অর্ডিনারি আইটির পোস্ট নোটিফিকেশন


উত্তর ভারতে আঞ্চলিক শক্তির বিকাশ প্রশ্নোত্তর - গুপ্ত পরবর্তী সময়কাল

উত্তর ভারতে আঞ্চলিক শক্তির বিকাশ প্রশ্নোত্তর - গুপ্ত পরবর্তী সময়কাল PDF: প্রতিবছর বিভিন্ন সরকারি চাকরির পরীক্ষায় Development of regional power in North India PDF থেকে অনেক প্রশ্ন আসে। তাই আমরা আপনাদের জন্য নিয়ে এসেছি উত্তর ভারতে আঞ্চলিক শক্তির বিকাশ প্রশ্নোত্তর - গুপ্ত পরবর্তী সময়কাল PDF


উত্তর ভারতে আঞ্চলিক শক্তির বিকাশ প্রশ্নোত্তর - গুপ্ত পরবর্তী সময়কাল

নিচে উত্তর ভারতে আঞ্চলিক শক্তির বিকাশ প্রশ্নোত্তর - গুপ্ত পরবর্তী সময়কাল PDF টি যত্নসহকারে পড়ুন ও জ্ঞানভাণ্ডার বৃদ্ধি করুন। উত্তর ভারতে আঞ্চলিক শক্তির বিকাশ প্রশ্নোত্তর - গুপ্ত পরবর্তী সময়কাল PDF টি সম্পূর্ণ বিনামূল্যে ডাউনলোড করতে এই পোস্টটির নীচে যান এবং ডাউনলোড করুন।


উত্তর ভারতে আঞ্চলিক শক্তির বিকাশ প্রশ্নোত্তর - গুপ্ত পরবর্তী সময়কাল


উত্তর ভারতে আঞ্চলিক শক্তির বিকাশ প্রশ্নোত্তর - গুপ্ত পরবর্তী সময়কাল PDF

Dear Students, Gksolves.com চাকরির পরীক্ষার প্রস্তুতির সেরা ঠিকানা, আজ আমরা আপনাদের জন্য নিয়ে এসেছি উত্তর ভারতে আঞ্চলিক শক্তির বিকাশ প্রশ্নোত্তর - গুপ্ত পরবর্তী সময়কাল PDF. প্রতিবছর বিভিন্ন সরকারি চাকরির যেমন Railway Group D | PSC Clerkship | WBCS | SSC CHSL | SSC CGL | SSC MTS | WBP Abgari Constable | WBP SI | WBP Constable | ICDS Supervisor | Railway Group D | RRB NTPC | PSC Miscellaneous | TET  | Upper Primary  | Group D ইত্যাদি পরীক্ষার মাধ্যমে নিয়োগ হয়ে থাকে। এই সমস্ত চাকরির পরীক্ষা ছাড়াও মাধ্যমিক, উচ্চমাধ্যমিক সম্বন্ধে আপনার সাধারণ ধারণা থাকা দরকার, তাই আমরা আপনাদের জন্য নিয়ে এসেছি উত্তর ভারতে আঞ্চলিক শক্তির বিকাশ প্রশ্নোত্তর - গুপ্ত পরবর্তী সময়কাল PDF যা আপনাদের পরীক্ষার প্রশ্নপত্র সম্পর্কে ধারণা গঠন করতে বিশেষ সাহায্য করবে। 



Google News এ আমাদের ফলো করুন


Gksolves Google News


উত্তর ভারতে আঞ্চলিক শক্তির বিকাশ প্রশ্নোত্তর - গুপ্ত পরবর্তী সময়কাল



উত্তর ভারতে আঞ্চলিক শক্তির বিকাশ - গুপ্ত পরবর্তী সময়কাল


উত্তর ভারতে আঞ্চলিক শক্তির বিকাশ - Short Notes on Post Gupta Period


  • গুপ্ত সাম্রাজ্যের শেষ দিকে উপযুক্ত উত্তরাধিকারীদের দুর্বলতার সুযোগে হূন নেতা তোরমান ভারতের উপর আক্রমণ হানেন।
  • পাঞ্জাব, রাজপুতানা ও পূর্ব মালবে তাদের আধিপত্য প্রতিষ্ঠিত হয়। অবশ্য এই আধিপত্য বেশিদিন স্থায়ী হয় নি।
  • তিনি শেষ বয়স-এ জৈন ধর্ম গ্রহণ করেন এবং চেনাব নদীর উপকূলে বসবাস শুরু করেন।
  • তাঁর পুত্র মিহিরকুল খুব শক্তিশালী ও নিষ্ঠুর প্রকৃতির ছিলেন। তাঁর রাজধানী ছিল শাকল বা শিয়ালকোট। তিনি প্রবল বৌদ্ধ বিদ্বেষী এবং শিবের উপাসক ছিলেন।
  • হিউয়েন সাঙ বলেন যে, গুপ্ত সম্রাট নরসিংহগুপ্ত বালাদিত্য মিহিরকুলকে চূড়ান্ত ভাবে পরাজিত করেন।
  • মিহিরকুলের মৃত্যুর পর যোগ্য নেতার অভাবে হুন শক্তি দুর্বল হয়ে পড়ে।


বলভীর মৈত্রক বংশ

  • মান্দাশোর স্তম্ভ লিপি থেকে জানা যায় যে,গুপ্ত সাম্রাজ্যের পতন কালে যশোধর্মন পশ্চিম মালবে এক শক্তিশালী স্বাধীন রাজ্যের প্রতিষ্ঠা করেন।
  • তাঁর রাজধানী ছিল দাসপুর বা মান্দাশোর। তাঁর কোনো বংশপরিচয় বা উত্তরাধিকারী সম্পর্কে জানা যায় না।
  • গুপ্ত সাম্রাজ্যের পতনের দিনে গুপ্তদের সেনাপতি ভট্টারক সৌরাস্ট্রের বলভী তে একটি স্বাধীন রাজ্য ও রাজবংশ প্রতিষ্ঠা করেন। এই রাজবংশের নাম হয় মৈত্রক বংশ।
  • ভট্টারক-এর পুত্র ছিল ধ্রুবসেন। হর্ষবর্ধনের সমসাময়িক দ্বিতীয় ধ্রুবসেন ছিলেন এই বংশের অন্যতম শ্রেষ্ঠ নরপতি।
  • তিনি বৌদ্ধধর্মাবলম্বী ছিলেন এবং হর্ষের আহ্বানে তিনি প্রয়াগের ধর্ম সম্মেলনে যোগদান করেন।
  • এই বংশের সর্বশ্রেষ্ঠ রাজা ছিলেন চতুর্থ ধ্রুবসেন।
  • তাঁর রাজসভা শিক্ষা ও সংস্কৃতির কেন্দ্র ছিল। “ভত্তিকাব্যম” বা “রাবনবধম” কাব্য রচয়িতা কবি ভট্টি তাঁর সভাকবি ছিলেন।
  • বিদেশে রপ্তানির জন্য এবং বিদেশ থেকে আমদানি করা পণ্যসামগ্রীর জন্য বলভী তে বহু গুদাম তৈরী হয়েছিলো।
  • শিক্ষা সংস্কৃতির কেন্দ্র হিসাবেও বলভী উল্লেখযোগ্য ছিল। বলভি বিশ্ববিদ্যালয় ছিল শিক্ষা সংস্কৃতির পীঠস্থান এবং নালন্দার মতোই তাঁর খ্যাতি বহুদূর বিস্তৃত ছিল।
  • এখনকার বৌদ্ধ পণ্ডিতদের মধ্যে স্থিরমতি ও গুনমতি উল্লেখযোগ্য ছিলেন।


