প্রতিসরণের ক্ষেত্রে আপতন কোণ (i), প্রতিসরণ কোণ (r)-এর চেয়ে ছোটো হয়, এক্ষেত্রে চ্যুতি (δ) = r - i হয়।


39. সর্বোচ্চ এবং সর্বনিম্ন চ্যুতির শর্ত লেখো।

উঃ সর্বনিম্ন চ্যুতিঃ দুই মাধ্যমের বিভেদতলের ওপর লম্ব আপতনের ক্ষেত্রে অর্থাৎ i = 0 হলে, r = 0। তাই δ–এর মান সর্বনিম্ন হয়।

সর্বোচ্চ চ্যুতিঃ আপতন কোণ (i)-এর সর্বোচ্চ মানের ক্ষেত্রে অর্থাৎ i = 90 ডিগ্রি হলে δ–এর মান সর্বোচ্চ হয়।


40. আলোকরশ্মি কোনো মাধ্যমের ওপর লম্বভাবে আপতিত হলে তার চ্যুতি কত হবে?

উঃ যদি আলোকরশ্মি এক মাধ্যম থেকে অপর মাধ্যমের বিভেদতলের ওপর লম্বভাবে আপতিত হয়, তাহলে i = 0। সেক্ষেত্রে স্নেলের সূত্রানুসারে,

µ × sin r = sin 0 = 0,

বা r = 0, যেহেতু বাস্তবে µ–এর মান শূন্য হতে পারে না।

অর্থাৎ, দুই মাধ্যমের বিভেদতলে আলোকরশ্মি লম্বভাবে আপতিত হলে তা দিক পরিবর্তন না করে (δ = 0) দ্বিতীয় মাধ্যমের মধ্য দিয়ে চলে যায়। এক্ষেত্রে স্নেলের সূত্রটি প্রযোজ্য হয় না।


41. প্রিজম কাকে বলে

উঃ পরস্পরের সঙ্গে আনত দুটি সমতল দ্বারা সীমাবদ্ধ কোন স্বচ্ছ প্রতিসারক মাধ্যমের অংশ বিশেষকে প্রিজম বলা হয়।


42. প্রতিসারক তল কাকে বলে?

উঃ পরস্পরের সঙ্গে আনত যে দুটি সমতল দ্বারা প্রিজম গঠিত হয়, তাকে তাদের প্রতিসারক তল বলে।


43. প্রান্তরেখা কাকে বলে?

উঃ প্রিজমের প্রতিসারক তল দুটি যে সরলরেখায় মিলিত হয় তাকে প্রিজমের প্রান্তরেখা বলা হয়।


44. প্রধান ছেদ কাকে বলে?

উঃ প্রিজমের প্রান্তরেখার সঙ্গে লম্বভাবে একটি সমতল কল্পনা করলে ওই তলে প্রিজমের যে ত্রিভুজাকৃতি ছেদ পাওয়া যায় তাকে প্রিজমের প্রধান ছেদ বলে।


45. প্রতিসারক কোণ বা প্রিজমের কোণ (Refracting angle) কাকে বলে?

উঃ প্রিজমের প্রতিসারক তল দুটি যে কোণে আনত থাকে সেই কোণকে প্রিজমের প্রতিসারক কোণ বা প্রিজমের কোণ বলে।


46. প্রিজমের পার্শ্বতল কাকে বলে?

উঃ কোন প্রিজম সাধারণত তার প্রতিসারক তল দুটি ছাড়া আরও তিনটি তল দ্বারা সীমাবদ্ধ থাকে। এই তল তিনটির মধ্যে দুটি তল ত্রিভুজাকৃতি এবং প্রান্তরেখার সঙ্গে লম্বভাবে থাকে। ওই তল দুটিকে প্রিজমের পার্শ্বতল বলা হয়।


47. প্রিজমের ভূমি কাকে বলে?

উঃ প্রিজমের দুটি প্রতিসারক তল যে রেখায় মিলিত হয় তাকে প্রান্তরেখা বলে। প্রিজমের প্রান্তরেখার বিপরীত তলকে প্রিজমের ভূমি বলে। এই তলটি আয়তাকার।


48. প্রিজমে আলোকরশ্মির প্রতিসরণের ক্ষেত্রে চ্যুতিকোণের রাশিমালাটি লেখো।

উঃ প্রিজমের প্রথম তলে আলোকরশ্মির আপতন কোণ = i1, প্রতিসরণের পর প্রিজমের দ্বিতীয় তল থেকে নির্গত আলোকরশ্মির প্রতিসরণ কোণ = i2 এবং প্রিজমের প্রতিসারক কোণ = A হলে,

চ্যুতিকোণ, δ = i1 + i2 - A


49. একটি সমান্তরাল কাচ ফলকে আলোকরশ্মি লম্বভাবে আপতিত হলে প্রতিসরণ কোণ কত হবে?

উঃ শূন্য (0) ডিগ্রি।


50. আপতন কোণের মান কত হলে µ=sin i⁄sin r সূত্রটি প্রযোজ্য হবে না?

উঃ শূন্য (0) ডিগ্রি।


51. বায়ু সাপেক্ষে কাচের প্রতিসরাঙ্ক 1.5 বলতে কী বোঝ?

উঃ আলোকরশ্মি বায়ু থেকে কাচে প্রবেশ করে প্রতিসৃত হলে আপতন কোণের সাইন (sin i) ও প্রতিসরণ কোণের সাইন (sin r)-এর অনুপাত 1.5 হয়।


52. এক মাধ্যম থেকে আলোকরশ্মি তির্যকভাবে অপর একটি মাধ্যমে পড়ল। প্রতিসরণের পর রশ্মিটি অভিলম্ব থেকে আরও 10o কৌণিক দূরত্বে সরে গেল। কোনটি ঘনতর মাধ্যম? প্রতিসরণ কোণ 50o হলে আপতন কোণের মান কত?

উঃ যেহেতু প্রতিসৃত রশ্মিটি অভিলম্ব থেকে দূরে সরে গেছে, তাই প্রথম মাধ্যমটি ঘনতর এবং দ্বিতীয় মাধ্যমটি লঘুতর।

আমরা জানি ঘন মাধ্যম থেকে লঘু মাধ্যমে প্রতিসরণের ক্ষেত্রে

চ্যুতিকোণ = প্রতিসরণ কোণ – আপতন কোণ

বা δ = r – i

বা 10o = 50o – আপতন কোণ

বা, আপতন কোণ = 50o – 10o = 40o


53. লেন্স কী?

উঃ দুটি গোলীয় তল অথবা একটি গোলীয় তল এবং একটি সমতল দ্বারা সীমাবদ্ধ কোন সমসত্ত্ব স্বচ্ছ প্রতিসারক মাধ্যমকে লেন্স বলে।


54. লেন্স কয় প্রকার ও কী কী?

