মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞান চলতড়িৎ প্রশ্নোত্তর PDF: প্রতিবছর বিভিন্ন সরকারি চাকরির পরীক্ষায় দশম শ্রেনীর ভৌতবিজ্ঞান চলতড়িৎ প্রশ্নোত্তর PDF থেকে অনেক প্রশ্ন আসে। তাই আমরা আপনাদের জন্য নিয়ে এসেছি মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞান চলতড়িৎ প্রশ্নোত্তর PDF.
নিচে মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞান চলতড়িৎ প্রশ্নোত্তর PDF টি যত্নসহকারে পড়ুন ও জ্ঞানভাণ্ডার বৃদ্ধি করুন। মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞান চলতড়িৎ প্রশ্নোত্তর PDF টি সম্পূর্ণ বিনামূল্যে ডাউনলোড করতে এই পোস্টটির নীচে যান এবং ডাউনলোড করুন।
মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞান চলতড়িৎ প্রশ্নোত্তর - দশম শ্রেনীর ভৌতবিজ্ঞান প্রশ্নোত্তর
মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞান চলতড়িৎ প্রশ্নোত্তর PDF
Dear Students, Gksolves.com চাকরির পরীক্ষার প্রস্তুতির সেরা ঠিকানা, আজ আমরা আপনাদের জন্য নিয়ে এসেছি মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞান চলতড়িৎ প্রশ্নোত্তর PDF. প্রতিবছর বিভিন্ন সরকারি চাকরির যেমন Railway Group D | PSC Clerkship | WBCS | SSC CHSL | SSC CGL | SSC MTS | WBP Abgari Constable | WBP SI | WBP Constable | ICDS Supervisor | Railway Group D | RRB NTPC | PSC Miscellaneous | TET | Upper Primary | Group D ইত্যাদি পরীক্ষার মাধ্যমে নিয়োগ হয়ে থাকে। এই সমস্ত চাকরির পরীক্ষা ছাড়াও মাধ্যমিক, উচ্চমাধ্যমিক সম্বন্ধে আপনার সাধারণ ধারণা থাকা দরকার, তাই আমরা আপনাদের জন্য নিয়ে এসেছি মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞান চলতড়িৎ প্রশ্নোত্তর PDF যা আপনাদের পরীক্ষার প্রশ্নপত্র সম্পর্কে ধারণা গঠন করতে বিশেষ সাহায্য করবে।
Google News এ আমাদের ফলো করুন
মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞান চলতড়িৎ প্রশ্নোত্তর - দশম শ্রেনীর ভৌতবিজ্ঞান প্রশ্নোত্তর
চলতড়িৎ
1. কুলম্বের সূত্রটি লেখো।
উঃ দুটি বিন্দু আধানের মধ্যে আকর্ষণ বা বিকর্ষণ বল আধান দুটির পরিমাণের গুণফলের সমানুপাতিক এবং আধান দুটির মাঝের দূরত্বের বর্গের ব্যস্তানুপাতিক।
2. তড়িৎ আধানের একক কী?
উঃ CGS পদ্ধতিতে তড়িৎ আধানের একক স্থির তড়িৎ একক (esu) বা স্ট্যাটকুলম্ব।
SI পদ্ধতিতে আধানের একক কুলম্ব। এটি আধানের ব্যবহারিক একক।
3. আধানের CGS ও SI এককের মধ্যে সম্পর্ক কী?
উঃ 1 কুলম্ব = 3 × 109 esu
4. তড়িৎ বিভব (Electric Potential) কাকে বলে?
উঃ অসীম দুরত্ব থেকে একক ধনাত্মক আধানকে তড়িৎক্ষেত্রের কোনো বিন্দুতে আনতে তড়িৎবলের বিরুদ্ধে যে পরিমাণ কার্য করতে হয়, তাকে ওই বিন্দুর তড়িৎ বিভব বলে।
5. বিভব পার্থক্য বলতে কী বোঝ?
উঃ একটি একক ধনাত্মক আধানকে তড়িৎক্ষেত্রের এক বিন্দু থেকে অপর বিন্দুতে আনতে যে পরিমাণ কার্য করতে হয় তাকে ওই দুই বিন্দুর মধ্যে বিভব পার্থক্য বা বিভব প্রভেদ বলে।
6. বিভব প্রভেদের এর একক কী?
উঃ CGS পদ্ধতিতে বিভব প্রভেদের একক esu
SI পদ্ধতিতে বিভব প্রভেদের একক ভোল্ট।
7. শূন্যস্থানে কুলম্বের সূত্রের সমীকরণটি লেখ।
উঃ শূন্যস্থানে ‘q1’ ও ‘q2’ দুটি বিন্দু আধান পরস্পর থেকে ‘r’ দূরত্বে থাকলে তাদের মধ্যে যদি ‘F’ বল ক্রিয়া করে তাহলে
F = q1q2/r2 কারণ শূন্যস্থানের ক্ষেত্রে k=1 ধরা হয়।
8. কার্যের ধারণা থেকে তড়িৎবিভবের সংজ্ঞা লেখো।
উঃ যদি অসীম দূরত্ব থেকে ‘q’ পরিমাণ ধনাত্মক আধানকে তড়িৎক্ষেত্রের কোনো বিন্দুতে আনতে ‘w’ পরিমাণ কার্য করতে হয়, তাহলে ওই বিন্দুতে তড়িৎবিভব হবে,
V = w/q।
9. তড়িৎ চালক বল কী?
উঃ মুক্ত বর্তনীতে কোনো তড়িৎকোশের দুটি মেরুর মধ্যে যে বিভব পার্থক্য থাকে, তাকে ওই কোশের তড়িৎচালক বল বলে। অথবা,
মুক্ত বর্তনীতে কোনো তড়িৎকোশের ভিতর একক ধনাত্মক আধানকে নিম্ন বিভবের পাত থেকে উচ্চ বিভবের পাতে নিয়ে যেতে যে পরিমাণ কার্য করতে হয়, তাকে ওই কোশের তড়িৎচালক বল বলে।
10. তড়িৎচালক বলের ব্যবহারিক একক কী?
উঃ তড়িৎচালক বলের SI বা ব্যবহারিক একক হল ভোল্ট।
11. একটি কোশের তড়িৎচালক বলের মান কীসের উপর নির্ভর করে?
উঃ একটি কোশের তড়িৎচালক বলের মান কোশে ব্যবহৃত সক্রিয় তরলের রাসায়নিক প্রকৃতি এবং তড়িৎদ্বারগুলির উপাদানের উপর নির্ভর করে, কোশের আকারের উপর নয়।
12. তড়িৎচালক বল পরিমাপ করার যন্ত্রের নাম কী?
উঃ পোটেনসিওমিটার।
13. কোনো কোশের তড়িৎচালক বল 1.5 ভোল্ট বলতে কী বোঝায়?