বাকাটক বংশ

  • গুপ্ত সাম্রাজ্যের সমসাময়িক কালে মধ্য ও দক্ষিণ ভারতের কিছু অংশ নিয়ে বাকাটক রাজ্য গড়ে ওঠে।
  • এই বংশের প্রতিষ্ঠাতা হলেন বিন্ধশক্তি।
  • তাঁর পুত্র প্রবরসেন ছিলেন বাকাটক বংশের প্রকৃত প্রতিষ্ঠাতা। তাঁর রাজধানী ছিল পুরীক। তিনি গোঁড়া ব্রাহ্মণ্য ধর্মের সমর্থক ছিলেন।
  • প্রবরসেনের পর প্রথম রুদ্রসেন, পৃথিবীসেন ও দ্বিতীয় রুদ্রসেন বাকাটক সিংহাসন-এ বসেন।
  • গুপ্ত সম্রাট দ্বিতীয় চন্দ্রগুপ্ত বাকাটক রাজা দ্বিতীয় রুদ্রসেনের সঙ্গে নিজ কন্যা প্রভাবতীর বিবাহ দেন।
  • এই বংশের রাজা সর্বসেন হরিবিজয় নামে একটি প্রাকৃত কাব্য রচনা করেন। দ্বিতীয় প্রবরসেন প্রাকৃত ভাষায় বেশ কিছু কাব্য রচনা করেন। এগুলির মধ্যে সেতুবন্ধন কাব্য উল্লেখযোগ্য। মহাকবি কালিদাস কিছুকাল তাঁর রাজসভায় অবস্থান করে “মেঘদূত” কাব্য টি রচনা করেন।


মৌখরী বংশ

  • গুপ্ত পরবর্তী সময়কালে উত্তর ভারতের রাজনীতিতে কনৌজের মৌখরি বংশ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
  • এই বংশের প্রথম স্বাধীন রাজা ইশানবর্মন। এই বংশের শেষ রাজা ছিলেন অবন্তীবর্মনের পুত্র গ্রহবর্মন ।
  • তিনি থানেশ্বরের পুষ্যভূতি বংশীয় রাজা প্রভাকর বর্ধনের এর কন্যা রাজশ্রী’কে বিবাহ করেন। ফলে দুই রাজবংশই শক্তিশালী হয়ে ওঠে।
  • এর ফলে মালবের পরবর্তী গুপ্ত বংশীয় রাজা দেবগুপ্ত গৌড় রাজ শশাঙ্কের সাথে মিত্রতা স্থাপন করে একটি পাল্টা শক্তি জোট গঠন করেন।
  • শশাঙ্ক কনৌজ আক্রমণ করে গ্রহবর্মনকে পরাজিত ও নিহত করেন। এর ফলে মৌখোরি শক্তি চিরতরে বিলুপ্ত হয়।
  • পরবর্তীকালে হর্ষবর্ধন কনৌজ’কে নিজ সাম্রাজ্য ভুক্ত করেন।


কলিঙ্গ

  • উড়িষ্যা একটি প্রাচীন রাজ্য। পূর্বে এর নাম ছিল কলিঙ্গ।
  • মৌর্য সম্রাট অশোক কলিঙ্গ জয় করেন। মৌর্য সাম্রাজ্যের দুর্বলতার দিনে চেদি বা চেত বংশের মহামেঘবাহণ কলিঙ্গ-এ স্বাধীন রাজ্য প্রতিষ্ঠা করেন।
  • এই বংশের তৃতীয় নরপতি খারবেল ছিলেন এই বংশের শ্রেষ্ঠ নরপতি। খারবেলের মৃত্যুর পর কলিঙ্গ রাজ্য দুর্বল ও বহুধা বিভক্ত হয়ে যায়।
  • গৌড় রাজ শশাঙ্ক কলিঙ্গকে নিজ রজ্যভূক্ত করেন।গৌড় রাজ শশাঙ্ক কলিঙ্গকে নিজ রজ্যভূক্ত করেন।
  • শশাঙ্ক এর মৃত্যুর পর শৈলোদ্ধব বংশের দ্বিতীয় মৈন্যভীত কলিঙ্গ এ স্বাধীনতা ঘোষণা করেন। এই বংশের পতনের পর কলিঙ্গ আবার ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র রাজ্যে বিভক্ত হয়ে যায়।


বাংলা

  • ষষ্ঠ শতকের প্রথম ভাগে গুপ্ত সাম্রাজ্যের পতনের কালে বাংলায় একাধিক স্বাধীন রাজ্যের উৎপত্তি ঘটে। এইসব স্বাধীন রাজ্যগুলির মধ্যে গৌড় রাজ্য সর্বাধিক খ্যাতি ও প্রভাব অর্জন করে।
  • গৌড় রাজ্যের এই খ্যাতি ও প্রতিষ্ঠার মূলে ছিল গৌড় অধিপতি শশাঙ্কের বলিষ্ঠ নেতৃত্ব। শশাঙ্ক সম্পর্কে কোনো নিরপেক্ষ ঐতিহাসিক বিবরণ পাওয়া যায় না।
  • শশাঙ্ক : তাঁর সম্পর্কে জানতে গেলে নির্ভর করতে হয় হর্ষের সভাকবি বানভট্ট ও চৈনিক পরিব্রাজক হিউয়েন সাঙ এর উপর। বৌদ্ধ গ্রন্থ “আর্যমঞ্জুশ্রীমূলকল্প” থেকেও তাঁর সম্পর্কে অনেক কিছু জানতে পারি।
  • শশাঙ্ক ৬০৭ থেকে ৬৩৭ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত রাজত্ব করেন। সমগ্র বাংলা, বিহার এবং উড়িষ্যার কিছু অংশ জয় করার পর শশাঙ্ক গৌড়ের শত্রু কনৌজের মৌখরী বংশীয় রাজা গ্রহ বর্মণের বিরুদ্ধে যুদ্ধ যাত্রা করেন।
  • গ্রহ বর্মন পরাজিত ও নিহত হন। অবশ্য এই যুদ্ধের ফলাফল কি হয়েছিল সে সম্পর্কে সঠিক কিছু জানা যায় না।
  • হর্ষবর্ধন ৬০৬ খ্রিস্টাব্দে থানেশ্বরের সিংহাসনে বসে তাঁর বিরুদ্ধে যুদ্ধযাত্রা করেন। কারণ ৬৩৭ খ্রিস্টাব্দ এ তাঁর মৃত্যুকাল পর্যন্ত তিনি তাঁর বিজিত সাম্রাজ্য বজায় রেখেছিলেন।
  • তিনি শিবের উপাসক ছিলেন। বিভিন্ন বৌদ্ধ ধর্মগ্রন্থে তাকে বৌদ্ধ ধর্ম বিদ্বেষী বলে অভিহিত করা  হয়েছে।
  • বানভট্ট শশাঙ্ক কে “গৌড়াধম” ও “গৌড়ভুজঙ্গ” বলে অভিহিত করেছেন। হিউয়েন সাঙ তাঁকে বৌদ্ধ বিদ্বেষী বলে অভিহিত করেছেন। তবে ডক্টর রমেশ চন্দ্র মজুমদার ও ডক্টর রমাপ্রসাদ চন্দ্র এই মত সমর্থন করেন না। কারণ হি য়েন সাঙ তাঁর রচনাতেই লিখে গেছেন শশাঙ্ক এর রাজত্বকালে বাংলাদেশে বৌদ্ধ ধর্মের যথেষ্ট প্রসার ঘটেছিল।
  • তিনি নিজে তাম্র লিপ্ত, কর্ণসুবর্ন প্রভৃতি স্থানে বৌদ্ধ স্তূপ দেখেছিলেন। বাঙালি রাজনীতিবিদদের মধ্যে তিনিই প্রথম বাংলাকে এক বিশিষ্ট মর্যাদার আসনে প্রতিষ্ঠিত করেন।
  • তিনি রাজ্যজয় দ্বারা যে নীতির পত্তন করেন তা অনুসরণ করে পরবর্তীকালে পাল রাজারা এক বিশাল সাম্রাজ্যের ভিত্তি স্থাপন করেন।