উঃ লেন্স প্রধানত দুই প্রকার। যথা- (১) উত্তল বা অভিসারী লেন্স এবং (২) অবতল বা অপসারী লেন্স।


55. উত্তল লেন্স কাকে বলে?

উঃ যে লেন্সের মাঝের অংশটি মোটা এবং দুপ্রান্ত সরু তাকে উত্তল লেন্স বলে।


56. অবতল লেন্স কাকে বলে?

উঃ যে লেন্সের মাঝের অংশটি সরু এবং প্রান্তের দিকগুলি মোটা তাকে অবতল লেন্স বলে।


57. উত্তল লেন্স কয় প্রকার ও কী কী?

উঃ উত্তল লেন্স তিন প্রকারের হতে পারে। যথা- (১) উভোত্তল, (২) সমতলোত্তল ও (৩) অবতলোত্তল।


58. অবতল লেন্স কয় প্রকার ও কী কী?

উঃ অবতল লেন্স তিন প্রকারের হতে পারে। যথা- (১) উভাবতল, (২) সমতলাবতল, ও (৩) উত্তলাবতল।


59. উভোত্তল লেন্স কাকে বলে?

উঃ যে লেন্সের উভয়তলই উত্তল তাকে উভোত্তল লেন্স বলে।


60. সমতলোত্তল লেন্স কাকে বলে?

উঃ যে লেন্সের একটি তল সমতল এবং অপর তলটি উত্তল তাকে সমলোত্তল লেন্স বলে।


61. অবতলোত্তল লেন্স কাকে বলে?

উঃ যে লেন্সের একটি তল অবতল এবং অপর তলটি উত্তল তাকে অবতলোত্তল লেন্স বলে।


62. উভাবতল লেন্স কাকে বলে?

উঃ যে লেন্সের উভয় তলই অবতল তাকে উভাবতল লেন্স বলে।


63. সমতলাবতল লেন্স কাকে বলে?

উঃ যে লেন্সের একটি তল সমতল এবং অপর তলটি অবতল তাকে সমতলাবতল লেন্স বলে।


64. উত্তলাবতল লেন্স কাকে বলে?

উঃ যে লেন্সের একটি তল অবতল এবং অপর তলটি উত্তল তাকে উত্তলাবতল লেন্স বলে।


65. লেন্সের বক্রতা কেন্দ্র কাকে বলে?

উঃ লেন্সের দুটি তলই সাধারণত গোলীয় হয়। ওই দুটি তল যে গোলক দুটির অংশ তাদের কেন্দ্রদুটিকে লেন্সের বক্রতা কেন্দ্র বলে।


66. লেন্সের বক্রতা ব্যাসার্ধ কাকে বলে?

উঃ লেন্সের দুটি বক্রতল যে গোলক দুটির অংশ তাদের ব্যাসার্ধ দুটিকে লেন্সের বক্রতা ব্যাসার্ধ বলে।


67. পাতলা লেন্সের আলোককেন্দ্র কাকে বলে?

উঃ পাতলা লেন্সের আলোককেন্দ্র হল লেন্সটির প্রধান অক্ষের উপর অবস্থিত এরূপ এক বিন্দু যার মধ্য দিয়ে আলোকরশ্মি গেলে রশ্মিটির কোনো চ্যুতি এবং সরণ হয় না, রশ্মিটি সোজা পথে লেন্সের মধ্য দিয়ে চলে যায়।


68. লেন্সের মুখ্য ফোকাস কাকে বলে?

উঃ লেন্সের দুটি মুখ্য ফোকাস থাকে। সাধারণভাবে লেন্সের মুখ্য ফোকাস বলতে দ্বিতীয় মুখ্য ফোকাসকেই বোঝায়। নীচে লেন্সের বিভিন্ন প্রকার ফোকাস সম্পর্কে আলোচনা করা হল।

উত্তল লেন্সের প্রথম মুখ্য ফোকাসঃ প্রধান অক্ষের উপর অবস্থিত যে বিন্দু থেকে অপসৃত রশ্মিগুচ্ছ প্রতিসরণের পর প্রধান অক্ষের সমান্তরালভাবে নির্গত হয়, সেই বিন্দুকে উত্তল লেন্সের প্রথম মুখ্য ফোকাস বলে।

অবতল লেন্সের প্রথম মুখ্য ফোকাসঃ প্রধান অক্ষের উপর অবস্থিত যে বিন্দুর দিকে আগত অভিসারী আলোকরশ্মিগুচ্ছ প্রতিসরণের পর প্রধান অক্ষের সমান্তরালভাবে নির্গত হয়, সেই বিন্দুকে অবতল লেন্সের প্রথম মুখ্য ফোকাস বলে।

উত্তল লেন্সের দ্বিতীয় মুখ্য ফোকাসঃ সমান্তরাল আলোকরশ্মিগুচ্ছ কোনো উত্তল লেন্সের প্রধান অক্ষের সমান্তরালে এসে লেন্সে প্রতিসরণের পরে প্রধান অক্ষের উপর অবস্থিত যে নির্দিষ্ট বিন্দুতে মিলিত হয়, তাকে ঐ লেন্সটির দ্বিতীয় মুখ্য ফোকাস বলে।

অবতল লেন্সের দ্বিতীয় মুখ্য ফোকাসঃ সমান্তরাল আলোকরশ্মিগুচ্ছ কোনো অবতল লেন্সের প্রধান অক্ষের সমান্তরালে এসে লেন্সে প্রতিসরণের পরে প্রধান অক্ষের উপর অবস্থিত যে নির্দিষ্ট বিন্দু থেকে অপসৃত হচ্ছে বলে মনে হয়, তাকে ঐ লেন্সটির দ্বিতীয় মুখ্য ফোকাস বলে।


69. লেন্সের ফোকাস দূরত্ব কাকে বলে?

উঃ কোনো লেন্সের আলোককেন্দ্র থেকে মুখ্য ফোকাস পর্যন্ত দূরত্বকে ওই লেন্সের ফোকাস দূরত্ব (f) বলা হয়।


70. লেন্সের ফোকাস তল কাকে বলে?

উঃ কোনো লেন্সের মুখ্য ফোকাসের মধ্য দিয়ে এবং প্রধান অক্ষের সঙ্গে লম্বভাবে যে তল কল্পনা করা হয় তাকে ফোকাস তল বলা হয়।


71. উত্তল লেন্সকে অভিসারী লেন্স বলা হয় কেন?

উঃ আলোকরশ্মিগুচ্ছ উত্তল লেন্সে প্রতিসৃত হলে রশ্মিগুলি প্রধান অক্ষের দিকে বেঁকে অর্থাৎ রশ্মিগুলি পরস্পরের কাছাকাছি চলে আসে। তাই উত্তল লেন্সকে অভিসারী লেন্স বলে।


72. অবতল লেন্সকে অপসারী লেন্স বলা হয় কেন?

