অর্ডিনারি আইটির পোস্ট নোটিফিকেশন


মহাশ্বেতা দেবীর ভাত প্রশ্ন ও উত্তর - উচ্চমাধ্যমিক বাংলা

মহাশ্বেতা দেবীর ভাত প্রশ্ন ও উত্তর: প্রতিবছর উচ্চমাধ্যমিক বাংলা পরীক্ষায় উচ্চমাধ্যমিক বাংলা সাজেশন (HS Bengali Suggestion) থেকে অনেক প্রশ্ন আসে। তাই আমরা আপনাদের জন্য নিয়ে এসেছি উচ্চমাধ্যমিক বাংলা সিলেবাসের মহাশ্বেতা দেবীর "ভাত" গল্পের সমস্ত প্রশ্নোত্তর। 

মহাশ্বেতা দেবীর ভাত প্রশ্ন ও উত্তর - উচ্চমাধ্যমিক বাংলা

এখানে উচ্চমাধ্যমিক বাংলা ‘ভাত’ গল্পের প্রশ্ন উত্তর যেমন বহু বিকল্প ভিত্তিক প্রশ্ন (MCQ), অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্ন (SAQ), সংক্ষিপ্ত উত্তরভিত্তিক প্রশ্ন এবং রচনাধর্মী প্রশ্নগুলি তুলে ধরা হল। যে গুলি পশ্চিমবঙ্গ উচ্চমাধ্যমিক বাংলা পরীক্ষার জন্য খুব গুরুত্বপূর্ন। নিচে ‘ভাত’ গল্পের MCQ, SAQ প্রশ্ন উত্তর গুলি যত্ন সহকারে পড়ুন ও জ্ঞানভাণ্ডার বৃদ্ধি করুন।


ভাত - মহাশ্বেতা দেবী


‘ভাত’ গল্পটি প্রখ্যাত সাহিত্যিক মহাশ্বেতা দেবীর ‘শ্রেষ্ঠ গল্প সংকলন’ থেকে গৃহিত হয়েছে। আলোচ্য পোস্টে মহাশ্বেতা দেবীর ‘ভাত’ গল্পের গুরুত্বপূর্ণ বহু বিকল্প ভিত্তিক প্রশ্ন (MCQ), অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্ন (SAQ), সংক্ষিপ্ত উত্তরভিত্তিক প্রশ্ন এবং রচনাধর্মী প্রশ্নগুলি তুলে ধরা হল।


Google News এ আমাদের ফলো করুন


Gksolves Google News


মহাশ্বেতা দেবীর ভাত প্রশ্ন ও উত্তর - উচ্চমাধ্যমিক বাংলা


ভাত গল্পের লেখক পরিচয়

বিশিষ্ট লেখিকা মহাশ্বেতা দেবী (১৯২৬-২০১৬) একাধারে যেমন সাহিত্যকর্মী তেমনি বিশিষ্ট সমাজসেবীও ছিলেন। সারাজীবন ধরে তিনি আদিবাসী মানুষের কল্যানের কথা ভেবে গেছেন। তাঁর লেখাতেও সমাজের নিচুতলার মানুষের প্রতি বিশেষ মমত্ববোধ প্রকাশিত হয়েছে। উল্লেখযোগ্য কয়েকটি উপন্যাস হল- ‘অরণ্যের অধিকার’, ‘হাজার চুরাশির মা’, ‘তিতুমির’ প্রভৃতি।


ভাত গল্পের উৎস

ভাত গল্পটি মহাশ্বেতা দেবীর "শ্রেষ্ঠ গল্প সংকলন" থেকে নেওয়া হয়েছে, 1982 সালে "ম্যানিফেস্টো" পত্রিকায় প্রথম এই গল্পটি প্রকাশিত হয়েছিল।


ভাত গল্পের সারসংক্ষেপ

ভাত গল্পের কেন্দ্রীয় চরিত্র উৎসব নাইয়া, যে গ্রামে উচ্ছব  বলে পরিচিত। সে চাষাবাদ করত গ্রামেরই অন্য একজনের জমিতে। জমির মালিক সতীশ মিস্ত্রি। তা থেকে তার কয়েক মাসের জন্য অন্নসংস্থান হয়ে যেত। উৎসবের অনটনের সংসারে সে বছর সুখ এসেছিল। বহুদিন পর সে সপরিবারে পেট ভরে ভাত খাওয়ার সুযোগ পেয়েছিল কিন্তু ভাগ্য তাকে সঙ্গ দেয় নি। মাতলার  বিধ্বংসী জলের তোড়ে সে হারিয়েছিল তার স্ত্রী পুত্র-কন্যা সব। এমনকি তার মাথা গোঁজার শেষ সম্বল টুকু চলে যায়। কিন্তু পেট তো কথা শোনে না, দু'মুঠো ভাতের আশায় সে চলে যায় তার  গ্রাম তুতো বোন বাসিনীর মনিবের বাড়িতে, কলকাতায়। সেখানে সারাদিন ফাইফরমাশ খাটতে থাকে সে। সেখানে গিয়ে সে দেখে বাড়ির বড় কর্তা লিভার ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে এক প্রকার। মুক্তির উদ্দেশ্যে শুভাকাঙ্খীরা নানান রকম উপায় স্থির করতে থাকে। তারপর তারা তান্ত্রিক এর শরণাপন্ন হয়। উৎসবের ওপরে দায়িত্ব এসে পড়ে হোম যজ্ঞের কাঠ প্রস্তুত করার। সে তখনো পর্যন্ত অভুক্ত ই ছিল। অভুক্ত অবস্থায় সমগ্র দিন পরিশ্রম করে সে , তবুও ভাত জোটে না। তান্ত্রিক তো বলেই দিয়েছেন যোগ্য শেষ হওয়ার আগে কিছু খেতে পারবেনা সে। সমগ্র দিনের পরিশ্রান্তির পর ক্লান্ত হয়ে উৎসব ঘুমিয়ে পড়ে মন্দিরের চাতালে। যখন তার ঘুম ভাঙ্গে সে জানতে পারে কর্তাবাবু গত হয়েছেন। তাই বাড়ির সব খাবার ফেলে দেওয়া হচ্ছে। উৎসব ভাতের হাড়িটি নিয়ে ছুটে যায় স্টেশনের দিকে, সেখানে বসে সে পাগলের মত হাড়ির মধ্যে হাত ঢুকিয়ে ভাত খেতে থাকে। মনে মনে তার হারানো স্ত্রী-পুত্র-কন্যাকে নিবেদন করে। তারপর হাড়িটিকে বালিশের মত ব্যবহার করে সে। তার কিনারায় মাথা রেখে ঘুমিয়ে পড়ে। পরদিন যখন তার ঘুম ভাঙ্গে তাকে হাড়ি চুরির অপরাধে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। উৎসবের বড় ইচ্ছা ছিল কোথা থেকে বড় বাড়িতে অত চাল আসে দেখার কিন্তু সেই সন্ধান পাওয়ার সৌভাগ্য তার আর হয়ে ওঠেনি।