থানেশ্বরের পুষ্যভূতি বংশ

  • পুষ্যভূতি বংশের আদি ইতিহাস সম্পর্কে তেমন কিছু জানা যায় না। তবে এই বংশের প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন জনৈক পুষ্যভূতি।
  • তিনি কনৌজের মৌখরি বংশীয় রাজা গ্রহ বর্মণের সঙ্গে নিজ কন্যা রাজশ্রী-র বিবাহ দেন।
  • এই বংশের প্রথম উল্লেখ যোগ্য রাজা হলেন প্রভাকর বর্ধন।
  • পিতার মৃত্যুর পর রাজ্য বর্ধন সিংহাসনে বসেন। কিন্তু তিনি ৬০৬ খ্রিস্টাব্দে গৌড়াধিপতি শশাঙ্কের হতে নিহত হন।
  • এরপর হর্ষবর্ধন মাত্র ষোলো বছর বয়সে থানেশ্বরের পুষ্যভূতি বংশের সিংহাসনে বসেন। তাঁর নাম হরশাব্দ বা হর্ষ সম্বৎ।
  • নিজের সিংহাসন আরোহণ কে স্মরণীয় করে রাখার জন্য তিনি ৬০৬ খ্রিস্টাব্দ থেকে একটি নতুন বর্ষ গণনা বা অব্দের প্রচলন করেন।
  • হর্ষবর্ধন এর রাজত্বকালের ইতিহাসের উপাদান হিসাবে বাণভট্ট এর ‘হর্ষচরিত’ ও চৈনিক পরিব্রাজক হিউয়েন সাঙ এর বিবরণী খুবই মূল্যবান। এছাড়া নালন্দা শীল, বন্স খেরা তাম্রশাসন, সোনাপত তাম্রশাসন, মধুবন তাম্র পট ও চালুক্য রাজা দ্বিতীয় পুলোকেশির ‘আই হোল শিলালিপি’ খুব ই গুরুত্ত্বপূর্ণ।
  • তিনি ৬১২ খ্রিস্টাব্দে নিজেকে কনৌজের সম্রাট বলে ঘোষণা করেন এবং এই সময়েই শিলাদিত্য উপাধি ধারণ করেন।
  • থানেশ্বের ও কনৌজ এই দুই যুগ্ম রাজ্যের রাজধানী হয় কনৌজ।
  • দাক্ষিনাত্য জয়ের উদ্দেশ্য হর্ষ এক অভিযান পাঠান কিন্তু বাতাপির চালুক্য রাজা দ্বিতীয় পূলকেশির কাছে পরাজিত হন। এর পর তিনি আর দাক্ষিনাত্য জয়ের স্বপ্ন দেখেননি।
  • বাতাপির চালুক্য রাজা দ্বিতীয় পূলকেশীর আইহোল শিলালিপিতে হর্ষ’কে ‘সকলোত্তরপথনাথ’ বা সকল উত্তরাপথের অধীশ্বর বলা হয়েছে।
  • হর্ষবর্ধন ছিলেন অসাধারণ প্রতিভাসম্পন্ন এক সমরকুশলী ও প্রজাহিতৈষী নরপতি। তাঁর’ই চেষ্টায় কনৌজ ‘মহোদয়শ্রী’ অভিধায় ভূষিত হয়।
  • তিনি একজন বিশিষ্ট কবি ও নাট্যকার ও ছিলেন। তাঁর রচিত নাগানন্দ , রত্নাবলী , প্রীয়দর্শিকা নাটক সংস্কৃত সাহিত্যের অমূল্য সম্পদ।
  • কাদম্বরী ও হর্ষচরিত রচয়িতা বাণভট্ট তাঁর সভাকবি ছিলেন।
  • এই যুগে নালন্দা বিশ্ববিদ্যালয় বৌদ্ধ বিদ্যাচর্চার শ্রেষ্ঠ পীঠস্থান ছিল। হর্ষবর্ধন এখানে মুক্তহস্তে দান করতেন।
  • জয়সেন নামক জনৈক বৌদ্ধ পণ্ডিত কে তিনি উড়িষ্যার আশিটি গ্রাম দান করেন। তিনি তাঁর রাজ্যে জীব হত্যা নিষিদ্ধ করেন।
  • তিনি বৌদ্ধ ধর্মের প্রতি অনুরক্ত হলেও তিনি ছিলেন শিব ও সূর্যের উপাসক।
  • সুশাসক হিসাবেও হর্ষবর্ধন ইতিহাসে উল্লেখযোগ্য হয়ে আছেন। ব্যাক্তিগত ভাবে তিনি শাসনের প্রতিটি দিকের প্রতি লক্ষ্য রাখতেন এবং নিয়মিত সাম্রাজ্য পরিদর্শনে বেরোতেন।
  • শাসন কার্য পরিচালনার জন্য হর্ষ নানা শ্রেণীর কর্মচারীর সাহায্য গ্রহণ করতেন। এইসব এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো অবন্তী, সিংহনাদ, কুন্তল, উপরিক, বিষয়পতি প্রমুখ।
  • রাজ-কর্মচারীদের বেতনের পরিবর্তে ভূমিদান করা হতো।
  • শাসন কার্যের সুবিধার জন্য হর্ষ তাঁর সাম্রাজ্য কে কয়েকটি ভুক্তি বা প্রদেশ, প্রদেশ গুলিকে ‘বিষয়’ বা জেলা এবং এবং জেলা গুলিকে ‘গ্রাম’ এ বিভক্ত করেন। গ্রাম এর শাসন ভার ছিল ‘গ্রামিক’ এর হাতে। ‘করনিক’ নামক কর্মচারীর সহায়তায় গ্রামিক গ্রাম শাসন করতেন।
  • হর্ষবর্ধন সামরিক বাহিনীতে নানা সংস্কার প্রবর্তন করেন। তাঁর চারটি শাখা ছিলো: পদাতিক, অশ্বারোহী, রথী ও হস্তিবাহিনী। অশ্বারোহী বাহিনীর প্রধান কে বলা হতো ‘কুন্তল ‘। পদাতিক বাহিনীর উচ্চ পদাধিকারীগণ-কে বলা হতো বলাধিকৃত, মহাবলাধিকৃত প্রভৃতি।
  • সাধারণ সেনারা চট ও ভট নামে পরিচিত ছিল। সামরিক বাহিনীর পদগুলি ছিলো বংশানুক্রমিক।
  • হর্ষবর্ধন এর সময় তিন ধরেনের কর বা রাজস্ব আদায় করা হতো: ভাগ, হিরন্য, বলি।
  • বিচার ব্যবস্থার শীর্ষে ছিলেন সম্রাট স্বয়ং। হর্ষ এর দণ্ডবিধি ছিলো খুবই কঠোর। তবে তাঁর সাম্রাজ্যে বিকেন্দ্রীকরণের প্রবণতা বৃদ্ধি পাওয়ায় সামন্ত দের প্রভাব বৃদ্ধি পায়।
  • ৬৪৭ খ্রিস্টাব্দে হর্ষবর্ধন এর মৃত্যুর পর উত্তর ভারতে রাজনৈতিক ঐক্য আবার বিনষ্ট হয়।
  • তাঁর সাম্রাজ্যের ধ্বংসস্তূপ এর উপর একাধিক পরস্পর বিবদমান রাজ্যের উৎপত্তি হয়। এইসব রাজ্য গুলি হলো কনৌজ, কাশ্মীর, বাংলা, কামরূপ, উড়িসা, তিব্বত প্রভৃতি রাজ্য।
  • হর্ষ এর মৃত্যুর পর যোগ্য উত্তরাধিকারীর অভাবে কনৌজ সাম্রাজ্যে নানা বিশৃঙ্খলা দেখা দে়য়। এই অবস্থায় অর্জুন নামে তাঁর এক মন্ত্রী কনৌজের সিংহাসন দখল করেন। এই ঘটনার পর দীর্ঘ পঞ্চাশ বছর কনৌজের ইতিহাস একপ্রকার তমসাবৃত।
  • অন্ধকার যুগের অবসানে ৭০০ খ্রিস্টাব্দ নাগাদ কনৌজের ইতিহাসে যশবর্মন নামে এক সমরকুশলী শক্তিশালী রাজার আবির্ভাব ঘটে। ‘গৌড়বহো’ রচয়িতা বাকপতিরাজ এবং ‘মহাবীর চরিত’ , ‘ উত্তর রামচরিত ‘ ও ‘মালতি মাধব ‘ রচয়িতা ভবভূতি তাঁর রাজসভা অলংকৃত করতেন। ‘উত্তর রামচরিত’ হলো সংস্কৃত নাট্য সাহিত্যের অন্যতম শ্রেষ্ঠ গ্রন্থ।