উঃ আলোকরশ্মিগুচ্ছ অবতল লেন্সে প্রতিসৃত হলে রশ্মিগুলি প্রধান অক্ষ থেকে দূরের দিকে বেঁকে যায় অর্থাৎ রশ্মিগুলি পরস্পরের থেকে দূরে সরে যায়। তাই অবতল লেন্সকে অপসারী লেন্স বলে।


73. উত্তল লেন্স অভিসারী লেন্সের মত আচরণ করে কেন?

উঃ একটি উত্তল লেন্সের মধ্যাংশকে একটি সমান্তরাল ফলক এবং অবশিষ্ট অংশকে কতকগুলি ছোটো ছোটো খণ্ডিত প্রিজমের সমষ্টি হিসাবে ধরা যেতে পারে। এই সব প্রিজমের ভূমি লেন্সের প্রধান অক্ষের দিকে থাকে এবং প্রধান অক্ষ থেকে প্রান্তের দিকে গেলে প্রিজমের প্রতিসারক কোণ ক্রমশই বাড়তে থাকে। আমরা জানি, আলোকরশ্মি বায়ুতে থাকা প্রিজমের মধ্য দিয়ে যাওয়ার সময় প্রিজমের ভূমির দিকে বেঁকে যায় এবং যে প্রিজমের প্রতিসারক কোণ যত বেশি হয়সেই প্রিজমের ক্ষেত্রে আলোকরশ্মি তত বেশি বেঁকে যায় (অর্থাৎ আলোকরশ্মির চ্যুতি তত বেশি হয়)। তাই রশ্মি লেন্সের প্রধান অক্ষ থেকে যত দূরে আপতিত হয় তার চ্যুতি তত বেশি হয়। ফলে উত্তল লেন্সের মধ্য দিয়ে প্রতিসৃত হয়ে সমান্তরাল রশ্মিগুচ্ছ একটি অভিসারী রশ্মিগুচ্ছে পরিণত হয় এবং প্রধান অক্ষের ওপর একটি নির্দিষ্ট বিন্দুতে মিলিত হয়। এজন্য উত্তল লেন্সকে অভিসারী লেন্স বলে।


74. অবতল লেন্স অপসারী লেন্সের মত আচরণ করে কেন?

উঃ একটি অবতল লেন্সের মধ্যাংশকে একটি সমান্তরাল ফলক এবং অবশিষ্ট অংশকে কতকগুলি ছোটো ছোটো ও খণ্ডিত প্রিজমের সমষ্টি হিসাবে ধরা যেতে পারে। এইসব প্রিজমের ভূমি অবতল লেন্সের প্রান্তের দিকে থাকে। এক্ষেত্রে আলোকরশ্মি প্রিজমের মধ্য দিয়ে যাওয়ার সময় ভূমির দিকে বেঁকে যায় অর্থাৎ লেন্সের প্রান্তের দিকে সরে যায় অথবা বলা যায়, লেন্সের প্রধান অক্ষ থেকে দূরে সরে যায়। প্রধান অক্ষ থেকে আপতিত রশ্মির দূরত্ব বাড়লে তার চ্যুতিও বাড়ে। ফলে অবতল লেন্সের মধ্য দিয়ে প্রতিসৃত হয়ে সমান্তরাল রশ্মিগুচ্ছ একটি অপসারী রশ্মিগুচ্ছে পরিণত হয় এবং প্রধান অক্ষের ওপর অবস্থিত একটি নির্দিষ্ট বিন্দু থেকে অপসৃত হচ্ছে বলে মনে হয়। এজন্য অবতল লেন্সকে অপসারী লেন্স বলা হয়।


75. একটি উত্তল লেন্স সর্বদাই অভিসারী লেন্সের মত আচরণ করে-উক্তিটির যথার্থতা বিচার করো।

উঃ সাধারণত উত্তল লেন্স অভিসারী লেন্সের মতো এবং অবতল লেন্স অপসারী লেন্সের মতো আচরণ করে। তবে লেন্সগুলি যখন এমন একটি মাধ্যমের মধ্যে থাকে যার প্রতিসরাঙ্ক লেন্সের উপাদানের প্রতিসরাঙ্ক অপেক্ষা কম তখনই এধরণের আচরণ দেখা যায়। কিন্তু যদি লেন্সের উপাদানের প্রতিসরাঙ্ক যে মাধ্যমে লেন্সটি থাকে সেই মাধ্যমের প্রতিসরাঙ্ক অপেক্ষা কম হয় তাহলে উত্তল লেন্স অপসারী লেন্স, অর্থাৎ অবতল লেন্সের মতো এবং অবতল লেন্স অভিসারী লেন্স অর্থাৎ উত্তল লেন্সের মতো আচরণ করে।


76. পাতলা লেন্স বলতে কী বোঝ?

উঃ যে লেন্সের বেধ লেন্সের তলের বক্রতা ব্যাসার্ধের তুলনায় নগণ্য তাকে পাতলা লেন্স বলে।


77. কোনো বস্তু উত্তল লেন্স থেকে 2f-এর বেশি দূরত্বে অবস্থিত হলে প্রতিবিম্বের প্রকৃতি কেমন হবে?

উঃ লেন্সের যে পাশে বস্তু আছে প্রতিবিম্বটি তার অপর পাশে লেন্স থেকে f ও 2f দূরত্বের মধ্যে গঠিত হবে। প্রতিবিম্বটি সদ্, অবশীর্ষ এবং বস্তু অপেক্ষা আকারে ছোটো হবে।

প্রয়োগঃ ক্যামেরায় উত্তল লেন্স এই কার্যনীতিতে ব্যবহার করা হয়।


78. কোনো বস্তু উত্তল লেন্সের f ও 2f দূরত্বের মধ্যে অবস্থিত হলে প্রতিবিম্বের প্রকৃতি কেমন হবে?

উঃ লেন্সের যে পাশে বস্তু থাকে প্রতিবিম্বটি তার উল্টোদিকে লেন্স থেকে 2f-এর বেশি দূরত্বে গঠিত হয়। প্রতিবিম্বটি সদ্, অবশীর্ষ এবং বস্তু অপেক্ষা আকারে বড়ো হবে।

প্রয়োগঃ সিনেমার পর্দায় উত্তল লেন্স এইভাবে ব্যবহার করে প্রতিবিম্ব গঠন করা হয়।


79. কোনো বস্তু উত্তল লেন্সের ফোকাস দূরত্বের মধ্যে অবস্থিত হলে প্রতিবিম্বের প্রকৃতি কেমন হবে?