উঃ ‘কোনো কোশের তড়িৎচালক বল 1.5 ভোল্ট’ বলতে কী বোঝায় যে ওই কোশ যুক্ত পূর্ণ বর্তনীতে 1 কুলম্ব তড়িতাধানকে একবার সম্পূর্ণ আবর্তন করাতে 1.5 জুল কার্য করতে হয়। অথবা মুক্ত বর্তনীতে ওই কোশটির দুটি মেরুর মধ্যে 1.5 ভোল্ট বিভব পার্থক্য থাকে।
14. কোনো কোশের বিভবপ্রভেদ 1.4 ভোল্ট বলতে কী বোঝায়?
উঃ ‘কোনো কোশের বিভবপ্রভেদ 1.4 ভোল্ট’ বলতে কী বোঝায় যে বদ্ধ বর্তনীতে ওই কোশটির দুটি মেরুর মধ্যে 1.4 ভোল্ট বিভবপ্রভেদ থাকে।
15. তড়িৎ প্রবাহমাত্রা কাকে বলে?
উঃ কোনো পরিবাহীর যে কোনো প্রস্থচ্ছেদের মধ্য দিয়ে প্রতি সেকেন্ডে যে পরিমাণ তড়িৎ আধান প্রবাহিত হয়, তাকে ওই পরিবাহীতে তড়িৎ প্রবাহমাত্রা বলে।
16. তড়িৎ প্রবাহমাত্রার একক কী?
উঃ তড়িৎ প্রবাহমাত্রার SI বা ব্যবহারিক একক হল অ্যাম্পিয়ার।
তড়িৎপ্রবাহমাত্রার CGS একক হল স্ট্যাটঅ্যাম্পিয়ার এবং অ্যাবঅ্যাম্পিয়ার।
17. তড়িৎপ্রবাহমাত্রা কী রাশি?
উঃ স্কেলার রাশি।
18. কী কী শর্তে কুলম্বের সূত্র প্রযোজ্য হয়?
উঃ কুলম্বের সূত্র কেবলমাত্র দুটি বিন্দু আধানের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য অর্থাৎ আহিত বস্তুগুলির আকার তাদের পারস্পরিক দূরত্বের তুলনায় নগণ্য হবে। এছাড়া নিউক্লিয় দূরত্বের (~10-15m) বেশি দূরত্বের জন্য কুলম্বের সূত্র সিদ্ধ হয়।
19. ওহমের সূত্রটি লেখ?
উঃ উষ্ণতা, উপাদান এবং অন্যান্য ভৌত অবস্থা অপরিবর্তিত থাকলে, কোনো পরিবাহীর মধ্য দিয়ে তড়িৎ প্রবাহমাত্রা ওই পরিবাহীর দুই প্রান্তের বিভব পার্থক্যের সমানুপাতিক হয়।
20. রোধ কাকে বলে?
উঃ যে ধর্মের জন্য কোনো পরিবাহী তার মধ্যে তড়িৎ প্রবাহকে বাধা দেয় তাকে পরিবাহীটির রোধ বলে।
21. রোধের একক কী?
উঃ রোধের SI এবং ব্যবহারিক একক হল ওহ্ম (Ω) ।
22. ওহ্মীয় পরিবাহী কাকে বলে?
উঃ যে সব পদার্থ তড়িৎ প্রবাহমাত্রা এবং বিভব পার্থক্যের বিস্তীর্ণ পাল্লার মধ্যে ওহ্মের সূত্রটি মেনে চলে, তাদের ওহ্মীয় পরিবাহী বলে। যেমন-ধাতু এবং অন্যান্য কিছু পদার্থ।
23. অ-ওহ্মীয় পরিবাহী বলতে কী বোঝ?
উঃ যে সব পদার্থ তড়িৎপ্রবাহের ক্ষেত্রে ওহ্মীয় সূত্র মেনে চলে না, তাদের অ-ওহ্মীয় পরিবাহী বলে। যেমন-জার্মেনিয়াম, সিলিকন, নিম্নচাপে রাখা গ্যাসের মধ্য দিয়ে তড়িৎক্ষরণের ক্ষেত্রে ইত্যাদি।
24. অভ্যন্তরীণ রোধ কাকে বলে?
উঃ কোশের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হওয়ার সময় কোশের উপাদানগুলি তড়িৎ প্রবাহকে কিছুটা বাধা দেয়। ফলে কোশের মধ্যে একটি রোধের উদ্ভব হয়। এটিই কোশের অভ্যন্তুরীণ রোধ।
25. অভ্যন্তরীণ বিভবপতন বা নষ্ট ভোল্ট কাকে বলে?
উঃ তড়িৎকোশের সমগ্র তড়িৎচালক বল (E) বহিবর্তনীতে বিভব পার্থক্য হিসাবে পাওয়া যায় না। কোশের অভ্যন্তরীণ রোধের (r) জন্য কিছুটা পরিমাণ বিভব (Ir) নষ্ট হয়। এই নষ্ট হওয়া বিভবকেই কোশের অভ্যন্তরীণ বিভব পতন বা নষ্ট ভোল্ট বলা হয়।
26. পরিবাহীর রোধ কী কী বিষয়ের উপর নির্ভর করে?
উঃ কোনো পরিবাহীর রোধ কয়েকটি বিষয়ের উপর নির্ভর করে। যেমন-
(১) উষ্ণতা, উপাদান এবং প্রস্থচ্ছেদের ক্ষেত্রফল (A) অপরিবর্তিত থাকলে, একটি পরিবাহীর রোধ (R) পরিবাহীটির দৈর্ঘ্য (l)-এর সমানুপাতিক হয়।
(২) উষ্ণতা, উপাদান এবং দৈর্ঘ্য (l) অপরিবর্তিত থাকলে, একটি পরিবাহীর রোধ (R) পরিবাহীটির প্রস্থচ্ছেদের ক্ষেত্রফল (A)-এর ব্যাস্তানুপাতিক হয়।
(৩) উষ্ণতা, দৈর্ঘ্য (l) এবং প্রস্থচ্ছেদের ক্ষেত্রফল (A) অপরিবর্তিত থাকলে একটি পরিবাহীর রোধ (R) পরিবাহীটির উপাদানের উপর নির্ভর করে।
(৪) একটি পরিবাহীর রোধ ওর উষ্ণতা এবং কিছু পদার্থের ক্ষেত্রে আলোকের তীব্রতা, চৌম্বকক্ষেত্রের প্রাবল্য এবং চাপের উপর নির্ভর করে।
27. রোধের ওপর উষ্ণতার প্রভাব কেমন?
উঃ পরিবাহীর রোধ ওর উষ্ণতার ওপর নির্ভর করে। সাধারণভাবে উষ্ণতা বাড়লে পরিবাহীর রোধ বাড়ে এবং উষ্ণতা কমলে রোধ কমে। জার্মেনিয়াম, সিলিকন, কার্বন, তড়িৎবিশ্লেষ্য প্রভৃতির ক্ষেত্রে উষ্ণতা বাড়লে রোধ কমে।
28. রোধাঙ্ক কাকে বলে?