শশাঙ্ক পরবর্তী যুগের বাংলাদেশের উত্থান

  • ৬৩৭ খ্রিস্টাব্দে শশাঙ্কের মৃত্যুর পর বাংলার ইতিহাসে এক ঘোরতর দুর্যোগের সৃষ্টি হয়। তা স্থায়ী হয় প্রায় দেড়শো বছর। এই সময় বাংলার বিভিন্ন অঞ্চলে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র রাজ্যের প্রতিষ্ঠা হয়।
  • শশাঙ্কের মৃত্যুর পর তাঁর পুত্র মানবদেব সিংহাসনে বসেন। তাঁর রাজত্ব কাল ছিলো মাত্র আট মাস পাঁচ দিনের।
  • শশাঙ্কের মৃত্যুর পর হিউয়েন সাঙ বাংলায় আসেন। তিনি এই সময় বাংলায় পাঁচটি পৃথক রাজ্যের অস্তিত্ব লক্ষ করেন।
  • তিব্বতীয় বৌদ্ধ পণ্ডিত লামা তারানাথ এই অবস্থার ভয়াবহ বর্ণনা দিয়ে গেছেন। সেই সময় সামন্ত রাজা রাই ছিলো দেশের প্রকৃত শাসক।
  • পুকুরে যেমন বড়ো মাছ ছোট মাছ কে গিলে ফেলে বাংলার মানুষেরও ছিলো ঠিক ওই এক অবস্থা। বাংলার এই অবস্থাকে বলা হয় মাৎস্যন্যায় । এর উপর শুরু হয়ে ছিলো একের পর এক বৈদেশিক আক্রমণ।
  • এই সংকটময় পরিস্থিতিতে বাংলার নেতৃবৃন্দ গোপাল নামে এক ব্যক্তিকে বাংলার সিংহাসনে স্থাপন করেন। গোপালের সিহাসনে আরোহণের ফলে বাংলায় পাল বংশ প্রতিষ্ঠিত হয়।
  • গোপাল : ধর্মপালের খালিমপুর তাম্র শাসন থেকে জানা যায় যে বাংলার বুকে শান্তি ও স্থিতি প্রতিষ্ঠার জন্য প্রকৃতিপুঞ্জ গোপালকে বাংলার রাজা হিসাবে নির্বাচিত করেন। পাল বংশের প্রতিষ্ঠাতা গোপালের বংশ পরিচয়, পূর্ব জীবন, বাসস্থান সম্পর্কে বিশেষ কিছু জানা যায় না। খালিমপুর তাম্রশাসনে লেখা আছে তাঁর পিতার নাম ছিল বপ্যাট এবং পিতামহ ছিলেন দয়িতবিষ্ণু। তাঁদের নামের আগে কোনো রাজকীয় উপাধি ছিলো না। দয়িতবিষ্ণু সম্পর্কে বলা হয় যে তিনি সর্ববিদ্যা বিশুদ্ধ ছিলেন। তাঁর পিতা বপ্যাট কে ‘শত্রু বিনাশকারী’ বলা হয়েছে। এ থেকে মনে হয় যে তাঁর পিতা একজন সেনাপতি ছিলেন।গোপালের পত্নী দদ্দাদেবী পূর্ববঙ্গের ভদ্রবংসের কন্যা ছিলেন।
  • খালিমপুর তাম্র শাসনে গোপালের পুত্র ধর্মপাল কে ‘ভদ্রাত্মজ ‘ বলে অভিহিত করা হয়েছে।
  • দেবপালের মুঙ্গের লিপি থেকে জানা যায় যে, তিনি বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী ছিলেন। খালিমপুর লেখতে তাঁকে ‘পরম সৌগত’ বলা হয়েছে।
  • তিব্বতিয়ো পণ্ডিত লামা তারানাথ বলেন যে গোপাল ও দন্তপুরি বিহার নির্মাণ করেন । বিখ্যাত বৌদ্ধ দার্শনিক শান্তরক্ষিত তাঁর সমসাময়িক ছিলেন।
  • ধর্মপাল : পাল বংশের প্রতিষ্ঠাতা গোপালের মৃত্যুর পর তাঁর সুযোগ্য পুত্র, সুদক্ষ যোদ্ধা ও কূটনীতি বিদ ধর্মপাল বাংলার সিংহাসনে বসেন। তিনি পাল বংশের আঞ্চলিক রাজ্য বাংলা কে একটি সর্বভারতীয় সাম্রাজ্যে পরিণত করেন। গুজরাটি কবি সোঢঢল তাঁকে ‘উত্তরা – পথস্বামীন’ বলে অভিহিত করেছেন।
  • হর্ষবর্ধনের মৃত্যুতে উত্তর ভারতে রাজনৈতিক শূনত্যা দেখা দিলে তিনটি শক্তি আর্যাবর্তে প্রাধান্য স্থাপনের জন্য সংগ্রামে অবতীর্ণ হন। এই তিনটি শক্তি হলো বাংলার পাল বংশ, মালবের গুর্জর প্রতিহার বংশ এবং দাক্ষিনাত্যের রাষ্ট্রকূট বংশ।
  • তিনটি শক্তির মধ্যে এই প্রতিদ্বন্দ্বিতা ‘ত্রি শক্তি যুদ্ধ’ নামে পরিচিত।
  • ভাগলপুর-এ প্রাপ্ত নারায়ণ পালের তাম্রপট থেকে জানা যায় যে কনৌজ তাঁর অধিকারে আসে। তাঁর উপাধি ছিলো‘পরমেশ্বর পরমভট্টারক মহারাজাধিরাজ’।
  • ডক্টর রমেশ চন্দ্র মজুমদার এর মতে ধর্মপালের রাজত্বকাল “বাঙালির জীবনপ্রভাত”।
  • তাঁর আমলে শিক্ষা সংস্কৃতির প্রভূত উন্নতি পরিলক্ষিত হয়। তিনি মগধে বিক্রমশীলা মহাবিহার, ওদন্তপুরী বিহার ও সোমপুরী বিহার স্থাপন করেন।
  • বিখ্যাত বৌদ্ধ পণ্ডিত হরিভদ্র তাঁর গুরু ছিলেন। গর্গ নামে জনৈক ব্রাহ্মন তাঁর প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। তিনি বহু হিন্দু মন্দির কে নিষ্কর ভূমি দান করেন। তাঁর শাসনকালে বাংলার আর্থিক উন্নতি পরিলক্ষিত হয়।
  • দেবপাল : ধর্মপালের মৃত্যুর পর তাঁর যোগ্য পুত্র দেবপাল সিংহাসনে বসেন। তিনি পিতার মতই বীর ও রণকুশলী ছিলেন। বাদাল্ স্তম্ভ লিপি তে তাঁকে উত্তরে হিমালয় থেকে দক্ষিণে বিন্ধ পর্বত পর্যন্ত এক বিশাল সাম্রাজ্যের অধীশ্বর বলে বর্ণনা করা হয়েছে। তাঁর মন্ত্রী ছিলেন ব্রাহ্মণ দর্ভ পানি ও তাঁর পৌত্র কেদার মিশ্র। কেবলমাত্র ভারতেই নয়, ভারতের বাইরে সুবর্ণদ্বীপ অর্থাৎ সুমাত্রা, যবদ্বীপ ,মালয় দ্বীপ পর্যন্ত তাঁর খ্যাতি বিস্তৃত হয়। জাভা ও সুমাত্রার শৈলেন্দ্র বংশীয় রাজা বাল পুত্র দেব নালন্দায় একটি বৌদ্ধ মঠ প্রতিষ্ঠার জন্য দেবপালে র কাছে পাঁচটি গ্রাম ভিক্ষা করেন এবং দেবপাল তা মঞ্জুর করেছিলেন। নালন্দা বিশ্ববিদ্যালয় তাঁর পৃষ্ঠ পোষকতা অর্জন করে। তিনি নালন্দা কয়েকটি মঠ ও বুদ্ধ গয়ায় একটি বিরাট মন্দির নির্মাণ করেন।
  • দেবপালের মৃত্যুর পর পাল বংশের ক্ষমতা ও অধিকার ক্রমশ হ্রাস পেতে থাকে, পাল রাজাদের অবস্থা সঙ্গীন হয়ে পরে এবং পাক সাম্রাজ্যের ধ্বংস স্তুপ এর পর একাধিক স্বাধীন রাজ্যের উৎপত্তি ঘটে।
  • প্রথম মহীপাল : পাল সাম্রাজ্যের এই ঘোরতর দুর্দিনে দ্বিতীয় বিগ্রহ পালের পুত্র প্রথম মহীপাল সিংহাসনে বসেন। তাঁকে ‘দ্বিতীয় পাল সাম্রাজ্যের প্রতিষ্ঠাতা’ বলা হয়। তাঁর আমলের সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য ঘটনা হলো চোল রাজা রাজেন্দ্র চোল এর নেতৃত্বে দুই বছর ব্যাপী বাংলার উপর চোল আক্রমণ। প্রথম মহীপাল চোলদের বিরুদ্ধে কোনো প্রত্যক্ষ সংগ্রামে না গিয়ে যুদ্ধক্ষেত্র থেকে পলায়ন করেন।