ভাত গল্পের নামকরণ

ভাত গল্পের নামকরণে বিষয়বস্তুর সাথে ব্যঞ্জনা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। দুটি প্রেক্ষাপট সমান্তরালভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন লেখিকা। প্রান্তিক বাদা অঞ্চল আর শহরের বড় বাড়ির স্পষ্ট চিত্র এঁকেছেন লেখিকা কোমল তুলির টানে। কাহিনীর মধ্যে একদিকে অন্ন  বিলাস, আরেকদিকে নিরন্ন মানুষের অন্য হীনতা সমাজের এই চিরন্তন দ্বিধা-দ্বন্দ্ব বৈষম্য স্পষ্টভাবে চিত্রায়িত হয়েছে। গল্পের কেন্দ্রীয় চরিত্র উৎসব নাইয়া এই দুটি প্রেক্ষাপট এর মধ্যেই যোগসুত্র স্থাপন করেছে। উৎসব যে বাদা  অঞ্চলে বসবাস করে সেখানে ধান চাষ খুব একটা ভালো হয় না। মাঠে মাঠে গুগলি, শুষনি শাক এসবেরই রমরমা। তেতো হিঞ্চে শাক গুগলি সেদ্ধ এসবই সেখানকার মধ্যাহ্নভোজন এর সামগ্রী। সতীশ মিস্ত্রির জমিতে প্রাণপাত পরিশ্রম করে কয়েক মাসের জন্য অন্ন জোগাড় করে উৎসব। যদিও সেটুকু অন্নে সমগ্র বছর চলার কথা নয়। মাতলার বন্যায় স্ত্রী-পুত্র-কন্যাসহ সর্বস্ব খোয়াতে হয় তাকে। সর্বহারা হয়ে ভাগ্যের অসহায়তা নিয়ে বেঁচে থাকে উৎসব কিন্তু ক্ষুধা বাগ মানে না। ওদিকে শহরের বড় বাড়িতে অন্ন চালের প্রাচুর্য। বাড়ির কর্ত্রী বড় পিসিমা ও লুকিয়ে চাল বিক্রি করেন কিন্তু ক্ষুধার্ত উৎসব খেতে পায়না। বড়কর্তার মৃত্যুর পর ক্ষুধার্ত উৎসব অশৌচ বাড়ির হাঁড়ি নিয়ে ছুটতে থাকে। স্টেশনে গিয়ে সে পাগলের নেয় হাত ঢুকিয়ে ভাত খেতে থাকে এবং স্বর্গসুখ খুঁজে পায়। উৎসবের বড় ইচ্ছা ছিল বড় বাবুর বাড়িতে ধান কোথা থেকে আসে সেই বাদার সন্ধান করা, ইচ্ছা ছিল একবার সন্ধান পেলে গ্রামের সবাইকে সেই খবরটা জানাবে। কারণ তার গ্রামে গুগলি, শামুক ছাড়া আর কিছুই পাওয়া যেত না।কিন্তু সে স্বাদ অপূর্ণই রয়ে যায়। একজন নিরন্ন মানুষের অন্নহীনতাই চিত্রায়িত হয় গল্পে আর সে কারণেই গল্পের নামকরণ ভাত যথার্থরূপে সার্থক।


ভাত MCQ প্রশ্ন ও উত্তর (বহু বিকল্প ভিত্তিক)


১) “ উনি হলেন দেবতার সেবিকা। ” - ' উনি ' বলতে কার কথা বােঝানাে হয়েছে?

ক) বড়াে বউ 

খ) মেজো বউ 

গ) বড়ো পিসিমা 

ঘ) বাসিনী 

উত্তর:গ


২) “ দূরদর্শী লােক ছিলেন। ” – দূরদর্শী লােকটি হল -

ক) বড়াে পিসিমা 

খ) বুড়ো কর্তা 

গ) হরিচরণ 

ঘ) মহানাম শতপথি

উত্তর: খ


৩) “ মানুষের সঙ্গে বিয়ে দিও না। ” - বলেছিল-

ক) বড়াে পিসিমা 

খ) মেজো পিসিমা 

গ) ছােটো পিসিমা 

ঘ) বাসিনী দাসী 

উত্তর: ক


৪) " তাঁর বাবার সেবা করেছেন। ” - কার কথা বলা হয়েছে?

