1. “মৃত্যুঞ্জয় প্রথম মৃত্যু দেখল–অনাহারে মৃত্যু” —–অনাহারে মৃত্যুর কারণ কী?
Ans. দ্বিতীয় মহাযুদ্ধের সমসাময়িককালে কিছু মজুতদার কালোবাজারির দাপটে বাংলায় নেমে এসেছিল ভয়াবহ দুর্ভিক্ষ। এই দুর্ভিক্ষ পঞ্চাশের মন্বন্তর নামে খ্যাত। অনাহারে মৃত্যুর কারণ হল নিদারুণ খাদ্যাভাব।
2. ‘একটা কাজ করে দিতে হবে তাই। কাজটা কী ছিল?
Ans. কাজটা ছিল মৃত্যুঞ্জয়ের দেওয়া বেতনের সমস্ত টাকা নিখিলকে রিলিফফাণ্ডে দিয়ে আসতে হবে।
3. টুনুর মা বিছানায় পড়ে থেকে বাড়ির লোকদের কীভাবে মৃত্যুঞ্জয়ের খোজ নিতে পাঠান ?
Ans. টুনুর মা বিছানায় পড়ে থেকে বাড়ির ছেলে, বুড়ো সকলকে তাগাদা দিয়ে মৃত্যুঞ্জয়ের খোঁজ নিতে পাঠান।
4. “মরে গেল! না খেয়ে মরে গেল’– কার উক্তি এবং কে মরে গেল?
Ans. উক্তিটি মৃত্যুঞ্জয়ের। একজন ফুটপাথবাসী বুভুক্ষু মানুষ অনাহারে মরে গেল।
5. হয়তো মৃদু একটু অবজ্ঞার সঙ্গে ভালও বাসে। – অবজ্ঞার কারণ কী?
Ans. মৃত্যুঞ্জয় স্বাভাব চরিত্রে নিরীহ, শাস্ত, দরদী, ভালোমানুষ। সেই সঙ্গে সে সৎ ও সরল। তাই নিখিল অন্য সকলের মতো মৃত্যুঞ্জয়কে পছন্দ করলেও মানব সভ্যতার সবচেয়ে প্রাচীন ও পচা ঐতিহ্যের আদর্শবাদের কল্পনা তাপ বলে তাকে অবজ্ঞার সঙ্গে ভালোবাসত।
6. “তখন সে রীতিমতো কাবু হয়ে পড়েছে”– সে কাবু হয়ে পড়েছিল কেন ?
Ans. পঞ্চাশের দুর্ভিক্ষের দিনে অফিসকর্মী মৃত্যুঞ্জয় প্রথম পথে এক অনাহারে মৃত্যুর দৃশ্য দেখে মানসিক আঘাত পেয়ে কাবু হয়ে পড়েছিল।
7. অবসর জীবনটা নিখিল কীভাবে কাটাতে চায় ?
Ans. মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘কে বাঁচায়, কে বাঁচে’ নামাঙ্কিত গল্পে নিখিল বই পড়ে আর নিজস্ব চিন্তা জগৎ নিয়ে অবসর জীবনটা কাটাতে চায়।
8. “এ অপরাধের প্রায়শ্চিত্ত কি?” অপরাধটা কী?
Ans. মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় রচিত ‘কে বাঁচায়, কে বাঁচে! গল্পে দেখা যায়, মানুষ অনাহারে ভুগছে আর মৃত্যুঞ্জয় এই দুরবস্থার সময়েও চারবেলা পেটভরে খেয়েছে। সে এটাকেই অপরাধ বলে গণ্য করেছে।
9. “নিখিল ধীরে ধীরে টাকাটা গুনল’—টাকাটা গুনার কারণ কী?
Ans. নিখিল জানত মৃত্যুঞ্জয়ের মাইনে কত, তা সত্ত্বেও সে টাকাটা গুনেছিল। কারণ মৃত্যুঞ্জয় তার মানব দরদি চিত্ত, সমবেদনা, সহানুভূতি ও মমত্ববোধ দ্বারা প্রভাবিত হয়ে মাইনের সমস্ত টাকাটাই রিলিফফান্ডে দান করল কিনা।
10. “সেটা আশ্চর্য নয়। কোনটা আশ্চর্য নয়?
Ans. ‘কে বাঁচায়, কে বাঁচে!’ গল্পে অনাহারে ফুটপাতে মৃত্যুর ঘটনাটি আশ্চর্য নয় বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
11. একবেলা খাওয়া ছেড়ে দিয়েছি।’—বক্তার এমন সিদ্ধান্তের কারণ কী?