  • রাজেন্দ্র চোল রাঢভূমি দখল করেন এবং প্রচুর ধনরত্ন লুঠ করেন। কথিত আছে যে, বাংলার পরাজিত রাজন্য বর্গ নিজেদের মস্তকে গঙ্গাজল এর কলস বহন করে চোল রাজ্যে নিয়ে যেতে বাধ্য হন।
  • তিনি নতুন উপাধি গ্রহণ করেন গঙ্গৈকোণ্ড বা গঙ্গা বিজেতা। তাঁর নতুন রাজধানীর নাম হয় ‘গঙ্গৈকোণ্ডচোলপুরম’।
  • প্রথম মহীপালের রাজত্ব কালেই উত্তর ভারতে তুর্কি আক্রমণ শুরু হয় এবং সুলতান মামুদ বারংবার ভারতের বুকে ঝাঁপিয়ে পড়েন।সমবেত ভাবে এই আক্রমণ প্রতিহত করার উদ্দেশ্যে আর্যাবর্তের রাজন্য বর্গ ঐক্যবদ্ধ হলেও মহীপাল এই প্রচেষ্টায় সামিল হননি। আসলে তখন তিনি নিজের পিতৃ রাজ্য পুনরুদ্ধারেই ব্যস্ত ছিলেন।
  • তিনি বেশ কিছু শহর নির্মাণ ও পুষ্করিনী খনন করেন ।
  • তিনি ধর্মবিশ্বাসে বৌদ্ধ ছিলেন। তিনি নালন্দা ও সারনাথে দুটি বৌদ্ধ মঠ ও কাশীতে হিন্দু মন্দির স্থাপন করেন।
  • তৃতীয় বিগ্রহপালের মৃত্যুর পর তাঁর পুত্র দ্বিতীয় মহীপাল সিংহাসনে বসেন। তিনি তাঁর দুই ভ্রাতা দ্বিতীয় শূরপাল ও রামপাল কে কারারুদ্ধ করলে পরিস্থিতি জটিল হোয়ে ওঠে। এই অবস্থার সুযোগ নিয়ে বরেন্দ্রভূমির সামন্ত রাজারা বিদ্রোহ ঘোষণা করেন। এই বিদ্রোহ কৈবর্ত বিদ্রোহ নামে পরিচিত। বিদ্রোহের নেতা ছিলেন দিব্য বা দিব্যক বা দিব্বক।
  • সন্ধ্যাকর নন্দী “রাম চরিত” গ্রন্থে এই বিদ্রোহের বিস্তৃত বিবরণ পাওয়া যায়।
  • এই বিদ্রোহ দমন করতে গিয়ে পাল রাজা দ্বিতীয় মহীপাল নিহত হন।
  • দিব্যর মৃত্যুর পর তাঁর ভ্রাতা রুদ্রক এবং রুদ্রক এর পর তাঁর পুত্র ভীম সিংহাসনে বসেন। অন্যদিকে দ্বিতীয় মহীপাল এর মৃত্যুর পর রামপাল সিংহাসনে বসেন।
  • রামপাল বরেন্দ্রভূমি পুনরুদ্ধারে সামন্ত রাজাদের সাহায্য প্রার্থনা করেন। ‘রামচরিত’ গ্রন্থ থেকে জানা যায় যে, তিনি ভূমি ও ধন সম্পদের দ্বারা তাঁদের বশীভূত করেন। তাদের সাহায্যে একটি শক্তিশালী সেনাদল গঠন করেন। যুদ্ধে কৈবর্ত নায়ক ভীম পরাজিত ও নিহত হন। বরেন্দ্র ভূমির উপর পালদের কর্তৃত্ব পুনঃ প্রতিষ্ঠিত হয়।
  • তিনি রামাবতী নামে নতুন রাজধানী প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি ছিলেন খয়িষ্ণু পাল বংশের সর্ব শেষ উল্লেখযোগ্য নরপতি। তিনি খন্ড বিখণ্ড বাংলা কে আবার ঐক্যবদ্ধ করেন। এজন্য তাঁকে “তৃতীয় পাল সাম্রাজ্যের প্রতিষ্ঠাতা” বলা হয়। তিনি প্রায় 42 বছর রাজত্ব করেন।
  • রামপাল পাল সাম্রাজ্যের লুপ্ত গৌরব কিছুটা ফিরিয়ে আনলেও তাঁর মৃত্যুর পর সাম্রাজ্য দ্রুত পতনের দিকে অগ্রসর হয়। ১১৬২ খ্রিস্টাব্দ নাগাদ পাল বংশের পতন ঘটে।
  • পাল যুগের অন্যান্য দিক: পালরাজারা সুদীর্ঘ চারশো বছর ধরে বাংলাদেশ শাসন করেন। পাল যুগে বংশানুক্রমিক রাজতন্ত্র ছিলো প্রচলিত শাসন ব্যবস্থা। তবে রাজা নিরঙ্কুশ ক্ষমতার অধিকারী হলেও স্বৈরাচারী ছিলেন না। খোল নামে একশ্রেণীর কর্মচারীর কথা জানা যায়। এঁরা সম্ভবত গুপ্তচরের দায়িত্ব পালন করতো। এই সময়কার বিভিন্ন দানপত্র ও তাম্রলিপি তে মোট পাঁচ রকম কর বা রাজস্বের উল্লেখ আছে। সেগুলি হলো ভাগ, ভোগ, কর, হিরণ্য ও উপরিকর। পাল রাজারা শিক্ষা,সংস্কৃতি,সাহিত্য, শিল্প ও ধর্মের পৃষ্ঠ পোষক ছিলেন। এই যুগে বাংলাদেশ এ সংস্কৃত রচনার ক্ষেত্রে এক নতুন রীতির আবির্ভাব হয়, যা সম্পূর্ণ ভাবে বাংলার নিজস্ব। তার নাম “গৌরীয় রীতি”। এই যুগেই প্রখ্যাত পণ্ডিত ও রাজনীতি বিদ ভবদেব ভট্ট, দায়ভাগ রচিত জিমূতবাহণ এবং রামচরিত রচয়িতা সন্ধাকর নন্দী আবির্ভূত হন। আয়ুর্বেদ দীপিকা, ভানুমতী , শব্দচন্দ্রিকা, চিকিৎসা সংগ্রহ প্রভৃতি গ্রন্থ প্রণেতা চক্রপানি দত্ত এ সময়েরই মানুষ ছিলেন। বিশিষ্ট চিকিৎসক সুরেশ্বর এই সময়কার’ই লোক ছিলেন। এই যুগে মাগধী – প্রাকৃত ও সৌরসেনি অপভ্রংশ এর মিশ্রণে বাংলা ভাষার আদি রূপের উদ্ভব হয়। এই আদি রূপ-কে চর্যাপদ বলা হয়। লুই পাদ, কাহ্ন পাদ প্রমুখ বৌদ্ধ ধর্মা – চার্যদের রচিত চর্যাপদ গুলি হলো বাংলা ভাষার প্রাচীনতম নমুনা। বিতপাল ও ধীমান ছিলেন এই যুগের শ্রেষ্ঠ ভাস্কর। মানব মূর্তি নির্মাণ এই যুগের অন্যতম বৈশিষ্ট্য। চিত্রশিল্পেও বাংলা সেদিন যথেষ্ট উন্নত ছিলো। রামপালের আমলে রচিত অস্ট সহস্রিকা প্রজ্ঞা পারমিতা গ্রন্থের চিত্র গুলি উল্লেখ যোগ্য নিদর্শন। পাল রাজারা বৌদ্ধ হলেও পরধর্মতসহিষ্ণু ছিলেন। মোট কথা জীবনের সর্বক্ষেত্রেই পাল রাজারা এক নব যুগের সূচনা করেন।
  • সেন বংশ: খ্রিস্টিয় একাদশ শতকে অন্তিম ভাগে পাল শাসনের ধ্বংস স্তুপ এর উপর সেন বংশের উত্থান ঘটে। বংশ পরিচয় ও তাঁদের আদি বাসস্থান সম্পর্কে পণ্ডিত দের মধ্যে মতপার্থক্য আছে। তবে অধিকাংশ ঐতিহাসিক বলেন যে চোল রাজা রাজেন্দ্র চোল এর বাংলা অভিযানের সময় চোল বাহিনীর সঙ্গে সেনদের পূর্বপুরুষরা বাংলায় আসেন।
  • সেন বংশের প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন সামন্ত সেন। তাঁর পুত্র হেমন্ত সেন প্রকৃত পক্ষে পাল রাজাদের দুর্বলতার সুযোগে রাঢ অঞ্চলে তাঁর অধিকার প্রতিষ্ঠিত করেন।
  • তিনি মহারাজাধিরাজ উপাধি ধারণ করেন।
  • হেমন্ত সেন এর পুত্র বিজয় সেন হলো স্বাধীন সেন বংশের প্রতিষ্ঠাতা।
  • বিক্রমপুর তাম্রপট ও দেওপাড়া লিপি থেকে তাঁর রাজত্ব কাল সম্পর্কে জানা যায়। দেওপাড়া লিপির রচয়িতা হলেন পাল’দের সভাকবি উমাপতিধর।