উঃ বস্তুটি লেন্সের যেদিকে অবস্থিত প্রতিবিম্ব সেই দিকেই গঠিত হয়। প্রতিবিম্বটি অসদ্, সমশীর্ষ এবং বস্তু অপেক্ষা আকারে বড়ো হয়।

প্রয়োগঃ বিবর্ধক কাচ রূপে, অণুবীক্ষণ যন্ত্রে উত্তল লেন্স এইভাবে ব্যবহার করা হয়।


80. অবতল লেন্স দ্বারা কোনো বস্তুর প্রতিবিম্ব গঠিত হলে তার প্রকৃতি কেমন হবে?

উঃ বস্তুটি লেন্সের যেদিকে অবস্থিত প্রতিবিম্ব সেই দিকেই গঠিত হয়। প্রতিবিম্বটি অসদ্, সমশীর্ষ এবং বস্তু অপেক্ষা আকারে ছোট হয়।

প্রয়োগঃ হ্রস্বদৃষ্টি বা মায়োপিয়া ত্রুটি দূর করতে চশমায় ব্যবহার করা হয়।


81. রৈখিক বিবর্ধন কাকে বলে?

উঃ কোনো লেন্স দ্বারা সৃষ্ট প্রতিবিম্বের দৈর্ঘ্য বা উচ্চতা এবং বস্তুর দৈর্ঘ্য বা উচ্চতার অনুপাতকে ওই প্রতিবিম্বের রৈখিক বিবর্ধন (m) বলা হয়।

রৈখিক বিবর্ধন (m) = প্রতিবিম্বের দৈর্ঘ্য বা উচ্চতা (l)⁄বস্তুর দৈর্ঘ্য বা উচ্চতা (O)। এছাড়া লেন্সে কোনো বস্তুর প্রতিবিম্ব সৃষ্টি হলে আলোককেন্দ্র থেকে বস্তুর দূরত্ব ‘u’ ও প্রতিবিম্বের দূরত্ব ‘v’ হলে,

রৈখিক বিবর্ধন (m) = প্রতিবিম্বের দূরত্ব (v)⁄বস্তুর দূরত্ব (u)


82. ক্যামেরায় গঠিত প্রতিবিম্বের প্রকৃতি কিরূপ হয়?

উঃ সদ্, অবশীর্ষ এবং বস্তু অপেক্ষা আকারে ছোটো হয়।


83. অক্ষিগোলক (Eye ball) বলতে কী বোঝ?

উঃ মানুষের চোখের আকার প্রায় গোলকাকার, একে অক্ষিগোলক বলে।


84. কর্নিয়া (Cornea) কাকে বলে?

উঃ চোখের বাইরের দিকে একটি সাদা ও স্বচ্ছ আবরণ থাকে, একে স্ক্লেরোটিক বলে। স্ক্লেরোটিকের সামনের অংশটি হল কর্নিয়া।


85. রেটিনা (Retina) কাকে বলে?

উঃ চোখের কৃষ্ণমণ্ডলের গায়ে সূক্ষ্ম সূক্ষ্ম স্নায়ুর দ্বারা গঠিত একটি আলোক সুবেদী পর্দা আছে। একে রেটিনা বলে।


86. অ্যাকোয়াস হিউমার কাকে বলে?

উঃ কর্নিয়া ও চক্ষুলেন্সের মধ্যবর্তী স্থানে জলের মতো এক প্রকার তরল পদার্থ থাকে। একেই অ্যাকোয়াস হিউমার বলে।


87. ভিট্রিয়াস হিউমার কাকে বলে?

উঃ চক্ষু লেন্সের পিছনে রেটিনা পর্যন্ত জেলির মতো পদার্থটি হল ভিট্রিয়াস হিউমার।


88. পীত বিন্দু কাকে বলে?

উঃ চোখের রেটিনার সর্বাপেক্ষা বেশি আলোক সংবেদী অংশকে হলুদ বিন্দু বা পীত বিন্দু বলে।


89. অন্ধ বিন্দু কাকে বলে?

উঃ চক্ষুনার্ভের কাছে রেটিনার একটি অংশ আলোকের উত্তেজনায় সাড়া দেয় না, একে অন্ধবিন্দু বলে।


90. উপযোজন কাকে বলে?

উঃ চক্ষুলেন্সের ফোকাস দূরত্বের পরিবর্তন ঘটিয়ে (সিলিয়ারী পেশির সাহায্যে) বিভিন্ন দূরত্বে অবস্থিত বস্তুর প্রতিবিম্বকে রেটিনায় গঠন করার ক্ষমতাকে চোখের উপযোজন বলা হয়।


91. দূর বিন্দু ও নিকট বিন্দু কাকে বলে?

উঃ কষ্ট না করে চোখ সর্বাপেক্ষা দূরের যে বিন্দুতে অবস্থিত কোনো বস্তুকে স্পষ্ট দেখতে পায় সেই বিন্দুকে চোখের দূর বিন্দু বলে। সুস্থ চোখের দূর বিন্দু অসীমে অবস্থিত।

কষ্ট না করে চোখ সর্বাপেক্ষা কাছের যে বিন্দুতে অবস্থিত কোনো বস্তুকে স্পষ্ট দেখতে পায়, সেই বিন্দুকে চোখের নিকট বিন্দু বলে। সুস্থ চোখের নিকট বিন্দু 25 cm দূরে অবস্থিত।


92. চোখের কর্নিয়া সংরক্ষণের জন্য ব্যবহৃত গ্যাসটির নাম কী?

উঃ নাইট্রোজেন।


93. দীর্ঘ দৃষ্টি কাকে বলে?

উঃ যদি চোখ দূরের বস্তুকে স্পষ্ট দেখতে পায় কিন্তু কাছে বস্তুকে স্পষ্ট দেখতে না পায় তবে চোখের এই ধরণের ত্রুটিকে দীর্ঘদৃষ্টি বা হাইপারমেট্রোপিয়া বলে।


94. দীর্ঘ দৃষ্টির কারণ কী? এর প্রতিকারই বা কী?

উঃ অক্ষিগোলকের আকার স্বাভাবিকের তুলনায় ছোটো হলে অথবা সম্পূর্ণ শিথিল অবস্থায় চক্ষুলেন্সের ফোকাস দূরত্ব অক্ষিগোলকের ব্যাসের চেয়ে বড়ো হয়ে গেলে এই ত্রুটি দেখা যায়। এক্ষেত্রে প্রতিবিম্ব রেটিনার পিছনে উৎপন্ন হয়। এই চোখের নিকটবিন্দু স্বাভাবিক চোখের নিকট বিন্দুর (25 cm) তুলনায় দূরে থাকে।

প্রতিকারঃ উপযুক্ত ফোকাস দূরত্বের একটি উত্তল লেন্স চোখের সামনে রেখে এই ত্রুটি দূর করা যায়।


95. হ্রস্ব দৃষ্টি কাকে বলে?