Ans. মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় রচিত ‘কে বাঁচায়, কে বাঁচে’ নামাঙ্কিত গল্পে দেখা যায়— মৃত্যুঞ্জয় অনাহারীদের মধ্যে খাবার বিলিয়ে দেওয়ার জন্য একবেলা খাওয়া ছেড়ে দিয়েছিল।
12. অনাহারক্লিষ্ট মানুষদের জন্য খাদ্যের সংস্থান করতে নিখিল কী ব্যবস্থা নিয়েছে?
Ans. অনাহারক্লিষ্ট মানুষদের জন্য খাদ্যের সংস্থান করতে নিখিল তার পরিবারের রোজকার খাওয়াদাওয়ার বহর যতদূর সম্ভব কমিয়ে দিয়েছে। বেঁচে থাকার জন্য প্রয়োজনীয় খাদ্যই তারা খায়।
13. নিখিলের সমপদস্থ মৃত্যুঞ্জয় নিখিলের তুলনায় কত টাকা মাইনে বেশি পায় এবং কেন?
Ans. নিখিল ও মৃত্যুঞ্জয় সমপদস্থ হলেও মৃত্যুঞ্জয়ের বেতন পঞ্চাশ টাকা বেশি। কারণ সে একটা বাড়তি দায়িত্ব পালন করে।
14. ‘সংসারে তার নাকি মন নেই।’—কীসে তার মন ছিল?
Ans. এখানে ‘তার’ বলতে নিখিলের কথা বলা হয়েছে। তার মন বইপত্র এবং চিন্তার জগতে বিচরণ করতো।
15. “ অন্য সকলের মতাে মৃত্যুঞ্জয়কে সেও খুব পছন্দ করে। ” – কী কারণে ‘ সে ’ মৃত্যুঞ্জয়কে পছন্দ করে ?
Ans. মৃত্যুঞ্জয় আদর্শবাদের কল্পনা তাপস এক সরলচিত্ত যুবক বলে নিখিল মৃত্যুঞ্জয়কে পছন্দ করে।
16. “ নইলে দর্শনটা অনেক আগেই ঘটে যেত সন্দেহ নেই। ” – কীসের দর্শন ?
Ans. দুর্ভিক্ষের পটভূমিতে মৃত্যুঞ্জয়ের ফুটপাথে অনাহার- মৃত্যুর দর্শনের কথা এখানে বলা হয়েছে।
17. “ নিখিলকে বার বার আসতে হয়। ” – নিখিলকে কোথায় , কেন বারবার আসতে হয়?
Ans. পথে পথে ঘুরে বেড়ানাে বন্ধু মৃত্যুঞ্জয়ের বাড়ির লােকেদের খোঁজ খবর নিতে নিখিলকে মৃত্যুঞ্জয়ের বাড়িতে বারবার আসতে হয়।
18. “ একেবারে মুষরে যাচ্ছেন দিনকে দিন। ” – উক্তিটি কার ?
Ans. ‘ কে বাঁচায় , কে বাঁচে ‘ গল্পে প্রশ্নোদৃত এই উক্তিটি মৃত্যুঞ্জয়ের স্ত্রীর।
19. কি হল হে তােমার ? ” – কে , কাকে এ কথা বলেছিল ?
Ans. “ কে বাঁচায় , কে বাঁচে ’ গল্পে মৃত্যুঞ্জয়ের বমি করা ও শরীর খারাপ দেখে সহকর্মী নিখিল তাকে এ কথা বলেছিল।
20. “কেমন একটা ধারণা জন্মেছে।” – ধারণাটা কী?
Ans. মৃত্যুঞ্জয়ের মনে একটা ধারণা জন্মেছে যে, যথাসর্বস্ব দান করলেও সে কিছুই ভালো করতে পারবে না।
21. “ শত ধিক আমাকে। ” – কে , কেন নিজেকে ধিক্কার দিয়েছিল ?
Ans. মৃত্যুঞ্জয় নিজেকে ধিক্কার দিয়েছিল কারণ দেশের লােকের অনাহার জনিত মৃত্যুর কথা জেনে শুনেও সে চারবেলা পেট পুরে খেয়েছে।
22. ‘ কে বাঁচায় , কে বাঁচে ’ গল্পটি প্রথম কোথায় প্রকাশিত হয় ?
Ans. ‘ কে বাঁচায় , কে বাঁচে ’ গল্পটি প্রথম সারদাকুমার দাস সম্পাদিত ভৈরব ’ পত্রিকার প্রথম শারদ সংখ্যায় ১৩৫০ বঙ্গাব্দে প্রকাশিত হয়।
23. আনমনে অর্ধ – ভাষণে যেন আর্তনাদ করে উঠল মৃত্যুঞ্জয়। ” – আর্তনাদটা কী ছিল ?
Ans. আর্তনাদটা ছিল— “ মরে গেল ! না খেয়ে মরে গেল।
24. “নিখিল সন্তর্পণে প্রশ্ন করল।”—সন্তর্পণে প্রশ্ন করার কারণ কী?