  • বিজয় সেন একটি ক্ষুদ্র সেন রাজ্য কে সাম্রাজ্যে পরিণত করেন। তাঁর আমলে বাংলায় এক নতুন গৌরবময় যুগের সূচনা হয়।
  • তাঁর সভাকবি উমাপতিধর ও শ্রী হর্ষ তাঁর বিজয় প্রশস্তি রচনা করেছেন। তাঁর দুটি রাজধানী ছিল একটি পূর্ববঙ্গের বিক্রমপুর এবং অন্যটি পশ্চিমবঙ্গের বিজয়পুর ।
  • বিজয় সেন এর মৃত্যুর পর তাঁর পুত্র বল্লাল সেন সিংহাসনে বসেন।
  • নৈহাটি তাম্রপট, বল্লাল সেন রচিত অদ্ভুত সাগর ও দান সাগর এবং আনন্দভট্ট রচিত বল্লাল চরিত থেকে তাঁর রাজত্ব কাল সম্পর্কে জানা যায়। তিনি মহারাজধিরাজ ও ‘নিশঙ্ক শঙ্কর গৌড়েশ্বর’ উপাধি ধারণ করেন।
  • তিনি চালুক্য রাজকন্যা রমা দেবী কে বিবাহ করে তাঁর প্রতিপত্তি বৃদ্ধি করেন। বাংলার সামাজিক ইতিহাসে তিনি এক উল্লেখ যোগ্য ব্যাক্তিত্ব।
  • তিনি ঘোরতর রক্ষণশীল ও ব্রাহ্মণ্য ধর্মের পৃষ্ঠপোষক ছিলেন। বলা হয় যে, তিনি বাঙালি হিন্দু সমাজে ব্রাহ্মণ, বৈদ্য ও কায়স্থ’দের মধ্যে কৌলীন্য প্রথা প্রবর্তন করেন।
  • বেদ – স্মৃতি – পুরাণে সুপণ্ডিত বল্লাল সেন হিন্দু ক্রিয়াকর্ম, বিবাহ, শ্রাদ্ধ এবং বিভিন্ন আচার পদ্ধতি সম্পর্কে ‘দানসাগর’ ও ‘অদ্ভুতসাগর’ নামে দুটি গ্রন্থ রচনা করেন।
  • তিনি তান্ত্রিক হিন্দু ধর্মের সমর্থক ছিলেন। এই ধর্ম কে জনপ্রিয় করার উদ্দেশ্যে তিনি চট্টগ্রাম, আরাকান, উড়িশ্যা ও নেপালে ধর্মপ্রচারক পাঠান।
  • নবদ্বীপের শাসক বুদ্ধিমন্ত খা’র নির্দেশে আনন্দ ভট্ট তাঁর সম্পর্কে বল্লালচরিত নামক গ্রন্থটি রচনা করেন। তাঁর আমলেই মালদহের সন্নিকটে গৌড় নগরী নির্মিত হয় এবং পুত্র লক্ষণ সেনের নাম অনুসারে গৌরে’র নামকরণ হয় লক্ষণাবতী ।
  • বল্লাল সেন শেষ বয়সে সংসার ত্যাগ করলে ১১৭৯ খ্রিস্টাব্দে শাট বছর বয়সে লক্ষণ সেন সিংহাসনে বসেন। তাঁর সাম্রাজ্যে র আয়তন তাঁর পূর্বসূরীদের চেয়ে বড়ো ছিলো। তাঁর উপাধি ছিলো ‘গৌড়েশ্বর’, ‘অরিরাজ মর্দন শঙ্কর’ ও ‘পরম বৈষ্ণব’।
  • লক্ষণ সেন শিক্ষা ও সংস্কৃতির পৃষ্ঠপোষক ছিলেন। পিতার অসমাপ্ত গ্রন্থ ‘অদ্ভূত সাগর’ সমাপ্ত করেন। জয়দেব রচিত ‘গীতগোবিন্দ’  , পবনদূত-এর রচয়িতা ধোয়ী , পণ্ডিত উমাপতিধর, শরণ, কবি গোবর্ধন তাঁর রাজসভা অলংকৃত করেছিলেন।
  • ভারত বিখ্যাত শাস্ত্রজ্ঞ হলায়ুধ ছিলেন তাঁর প্রধানমন্ত্রী। তিনি বৈষ্ণব ধর্মের অনুরাগী ছিলেন। মিনহাজ উদ্দিন সিরাজ তাঁকে ‘হিন্দুস্তানের খলিফা’ বলে অভিহিত করেছেন।
  • লক্ষণ সেন এর রাজত্ব কালের সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য ঘটনা হলো তুর্কি নায়ক মহম্মদ ঘোরির অনুচর ইখতিয়ার উদ্দিন মহম্মদ বিন বখতিয়ার খিলজি কর্তৃক বাংলা বিহার জয়।
  • এই ঘটনার পঞ্চাশ বছর পর তুর্কি ঐতিহাসিক মিনহাজউদ্দিন সিরাজ লোকমুখে শুনে তাঁর তবাকৎ-ই নাসিরি গ্রন্থে এই ঘটনা লিপিবদ্ধ করেছেন। এর-ও একশো বছর পর ইসামি তাঁর ‘ফুতুহ – উস – সালাদিন’ গ্রন্থে এই ঘটনা লিপিবদ্ধ করেছেন।
  • তাঁর বিবরণ থেকে জানা যায় যে ১১৯৯ খ্রিস্টাব্দে বখতিয়ার খলজি বিহার জয় করে প্রচুর ধন সম্পদ লুঠ করেন ও ওদন্তপুরী বিহারটি ধ্বংস করেন।
  • তারপর ১২০১ খ্রিস্টাব্দে মূল সেনাবাহিনীকে পিছনে রেখে তুর্কি বনিকের ছদ্মবেশে মাত্র সতেরো জন অশ্বারোহী সেনা নিয়ে তিনি বাংলার রাজধানী নবদ্বীপ এ প্রবেশ করেন। দুপুরবেলায় সম্রাট, রাজপ্রাসাদের অন্যান্য মানুষজন ও রক্ষীরা যখন স্নান আহারে ব্যস্ত তখন তারা প্রাসাদে ঢুকে পড়ে হত্যাকাণ্ড শুরু করে। এই অবস্থায় সম্রাট লক্ষণ সেন মধ্যাহ্ন ভোজন অসমাপ্ত রেখে নগ্নপদে রাজপ্রাসাদের খিড়কি দরজা দিয়ে নৌকাযোগে পূর্ববঙ্গের বিক্রমপুরে পলায়ন করেন। এই ভাবেই পশ্চিমবঙ্গে লক্ষণ সেনের আধিপত্যের অবসান ঘটে।
  • মৃত্যুর পূর্ব পর্যন্ত পূর্ববঙ্গের বিক্রমপুর থেকে তিনি পূর্ব ও দক্ষিণ বঙ্গ শাসন করতেন।
  • লক্ষণ সেনের মৃত্যুর পর তাঁর পুত্র বিশ্বরূপ সেন ও কেশব সেন পর পর সিংহাসনে বসেন। তাঁরা গৌড়েশ্বর উপাধি গ্রহণ করেন।
  • কেশব সেনের পরেও কয়েকজন সেন রাজা সিংহাসনে বসেন, তবে তাঁরা গুরুত্ব হীন ছিলেন এবং তাঁদের সম্পর্কে বিশেষ কিছুই জানা যায় না।
  • সেনদের শাসন ব্যবস্থা ছিল মূলত পাল শাসন ব্যবস্থার অনুরূপ। সেন শাসন ব্যাবস্থায় রাজা ছিলেন সর্বেসর্বা এবং সকল ক্ষমতার অধিকারী। রাজতন্ত্র ছিলো বংশানুক্রমিক।
  • বিচার বিভাগের প্রধান ছিলেন মহাধর্মাধ্যক্ষ। সামরিক বিভাগের প্রধান কে বলা হতো মহাপিলুপতি।
  • তবে যাই হোক বাংলা ও বাঙালির ইতিহাসে সেন যুগ এক শান্তি ও সমৃদ্ধির যুগ। এই শান্তি ও সমৃদ্ধির ফলে বাংলার রাজনীতি, ধর্ম, শিক্ষা ও সংস্কৃতির ক্ষেত্রে এক নব যুগের সূচনা হয়।
  • গোবর্ধন এর ‘আর্যাসপ্তশতী’, উমাপতিধরের ‘বিজয় সেন প্রশস্তি’ প্রভৃতি তাঁর ই সাক্ষ্য প্রমাণ বহন করে। বিশিষ্ট শাস্ত্রজ্ঞ ভবদেব ভট্ট ও জীমূতবাহন এই যুগের-ই মানুষ ছিলেন।
  • জিমূতবাহন রচিত ‘দায়ভাগ’ হিন্দু উত্তরাধিকার আইন সংক্রান্ত একটি বিখ্যাত গ্রন্থ।
  • শিল্প কলার ইতিহাসেও সেন যুগ এক গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। সেন রাজারা শিল্পের পৃষ্ঠপোষক ছিলেন। এই যুগের বিশিষ্ট শিল্পী দের মধ্যে উল্লেখ যোগ্য ছিলেন শূলপানি, সূত্র ধর, বিষ্ণুভদ্র, কর্মভদ্র , তথাগতসার প্রমুখ।
  • মোট কথা পাল যুগের অবসান এ বাংলার বুকে যে প্রবল রাজনৈতিক অনৈক্য, অরাজকতা, ও অনিশ্চয়তা দেখা দেয় এই অবস্থায় সেন রাজারা বাংলা-কে ঐক্যবদ্ধ করে বাংলা-কে শক্তিশালী রাজ্যে পরিণত করেন।