উঃ যদি চোখ কাছের বস্তুকে স্পষ্ট দেখতে পায় কিন্তু দূরের বস্তুকে স্পষ্ট দেখতে না পায় তাহলে চোখের এ ধরণের ত্রুটিকে স্বল্পদৃষ্টি বা মায়োপিয়া বলে।


96. হ্রস্ব দৃষ্টির কারণ কী? এর প্রতিকার কিভাবে করবে?

উঃ অক্ষিগোলকের আকার স্বাভাবিকের চেয়ে বড়ো হলে অথবা সম্পূর্ণ শিথিল অবস্থায় চক্ষুলেন্সের ফোকাস দূরত্ব অক্ষিগোলকের ব্যাসের চেয়ে কমে গেলে এই ত্রুটি দেখা যায়। এক্ষেত্রে প্রতিবিম্ব রেটিনার সামনে উৎপন্ন হয়। এই চোখের দূরবিন্দু চোখের দিকে সরে আসে।

প্রতিকারঃ উপযুক্ত ফোকাস দূরত্বের একটি অবতল লেন্স চোখের সামনে রেখে এই ত্রুটি দূর করা যায়।


97. যদি একটি উভোত্তল লেন্সের অর্ধাংশ কালো কাগজে মুড়ে দেওয়া হয়, তাহলে কোনো বস্তুর পূর্ণ প্রতিবিম্ব গঠিত হবে কী?

উঃ লেন্সের বাকি অর্ধাংশের মধ্য দিয়ে প্রতিসরণের জন্যই বস্তুর পূর্ণ প্রতিবিম্ব গঠিত হবে। তবে এক্ষেত্রে প্রতিবিম্বের উজ্জ্বলতা কমে যাবে।


98. কী অবস্থায় অবতল লেন্সের আচরণ অভিসারী হতে পারে?

উঃ অবতল লেন্সের দুপাশেই লেন্সের উপাদান অপেক্ষা ঘনতর মাধ্যম থাকলে ওই মাধ্যমের সাপেক্ষে লেন্সের উপাদানের প্রতিসরাঙ্ক 1 অপেক্ষা কম হয়। এই অবস্থায় অবতল লেন্সটি একটি অভিসারী লেন্সের মত আচরণ করে।


99. সুস্থ চোখের দূর বিন্দু কোথায় অবস্থিত?

উঃ অসীমে অবস্থিত।


100. কোন ধরণের লেন্সের দ্বারা হ্রস্ব দৃষ্টি বা মায়োপিয়ার প্রতিকার করা যায়?

উঃ অবতল লেন্সের দ্বারা।


101. লেন্সের মুখ্য ফোকাসের সংখ্যা কত?

উঃ দুটি।


102. ক্যামেরার অভিলক্ষ্য হিসাবে কোন লেন্স ব্যবহার করা হয়?

উঃ উত্তল লেন্স।


103. আলোর বিচ্ছুরণ (Dispersion of light) কাকে বলে?

উঃ কোনো যৌগিক আলোকে তার মধ্যেকার বিভিন্ন বর্ণের আলোতে যদি বিশ্লেষণ করা যায় তবে এই ঘটনাকে আলোর বিচ্ছুরণ বলে।


104. বিচ্ছুরণের কারণ কী?

উঃ শূন্য বা বায়ু মাধ্যমে সব বর্ণের আলো সমান বেগে চলে। তাই শূন্য বা বায়ু মাধ্যমে আলোর বিচ্ছুরণ হয় না। কিন্তু অন্য কোনো মাধ্যমে (যেমন-কাচ) বিভিন্ন বর্ণের আলোর বেগ বিভিন্ন। লাল বর্ণের আলোর বেগ সবচেয়ে বেশি এবং বেগুনি বর্ণের আলোর বেগ সবচেয়ে কম। অন্যান্য বর্ণের আলোর বেগ লাল ও বেগুনি বর্ণের আলোর বেগের সীমার মধ্যে থাকে।

আলোর তরঙ্গতত্ত্ব অনুসারে কোনো মাধ্যমের প্রতিসরাঙ্ক, µ = c⁄v; c = শূন্যস্থানে আলোর বেগ, v = ওই মাধ্যমে আলোর বেগ। ফলে v-এর মান আলাদা হওয়ার জন্য µ–এর মান আলাদা হয়। সুতরাং বিভিন্ন বর্ণের আলোর ক্ষেত্রে মাধ্যমের প্রতিসরাঙ্ক বিভিন্ন হয়ে থাকে। লাল আলোর প্রতিসরাঙ্ক সবচেয়ে কম এবং বেগুনি বর্ণের আলোর প্রতিসরাঙ্ক সবচেয়ে বেশি হয়।

আবার স্নেলের সূত্রানুসারে, µ = sin i⁄sin r; i আপতন কোণ, r = প্রতিসরণ কোণ।

বা sin r = sin i⁄µ

সুতরাং, বিভিন্ন বর্ণের আলোর প্রতিসরাঙ্ক বিভিন্ন হওয়ার জন্য তাদের প্রতিসরণ কোণ তথা চ্যুতিও বিভিন্ন হবে। বেগুনি বর্ণের আলোর চ্যুতি সবচেয়ে বেশি এবং লাল বর্ণের আলোর চ্যুতি সবচেয়ে কম হবে। ফলে প্রতিসরণের পর আলোকরশ্মি মাধ্যম থেকে নির্গত হওয়ার সময় বিভিন্ন বর্ণের আলোগুলি বিভিন্ন পথে প্রতিসৃত হবে। বেগুনি আলোকরশ্মি প্রিজমের ভূমির সবচেয়ে কাছে থাকে এবং লাল আলোকরশ্মি সবচেয়ে দূরে থাকে। অন্যান্য বর্ণের আলোগুলি তাদের চ্যুতি অনুযায়ী বেগুনি ও লাল আলোর মাঝামাঝি স্থানে অবস্থান করে। এইভাবে যৌগিক আলো তার মধ্যেকার বিভিন্ন বর্ণের আলোতে বিশ্লিষ্ট হয়ে একটি বর্ণালি গঠণ করে। এই ঘটনাকেই আমরা আলোর বিচ্ছুরণ বলি।


105. বিচ্ছুরক মাধ্যম বলতে কী বোঝ?

উঃ কোনো মাধ্যমে বিভিন্ন বর্ণের আলোর বেগ বিভিন্ন হলে সেই মাধ্যমে যৌগিক আলোর বিচ্ছুরণ হয়, তাই সেই মাধ্যমকে বিচ্ছুরক মাধ্যম বলে। যেমন-কাচ।


106. বায়ু কী বিচ্ছুরক মাধ্যম?

