কলের কলকাতা রচনাধর্মী প্রশ্ন ও উত্তর PDF: প্রতিবছর উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় সুভাষ মুখোপাধ্যায়ের কলের কলকাতা রচনাধর্মী প্রশ্ন ও উত্তর PDF থেকে অনেক প্রশ্ন আসে। তাই আমরা আপনাদের জন্য নিয়ে এসেছি কলের কলকাতা রচনাধর্মী প্রশ্ন ও উত্তর PDF.
নিচে কলের কলকাতা রচনাধর্মী প্রশ্ন ও উত্তর PDF টি যত্নসহকারে পড়ুন ও জ্ঞানভাণ্ডার বৃদ্ধি করুন। কলের কলকাতা রচনাধর্মী প্রশ্ন ও উত্তর PDF পশ্চিমবঙ্গ উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার জন্য খুব গুরুত্বপূর্ন।
কলের কলকাতা - সুভাষ মুখোপাধ্যায়
"কলের কলকাতা" গদ্যাংশটি সুভাষ মুখোপাধ্যায়ের লেখা 'আমার বাংলা' নামক পূর্ণ সহায়ক গ্রন্থ থেকে নেওয়া হয়েছে।
"কলের কলকাতা" গদ্যাংশটি থেকে গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নোত্তর দেওয়া হলো। আশা করি এগুলো তোমাদের পরীক্ষার প্রস্তুতিতে সাহায্য করবে।
সুভাষ মুখোপাধ্যায়ের কলের কলকাতা রচনাধর্মী প্রশ্ন ও উত্তর - আমার বাংলা উচ্চমাধ্যমিক
প্রশ্ন: “এরা মানুষ না আর কিছু”- কার সম্পর্কে একথা বলা হয়েছে? এমন কথা বলার কারণ কী? অথবা, “লোকটা একজন পয়লা নম্বরের ভন্ড”- কার সম্পর্কে একথা বলা হয়েছে? এমন কথা বলার কারণ কী?
Ans: সুভাষ মুখোপাধ্যায়ের ‘আমার বাংলা’ গ্রন্থের ‘কলের কলকাতা’ শীর্ষক পরিচ্ছেদে জনৈক সরকারি উকিল সম্পর্কে একথা বলা হয়েছে।
লেখকদের বাড়ি আসতেন একজন সরকারী উকিল। তিনি বাইরের ঘরে বসে লেখকের বাবার সঙ্গে কথাবার্তা বলতেন। বাড়ির অন্য কারো সেই ঘরে যাবার অনুমতি ছিল না। লেখক এবং তার দাদা পর্দার আড়াল থেকে সেই উকিলের কথা শুনতেন। তিনি চট্টগ্রাম অস্ত্রাগার লুন্ঠনের মামলার গল্প বলতেন, গণেশ ঘোষের লেখা কবিতা আবৃত্তি করতেন এবং কল্পনা দত্তের ডায়েরি থেকে পাতার পর পাতা মুখস্থ বলতেন। তার কথা শুনে যেকেউ মনে করবে তিনি হয়তো মাস্টারদা সূর্য সেনের দলেরই লোক। বাংলার বিপ্লবীদের বীরত্বের কাহিনী উক্ত উকিলের বলার গুণে লেখকের কাছে প্রাণবন্ত হয়ে উঠত।
সরকারি উকিল চলে যাওয়ার পর রাগে লেখকের হাত নিসপিস করত। লেখকের মতে “লোকটা একজন পয়লা নম্বরের ভন্ড”। যতই তিনি বিপ্লবীদের জন্য দরদ দেখান না কেন, তিনি তো একজন সরকারি উকিল এবং ব্রিটিশ সরকারের হয়ে বিপ্লবীদের ফাঁসিকাঠে ঝোলানোর বন্দোবস্ত তিনিই করে থাকেন। লোকটার প্রতি ক্ষোভে, ঘৃণায় লেখকের মনে প্রশ্ন জাগে- “এরা মানুষ না আর কিছু?”
প্রশ্ন: ‘একা আমি রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে বেড়াই’- লেখক কোন রাস্তায় ঘুরে বেড়াতেন? রাস্তায় ঘোরার সময় তার কোন কোন অভিজ্ঞতা হয়েছিল?