গুপ্ত পরবর্তী সময়কাল সংক্ষিপ্ত প্রশ্নের উত্তর


Q. পুষ্যভৃতি রাজাদের রাজধানী কোথায় ছিল ?

উঃ পুষ্যভূতি রাজাদের রাজধানী ছিল থানেশ্বর।

Q. বাংলার প্রথম সার্বভৌম নরপতি কে ছিলেন ?

উঃ শশাঙ্ক ছিলেন বাংলার প্রথম সার্বভৌম নরপতি।

Q. শশাঙ্কের রাজধানী কোথায় ছিল ?

উঃ শশাঙ্কের রাজধানী ছিল গৌড়ের কর্ণসুবর্ণে।

Q. হর্ষবর্ধন কোন বংশের নরপতি ছিলেন ?

উঃ হর্ষবর্ধন পুষ্যভূতি বংশের নরপতি ছিলেন।

Q. হর্ষবর্ধনের পিতার নাম কী ?

উঃ হর্ষবর্ধনের পিতার নাম প্রভাকর বর্ধন।

Q. হর্ষবর্ধনের ভ্রাতা ও ভগিনীর নাম কী ?

উঃ হর্ষবর্ধনের ভ্রাতা ও ভগিনীর নাম যথাক্রমে রাজ্যবর্ধন ও রাজ্যশ্রী।

Q. হর্ষবর্ধনের রাজধানীর নাম কী ছিল?

উঃ হর্ষবর্ধনের দুটি রাজধানী ছিল ; একটি থানেশ্বর, অপরটি কনৌজ।

Q. ‘শিলাদিত্য’ কার উপাধি ছিল?

উঃ ‘শিলাদিত্য হর্ষবর্ধনের উপাধি ছিল।

Q. ‘উত্তরাপথস্বামী’ কার উপাধি ?

উঃ হর্ষবর্ধনের উপাধি ‘উত্তরাপথস্বামী’।

Q. ‘হর্ষচরিত’ কে রচনা করেন ?

উঃ হর্ষবর্ধনের সভাকবি বাণভট্ট ‘হর্ষচরিত’ রচনা করেন।

Q. হর্ষবর্ধন রচিত তিনটি নাটকের নাম করাে।

উঃ হর্ষবর্ধন রচিত তিনটি নাটক হল ‘নাগানন্দ’, ‘রত্নাবলী’ ও ‘প্রিয়দর্শিকা’।

Q. হর্ষবর্ধনের রাজত্বকালে ভারতে আগত চৈনিক পরিব্রাজকের নাম কী ?

উঃ হর্ষবর্ধনের রাজত্বকালে ভারতে আগত চৈনিক পরিব্রাজকের নাম হিউয়েন সাঙ।

Q. হিউয়েন সাঙের ভ্রমণ বৃত্তান্তের নাম কী ?

উঃ হিউয়েন সাঙের ভ্রমণ বৃত্তান্তের নাম ‘সি-ইউ-কি’।

Q. ‘মহামােক্ষ’ ক্ষেত্র কী?

উঃ হর্ষবর্ধনের আমলে প্রয়াগের পঞ্চবার্ষিক দানমেলার নাম ‘মহামােক্ষ ক্ষেত্র।

Q. হর্ষবর্ধন কোন বিশ্ববিদ্যালয়ের পৃষ্ঠপােষকতা করতেন?

উঃ হর্ষবর্ধন নালন্দা বিশ্ববিদ্যালয়ের পৃষ্ঠপােষকতা করতেন।

Q. নালন্দা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাঙালি অধ্যক্ষের নাম কী ছিল?

উঃ নালন্দা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাঙালি অধ্যক্ষের নাম ছিল শীলভদ্র।

Q. ত্রিশক্তি সংগ্রাম কাদের মধ্যে হয়েছিল ?

উঃ ত্রিশক্তি সংগ্রাম উত্তর ভারতে প্রতিহার, বাংলার পাল ও দক্ষিণ ভারতের রাষ্ট্রকূটদের মধ্যে হয়েছিল।