ক) বড়াে বউয়ের 

খ) মেজো বউয়ের 

গ) বড়াে পিসিমার 

ঘ) বাড়ির নার্সের 

উত্তর: গ


৫) উচ্ছবকে বড়ো বাড়িতে কে নিয়ে এসেছিল? 

ক) ভজন চাকর 

খ) বাসিনী 

গ) তান্ত্রিক 

ঘ) ছােটো বউয়ের বাবা 

উত্তর: খ


৬) " ময়ুরছাড়া কার্তিক "কে? 

ক) ভজন চাকর 

খ) সাধন দাশ

গ) বাসিনী

ঘ) উচ্ছব নাইয়া 

উত্তর: ঘ


৭) “ দিতে পারবে না প্রাণে ধরে। ” - যা দিতে না - পারার কথা বলা হয়েছে -

ক) দশটা টাকা 

খ) দশটা পয়সা 

গ) দশটা আনা

ঘ) দশ পােয়া চাল 

উত্তর: খ


৮) “ কেনা চাল নয়। ” — চাল যেখান থেকে আসে- 

ক) গ্রাম থেকে 

খ) বাদা থেকে 

গ) শহর থেকে 

ঘ) আড়ত থেকে 

উত্তর: খ


৯) বড়ো পিসির কথায় আজকাল থাকে - 

ক) ভালােবাসা 

খ) গােপন অভিপ্রায় 

গ) ইঙ্গিত

ঘ) ঠেস 

উত্তর: ঘ


১০) “ বড়াে পিসিমা কি অন্য বাড়ির লােক নাকি? ” জিজ্ঞাসাটি হল-

ক) বড়াে বউয়ের 

খ) বাড়ির শাশুড়ির 

গ) মেজো বউয়ের

ঘ) ছােটো বউয়ের 

উত্তর: ক 


১১) বুড়াে কর্তার জন্যে বাড়িতে আয়োজিত হচ্ছে- 

ক) ভোজ 

খ) হােম - যজ্ঞি

গ) নামকীর্তন

ঘ) পূজা - অর্চনা 

উত্তর: খ


১২) “ বুঝি ঘুচে যায়। ” - কী ঘুচে যাওয়ার কথা বলা হয়েছে?

ক) বড়াে বউয়ের মাছ খাওয়া 

খ) শাশুড়ির মাছ খাওয়া 

গ) ছেলের মাছ খাওয়া 

ঘ) উচ্ছব নাইয়ার ভাত খাওয়া।

উত্তর: খ


১৩) “ বেঁধে - বেড়ে শাশুড়িকে খাওয়ানোে তার কাজ।" - কার কাজের কথা বলা হয়েছে -

ক) ছােটো বউ - এর 

খ) সেজো বউ - এর 

গ) মেজো বউ - এর 

ঘ) ছোটো ব‌উ -এর

উত্তর: গ


১৪) "চা খেয়ে যাবে।'- কে চা খাবে? 

ক) বড়াে বউ 

খ) মেজো বউ 

গ) নার্স 

ঘ) ছোটো ব‌উয়ের বাবা

উত্তর: গ



১৫) বিলেতে থাকে -

ক) বড়াে ছেলে

খ) মেজো ছেলে 

গ) সেজো ছেলে 

ঘ) ছােটো ছেলে 

উত্তর: গ


১৬) “ এগারােটার আগে ঘুম থেকে ওঠে না।" যাদের সম্পর্কে বলা হয়েছে -

ক) বাড়ির নাতি - নাতনিদের 

খ) বাড়ির কর্তা ও তার স্ত্রীর

গ) বাড়ির ছেলেদের 

ঘ) বাড়ির বউদের সম্পর্কে

উত্তর: গ


১৭) “ এ বাড়ির ছেলেদের চাকরি করা হয়ে ওঠেনি , ” কারণ -

ক) তারা ঘরজামাই থাকে 

খ) তারা এগারােটার আগে ঘুম থেকে ওঠে না

গ) তারা অসুস্থ। 

ঘ) তারা বাড়ির কাজে ব্যস্ত 

উত্তর: খ


১৮) ‘ ভাত ’ গল্পের বুড়াে কর্তার কতগুলি দেবত্রবাড়ির উল্লেখ করা হয়েছে? 

ক) পনেরােটি 

খ) সতেরােটি 

গ) আঠারােটি 

ঘ) বত্রিশটি 

উত্তর: গ


১৯) শ্বশুরের ঘরে বসে বড়াে বউ যা ভাবতে চেষ্টা করে -

ক) কর্তার অবর্তমানে সে কী করবে 

খ) কর্তার মৃত্যুর পর বাড়ির কী অবস্থা হবে 

গ) কর্তার মৃত্যুর পর পিসিমা সব আত্মসাৎ করবে 

ঘ) সংসারটি বড়াে নড়বড়ে হয়ে যাবে 

উত্তর: ক



২০) লােকটা সম্পর্কে বামুন ঠাকুর কী বলল?

(ক) ভাত খাবে কাজ করবে।

(খ) দিনমজুরি হিসেবে কাজ করবে।

(গ) মাসকাবারি মজুরির ভিত্তিতে কাজ করবে।

(ঘ) সময়-অবসরে এসে কাজ করবে।

উত্তর: ক


২১) শ্বশুরমশায়কে বড়াে বউ মনে করে -

ক) সংকীর্ণমনা 

খ) মহাকৃপণ 

গ) অর্থলােপ 

ঘ) ঠাকুরদেবতা 

উত্তর: ঘ


২২) বড় বউ বুড়াে কর্তার জন্য কীসের শরবত আনে? 