Ans. অফিসে ঢুকেই মৃত্যুঞ্জয় সেদিন চিন্তা-গম্ভীর হয়ে পড়েছিল। সহকর্মী নিখিল বুঝেছিল বড়ো একটা সমস্যার সঙ্গে তার মনের মধ্যে সংঘর্ষ চলছে। মৃত্যুঞ্জয়ের মানসিক দোলাচলের কারণ বুঝতে না পেরে নিখিল সন্তর্পনে প্রশ্ন করেছিল।
25. ” সকলে এক কথাই বলে। ” – কী কথা বলে ?
Ans. সকল দুর্ভিক্ষ পীড়িতই বলে , গাঁ থেকে এইছি। খেতে পাইনে বাবা। আমায় খেতে দাও।
26. “রূঢ় বাস্তব নিয়মকে উল্টে মধুর আধ্যাত্মিক নীতি করা যায়, সেটা হয় অনিয়ম”—রূঢ় বাস্তব নিয়ম বলতে কী বোঝানো হয়েছে?
Ans. জীবনের অন্নে মানুষের দাবি জন্মগত। অথচ সেই জন্মগত দাবিকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে একশ্রেণির স্বার্থপর মানুষ যাবতীয় ভোগ্যপণ্য কুক্ষিগত করে এবং গরিব মানুষকে ভাগ্যের দোহাই দিতে শেখায়—এটাই রূঢ় বাস্তব নিয়ম।
27. “এভাবে দেশের লোককে বাঁচানো যায় না”—কার, কেন একথা মনে হয়েছে?
Ans. সীমাহীন খাদ্যাভাবের দিনে একক প্রচেষ্টায় মৃত্যুঞ্জয় তার মাসমাইনের পুরো টাকা এবং একবেলার আহার ভুখা মানুষদের মধ্যে বিলিয়ে দিয়েছিল। অভাব যেখানে সীমাহীন, সেখানে মৃত্যুঞ্জয়ের সামান্য এই দান নিতান্তই কিঞ্চিৎকর বলে বক্তা এরূপ মন্তব্য করেছে।
28. “ওটা পাশবিক স্বার্থপরতা”—কোন্ কাজকে পাশবিক স্বার্থপরতা বলে উল্লেখ করা হয়েছে?
Ans. নিখিল সমাজধর্মের কথা উল্লেখ করে মৃত্যুঞ্জয়কে বলেছিল, ‘দশজনকে খুন করার চেয়ে নিজেকে না খাইয়ে মারা বড়ো পাপ।’ মৃত্যুঞ্জয়ের কাছে এই ব্যাপারটি পাশবিক স্বার্থপরতা ছাড়া আর কিছুই নয়।
29. “ক্রমে ক্রমে নিখিলকে হাল ছেড়ে দিতে হয়”—নিখিলকে কেন হাল ছেড়ে দিতে হয়েছিল?
Ans. সহকর্মী মৃত্যুঞ্জয়ের মানসিকতার পরিবর্তনে নিখিল বহু যুক্তিতর্কের অবতারণা করে প্রাণপ্রণ সচেষ্ট হয়েছিল। কিন্তু কোনো কিছুতেই মৃত্যুঞ্জয়ের মনে পরিবর্তনের কোনো চিহ্ন পর্যন্ত দেখা যায়নি; বরং দিন দিন সে আরও বেপরোয়া হয়ে উঠেছিল। এই কারণেই নিখিল শেষ পর্যন্ত হাল ছেড়ে দিয়েছিল।
30. “মনটাও খারাপ হয়ে যায়।” –কার, কেন মন খারাপ হয়ে যায়?
Ans. ফুটপাতে অনাহারে মানুষের মৃত্যু দেখে মৃত্যুঞ্জয় মানসিকভাবে বিচলিত হয়ে পড়ে। চোখ ছলছল করে ওঠে তার। এই দেখে নিখিলের মনটা খারাপ হয়ে যায়।
31. “ভেতরে সে পুড়ছে সন্দেহ নেই”—উদ্দিষ্ট ব্যক্তির এমন অবস্থার কারণ কী ?
Ans. ফুটপাথে অনাহারী মানুষের মৃত্যু দেখে মৃত্যুঞ্জয় মানসিক বেদনা ও শারীরিক কষ্টবোধে অধীর হয়ে পড়েছিল। এই মৃত্যুদৃশ্যই মৃত্যুঞ্জয়ের অন্তর্দহনের কারণ।
32. “একস্থানে তীক্ষ্মধার হা হুতাশ করা মন্তব্য করা হয়েছে।”— এই মন্তব্যের কারণ কী?
Ans. দুর্ভিক্ষপীড়িত অনাহারী গোটা কুড়ি মানুষের মৃতদেহকে ভালোভাবে সদ্গতি বা সৎকার করা হয়নি ।
Please do not share any spam link in the comment box