Q. প্রতিহার বংশের শ্রেষ্ঠ রাজার নাম কী ?

উঃ প্রতিহার বংশের শ্রেষ্ঠ রাজার নাম ভােজ বা মিহিরভােজ।

Q. বাংলার পাল বংশের প্রথম রাজা কে ছিলেন?

উঃ বাংলার পাল বংশের প্রথম রাজা ছিলেন গােপাল।

Q. বাংলার প্রথম নির্বাচিত রাজা কে ছিলেন?

উঃ বাংলার প্রথম নির্বাচিত রাজা ছিলেন গােপাল।

Q. বিক্রমশীলা বিহার কে নির্মাণ করেন?

উঃ বিক্রমশীলা বিহার ধর্মপাল নির্মাণ করেন।

Q. সােমপুর বিহার কে নির্মাণ করেন?

উঃ ধর্মপাল সােমপুর বিহার নির্মাণ করেন।

Q. প্রথম মহীপাল কে ছিলেন ?

উঃ প্রথম মহীপাল ছিলেন পাল বংশের এক শক্তিশালী রাজা।

Q. দ্বিতীয় মহীপালের আমলে বাংলাদেশে কৈবর্ত বিদ্রোহের নায়ক কে ছিলেন?

উঃ দ্বিতীয় মহীপালের আমলে বাংলদেশে কৈবর্ত বিদ্রোহের নায়ক ছিলেন দিব্য বা দিব্যক।

Q. পালবংশের শেষ শক্তিশালী রাজার নাম কী ?

উঃ পালবংশের শেষ শক্তিশালী রাজা রামপাল।

Q. ‘রামচরিত’ গ্রন্থের রচয়িতা কে?

উঃ ‘রামচরিত’ গ্রন্থের রচয়িতা সন্ধ্যাকর নন্দী।

Q. সেন বংশের প্রতিষ্ঠাতা কে ?

উঃ সেন বংশের প্রতিষ্ঠাতা হেমন্ত সেন।

Q. সেন বংশের শ্রেষ্ঠ রাজা কে ?

উঃ সেন বংশের শ্রেষ্ঠ রাজার নাম বল্লাল সেন।

Q. কৌলীন্য প্রথা কে প্রবর্তন করেন?

উঃ বল্লাল সেন কৌলীন্য প্রথা প্রবর্তন করেন।

Q. ‘দানসাগর’ ও ‘অদ্ভুতসাগর’ গ্রন্থ দুটির রচয়িতা কে ?

উঃ গ্রন্থ দুটিই (দানসাগর ও অদ্ভুতসাগর) বল্লাল সেন রচনা করেন।

Q. গীতগােবিন্দম্ কে রচনা করেন?

উঃ গীতগােবিন্দম্ জয়দেব রচনা করেন।

Q. গীতগােবিন্দম্ রচয়িতা জয়দেব কোন রাজার সভাকবি ছিলেন ?

উঃ গীতগােবিন্দম্ রচয়িতা জয়দের লক্ষণসেনের সভাকরি ছিলেন।

Q. লক্ষ্মণসেনের রাজসভার ‘পঞরত্ন’ কারা ছিলেন ?

উঃ লক্ষ্মণসেনের রাজসভার ‘পঞরত্ন’ ছিলেন ধােয়ী, গােবর্ধন, উমাপতি ধর, জয়দেব ও পবন।

Q. ‘হলায়ুধ’ কে ছিলেন ?

উঃ ‘হলায়ুধ’ ছিলেন লক্ষ্মণ সেনের সভাপণ্ডিত।

Q. ‘পবনদূতম’ গ্রন্থের রচয়িতা কে?

উঃ ‘পবনদূতম’ গ্রন্থের রচয়িতা ধােয়ী।

Q. প্রতিহার বংশের কোন্ রাজা বাংলার কিছু অংশ জয় করেন ?

উঃ প্রতিহার বংশের বৎসরাজ বাংলার কিছু অংশ জয় করেন।

Q. তুর্কিরা যখন বাংলাদেশ আক্রমণ করে, তখন সেখানে শাসক কে ছিলেন ?

উঃ তুর্কিদের বাংলাদেশ আক্রমণকালে লক্ষ্মণ সেন সেখানকার শাসক ছিলেন।

Q. ইখতিয়ারউদ্দিন বখতিয়ার খলজি কখন বাংলাদেশ আক্রমণ করেন ?

উঃ ইখতিয়ারউদ্দিন বখতিয়ার খলজি ১২০২ খ্রিস্টাব্দে বাংলাদেশ আক্রমণ করেন।

Q. ভাস্করবর্মা কোথাকার রাজা ছিলেন?

উঃ ভাস্করবর্মা কামরূপের রাজা ছিলেন।

Q. গ্রহবর্মা কোথাকার রাজা ছিলেন ?

উঃ গ্রহবর্মা কনৌজের রাজা ছিলেন।

Q. ভাস্করবর্মার সঙ্গে হর্ষবর্ধনের সম্পর্ক কী ?

উঃ ভাস্করবর্মা হর্ষবর্ধনের মিত্র ছিলেন। শশাঙ্কের বিরদ্ধে হর্ষবর্ধন ও ভাস্করবর্মা একত্রে যুদ্ধ করেন।

Q. গ্রহবর্মার সঙ্গে হর্ষবর্ধনের সম্পর্ক কী ?

উঃ গ্ৰহবর্মা হর্ষবর্ধনের ভগ্নিপতি।

Q. রাষ্ট্রকুট বংশের প্রতিষ্ঠাতা কে ?

উঃ দস্তিদুর্গ রাষ্ট্রকূট বংশের প্রতিষ্ঠাতা।

Q. তৃতীয় গােবিন্দ কোন বংশের সম্রাট ছিলেন ?

উঃ তৃতীয় গােবিন্দ রাষ্ট্রকূট বংশের সম্রাট ছিলেন।

Q. তৃতীয় কৃষ্ণ কে ছিলেন ?

উঃ তৃতীয় কৃষ্ণ ছিলেন রাষ্ট্রকূট বংশের শেষ উল্লেখযােগ্য সম্রাট।

Q. ইলােরার বিখ্যাত শিব মন্দিরটি কে নির্মাণ করেন ?

উঃ রাষ্ট্রকূট বংশীয় প্রথম কৃষ্ণ ইলােরার বিখ্যাত শিব মন্দিরটি নির্মাণ করেন।

Q. প্রতিহার বংশের শ্রেষ্ঠ রাজা কে ছিলেন?

উঃ প্রতিহার বংশের শ্রেষ্ঠ রাজা ছিলেন মিহিরভােজ বা প্রথম ভােজ।

Q. মিতাক্ষরা আইনশাস্ত্র কে রচনা করেন?

উঃ মিতাক্ষরা আইনশাস্ত্র বিজ্ঞানেশ্বর রচনা করেন।

Q. বিক্রমশীলা মহাবিহার কে প্রতিষ্ঠা করেন ?

উঃ ধর্মপাল বিক্রমশীলা মহাবিহার প্রতিষ্ঠা করেন।

Q. অতীশ দীপংকর কে ছিলেন?

উঃ বিক্রমশীলা মহাবিহারের অধ্যক্ষ ছিলেন অতীশ দীপংকর।

Q. ওদন্তপুরী বিশ্ববিদ্যালয় কে প্রতিষ্ঠা করেন?

উঃ ওদন্তপুরী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেন ধর্মপাল।

Q. নালন্দা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিখ্যাত অধ্যক্ষের নাম কী ?

উঃ নালন্দা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিখ্যাত অধ্যক্ষের নাম শীলভদ্র।

Q. সন্ধ্যাকর নন্দী কে ছিলেন ?

উঃ ‘রামচরিত’ গ্রন্থের রচয়িতা সন্ধ্যাকর নন্দী ছিলেন পালরাজা রামপালের সভাকবি।

Q. চক্রপাণি কে ছিলেন?

উঃ চিকিৎসা শাস্ত্রবিদ চক্রপাণি ছিলেন চরক ও শুশ্রুতের প্রসিদ্ধ টীকাকার।

Q. সােমপুর বিহারটি কোথায় অবস্থিত ছিল ?

উঃ বাংলাদেশের রাজশাহি জেলার পাহাড়পুরে সােমপুর বিহারটি অবস্থিত ছিল।

Q. ধীমান ও বীতপাল কেন বিখ্যাত ?

উঃ ধীমান ও বীতপাল ছিলেন পালযুগের বাংলার শ্রেষ্ঠ মৃৎশিল্পী। এঁরা ছিলেন পিতা-পুত্র।

Q. খাজুরাহাে মন্দিরের নির্মাণকারী কারা ?

উঃ খাজুরাহাে মন্দিরের নির্মাতা চান্দেল্ল বংশের রাজারা।

Q. পাল ও সেন যুগে বাংলার দুটি প্রসিদ্ধ বন্দরের নাম করাে।

উঃ পাল ও সেন যুগে বাংলার দুটি প্রসিদ্ধ বন্দর ছিল তাম্রলিপ্ত ও সপ্তগ্রাম।





Download উত্তর ভারতে আঞ্চলিক শক্তির বিকাশ প্রশ্নোত্তর - গুপ্ত পরবর্তী সময়কাল PDF


File Details:-

File Name:- উত্তর ভারতে আঞ্চলিক শক্তির বিকাশ প্রশ্নোত্তর - গুপ্ত পরবর্তী সময়কাল [www.gksolves.com]
File Format:-PDF
Quality:- High
File Size:-  5 Mb
File Location:- Google Drive

Click Here to Download


আরও পড়ুন:




Others Important Link

Syllabus Link: Click Here

Questions Paper Link: Click Here

Admit Card Link: Click Here

Result Link: Click Here

Latest Job: Click Here

Age Calculator: Click Here


ঘোষণা: বিনামূল্যে আমাদের দেওয়া নোটস, সাজেশান, প্রশ্ন উত্তর ইত্যাদি স্টাডি ম্যাটেরিয়াল PDF এবং ভিডিও ক্লাস ভালো লাগলে, আমাদের এই পোস্টের লিংক আপনার বন্ধুদের ফেসবুকWhatsApp এ শেয়ার করে তাদের পড়ার সুযোগ করে দিন।

Tags

Post a Comment

0 Comments
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.