উঃ নির্দিষ্ট উষ্ণতায় কোনো পদার্থের একক দৈর্ঘ্য এবং একক প্রস্থছেদ বিশিষ্ট তারের রোধকে ওই পদার্থের রোধাঙ্ক বা আপেক্ষিক রোধ বলা হয়। অন্যভাবে বলা যায়,
নির্দিষ্ট উষ্ণতায় কোনো পদার্থ দ্বারা নির্মিত একক ঘনকের দুটি বিপরীত পৃষ্ঠের মধ্যবর্তী রোধকে ওই পদার্থের রোধাঙ্ক বলা হয়।
29. রোধাঙ্কের একক কী?
উঃ CGS পদ্ধতিতে রোধাঙ্কের একক হল ওহ্ম-সেমি (Ωcm)।
SI পদ্ধতিতে রোধাঙ্কের একক হল ওহ্ম-মিটার (Ωm)।
30. রোধের উষ্ণতা গুণাঙ্কের সংজ্ঞা দাও।
উঃ 0 ডিগ্রি C উষ্ণতায় একক রোধবিশিষ্ট কোনো পরিবাহীর প্রতি 1 ডিগ্রি C উষ্ণতা বৃদ্ধির জন্য যে পরিমাণ রোধ বৃদ্ধি হয় তাকে ওই পদার্থের রোধের উষ্ণতা গুণাঙ্ক বলা হয়।
31. রোধাঙ্কের উপর উষ্ণতার প্রভাব কী?
উঃ (১) উষ্ণতা বৃদ্ধি পেলে ধাতব উপাদানের রোধাঙ্ক বাড়ে।
(২) উষ্ণতা বৃদ্ধি পেলে অর্ধপরিবাহীর রোধ এবং রোধাঙ্ক হ্রাস পায়।
32. ‘18 ডিগ্রি C উষ্ণতায় তামার রোধাঙ্ক 1.78 × 10-6 ওহ্ম-সেমি’-এর অর্থ কী?
উঃ ‘18 ডিগ্রি C উষ্ণতায় তামার রোধাঙ্ক 1.78 × 10-6 ওহ্ম-সেমি’-এর অর্থ হল 18 ডিগ্রি C উষ্ণতায় এক সেন্টিমিটার বাহুবিশিষ্ট একটি তামার ঘনকের দুটি বিপরীত পৃষ্ঠের মধ্যবর্তী রোধ হবে 1.78 × 10-6 ওহ্ম।
33. তামার রোধের উষ্ণতা গুণাঙ্ক 0.00425/ ডিগ্রি C বলতে কী বোঝ?
উঃ তামার রোধের উষ্ণতা গুণাঙ্ক 0.00425/ ডিগ্রি C বলতে বোঝায় যে 0 ডিগ্রি C উষ্ণতায় কোনো তামার পরিবাহীর রোধ 1 ওহ্ম হলে প্রতি 1 ডিগ্রি C উষ্ণতা বৃদ্ধির জন্য এই পরিবাহীর রোধ বৃদ্ধি হবে 0.00425 ওহ্ম।
34. রোধের অন্যোন্যককে কী বলে?
উঃ পরিবাহিতা।
35. পরিবাহিতাঙ্ক কাকে বলে?
উঃ পদার্থের রোধাঙ্কের অন্যোন্যক রাশিকে বলে পরিবাহিতাঙ্ক।
36. পরিবাহিতাঙ্কের একক কী?
উঃ CGS পদ্ধতিতে পরিবাহীতাঙ্কের একক হল মো/সেমি বা সিমেন্স/সেমি।
SI পদ্ধতিতে রোধাঙ্কের একক হল মো/মিটার বা সিমেন্স/মিটার।
37. পরিবাহী কাকে বলে?
উঃ সে সব পদার্থের মধ্য দিয়ে তড়িৎ সহজে চলাচল করতে পারে তাদের পরিবাহী বলে। যেমন-ধাতু যেমন রূপা, তামা, সোনা, অ্যালুমিনিয়াম, অধাতু যেমন গ্রাফাইট ও গ্যাস কার্বন, সংকর ধাতু যেমন কাঁসা, ব্রোঞ্জ ইত্যাদি।
38. পরিবাহীর মধ্যে দিয়ে তড়িৎপ্রবাহ হয় কেন?
উঃ পরিবাহী পদার্থের মধ্যে কিছু সংখ্যক ইলেকট্রন পরমাণু থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে ওই পদার্থে মুক্তভাবে অবস্থান করে। এই মুক্ত ইলেকট্রনগুলি পদার্থের মধ্যে চলাচল করে তড়িৎ পরিবহন করে।
39. দৈনন্দিন জীবনে পরিবাহীর কয়েকটি ব্যবহার উল্লেখ করো।
উঃ পরিবাহী পদার্থ দ্বারা তড়িৎ পরিবাহী তার তৈরি করা হয়। এছাড়া বিভিন্ন বৈদ্যুতিক যন্ত্র যেমন-বৈদ্যুতিক হিটার, বৈদ্যুতিক ইস্ত্রি, জেনারেটর, বৈদ্যুতিক আলো, পাখা প্রভৃতি তৈরি করা হয়। বর্তমানে বিদ্যুতের ব্যবহার সর্বত্র। বিদ্যুতের দ্বারা চলে এমন সমস্ত যন্ত্রপাতির ক্ষেত্রে পরিবাহীর ব্যবহার আছে।
40. অন্তরক কাকে বলে?
উঃ যে সব পদার্থের মধ্য দিয়ে তড়িৎ সহজে চলাচল করতে পারে না, তাদের অন্তরক বলে। যেমন-কাঠ, রবার, কাচ, এবোনাইট, চিনামাটি, অভ্র, বায়ু ইত্যাদি।
41. অন্তরক পদার্থ তড়িৎ পরিবহন করতে পারে না কেন?
উঃ অন্তরক পদার্থের মধ্যে মুক্ত ইলেকট্রন থাকে না, তাই এরা তড়িৎ পরিবহন করতে পারে না।
42. দৈনন্দিন জীবনে অন্তরকের কয়েকটি ব্যবহার উল্লেখ করো।
উঃ বিদ্যুৎ কর্মী বিদ্যুতের লাইনে কাজ করার সময় রবারের গ্লাভস ব্যবহার করেন। রবার একটি অন্তরক বলে বিদ্যুতের শক লাগে না। বৈদ্যুতিক তারের আবরণ হিসাবে অন্তরক ব্যবহার করা হয়। বৈদ্যুতিক সুইচ, প্লাগ, সকেট ইত্যাদি অন্তরক পদার্থ এবোনাইট দিয়ে তৈরি করা হয়। ফিউজ তারের হোল্ডার অন্তরক পদার্থ চিনামাটি দিয়ে তৈরি করা হয়।
43. অর্ধপরিবাহী কাকে বলে?