ক) ইসবগুলের

খ) নুন - চিনির 

গ) ঠান্ডা ঘােলের 

ঘ) মুসাম্বি লেবুর 

উত্তর: ক


২৩) বুড়ো কর্তা খেতে আসার কতক্ষণ আগে রুটি -লুচি করতে হত-

ক) দশ মিনিট 

খ) পঁচিশ মিনিট 

গ) পনেরাে মিনিট 

ঘ) পাঁচ মিনিট

উত্তর: ঘ


২৪) “ আজ এই যজ্ঞি হােম হচ্ছে ” -কারণ

ক) তান্ত্রিক বলেছে 

খ) বড়ো পিসিমা বলেছে 

গ) বাড়ির সবাই বলেছে 

ঘ) ডাক্তার বলেছে

উত্তর: ক 


২৫) “ এক তান্ত্রিক এনেছেন। ” - কে তান্ত্রিক এনেছে?

ক) বড়াে বউয়ের বােন 

খ) ছােটো বউয়ের পিসিমা 

গ) ছােটো বউয়ের বাবা 

ঘ) বাড়ির ছােটো ছেলে নিজেই

উত্তর: গ


২৬) " কালাে বিড়ালের লোম আনতে গেছে ” -কে? 

ক) ভজন চাকর 

খ) বড়াে পিসিমা 

গ) বড়াে বউ 

ঘ) উচ্ছব 

উত্তর: ক


২৭) উচ্ছব নাইয়াকে আনা হয়েছে -

ক) রান্নার জন্য 

খ) কাঠ কাটার জন্য 

গ) ভিখিরি বিদায়ের জন্য 

ঘ) যজ্ঞের প্রসাদ খাওয়ানাের জন্য 

উঃ - খ


২৮) চাল থরে থরে সাজানাে --

ক) রান্নাঘরে 

খ) বারান্দায় 

গ) উঠোনে

ঘ) ডোলে ডােলে

উত্তর: ঘ



২৯) অন্ত্রিক হােমে বসার আগে খাওয়াদাওয়া সারতে হবে -

ক) এক ঘন্টার মধ্যে 

খ) ধীরেসুথে 

গ) দু - ঘন্টার মধ্যে 

ঘ) ঝপ করে 

উত্তর: ঘ


৩০) তান্ত্রিক বসেছিল -

ক) বুড়াে কর্তার ঘরে 

খ) ওপরের হল - ঘরে। 

গ) ঠাকুরদালানে 

ঘ) নীচের হল - ঘরে 

উত্তর: ঘ


৩১) “ এই যে দিই। ” - কথাটি বলেছে -

ক) বাসিনী 

খ) সাধন দাশ 

গ) উচ্ছব নাইয়া 

ঘ) সতীশ মিস্তিরি 

উ:- ক


৩২) রামশাল চালের ভাত যার সলে খাওয়া হয়-

ক) ডাল - তরকারি 

খ) সবজি 

গ) মাংস 

ঘ) মাছ 

উত্তর: ক


৩৩) ' কনকপানি ’ চালের ভাত খান -

ক) বড়ােবাবু 

খ) মেজবাবু 

গ) ছােটবাবু 

ঘ) পিসিমা 

উত্তর: ক


৩৪) বড়াে বাড়িতে মেজো ও ছােটো ছেলের জন্য বারােমাস কোন চাল রান্না হয়? 

ক) ঝিঙেশাল 

খ) রামশাল 

গ) পদ্মজালি 

ঘ) কনকপানি 

উত্তর: গ


৩৫) বাবুদের বাড়িতে ভাত রান্না হয়— 

ক) চার রকম 

খ) তিন-রকম 

গ) পাঁচ- রকম 

ঘ) ছয় - রকম 

উত্তর: গ


৩৬) “ বাদায় এদের এত জমি। চাল এনে ” - কী করছে? 

ক) বিতরণ করেছে 

খ) নষ্ট করেছে 

গ) পাহাড় করে 

ঘ) বিক্রি করে

উত্তর: গ


৩৭) লুকিয়ে লুকিয়ে চাল বিক্রি করে -

ক) বড়াে বউ 

খ) বড়াে পিসিমা 

গ) বাসিনী 

ঘ) মেজো বউ 

উত্তর: খ


৩৮) “ তা দে দেখি বাসিনী ” - “ তা ' বলতে বােঝানাে হয়েছে 

ক) চাল 

খ) ধান 

গ) সবজি

ঘ) ভাত

উত্তর: ক


৩৯) “ বাসিনী ব্যাগ্যতা করি তাের। ” বক্তা হল-

ক) মেজো বউ 

খ) হরিচরণ নাইয়া

গ) সতীশ মিস্ত্রি

ঘ) উচ্ছব

উত্তর: ঘ


৪০) ' ব্যাগ্যতা ' কথার অর্থ -

ক) অনুরােধ 

খ) হুকুম

গ) আদেশ

ঘ) সম্মান 

উত্তর: ক



৪১) “ পিসিমা দেকতে পেলে সর্বনাশ হবে। ” - যা দেখার বিষয়ে বলা হয়েছে -

ক) চাল দেওয়ার বিষয় 

খ) কাজ না - করা 

গ) কাঠ না - কাটা

ঘ) কথাবার্তা বলা

উত্তর: ক


৪২) “ আমি ঠিক তাগেবাগে দে ঝাব। " — 'তাগেবাগে ’ - এর অর্থ -

ক) সুবিধামতাে 

খ) সুযােগ বুঝে 

গ) সময়ান্তে 

ঘ) শেষবেলায়

উত্তর: খ


৪৩) বাসিনী কী নাড়াতে নাড়াতে চলে যায়? 