Ans: সুভাষ মুখোপাধ্যায়ের ‘আমার বাংলা’ গ্রন্থের ‘কলের কলকাতা’ পরিচ্ছেদে লেখকের কলকাতার রাস্তায় ঘুরে বেড়ানোর অভিজ্ঞতা বর্নিত হয়েছে। তিনি প্রতিদিন বিকেলে বৌবাজারের মোড় থেকে এসপ্ল্যানেড অবধি রাস্তায় রাস্তায় ঘুরতেন।
কলকাতা তখন এত জনাকীর্ন ছিল না। রাস্তায় দুপাশে ছিল শুধু ফাঁকা জমি। মঙ্গলা লেনের কাছে চিনাদের থিয়েটার আর আশেপাশে কিছু পাউরুটি কারখানা ছাড়া বিশেষ কিছু ছিল না। রাস্তায় রিক্সার উপর বসে ছিল এক সন্যাসিনী বুড়ি। তার সর্বাঙ্গ রূপোর গয়না দিয়ে মোড়া। সে ওড়িয়া ভাষায় অনবরত কীসব বলে যাচ্ছিল আর লোকে ভক্তিভরে তার পায়ে পয়সা দিচ্ছিল।
খালি মাঠে খেলা দেখায় এক জাদুকর। কিন্তু পয়সা দেবার ভয়ে সবাই খেলা শেষ হবার আগেই সরে পড়ে। তখন সেই জাদুকর গালশাপ দিতে শুরু করে।
পাশেই একজন হেকিম হরেকরকম গাছগাছড়া, ছাল চামড়া নিয়ে চিকিৎসার পসার নিয়ে বসেছে। তার দাওয়াইয়ের গন্ধে লেখকের অন্নপ্রাশনের ভাত বেরিয়ে আসে।
শীতকালে খালি মাঠে সার্কাসের তাঁবু পড়ে। সার্কাসের ছেলেরা রাস্তার দিকে তাকিয়ে থাকে আর বাঘগুলো মানুষের গন্ধে আমোদিত হয়।
হঠাৎ একজন পকেটমার এক ভদ্রলোকের সব ছিনিয়ে নিয়ে যায়। অনেকেই তার পিছু ধাওয়া করে কিন্তু চোর ধরা পড়ে না।
লেখক কখনো কখনো চলে যেতেন সেন্ট্রাল অ্যাভিনিউ-এর রাস্তায়। সেখানকার পরিবেশ যেমন শান্ত তেমনি দরাজ এখানকার আকাশ। লেখক মন্ত্রমুগ্ধের মতো বিকেলবেলাকার কলকাতার রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে বেড়াতেন। আর একদিন ভালোবেসে ফেললেন নীরস শহর কলকাতাকে।
প্রশ্ন: মোনা ঠাকুরের ‘কলের কলকাতা’ দেখার অভিজ্ঞতা নিজের ভাষায় লেখ।
Ans: সুভাষ মুখোপাধ্যায়ের ‘আমার বাংলা’ গ্রন্থের ‘কলের কলকাতা’ শীর্ষক পরিচ্ছেদে মোনা ঠাকুরের কলকাতা দেখার অভিজ্ঞতা বর্নিত হয়েছে। লেখকদের গ্রামেরই ছেলে মোনা ঠাকুর কালীঘাট গিয়েছিল পৈতে নেবার জন্য। সেখান থেকে ফিরে এসে সে তার সমবয়সীদের সঙ্গে নিজের অভিজ্ঞতার কথা বলেছিল। মোনা ঠাকুরের অভিজ্ঞতায় কলকাতা শহরের চরিত্র এইরূপ-
আজব শহর: মোনা ঠাকুরের মতে কলকাতা এক আজব শহর। রাস্তায় লোকে লোকারণ্য। চারিদিকে শুধু গাড়ি আর বাড়ি। হুসহুস করে চলে যায় হাওয়াগাড়ি, রাস্তায় ঠনঠন শব্দে এগিয়ে চলে ট্রাম। কোথাও গ্রামের মতো মাটি নেই-চারিদিকে শুধু চুন, বালি, ইট আর পাথর। কত যে গলি আর কত যে মোড় তার হিসেব নেই এমন আজব শহর কলকাতা।
কলের শহর: কলকাতায় কল টিপলে জল পড়ে আর কল টিপলে অন্ধকার দূর হয়ে আলো জ্বলে উঠে। সেখানে রাত যেন দিনের মতো।
আতঙ্কের শহর:কলকাতার রাস্তায় ঘুরে বেড়ায় একধরণের লোক যাদের মাথায় ঝাঁকড়া ঝাঁকড়া চুল, মুখে ইয়া ইয়া দাড়ি, হাতে লাঠি আর কাঁধে ঝোলানো থাকত ঝুলি। এরা হল ছেলেধরা। মোনা ঠাকুর একবার এক ছেলেধরার পাল্লায় পড়েছিল।
খ্যাপা শহর: মাঝে মাঝে এই শহরের মাথায় খুন চড়ে যায়। শুরু হয় দাঙ্গা। রাস্তায় রক্তগঙ্গা বয়ে যায়। প্রাণের ভয়ে মানুষ পালিয়ে যায়। মোনা ঠাকুরও কলকাতা ছেড়েছিল এই দাঙ্গার ভয়ে।
ঘোষণা: বিনামূল্যে আমাদের দেওয়া নোটস, সাজেশান, প্রশ্ন উত্তর ইত্যাদি স্টাডি ম্যাটেরিয়াল PDF এবং ভিডিও ক্লাস ভালো লাগলে, আমাদের এই পোস্টের লিংক আপনার বন্ধুদের ফেসবুক, WhatsApp এ শেয়ার করে তাদের পড়ার সুযোগ করে দিন।
Please do not share any spam link in the comment box