উঃ পরিবাহী ও অন্তরক পদার্থের মাঝামাঝি পরিবহন ক্ষমতা সম্পন্ন পদার্থকে অর্ধপরিবাহী বলে। যেমন-সিলিকন, জার্মেনিয়াম ইত্যাদি।
44. রোধের সমবায় বলতে কী বোঝ? কয় প্রকার ও কী কী?
উঃ একই তড়িৎ বর্তনীতে একাধিক রোধ ব্যবহার করলে তাকে রোধের সমবায় বলে। রোধের সমবায় দুই ধরণের হয়। যথা-শ্রেণি সমবায় ও সমান্তরাল সমবায়।
45. রোধের মিশ্র সমবায় বলতে কী বোঝ?
উঃ কোনো বর্তনীতে রোধগুলি শ্রেণি ও সমান্তরাল উভয়প্রকার সমবায়ে যুক্ত থাকলে তাকে মিশ্র সমবায় বলে।
46. তুল্যরোধ বলতে কী বোঝ?
উঃ কোনো বর্তনীর দুটি বিন্দুর মধ্যে যুক্ত একাধিক রোধের একটি সমবায়ের পরিবর্তে যদি এমন একটি রোধ যুক্ত করা যায় যাতে বর্তনীর মোট প্রবাহমাত্রা এবং বিভবপ্রভেদ দুইই অপরিবর্তিত থাকে তাহলে সেই একক রোধটিকে রোধ সমবায়টির তুল্যরোধ বলা হয়।
47. রোধের শ্রেণি সমবায় বলতে কী বোঝ? এর বৈশিষ্ট্যগুলি লেখো।
উঃ তড়িৎ বর্তনীতে কতকগুলি রোধ যদি এমনভাবে যুক্ত থাকে যে একটির শেষ প্রান্ত অপরটির প্রথম প্রান্তের সঙ্গে যুক্ত হয় এবং প্রত্যেক রোধের মধ্য দিয়ে একই প্রবাহমাত্রা যায়, তবে ওই সমবায়কে রোধের শ্রেণি সমবায় বলা হয়।
শ্রেণি সমবায়ের কয়েকটি বৈশিষ্ট্য হল-
(১) প্রতিটি রোধের মধ্য দিয়ে একই প্রবাহ যায়।
(২) সমবায়ের মোট রোধ সমবায়ের প্রতিটি রোধের মানের চেয়ে বড়ো হয়।
(৩) সমবায়ের প্রান্তীয় বিভব প্রভেদ প্রতিটি রোধের প্রান্তীয় বিভব প্রভেদের সমষ্টি।
(৪) সমবায়ের তুল্যরোধ = রোধগুলির সমষ্টি।
48. রোধের সমান্তরাল সমবায় বলতে কী বোঝ? এর বৈশিষ্ট্যগুলি লেখো।
উঃ যে সমবায়ে বিভিন্ন রোধগুলির একপ্রান্ত বর্তনীর এক বিন্দুতে এবং অপর প্রান্তগুলি বর্তনীর অন্য এক বিন্দুতে যুক্ত করা হয়, ফলে রোধগুলির প্রান্তিক বিভব পার্থক্য সমান থাকে, তাকে রোধের সমান্তরাল সমবায় বলা হয়।
সমান্তরাল সমবায়ের কয়েকটি বৈশিষ্ট্য হল-
(১) প্রতিটি রোধের প্রান্তীয় বিভবপ্রভেদ সমান।
(২) বর্তনীর মূল প্রবাহমাত্রা = প্রতিটি আলাদা রোধের প্রবাহমাত্রার সমষ্টি।
(৩) যেহেতু প্রান্তীয় বিভবপ্রভেদ ধ্রুবক তাই যে কোনো রোধের মধ্য দিয়ে প্রবাহমাত্রা ঐ রোধের ব্যাস্তানুপাতিক।
(৪) রোধগুলি পরস্পর স্থান বিনিময় করলে প্রান্তীয় বিভবপ্রভেদ ও তুল্যরোধ এবং বিভিন্ন রোধের মধ্য দিয়ে প্রবাহমাত্রা পরিবর্তিত হয় না।
(৫) তুল্যরোধের অন্যোন্যক = রোধগুলির অন্যোন্যকের সমষ্টি।
49. তড়িৎপ্রবাহের তাপীয় ফল বলতে কী বোঝ?
উঃ কোনো পরিবাহীর মধ্য দিয়ে তড়িৎ প্রবাহ চললে পরিবাহীটি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে অর্থাৎ পরিবাহীতে তাপ উৎপন্ন হয়। একেই তড়িৎপ্রবাহের তাপীয় ফল বলে।
50. তড়িৎপ্রবাহের তাপীয় ফল সংক্রান্ত জুলের সূত্রগুলি লেখ।
উঃ তড়িৎপ্রবাহের তাপীয় ফল সংক্রান্ত জুলের সূত্রগুলি হল-
প্রথম সূত্রঃ পরিবাহীর রোধ (R) এবং প্রবাহকাল (t) স্থির থাকলে পরিবাহীতে উৎপন্ন তাপ (H) প্রবাহমাত্রার (I) বর্গের সমানুপাতিক হয়।
দ্বিতীয় সূত্রঃ পরিবাহীর মধ্য দিয়ে প্রবাহমাত্রা (I) এবং প্রবাহকাল (t) স্থির থাকলে পরিবাহীতে উৎপন্ন তাপ (H) পরিবাহীর রোধের (R) সমানুপাতিক হয়।
তৃতীয় সূত্রঃ পরিবাহীর রোধ (R) এবং প্রবাহমাত্রা (I) স্থির থাকলে পরিবাহীতে উৎপন্ন তাপ (H) প্রবাহকাল (t)-এর সমানুপাতিক হয়।
জুলের সূত্র তিনটিকে একত্রিত করলে পাওয়া যায়-
H ∝ I2RT;
বা H = KI2RT; K = ধ্রুবক;
SI পদ্ধতিতে K-এর মান 0.24, সেক্ষেত্রে-
H = 0.24I2RT
51. তাপের যান্ত্রিক তুল্যাঙ্ক কাকে বলে?
উঃ একক পরিমাণ তাপ উৎপন্ন করতে গেলে যে পরিমাণ কার্য করতে হয় তাকে তাপের যান্ত্রিক তুল্যাঙ্ক বলে।
52. বৈদ্যুতিক তাপ উৎপাদক যন্ত্র যেমন ইলেকট্রিক ইস্ত্রি, হিটার ইত্যাদিতে নাইক্রোম তার ব্যবহার করার কারণ কী?