ক) হাত

খ) পা 

গ) আঁচল 

ঘ) মাথা 

উত্তর: ঘ


৪৪) “ বউ কাঁপছিল ” – বউ কাঁপছিল কেন?

ক) ভয়ে ও আতঙ্কে 

খ) শীতে আর ভয়ে 

গ) ক্ষুধার তীব্রতায় 

ঘ) প্রচণ্ড জ্বরে 

উত্তর: খ


৪৫) বাতাসের চাবুকে কোন নদীর জল ছটফটিয়ে উঠেছিল? 

ক) মাতলা নদীর 

খ) জলঙ্গি নদীর 

গ) কাবেরি নদীর 

ঘ) অজয় নদের 

উত্তর: ক


৪৫) “ মাটিতে লুটোপুটি গেল। ” — কী লুটোপুটি খেল? 

ক) উচ্ছদের বাড়িঘর 

খ) উচ্ছবের গাছপালা 

গ) উচ্ছবদের সংসার 

ঘ) বুড়োকর্তার সংসার

উত্তর: গ


৪৬) " সকাল হতেই বােঝা গিয়েছিল। "-কী বােঝা গিয়েছিল? 

ক) সংসারের অবস্থা 

খ) ঝড়ের ভয়াবহতা 

গ) জলের প্রাবল্য 

ঘ) সর্বনাশের বহর 

উত্তর: ঘ


৪৭) "উচ্ছব নেয় না। ” - কী না - নেওয়ার কথা বলা হয়েছে? 

ক) সাধন দাশের কথা 

খ) মহানাম শতপথির মন্ত্র 

গ) সতীশ মিস্তিরির কথা 

ঘ) বাসিনীর অনুরােধ 

উত্তর: ক


৪৮) মুখবদ্ধ কৌটোর মধ্যে রাখা ছিল -

ক) জমির দলিল 

খ) জমি - চেয়ে দরখাস্তের নকল 

গ) উপার্জিত সমস্ত টাকা

ঘ) গয়না

উত্তর: খ


৪৯) শ্ৰাদ্ধশান্তি করার জন্য গ্রামের লােক খবর দিয়েছিল 

ক) তান্ত্রিকমশাইকে

খ) সতীশ মিস্ত্রিকে

গ) মহানাম ব্রম্মচারীকে 

ঘ) মহানাম শতপতিকে

উত্তর: ঘ


৫০) " হঠাৎ খুব বুদ্ধিমান সাজতে চায়। " - কে বুদ্ধিমান সাজে? 

ক) উচ্ছব

খ) সতীশ

গ) সাধন 

ঘ) বাসিনী 

উত্তর: ক



৫১) বাসিনীর মনিবের বাড়িটি উচ্ছব দেখেছিল-

ক) পাশের বাড়ি থেকে 

খ) দূর থেকে

গ) বাইরে থেকে 

গ) ভিতর থেকে 

উত্তর: গ


৫২) বুড়াে কর্তার মন্দিরের ত্রিশূলটি ছিল -

ক) সােনার 

খ) ব্রোঞ্জের 

গ) রুপাের 

ঘ) পিতলের 

উত্তর: ঘ


৫৩) কোন মাসে ধান বড় হয়ে গিয়েছিল -

ক) বৈশাখ 

খ) আষাঢ় 

গ) আশ্বিন 

ঘ) কার্তিক 

উত্তর: ঘ


৫৪) " আগে মনে হয় ” - আগে কী মনে হয় বলে উল্লেখ আছে? 

ক) ঘরবাড়ি ভেসে যাওয়ার কথা

খ) ধানখেতে আগুন লাগার কথা 

গ) ধানখেত ডুবে যাওয়ার কথা 

ঘ) বউ - ছেলে - মেয়ের ভেসে যাওয়ার কথা 

উত্তর: খ


৫৫) “ সে খুঁটি রাখতে চায় না। ” - কে খুঁটি রাখতে চায় না। 

ক) ভগবান

খ) মা বসুমতী

গ) মা গঙ্গা 

ঘ) মাতলার জলরাশি 

উত্তর: খ


৫৬) " উগরে ফেলে দেবে। ” - কী ফেলে দেওয়ার কথা বলা হয়েছে? 

ক) ঘরের মাঝ - খুঁটি 

খ) কাগজ - সহ কৌটো 

গ) গিলে ফেলা ভাত 

ঘ) সেদ্ধ ভাত ও - ঘুগনি 

উত্তর: ক


৫৭) “ ফুট খায় ” -কে ফুট ' খায়? 

ক) সাধনবাবুর নাতি 

খ) সতীশবাবুর নাতি 

গ) বড়াে পিসিমার নাতি

ঘ) উচ্ছবের ছেলে 

উত্তর: খ


৫৮) “ খনখনিয়ে ওঠে। ” — কে খনখনিয়ে উঠছিল? 

ক) বড়ো পিসিমা 

খ) বড়াে বউমা 

গ) মেজো বউমা 

ঘ) সতীশবাবুর স্ত্রী 

উত্তর: ক


৫৯) “ তুমি হাত চালাও। ” — কাকে হাত চালাতে বলা হয়েছে? 

ক) বাসিনী কে

খ) ভজন চাকরকে

গ) উচ্ছবকে 

ঘ) বাড়ির দারােয়ানকে 

উত্তর: গ


৬০) “ বড়াে উতলা করে ” - কী উতলা করে তােলে? 