উঃ বায়ু মাধ্যমে বিভিন্ন বর্ণের আলো প্রায় সমান বেগে চলে, ফলে বায়ু মাধ্যমে আলোর বিচ্ছুরণ হয় না। তাই বায়ু বিচ্ছুরক মাধ্যম নয়।


107. বর্ণালি কাকে বলে?

উঃ প্রিজমের মধ্য দিয়ে সাদা আলোর বিচ্ছুরণের ফলে সাতটি বিভিন্ন বর্ণের আলোর যে পটি পাওয়া যায় তাকে বর্ণালি বলে।


108. আলোকের বিচ্ছুরণের একটি প্রাকৃতিক উদাহরণ দাও।

উঃ বৃষ্টির পর সূর্যের অবস্থানের বিপরীত দিকের আকাশে রামধনু গঠন।


109. একবর্ণী আলো (Monochromatic light) বলতে কী বোঝ?

উঃ যে আলোকরশ্মি বিভিন্ন বর্ণে বিশ্লিষ্ট হয় না অথবা যে আলোকরশ্মি শুধুমাত্র একটি বর্ণের আলো নিয়ে গঠিত তাকে একবর্ণী আলোকরশ্মি বলে। যেমন-লাল বর্ণের আলো বা নীল বর্ণের আলো ইত্যাদি।


110. যৌগিক আলো (Polychromatic light) বলতে কী বোঝ?

উঃ কোনো আলোর মধ্যে একাধিক বর্ণের আলো (লাল, নীল, সবুজ প্রভৃতি) মিশ্রিত থাকলে সেই আলোকে মিশ্র বা যৌগিক আলো বলে। যেমন-সাদা আলো।


111. সবুজ পাতাকে সূর্যের আলোয় সবুজ দেখায় কেন?

উঃ সবুজ পাতাকে সূর্যের আলোয় সবুজ দেখায় কারণ ওই ফুলের ওপর সূর্যের আলো পড়লে সবুজ আলোকে প্রতিফলিত করে এবং অন্যান্য বর্ণের আলো শোষণ করে। ওই প্রতিফলিত সবুজ আলো আমাদের চোখে পড়লে আমরা পাতাকে সবুজ দেখি।


112. সবুজ আলোতে লাল ফুলকে কালো দেখায় কেন?

উঃ সবুজ আলোতে লাল ফুলকে কালো দেখায় কারণ লাল ফুল লাল বর্ণের আলো ছাড়া অন্য সব বর্ণের আলোকে শোষণ করে। লাল ফুলের ওপর সবুজ আলো পড়লে লাল ফুল ঐ সবুজ আলো শোষণ করে নেয় ফলে কোনো আলো প্রতিফলিত হয় না। তাই ফুলটিকে কালো দেখায়।


113. নীল কাচের ওপর লাল কাচ রেখে ওপর থেকে দেখলে নীল কাচকে কী রঙের মনে হবে?

উঃ কালো রঙের। কারণ নীল কাচ থেকে আগত আলোকরশ্মি লাল কাচ দ্বারা শোষিত হয়ে যাবে।


114. মূল্যবান রঙিন পোশাক রাত্রিবেলায় কেনা উচিৎ নয় কেন?

উঃ পোশাকের স্বাভাবিক রং বোঝার জন্য সূর্যালোকে (সাদা আলো) তা দেখতে হয়। দোকানে ব্যবহৃত কৃত্রিম আলো সম্পূর্ণ সাদা নয়, তাতে বর্ণালির কোনো না কোনো বর্ণ অনুপস্থিত থাকে। যেমন গ্যাসবাতির আলোয় নীল বর্ণ প্রায় থাকে না। ফলে যে পোশাককে সূর্যালোকে নীল দেখায় সেই পোশাককে গ্যাসবাতির আলোয় প্রায় কালো দেখায়। ফলে দোকানের কৃত্রিম আলোয় পোশাকের প্রকৃত রং বোঝা মুশকিল হয়ে পড়ে।


115. বস্তুকে সাদা বা কালো দেখায় কেন?

উঃ সাদা বা কালো বিশেষ কোনো বর্ণ নয়। কোনো বস্তু যদি তার ওপরে পড়া সাদা আলোর সাতটি বর্ণই প্রতিফলিত করে তাহলে সেই সাতটি আলোই সাদা আলোরূপে আমাদের চোখে পড়ে এবং আমরা সেই বস্তুকে সাদা দেখি। অন্যদিকে বস্তুটি যদি সাদা আলোর সবকটি বর্ণই শোষণ করে নেয় তাহলে বস্তু থেকে কোনো বর্ণ প্রতিফলিত হয়ে আমাদের চোখে পড়ে না, তখন আমরা বস্তুকে কালো দেখি। আসলে সাদা হল আলোর সাতটি বর্ণের উপস্থিতির প্রমাণ এবং কালো এই বর্ণগুলির অনুপস্থিতিকে বোঝায়।

যেমন ছাতার কাপড়কে কালো দেখায় কারণ তার ওপর সাদা আলো পড়লে সাদা আলোর সাতটি বর্ণই শোষিত হয়ে যায়। অর্থাৎ ছাতার কাপড় কোনো বর্ণকে প্রফলিত করে না। আবার সাদা কাপড়কে সাদা দেখায় কারণ তার ওপর সাদা আলো পড়লে আলোর সাতটি বর্ণই প্রতিফলিত হয়।


116. প্রিজমের মধ্য দিয়ে একটি নির্দিষ্ট বর্ণের আলো ফেললে ওই রশ্মি বর্ণালি গঠন করবে কি?

উঃ না। কারণ প্রিজম বর্ণ সৃষ্টি করে না। এটি যৌগিক আলোতে উপস্থিত বিভিন্ন বর্ণের আলোকে পৃথক করে দেয় মাত্র। তাই একটি নির্দিষ্ট বর্ণের আলো কোনো প্রিজমের প্রতিসারক তলে পড়লে প্রতিসরণের পর শুধুমাত্র ওই বর্ণের আলোর পটি দেখা যায়, বর্ণালি পাওয়া যায় না।


117. আয়তঘনকাকৃতির কাচ ব্যবহার করে সাদা আলোর বিচ্ছুরণ ঘটানো যায় না কেন?