উঃ (১) নাইক্রোম হল নিকেল, ক্রোমিয়াম ও লোহার সংকর ধাতু, এর রোধাঙ্ক খুব বেশি। তাই এর মধ্য দিয়ে তড়িৎপ্রবাহ হলে অনেক বেশি পরিমাণে তাপ উৎপন্ন হয়।
(২) এর গলনাঙ্ক খুব বেশি, তাই তারটি উচ্চ তাপমাত্রায় থেকে প্রচুর তাপ সরবরাহ করতে পারে।
(৩) নাইক্রোম উচ্চতাপমাত্রায় বেশিক্ষণ বায়ুর সংস্পর্শে থাকলেও বায়ুর অক্সিজেন দ্বারা জারিত হয় না, ফলে ক্ষয় কম হয়।
53. বৈদ্যুতিক হিটারের তার বৈদ্যুতিক বাতির ফিলামেন্টের মত আলো বিকিরণ করে না কেন?
উঃ বৈদ্যুতিক বাতির টাংস্টেন তারের ফিলামেন্ট সরু এবং লম্বা হওয়ায় এর রোধ খুব বেশি। তড়িৎপ্রবাহের ফলে এতে প্রচুর তাপ সৃষ্টি হয়। ফলে এটি শ্বেততপ্ত হয়ে উজ্জ্বল আলো দেয়। কিন্তু হিটারে অপেক্ষাকৃত মোটা নাইক্রোম তার ব্যবহার করা হয়। মোটা তারের রোধ সরু তারের চেয়ে কম হওয়ায় হিটারের নাইক্রোম তারের কুন্ডলী বৈদ্যুতিক বাতির ফিলামেন্টের মত শ্বেততপ্ত হয় না। তাই হিটারের তার আলো বিকিরণ করে না।
54. বৈদ্যুতিক বাল্বে নিষ্ক্রিয় গ্যাস ভর্তি করার কারণ কী?
উঃ বর্তমানে বৈদ্যুতিক বাতিতে সামান্য পরিমাণে নিষ্ক্রিয় গ্যাস ভর্তি করা হয়, কারণ বায়ুশূন্য বাল্বের ফিলামেন্ট তাড়াতাড়ি বাষ্পীভূত হয়ে বাল্বের চারিদিকে একটি আস্তরণের সৃষ্টি করে। ফলে বাতির উজ্জ্বলতা কমে যায়। অল্পদিনের মধ্যে ফিলামেন্টটি কেটে যায়। নিষ্ক্রিয় গ্যাস ভর্তি থাকলে এত দ্রুত ফিলামেন্টের বাষ্পীভবন হয় না। ফলে বাতিটি বেশিদিন চলে। গ্যাসপূর্ণ বাতির ফিলামেন্টের উষ্ণতা অনেক বেশি বাড়ানো যায়। তাই এই বাতি থেকে অনেক বেশি আলো পাওয়া যায়।
55. সর্ট-সার্কিট হওয়ার অর্থ কী?
উঃ তড়িৎ বর্তনীতে প্রবাহমাত্রা হঠাৎ একটি সংক্ষিপ্ত পথে তড়িৎ উৎসের এক মেরু থেকে অন্য মেরুতে ফিরে গেলে বর্তনীতে রোধ কমে গিয়ে প্রবাহমাত্রা বেড়ে যায়। একেই সর্ট সার্কিট হওয়া বলে।
56. ফিউজ তার কী?
উঃ বৈদ্যুতিক লাইনের নিরাপত্তার জন্য একটি ছোটো, সরু তার চিনামাটির হোল্ডারের মাধ্যমে বৈদ্যুতিক মেইন লাইনের লাইভ তারের সঙ্গে শ্রেণি সমবায়ে যুক্ত করা হয়। এই তারটিকে ফিউজ তার বলে। ফিউজ তারের রোধ বেশি ও গলনাঙ্ক খুব কম হয়। কোনো কারণে বৈদ্যুতিক লাইনে হঠাৎ খুব বেশি প্রবাহমাত্রা বাড়লে ফিউজ তারটি গলে গিয়ে তড়িৎপ্রবাহ বন্ধ করে দেয়।
57. বৈদ্যুতিক বর্তনীতে ফিউজ তার ব্যবহার করার কারণ কী?
উঃ বৈদ্যুতিক বর্তনীতে ফিউজ তার ব্যবহার করার কারণ হল এই তারের গলনাঙ্ক কম এবং রোধ বেশি। তাই সর্ট-সার্কিট, অতিরিক্ত লোড বা অন্য কোনো কারণে বাড়ির বৈদ্যুতিক লাইনে হঠাৎ খুব বেশি প্রবাহমাত্রা বাড়লে ফিউজ তারটি গলে গিয়ে তড়িৎপ্রবাহ বন্ধ করে দেয়। ফলে বৈদ্যুতিক তার ও দামি যন্ত্রগুলি অক্ষত থাকে এবং দুর্ঘটনা ঘটে না।
58. 5A ফিউজ তার-এর অর্থ কী?
উঃ ‘5A ফিউজ তার’-এর অর্থ হল ওই ফিউজ তারটি সর্বোচ্চ 5A প্রবাহমাত্রার তড়িৎ পরিবহনে সক্ষম এবং প্রবাহমাত্রা এর বেশি হলে তারটি গলে গিয়ে তড়িৎপ্রবাহ বন্ধ করে দেবে।
59. তড়িৎ ক্ষমতা কাকে বলে?
উঃ কোনো বৈদ্যুতিক যন্ত্র সময়ের সাপেক্ষে যে হারে তড়িৎ শক্তি খরচ করে তাকে ঐ যন্ত্রের তড়িৎ ক্ষমতা বলে।
60. তড়িৎশক্তি কাকে বলে?
উঃ তড়িৎযন্ত্রের কার্য করার মোট সামর্থ্যকে তার তড়িৎশক্তি বলে। অন্যভাবে বলা যায়,
কোনো পরিবাহী বা বর্তনীতে বিভব প্রভেদের ফলে তড়িৎ প্রবাহিত হলে যে কার্য সম্পাদিত হয় তাকে তড়িৎশক্তি বলে।
61. তড়িৎশক্তির SI একক কী?
উঃ তড়িৎশক্তির SI একক হল জুল।
62. BOT কাকে বলে?
উঃ 1 কিলোওয়াট ক্ষমতাবিশিষ্ট তড়িৎযন্ত্র 1 ঘন্টা সময়ে যে পরিমাণ তড়িৎশক্তি খরচ করে তাকে 1 কিলোওয়াট-ঘন্টা বা BOT (Board oF Trade Unit) বলা হয়।
63. একটি বাল্বের গায়ে ‘220V-100W লেখা থাকার তাৎপর্য কী?