ক) স্ত্রী - ছেলে - মেয়ের মুখ

খ) ফুটন্ত ভাতের গন্ধ 

গ) হােম - যজ্ঞে পােড়া ঘি

ঘ) গ্রামের স্মৃতি 

উত্তর: খ



৬১) বাসিনী শাক ধুতে এসেছিল -

ক) পুকুরঘাটে 

খ) কলতলায় 

গ) উঠোনে 

ঘ) কলঘাটে 

উত্তর: গ


৬২) বাসিনী লুকিয়ে উচ্ছবকে কী খেতে দিয়েছিল? 

ক) চিড়ে 

খ) মুড়ি 

গ) বাতাসা 

ঘ) ছাতু

উত্তর: ঘ


৬৩) " ভাঁড় চেয়ে নিয়ে জল খায় ” - উচ্ছব ভাঁড়টা চেয়ে নেয় -

ক) পাশের লােকের থেকে 

খ) পাশর বাড়ি থেকে

গ) মিষ্টির দোকান থেকে

ঘ) দোকানদারের কাছ থেকে

উত্তর: গ


৬৪) উচ্ছবের গাঁ - জ্ঞেয়াতিরা তাকে ছেরাদ্দ সেরে নেওয়ার কথা বলেছিল -

ক) দক্ষিণেশ্বরে 

খ) কালীঘাটে 

গ) কেওড়াতলায় 

ঘ) গয়ায় 

উত্তর: খ


৬৫) “ তােমার ঘরে রান্না হয়। ” — এখানে যার ঘরের কথা বলা হয়েছে সে হল -

ক) সতীশ মিস্তিরি 

খ) সাধন দাশ 

গ) মহানাম শতপথি 

ঘ) হরিচরণ নাইয়া 

উত্তর: খ


৬৬) পেটে ভাত না - থাকায় , উচ্ছব যেন-

ক) পাগল হয়ে আছে 

খ) প্রেত হয়ে আছে 

গ) পাথর হয়ে আছে

ঘ) নির্দয় হয়ে আছে 

উত্তর: খ


৬৭) উচ্ছব কাঠ কেটেছিল --

ক) দু - মণ

খ) আড়াই মণ 

গ) দেড় মণ 

ঘ) তিন মণ 

উত্তর: খ


৬৮) “ বাইরে ঝেয়ে বসব? " প্রশ্নটি কে , কাকে করেছিল? 

ক) উচ্ছব , বড়াে বউকে

খ) বড়াে পিসিমা , বড়াে বউকে 

গ) উচ্ছব , বড়াে পিসিমাকে 

ঘ) উচ্ছব , বাসিনীকে 

উত্তর: গ


৬৯) মন্ত্র বলে তান্ত্রিক রােগ বেঁধে ফেলেন - 

ক) বেড়ালের কালাে লােমে

খ) কালাে বেড়ালের লােমে 

গ) ঘােড়ার ল্যাজের লােমে 

ঘ) টোড়া সাপের খােলসে 

উত্তর: খ


৭০) “ ডাক্তারকে কল দিন। ” - কথাটি বলেছিল-

ক) বড়াে বউ 

খ) বড়াে পিসিমা 

গ) নার্স

ঘ) মেজো বউ

উত্তর: গ


৭১) ' ব্যাদিটা ' কর্তার দেহ থেকে বেরিয়ে এল - 

ক) তড়িঘড়ি করে 

খ) হাঁচোড় - পাঁচোড় করে 

গ) ব্যস্তসমস্ত হয়ে 

ঘ) ধীরে ধীরে 

উত্তর: খ


৭২) "... জল পড়লে পেট মানতে চায়নে মােটে। ” - কোথায় জল পড়ার কথা বলা হয়েছে? 

ক) গায়ে 

খ) দেহে

গ) মাথায়

ঘ) তালুতে

উত্তর: গ


৭৩) বাইরে বেড়িয়ে উচ্ছব কোথায় এসে বসল? 

ক) শিবমন্দিরের চাতালে 

খ) কালীমন্দিরের চাতালে 

গ) চণ্ডীমণ্ডপের চাতালে

ঘ) বারান্দার চাতালে 


উত্তর: ক


৭৪) উচ্ছব কত দিন ভাত খায়নি? 