উঃ আয়তঘনকাকৃতি কাচ ফলকের মধ্য দিয়ে যাওয়ার সময় আলোকরশ্মির দুটি সমান্তরাল তলে প্রতিসরণ ঘটে-প্রথমে বায়ু থেকে কাচে এবং পরে কাচ থেকে বায়ুতে। প্রথম তলে প্রতিসরণের ফলে সাদা আলোর বিচ্ছুরণ ঘটে; কারণ বায়ু মাধ্যমে সকলবর্ণের আলোর বেগ এক হলেও কাচ মাধ্যমে বিভিন্ন বর্ণের আলোর বেগ বিভিন্ন। তাই এক একটি বর্ণের রশ্মির প্রতিসরণ কোণ এক একরকমের হয়ে থাকে। এরপর দ্বিতীয়তলে কাচ থেকে বায়ুতে প্রতিসরণের সময় বিভিন্ন বর্ণের রশ্মিগুলি প্রথম তলে আপতন কোণের সমান কোণে প্রতিসৃত হয়, যা প্রথমবার প্রতিসরণের ঠিক উলটো হয়। ফলে কাচের মধ্যে বিশ্লিষ্ট বিভিন্ন বর্ণের রশ্মিগুলি পুনরায় সংযোজিত হয়ে সাদা আলো গঠন করে। এজন্য আয়তঘনকাকৃতির কাচ ব্যবহার করে সাদা আলোর বিচ্ছুরণ ঘটানো যায় না।


118. আলো কী?

উঃ আলো হল এক প্রকার তড়িৎচুম্বকীয় তরঙ্গ।


119. কম্পাঙ্ক কাকে বলে?

উঃ তরঙ্গের গতিপথে অবস্থিত মাধ্যমের কম্পমান কোনো কণা এক সেকেন্ডে যতগুলি পূর্ণকম্পন সম্পন্ন করে সেই সংখ্যাকে তরঙ্গের কম্পাঙ্ক বলে। অথবা

এক সেকেন্ডে মাধ্যমের মধ্যে যতগুলি পূর্ণ তরঙ্গের সৃষ্টি হয় তাকে ওই তরঙ্গের কম্পাঙ্ক বলে।


120. তরঙ্গদৈর্ঘ্য বলতে কী বোঝ?

উঃ তরঙ্গের গতিপথে অবস্থিত মাধ্যমের কোনো কণার একটি পূর্ণ কম্পনের ফলে তরঙ্গ যে দূরত্ব অতিক্রম করে তাকে তরঙ্গদৈর্ঘ্য (λ) বলে।


121. তরঙ্গের বেগ বলতে কী বোঝ?

উঃ এক সেকেন্ডে তরঙ্গ মাধ্যমের মধ্য দিয়ে যে দূরত্ব অতিক্রম করে তাকে তরঙ্গের বেগ বলে।


122. আলোর বেগের সঙ্গে কম্পাঙ্ক ও তরঙ্গদৈর্ঘ্যের সম্পর্কটি লেখো।

উঃ আলোর বেগ = C, কম্পাঙ্ক = n এবং তরঙ্গদৈর্ঘ্য = λ হলে,

C = nλ


123. কোনো আলোক উৎস থেকে নির্গত আলোর বর্ণ কিসের উপর নির্ভর করে?

উঃ কোনো আলোক উৎস থেকে নির্গত আলোর বর্ণ আলোর তরঙ্গদৈর্ঘ্যের উপর নির্ভর করে।


124. কোনো মাধ্যমের প্রতিসরাঙ্ক আলোর বেগের ওপর কীভাবে নির্ভর করে?

উঃ কোনো মাধ্যমের পরম প্রতিসরাঙ্ক (µ) শূন্য মাধ্যমে আলোর গতিবেগ (c) এবং ওই মাধ্যমে আলোর গতিবেগের (v) অনুপাতের সমান হয়।

অর্থাৎ µ = c⁄v, এখন শূন্য মাধ্যমে আলোর বেগ (c) ধ্রুবক। তাই

µ = ধ্রুবক⁄v

বা, µ ∝ 1⁄v

অর্থাৎ মাধ্যমের প্রতিসরাঙ্ক ওই মাধ্যমে আলোর বেগের ব্যস্তানুপাতিক।


125. প্রতিসরণ আলোর কোন ধর্মকে প্রভাবিত করতে পারে না?

উঃ কম্পাঙ্ককে। প্রতিসরণের পর আলোর বেগ, তীব্রতা ও তরঙ্গদৈর্ঘ্যের পরিবর্তন ঘটলেও কম্পাঙ্ক অপরিবর্তিত থাকে।


126. এক মাধ্যম থেকে অন্য মাধ্যমে প্রবেশের সময় আলোর কোন ধর্ম অপরিবর্তিত থাকে?

উঃ কম্পাঙ্ক।


127. দৃশ্যমান আলোর তরঙ্গদৈর্ঘ্যের পাল্লা কত?

উঃ দৃশ্যমান বিভিন্ন বর্ণের আলোর তরঙ্গদৈর্ঘ্যের পাল্লা মোটামুটি 4000 Å-8000 Å। অর্থাৎ আমরা যেসব দৃশ্যমান আলো দেখি তাদের তরঙ্গদৈর্ঘ্য মোটামুটি 4000 Å-8000 Å–এর মধ্যে হয়। এর চেয়ে কম বা বেশি তরঙ্গদৈর্ঘ্যের আলোকে আমরা দেখতে পাই না।


128. অতিবেগুনি রশ্মির কয়েকটি ব্যবহার ও ক্ষতিকারক দিক উল্লেখ করো।

উঃ ব্যবহারঃ (১) জীবাণু ধ্বংসের কাজে লাগে।

(২) রত্ন, ডিম, ঘি ইত্যাদির বিশুদ্ধতা পরীক্ষায় কাজে লাগে।

(৩) আমাদের শরীরে ভিটামিন-D প্রস্তুত কুরতে সাহায্য করে।


ক্ষতিকারক দিকঃ (১) চোখের ক্ষতি করে।

(২) শরীরে বেশি মাত্রায় পড়লে ত্বকের ক্যানসার হতে পারে।


129. X-রশ্মির কয়েকটি ব্যবহার ও ক্ষতিকারক দিক উল্লেখ করো।

উঃ ব্যবহারঃ (১) চিকিৎসাক্ষেত্রে রোগ নির্ণয়ে ও রোগ নিরাময়ে ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়।

(২) শিল্পক্ষেত্রে কড়ি, বরগা, কারখানার বয়লার ইত্যাদিতে কোনো চিড় বা ফাঁক আছে কিনা পরীক্ষা করতে ব্যবহৃত হয়।

(৩) গোয়েন্দা বিভাগে, গবেষণার কাজে ব্যবহৃত হয়।


ক্ষতিকারক দিকঃ (১) এই রশ্মি জীবকোশ ধ্বংস করতে পারে।

(২) এই রশ্মি থাইরয়েড গ্ল্যাণ্ডের ক্ষতি করে।

(৩) মাতৃগর্ভে ভ্রূণের 40% ক্যানসারের, 50% টিউমার হওয়ার বিপদ এবং 70% লিউকোমিয়ার বিপদ সৃষ্টি করতে পারে।

(৪) ছোটো শিশুদের ওপর এই রশ্মি পড়লে তাদের জনন-ক্রিয়া সংক্রান্ত সমস্যা দেখা দিতে পারে।