উঃ একটি বাল্বের গায়ে ‘220V-100W লেখা থাকার অর্থ হল বাল্বটিকে 220V বিভব পার্থক্যের সঙ্গে যুক্ত করলে সেটি 100 J/s হারে তড়িৎশক্তি খরচ করবে এবং বাতিটির উজ্জ্বলতা সর্বোচ্চ হবে।
64. CFL-এর পুরো কথা লেখ।
উঃ Compact Fluorescent Lamp
65. LED-এর পুরো কথাটি লেখ।
উঃ Light Emitting Diode
66. CFL ও LED-বাল্বের মধ্যে তুলনা করো।
উঃ CFL ও LED উভয় প্রকার বাল্বই ভাস্বর ল্যাম্পের চেয়ে অনেক বেশি শক্তি সাশ্রয়কারী। তবে এদের মধ্যে অনেক বিষয়ে পার্থক্য আছে। যেমন-
(১) CFL বাল্ব LED বাল্ব অপেক্ষা সস্তা।
(২) LED বাল্ব CFL বাল্বের চেয়ে বেশি দিন চলে।
(৩) CFL তৈরিতে আর্গন, পারদ বাষ্প, টাংস্টেন, বেরিয়াম প্রভৃতি ব্যবহার করা হয়। LED তৈরিতে অর্ধপরিবাহী ব্যবহার করা হয়, পারদ ব্যবহৃত হয় না।
(৪) LED বাল্ব সুইচ দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে জ্বলে ওঠে। CFL সুইচ দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে জ্বলে ওঠে না। পূর্ণমাত্রায় জ্বলে উঠতে কিছু সময় লাগে।
(৫) CFL 10oF-এর নীচে এবং 120oF-এর ওপরে কাজ করে না। কিন্তু LED পারে।
67. বাড়ির তড়িৎ সংযোগ ব্যবস্থায় আলো, পাখা ইত্যাদি কিরূপে সংযুক্ত থাকে-শ্রেণি সমবায়ে না সমান্তরাল সমবায়ে? উত্তরের সমর্থনে যুক্তি দাও।
উঃ আলো, পাখা ইত্যাদি বৈদ্যুতিক যন্ত্রের ভোল্টেজ রেটিং এরূপ থাকে যে, এদের দুপ্রান্তের বিভব প্রভেদ একটি নির্দিষ্ট মানে (যেমন 220 ভোল্টে) থাকলে এরা সর্বাধিক কার্যক্ষম হয়। সেজন্য বাড়ির তড়িৎ সংযোগ ব্যবস্থায় আলো, পাখা ইত্যাদিকে সমান্তরাল সমবায়ে যুক্ত করা হয়।
68. অ্যাম্পিয়ারের সন্তরণ নিয়মটি লেখো।
উঃ চুম্বক শলাকার উত্তর মেরুর দিকে মুখ রেখে তড়িৎবাহী তারের ওপর দিয়ে তড়িৎপ্রবাহের অভিমুখে একজন লোক হাত ছড়িয়ে সাঁতার কাটলে লোকটির বাম হাত যে দিকে প্রসারিত হবে শলাকার উত্তর মেরু সেই দিকে বিক্ষিপ্ত হবে।
69. দক্ষিণ মুষ্টি নিয়মটি বিবৃত করো।
উঃ একটি পরিবাহী তারকে ডানহাতের মুঠোর সাহায্যে যদি এমনভাবে ধরা হয় যাতে বুড়ো আঙুল তড়িৎপ্রবাহের অভিমুখ নির্দেশ করে, তাহলে অন্যান্য আঙুলগুলির অগ্রভাগ চৌম্বক বলরেখার অভিমুখ নির্দেশ করবে।
70. ফ্লেমিং-এর বাম হস্ত সূত্রটি লেখো।
উঃ বামহস্তের বৃদ্ধাঙ্গুলি, মধ্যমা এবং তর্জনীকে পরস্পরের সঙ্গে সমকোণে রেখে প্রসারিত করলে যদি তর্জনী চৌম্বকক্ষেত্রের দিক এবং মধ্যমা তড়িৎপ্রবাহের দিক নির্দেশ করে, তবে বৃদ্ধাঙ্গুলি পরিবাহী তারের উপর ক্রিয়াশীল বলের দিক নির্দেশ করবে।
71. এমন একটি যন্ত্রের নাম লেখো যার কার্যনীতি ফ্লেমিং-এর বামহস্ত নিয়ম মেনে চলে।
উঃ বৈদ্যুতিক মোটর।
72. যদি তড়িৎপ্রবাহের অভিমুখ বিপরীত করা হয় তাহলে বার্লোচক্রের গতিতে কী পরিবর্তন ঘটবে?
উঃ যদি চৌম্বক ক্ষেত্রের অভিমুখ একই রেখে তড়িৎপ্রবাহের অভিমুখ বিপরীত করা হয় তাহলে বার্লোচক্র বিপরীত দিকে ঘুরবে। আর যদি চৌম্বক ক্ষেত্র এবং তড়িৎপ্রবাহ উভয়ের অভিমুখ বিপরীত করা হয় তাহলে চক্রের ঘূর্ণনের অভিমুখ অপরিবর্তিত থাকবে।
73. বার্লোচক্র কি AC তে চলে?
উঃ না। বার্লোচক্র DC-তে চলে। কারণ পরিবর্তী প্রবাহের অভিমুখ সময়ের সঙ্গে বিপরীতমুখী হওয়ার জন্য কোনো এক মূহুর্তে চক্রের উপর বল যেদিকে ক্রিয়া করে পরমূহুর্তেই তার বিপরীত দিকে ক্রিয়া করে। চক্রের উপর এই পরস্পর বিপরীতমুখী বল ক্রিয়া করার জন্য চক্রের ঘূর্ণন হয় না।
74. বার্লোচক্রে কোন শক্তি কোন শক্তিতে রূপান্তরিত হয়?
উঃ বার্লোচক্রে বৈদ্যুতিক শক্তি যান্ত্রিক শক্তিতে রূপান্তরিত হয়।
75. বৈদ্যুতিক মোটর বলতে কী বোঝ?
উঃ যে যন্ত্রের সাহায্যে বৈদ্যুতিক শক্তিকে যান্ত্রিক শক্তিতে রূপান্তরিত করা হয় তাকে বৈদ্যুতিক মোটর বলে।
76. বৈদ্যুতিক মোটর কয় প্রকার ও কী কী?
উঃ বৈদ্যুতিক মোটর দুই প্রকার। যথা- (i) সমপ্রবাহ মোটর বা DC মোটর এবং (ii) পরিবর্তী প্রবাহ মোটর বা AC মোটর।
77. বৈদ্যুতিক মোটরের কয়েকটি ব্যবহার উল্লেখ করো।
উঃ বৈদ্যুতিক ট্রাম, ট্রেন, পাখা, কাপড়কাচা যন্ত্র, রেফ্রিজারেটর, বৈদ্যুতিক পাম্প প্রভৃতি যন্ত্রে বৈদ্যুতিক মোটর ব্যবহার করা হয়।
78. কী কী উপায়ে বৈদ্যুতিক মোটরের শক্তিবৃদ্ধি করা যায়?