ক) প্রায় দিন পনেরাে 

খ) প্রায় কুড়ি দিন 

গ) অনেকদিন 

ঘ) পঁচিশ দিন 


উত্তর: গ


৭৫) মন্দিরের চাতালে বসে তিনটি ছেলে -

ক) দাবা খেলছিল 

খ) তাস পেটাচ্ছিল 

গ) লুডাে খেলছিল 

ঘ) ছক কাটছিল 

উত্তর: খ


৭৬) মন্দিরের চাতালে বসা ছেলেদের মতে হােম - যজ্ঞি করা -

ক) প্রয়ােজনীয় 

খ) ফালতু

গ) অর্থসাপেক্ষ 

ঘ) শ্রমসাপেক্ষ

উত্তর: খ


৭৭) “ রন্ন হল মা নক্কী। ” — কথাটি বলত -

ক) বড়াে পিসি 

খ) বড়াে বউ 

গ) উৎসবের ঠাকুমা 

ঘ) বাসিনী

উত্তর: গ


৭৮) চাতালে ঘুমানাে উচ্ছবের ঘুম ভাঙে- 

ক) ডাকাডাকিতে 

খ) হাতের ঠেলায় 

গ) পায়ের ধাক্কায় 

ঘ) ঠেলাঠেলিতে

উত্তর: গ


৭৯) বুড়াে কর্তা মারা গেল -

ক) একাশি বছর বয়সে 

খ) বিরাশি বছর বয়সে 

গ) তিরাশি বছর বয়সে 

ঘ) পঁচাশি বছর বয়সে 

উত্তর: খ


৮০) বুড়াে কর্তার বেঁচে থাকবার কথা ছিল -

ক) আটানব্বই বছর 

খ) সাতানব্বই বছর

গ) নিরানব্বই বছর 

ঘ) একশাে বছর 

উত্তর: ক



৮১) বড়াে পিসিমা কাদের আসবার কথা বলেছিলেন -

ক) কীর্তনদলের 

খ) বােনেদের। 

গ) দিদিদের

ঘ) বােন ও দিদিদের 

উত্তর: ক


৮২) " ফোন করে? ” – ফোন করার কথা বলা হয়েছে -

ক) বড়ােবাজারে 

খ) শ্যামবাজারে 

গ) বাগবাজারে 

ঘ) ধর্মতলায়

উত্তর: গ


৮৩) রাতে রাতে কাজ সারতে না - পারলে -

ক) দোষ লাগবে 

খ) পাপ লাগবে।

গ) হাজার ঝামেলা আসবে 

ঘ) পুলিশ এসে ঝামেলা করবে

উত্তর: ক


৮৪) হােম ছেড়ে উঠে গিয়েছিল 

ক) দুই ছেলে 

খ) তিন ছেলে 

গ) তিন মেয়ে 

ঘ) ছেলেমেয়েরা

উত্তর: খ


৮৫) “ এসব কাজে বিঘ্নি পড়লে রক্ষে অছে? ” - এ কথার আলােচনায় বাড়ি -

ক) থমথমে হয়

খ) উথাল - পাথাল হয় 

গ) সরগরম হয়ে

ঘ) বিষণ্ণ হয়

উত্তর: গ


৮৬) বাড়ি থেকে শবদেহ বের করা হয়—

ক) রাত একটার পর 

খ) রাত একটায় 

গ) রাত বারােটায় 

ঘ) রাত পৌনে একটার পর 

উত্তর: ক


৮৭) “ মুক্ত কর সব " - কী মুক্ত করার কথা বলা হয়েছে? 

ক) শােওয়ার ঘর 

খ) মন্দির

গ) ঘরদোর

ঘ) উঠোন

উত্তর: গ


৮৮) কনকপানি’ চালের ভাত খান-

(ক) বড়ােবাবু।

(খ) মেজোবাবু। 

(গ) ছােটোবাবু।

(ঘ) পিসিমা।

উত্তর: ক


৮৯) “ দূরে ফেলে দিয়ে আসি। ” - বক্তা কে? 

ক) বাসিনী 

খ) উচ্ছব

গ) চাকর ভজন 

ঘ) বড়ো ব‌উ

উত্তর:খ


৯০) ‘ ভােরের টেনে চেইপে ’ উচ্ছব যাবে -

ক) কলকাতায়

খ) কাকদ্বীপ

গ) নামখানায় 

ঘ) ক্যানিংয়ে

উত্তর: ঘ


৯১) সে বাদাটা অচল হয়ে থেকে যায় -

ক) শহরের রাস্তায় 

খ) বড়াে বাড়িতে 

গ) মনের গােপন কোণে 

ঘ) চিন্তার অতল তলে 

উত্তর: খ


ভাত SAQ অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর


1. “কী রকম যেন উগ্ৰ চাহনি।”—উদ্দিষ্ট ব্যক্তির উগ্র চাহনির কারণ কী?

Ans. উচ্ছব মাতলার জলোচ্ছ্বাসে তার ছেলে-বউকে হারিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছিল।তার ওপর ছিল খিদের জ্বালা।তাই তার চাহনি ছিল উগ্র।


2. উচ্ছবেৱ উপােস শুরু কবে থেকে?

Ans: যবে থেকে পােকায় ধান নষ্ট করে, সেই থেকে উচ্ছবের আধপেটা, সিকিপেটা উপােস শুরু।


3. “বড়ো বউ প্রায় দৌড়ে চলে যায়।” –বড়ো বউ কেন দৌড়ে চলে যায়?

Ans. বিরাশি বছর বয়সেও বড়ো বউ-এর শ্বশুর শক্ত ছিলেন।কিন্তু ক্যানসার তো মারাত্মক রোগ | তাও আবার লিভারে। লিভারে ক্যানসার হওয়ার কথা শুনেই বড়ো বউ দৌড়ে চলে যায় |


4. বাসিনী ভাতেৱ ভাৱী ডেকচিটা ধৱতে বলায় উচ্ছব কী বলে ও কী ভাবে?

Ans: উচ্ছব বলে, এই যে ধরি এবং উচ্ছবের মাথায় তখন বুদ্ধি স্থির, সে জানে, সে কী করবে।


5. বাসিনী থমকে দাঁড়ায় কেন?

Ans: ভাত খেতে নিষেধ করায় উচ্ছবের চোখ বাদার কামটের মতাে হিংস্র, দাঁতগুলির মধ্যে কামটের হিংস্র ভঙ্গি, তা দেখে বাসিনী থমকে দাঁড়ায়।


6. “তার আসার কথা ওঠে না।” –কেন, তার আসার কথা ওঠে না?

Ans. বাড়ির সেজো ছেলে বিলেতে থাকে বলে তার আসার কথা ওঠে না।।


7. উচ্ছবের আসল বাদাটাৱ খোঁজ করা হয় না কেন?