130. γ-রশ্মির কয়েকটি ব্যবহার ও ক্ষতিকারক দিক উল্লেখ করো।

উঃ ব্যবহারঃ (১) ক্যানসারের চিকিৎসা (Radio Therapy) করতে ব্যবহৃত হয়।

(২) হাসপাতালে চিকিৎসার যন্ত্রপাতি জীবাণুমুক্ত করতে ব্যবহার করা হয়।

(৩) গবেষণার কাজে ব্যবহৃত হয়।

(৪) নির্মাণ এলাকায় মাটির ঘনত্ব মাপতে ব্যবহৃত হয়।

(৫) শিল্পক্ষেত্রে তরলের প্রবাহ মাপতে এবং নিয়ন্ত্রণ করতে ববহৃত হয়।

ক্ষতিকারক দিকঃ  (১) এই রশ্মি শরীরে পড়লে শরীরের পেশি, কলার ক্ষতি হতে পারে।

(২) এই রশ্মির ভেদন ক্ষমতা সর্বাধিক হওয়ায় মানুষের স্বাস্থ্যের ভয়ঙ্কর ক্ষতি করতে পারে।


131. আলোর বিক্ষেপণ (Scattering of light) কাকে বলে?

উঃ সূর্যরশ্মি যখন বায়ুমণ্ডলের মধ্য দিয়ে আসে তখন ওই রশ্মি বাতাসের সূক্ষ্ম ধূলিকণার উপর পড়ে চারিদিকে ছড়িয়ে পড়ে। একে আলোর বিক্ষেপ বা বিক্ষেপণ বলে।


132. দিনের বেলায় চাঁদের আকাশের রঙ কেমন?

উঃ কালো। কারণ চাঁদে বায়ুমণ্ডল না থাকায় আলোর বিক্ষেপণ হবে না।


133. দিনের বেলায় আকাশ নীল দেখায় কেন?

উঃ দিনের বেলায় যখন সূর্যরশ্মি বায়ুমণ্ডলের মধ্য দিয়ে আসে তখন বায়ুতে ভাসমান কণাগুলির দ্বারা সূর্যের আলোর বিক্ষেপণ হয়। যেহেতু বিক্ষিপ্ত আলোর তীব্রতা আলোর তরঙ্গদৈর্ঘ্যের চতুর্থ ঘাতের ব্যস্তানুপাতিক, তাই নীল বর্ণের আলোকরশ্মি লাল বর্ণের রশ্মিগুলি অপেক্ষা বেশি বিক্ষিপ্ত হয়, কারণ নীল আলোর তরঙ্গদৈর্ঘ্য লাল আলোর তুলনায় কম। এই বিক্ষিপ্ত নীল আলো আমাদের চোখে এসে পৌঁছালে আমরা আকাশকে নীল দেখি।


134. সূর্যোদয় ও সূর্যাস্তের সময় সূর্যকে লাল দেখায় কেন?

উঃ সূর্যোদয় ও সূর্যাস্তের সময় সূর্য দিগন্তরেখার কাছে থাকে। এই সময় সূর্য থেকে আমাদের দূরত্ব দিনের অন্যান্য সময়ের তুলনায় বেশি হয়। ফলে সূর্যরশ্মি দিনের অন্যান্য সময়ের তুলনায় অনেক বেশি পথ অতিক্রম করে আমাদের চোখে এসে পৌঁছায়। এখন সাদা আলোর সাতটি বর্ণের আলোর মধ্যে লাল আলোর তরঙ্গদৈর্ঘ্য সর্বাধিক। আমরা জানি তরঙ্গদৈর্ঘ্য বেশি হলে আলোর বিক্ষেপণ কম হয় এবং তরঙ্গদৈর্ঘ্য কম হলে আলোর বিক্ষেপ বেশি হয়। ফলে বায়ুমণ্ডল ভেদ করে এই দীর্ঘ পথ অতিক্রম করার সময় লাল ব্যতীত অন্য বর্ণের আলোগুলি বায়ুতে ভাসমান কণাগুলি দ্বারা অপেক্ষাকৃত বেশি পরিমাণে বিক্ষিপ্ত হয়ে চারিদিকে ছড়িয়ে পড়ে। অন্যদিকে লাল আলোর বিক্ষেপ কম হওয়ায় তা অপেক্ষাকৃত বেশি পরিমাণে আমাদের চোখে এসে পড়ে। তাই আমরা সূর্যোদয় ও সূর্যাস্তের সময় সূর্যকে লাল দেখি।


135. চাঁদের আকাশকে কালো দেখায় কেন?

উঃ চাঁদে বায়ুমন্ডল না থাকায় সূর্যের আলো বিক্ষপ্ত হয় না। তাই চাঁদের আকাশকে কালো দেখায়।


136. বিপদ সংকেত হিসাবে সর্বদা লাল আলো ব্যবহার করা হয় কেন?

উঃ সাদা আলোর সাতটি বর্ণের মধ্যে লাল আলোর তরঙ্গদৈর্ঘ্য সর্বাধিক। তরঙ্গদৈর্ঘ্য বেশি হলে বিক্ষেপণ কম হয়। তাই বায়ুমন্ডলের মধ্যে দিয়ে যাওয়ার সময় নীল বা অন্যান্য আলো যতটা বিক্ষিপ্ত হয় তার তুলনায় লাল আলোর বিক্ষেপণ কম হয়। তাই লাল আলো বায়ুমন্ডল ভেদ করে সোজা পথে বহুদূর চলে যেতে পারে। সুতরাং কোনো বিপদজনক জায়গায় আসবার অনেক আগেই গাড়ির চালক লাল আলো দেখতে পাবে এবং বিপদ সম্পর্কে সতর্ক হবে।


Download মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞান আলো প্রশ্নোত্তর PDF


File Details:-

File Name:- মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞান আলো প্রশ্নোত্তর [www.gksolves.com]
File Format:-PDF
Quality:- High
File Size:-  5 Mb
File Location:- Google Drive

Click Here to Download


আরও পড়ুন:




Others Important Link

Syllabus Link: Click Here

Questions Paper Link: Click Here

Admit Card Link: Click Here

Result Link: Click Here

Latest Job: Click Here

Age Calculator: Click Here


ঘোষণা: বিনামূল্যে আমাদের দেওয়া নোটস, সাজেশান, প্রশ্ন উত্তর ইত্যাদি স্টাডি ম্যাটেরিয়াল PDF এবং ভিডিও ক্লাস ভালো লাগলে, আমাদের এই পোস্টের লিংক আপনার বন্ধুদের ফেসবুকWhatsApp এ শেয়ার করে তাদের পড়ার সুযোগ করে দিন।

Post a Comment

0 Comments
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.