উঃ বৈদ্যুতিক মোটরের শক্তিবৃদ্ধি করার উপায়গুলি হল-
(১) ক্ষেত্র চুম্বকের শক্তি বাড়িয়ে,
(২) আর্মেচারের মধ্যে তড়িৎপ্রবাহের মাত্রা বাড়িয়ে,
(৩) আর্মেচারে তারের পাকসংখ্যা বাড়িয়ে।
79. তড়িৎচুম্বকীয় আবেশ কাকে বলে?
উঃ কোনো বদ্ধ পরিবাহী লুপের সঙ্গে জড়িত চৌম্বক বলরেখার সংখ্যা বা চৌম্বক প্রবাহের পরিবর্তন হলে ওই লুপে একটি তড়িৎচালক বল আবিষ্ট হয়। এই ঘটনাকে তড়িৎচুম্বকীয় আবেশ বলে।
80. তড়িৎচুম্বকীয় আবেশ সম্পর্কিত ফ্যারাডের সূত্রগুলি লেখ।
উঃ তড়িৎচুম্বকীয় আবেশ সম্পর্কিত ফ্যারাডের সূত্রগুলি হল-
প্রথম সূত্রঃ কোনো বদ্ধ কুন্ডলীর সঙ্গে জড়িত চৌম্বক বলরেখার পরিবর্তন হলে ওই কুন্ডলীতে তড়িৎচালক বল আবিষ্ট হয় এবং কুন্ডলীর মধ্যে তড়িৎ প্রবাহ চলে।
দ্বিতীয় সূত্রঃ বর্তনীতে আবিষ্ট তড়িৎচালক বলের মান কুণ্ডলীর সঙ্গে জড়িত চৌম্বকপ্রবাহের পরিবর্তনের হারের সঙ্গে সমানুপাতিক হয়।
81. তড়িৎচুম্বকীয় আবেশ সম্পর্কিত লেঞ্জের সূত্রটি লেখ।
উঃ তড়িৎচুম্বকীয় আবেশের ফলে সৃষ্ট আবিষ্ট তড়িৎচালক বলের অভিমুখ এমন হয় যে, এই আবিষ্ট তড়িৎচালক বল বর্তনীতে তড়িৎপ্রবাহ সৃষ্টির কারণকে বাধা দেয়।
82. লেঞ্জের সূত্র শক্তির নিত্যতা সূত্রেরই আর এক রূপ-ব্যাখ্যা করো।
উঃ তড়িৎ চুম্বকীয় আবেশ সংক্রান্ত লেঞ্জের সূত্রটি যে শক্তির নিত্যতা সূত্রেরই আর এক রূপ তা সহজেই দেখানো যেতে পারে। ধরা যাক, একটি দণ্ড চুম্বকের N-মেরুকে একটি বদ্ধ কুণ্ডলীর দিকে আনা হচ্ছে। তড়িৎচুম্বকীয় আবেশের জন্য ওই কুণ্ডলীতে তড়িৎপ্রবাহ আবিষ্ট হবে। লেঞ্জের সূত্রানুসারে এই আবিষ্ট প্রবাহের দিক এমন হবে যে এটি আবেশের কারণ অর্থাৎ ওই N-মেরুর অগ্রগমনকে বাধা দেবে। ধরা যাক, বদ্ধ কুণ্ডলীতে যে তড়িৎঅপ্রবাহ সৃষ্টি হল তা N-মেরুর অগ্রগমনকে বাধা না দিয়ে নিজের দিকে এগিয়ে আসতে সাহায্য করলো, অর্থাৎ বদ্ধ কুণ্ডলীতে তড়িৎপ্রবাহ এমন দিকে হল যেন ওর সামনে S-মেরুর সৃষ্টি হয়। এর ফলে দুই বিপরীত মেরুর আকর্ষণে দণ্ড চুম্বক নিজে থেকেই কুণ্ডলীর দিকে অগ্রসর হতে থাকবে। এজন্য কোনো শক্তি প্রয়োগ করার প্রয়োজন হবে না। সুতরাং এক্ষেত্রে শক্তি ব্যয় না করেই চুম্বকের গতিশক্তি এবং আবিষ্ট প্রবাহের তড়িৎশক্তি সৃষ্টি হবে। এটি শক্তির নিত্যতা সূত্র মান্য করে না। শক্তির নিত্যতা সূত্র মতে শক্তি ব্যয় না করে অন্য প্রকার শক্তি পাওয়া যায় না। কাজেই এটি একেবারেই অসম্ভব। সুতরাং আবিষ্ট প্রবাহের দিক এমন হবে যে, তা চুম্বকের অগ্রগতিকে বাধা দেবে অর্থাৎ কুণ্ডলীর সামনের তলে N-মেরুর সৃষ্টি হবে। সেক্ষেত্রে চুম্বককে কুণ্ডলীর দিকে নিয়ে যেতে ওই বাধার বিরুদ্ধে যে কার্য করতে হবে তাই আবিষ্ট প্রবাহের তড়িৎশক্তিতে রূপান্তরিত হবে। এটিই লেঞ্জের সূত্র।
83. একমুখী তড়িৎপ্রবাহ বা DC কাকে বলে?
উঃ যদি একটি পরিবাহীতে তড়িৎপ্রবাহের অভিমুখ সময়ের সঙ্গে পরিবর্তিত না হয়, তাহলে সেই তড়িৎপ্রবাহকে একমুখী তড়িৎপ্রবাহ বা সমপ্রবাহ বা Direct Current (DC) বলা হয়।
84. সমপ্রবাহ (DC) উৎপন্ন করে এমন কয়েকটি উৎসের নাম করো।
উঃ তড়িৎকোশ, ব্যাটারি, DC জেনারেটর ইত্যাদি।
85. পরিবর্তী তড়িৎ প্রবাহ বা AC কাকে বলে?
উঃ যদি একটি পরিবাহীতে তড়িৎপ্রবাহের অভিমুখ নির্দিষ্ট সময় অন্তর পূর্বের বিপরীত দিকে হয় এবং তড়িৎপ্রবাহের মান নির্দিষ্ট হারে পরিবর্তিত হয় তাহলে সেই তড়িৎপ্রবাহকে পরিবর্তী তড়িৎপ্রবাহ বা Alternating Current (AC) বলা হয়।
86. পরিবর্তী তড়িৎপ্রবাহ (AC) উৎপন্ন করে এমন কয়েকটি উৎসের নাম করো।
উঃ বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রের জেনারেটর, AC ডায়নামো ইতাদি।
87. ডায়নামো বা জেনারেটর কাকে বলে? কয় প্রকার ও কী কী?
উঃ যে যন্ত্রে তড়িৎ চুম্বকীয় আবেশকে কাজে লাগিয়ে যান্ত্রিক শক্তিকে তড়িৎশক্তিতে রূপান্তরিত করা হয়। তাকে ডায়নামো বা জেনারেটর বলে।
ডায়নামো দুই প্রকারের হয়-(i) AC ডায়নামো ও (ii) DC ডায়নামো।
88. DC অপেক্ষা AC ব্যবহারের সুবিধাগুলি লেখো।
উঃ DC অপেক্ষা AC-র বেশ কয়েকটি সুবিধা আছে। যথা-
(১) DC অপেক্ষা AC উৎপাদনে খরচ কম।
(২) AC তড়িৎশক্তি সরবরাহ ও বণ্টনের সময় অপচয় অপেক্ষাকৃত কম হয়।
(৩) AC বিভবকে (ভোল্টেজকে) ট্রান্সফর্মার-এর সাহায্যে প্রয়োজন মতো বাড়ানো বা কমানো যায়।
(৪) উচ্চ কম্পাঙ্কের AC তড়িৎশক্তিকে কম খরচে বহুদূরে সম্প্রচারিত করা যায়।
89. গৃহস্থালির তড়িৎবর্তনীতে বিভিন্ন তড়িৎযন্ত্র কোন সমবায়ে যুক্ত থাকে?
উঃ সমান্তরাল সমবায়ে।
90. তড়িৎবিভবের SI একক কী?
উঃ ভোল্ট।
91. DC অপেক্ষা AC বেশি বিপজ্জনক কেন?
উঃ 220 ভোল্ট DC-এর বিভব প্রভেদ সর্বদা 220 ভোল্টই থাকে তাই 220 ভোল্ট DC থেকে শক লাগলে শক 220 ভোল্টের জন্যই হয়। অন্যদিকে 220 ভোল্ট AC-এর তড়িৎচালক বলের কার্যকর মান 220 ভোল্ট, কিন্তু ওই ভোল্টেজের শীর্ষমান 220 × √2 = 311 ভোল্ট। সুতরাং 220 ভোল্ট AC-এর শক খাওয়ার অর্থ 311 ভোল্টের শক খাওয়া। তাই 220 ভোল্ট DC অপেক্ষা 220 ভোল্ট AC বেশি বিপজ্জনক।
92. ডায়নামো ও মোটরের তুলনা করো।
উঃ ডায়নামো ও মোটরের তুলনা-
(১) ডায়নামোতে যান্ত্রিক শক্তি তড়িৎশক্তিতে রূপান্তরিত হয় অন্যদিকে মোটরে তড়িৎশক্তি যান্ত্রিক শক্তিতে রূপান্তরিত হয়।
(২) ডায়নামো কাজ করে তড়িৎ চুম্বকী আবেশের ভিত্তিতে, অপরদিকে মোটর কাজ করে তড়িৎপ্রবাহের ওপর চুম্বকের ক্রিয়ার ভিত্তিতে।
93. এমন একটি যন্ত্রের নাম লেখো যার কার্যনীতি ফ্লেমিং-এর ডানহস্ত নিয়ুম মেনে চলে?
উঃ বৈদ্যুতিক জেনারেটর।
94. বৈদ্যুতিক সুইচ বলতে কী বোঝ?
উঃ যে ব্যবস্থার সাহায্যে কোনো তড়িৎ বর্তনীতে তড়িৎপ্রবাহ চালু বা বন্ধ করা হয় তাকে সুইচ বলে।
95. লাইভ তার, নিউট্রাল তার ও আর্থ তার বলতে কী বোঝ?
উঃ বৈদ্যুতিক সংযোগ ব্যবস্থায় যে তারটিতে তড়িৎ উপস্থিত থাকে এবং আর্থের সঙ্গে যার বিভব প্রভেদ থাকে তাকে লাইভ তার বলে।
বৈদ্যুতিক সংযোগ ব্যবস্থায় যে তারে তড়িৎ থাকে না তাকে নিউট্রাল তার বলে।
বৈদ্যুতিক সংযোগ ব্যবস্থায় যে তারটি আর্থ অর্থাৎ ভূমির সঙ্গে যুক্ত থাকে তাকে আর্থ তার বলে।
96. আর্থিং বা ভূ-সংযোগ কী?
উঃ একটি মোটা তামার তারের একপ্রান্ত মিটারের সঙ্গে যুক্ত করে অন্য প্রান্তটি মাটির নীচে রাখা তামার একটি প্লেটের সঙ্গে যুক্ত কুরা হয়। এই পদ্ধতিটিকে আর্থিং বা ভূ-সংযোগ বলে। আর্থিং-এর তার মেইন সুইচের সঙ্গে যুক্ত থাকে এবং গৃহস্থালির বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতির ধাতব আবরণের সঙ্গেও যুক্ত থাকে। ফলে সর্ট-সার্কিট বা অন্য কোনো কারণে বর্তনীতে তড়িৎপ্রবাহ বেশি হলে সেই তড়িৎ আর্থ তারের মাধ্যমে মাটিতে চলে যায় ফলে বর্তনীর তার বেশি উত্তপ্ত হয়ে পুড়ে যায় না এবং বৈদ্যুতিক যন্ত্র থেকে আমাদের শক লাগে না।
97. বৈদ্যুতিক কেবল তারের কালার কোডিং সম্পর্কে যা জানো লেখো।
উঃ সহজে বোঝার সুবিধার জন্য বৈদ্যুতিক তারের অন্তরক আবরণীটি বিভিন্ন বর্ণের করা হয়ে থাকে।
পুরোনো নিয়ম অনুসারে লাইভ তার লাল বর্ণের, নিউট্রাল তার কালো বর্ণের এবং আর্থ তার সবুজ বর্ণের করা হত।
নতুন আন্তর্জাতিক নিয়মানুসারে লাইভ তার বাদামি/তামাটে বর্ণের, নিউট্রাল তার নীল বর্ণের এবং আর্থ তার সবুজ বা হলুদ বর্ণের করা হয়।
Download মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞান চলতড়িৎ প্রশ্নোত্তর PDF
File Details:-
File Format:-PDF
Quality:- High
File Size:- 5 Mb
File Location:- Google Drive
Click Here to Download
আরও পড়ুন:
Others Important Link
Syllabus Link: Click Here
Questions Paper Link: Click Here
Admit Card Link: Click Here
Result Link: Click Here
Latest Job: Click Here
Age Calculator: Click Here
ঘোষণা: বিনামূল্যে আমাদের দেওয়া নোটস, সাজেশান, প্রশ্ন উত্তর ইত্যাদি স্টাডি ম্যাটেরিয়াল PDF এবং ভিডিও ক্লাস ভালো লাগলে, আমাদের এই পোস্টের লিংক আপনার বন্ধুদের ফেসবুক, WhatsApp এ শেয়ার করে তাদের পড়ার সুযোগ করে দিন।
Please do not share any spam link in the comment box