Ans: উচ্ছব বড়ােবাড়ির লােকের হাতে ধরা পড়ে এবং তাকে মারতে মারতে থানায় দেওয়া হয়, সেজন্য আসল বাদার খোঁজ তার নেওয়া হয় না।


8. পাঠ্যাংশে বর্ণিত ‘ভাত’ গল্পে ‘বাদা’ বলতে কীরূপ অঞ্চলকে বােঝায়?

Ans: পাঠ্যাংশে বর্ণিত ভাত’ গল্পে ‘বাদা’ বলতে মূলত কৃষিজ অঞ্চলকে বােঝায়।


9. “এ গল্প গ্রামে সবাই শুনেছে।” – কোন্ গল্প গ্রামে সবাই শুনেছে?

Ans. বাসিনী কলকাতায় বাবুদের বাড়িতে কাজ করে। বাবুরা খুব ধনী। তাদের অফুরন্ত ভাত। এখানে এই গল্পের কথাই গ্রামে সবাই শুনেছে।


10. উচ্ছবেৱ কুঁড়েঘরখানা কী করে ভেঙে যায়?

Ans: মাতলার উপচে আসা দুরন্ত জলের টানে উচ্ছবের কুঁড়েঘরখানা ভেঙে যায়।


11. “কিন্তু সাগরে শিশির পড়ে।” –কোন্ প্রসঙ্গে এই উক্তি?

Ans. ক্ষুধার্ত উচ্ছবকে বাসিনী একটু ছাতু এনে দেয়। উচ্ছবের তীব্র খিদের কাছে ওই ছাতু খুবই সামান্য। তাই তাকে সাগরে শিশির পড়ার সঙ্গে তুলনা করা হয়েছে।


12. এসব কথা শুনে উচ্ছব বুকে বল পায়।”—কোন্ কথা শুনে ‘উচ্ছব’ বুকে বল পায়?

Ans: মেজোবউ জানতে চায় বাসিনী খাবার ঘর মুছেছে কিনা, কারণ মাছের সব রান্না শেষ হয়েছে, ঘরে তুলতে হবে। শুনে উচ্ছব বুকে বল পায়।


13. “নইলে দেহে ক্ষমতা ছিল না।” – কীভাবে দেহে ক্ষমতা এল?

Ans. উচ্ছব বুঝেছিল কাঠ কাটলে সে ভাত খেতে পাবে। এই ভাতের লোভেই সে দেহে ক্ষমতা পেল।


14. “একন চান করব নে।” –উচ্ছব চান করতে চায় না কেন?

Ans. মাথায় জল পড়লে তার পেটের খিদে তীব্রতর হবে বলে সে চান করতে চায় না।


15. “তখন বউ, ছেলে-মেয়ের জন্যে কাঁদবে।” —কখন কাঁদবে?

Ans. পেটে ভাত নেই বলে উচ্ছব প্রেত হয়ে আছে | ভাত খেলে সে মানুষ হবে। তখন সে বউ, ছেলেমেয়ের জন্যে কাঁদবে |


16. ওই পাঁচ ভাগে ভাত হয়?—পাঁচ ভাগের নাম কী?

Ans: পাঁচভাগে ভাতের নাম-ঝিঙেশাল, রামশাল, কনকপানি, পদ্মজালি ও মােটা সাপ্টা।


17. ঝিঙেশাল চাল এবং মশাল চাল কী কী দিয়ে খায়?

Ans: ঝিঙেশাল চালের ভাত নিরামিষ ডাল তরকারির সঙ্গে এবং রামশাল চালের ভাত মাছের সঙ্গে খায়।


18. তান্ত্রিকের হোম-যজ্ঞ প্রস্তুতির বর্ণনা দাও।

Ans: পাঁচ প্রকার গাছের কাঠ— প্রতিটা আধমণ করে। কালো বিড়ালের লোম, শ্মশান। থেকে বালি, বেশ্যার ঘর থেকে আনতে হবে হাত-আর্শি।


19. “এসব কথা শুনে উচ্ছব বুকে বল পায়।” –কোন্ কথা শুনে উচ্ছব বুকে বল পায়?

Ans. বড়ো বাড়িতে ভাত তরকারি রান্নার কাজ সমাপ্ত হয়েছে শুনে উচ্ছব বুকে বল পায়।


20. “চোখ ঠিকরে আসে তার কী দেখে, কার চোখ ঠিকরে আসে?

Ans: পাঁচ রকমের চাল দেখে উচ্ছবের চোখ ঠিকরে আসে।


21. “লোকটার চাহনি বড়ো বাড়ির বড়ো বউয়ের প্রথম থেকেই ভাল লাগেনি”– ভালো না লাগার কারণ কী?

Ans: লোকটার চাহনি খুব উগ্র ছিল বলে বড়ো বাড়ির বড়ো বউয়ের ভালো লাগেনি।


22. “তোমার শ্বশুরই মরতে বসেছে বাছা” কথাটি যিনি যাকে বলেছেন উভয়ের মধ্যে সম্পর্ক কী?

Ans: কথাটি যিনি যাকে বলেছেন উভয়ের মধ্যে পিসিশাশুড়ির ও ভাইপো-বৌ সম্পর্ক।


23. “বাদায় থাকে অথচ ভাতের আহিংকে এতখানি”– আহিংকে’ শব্দের অর্থ কী ?

Ans: এখানে আহিংকে’ শব্দের অর্থ হলো ‘আকাঙ্ক্ষা।


24. উচ্ছবকে জেলখানায় কেন নিয়ে যাওয়া হয়েছিল?

Ans: উচ্ছব ভাত খাওয়ার জন্যে বড়ো বাড়ির ভাতসুদ্ধ পিতলের ডেকচি নিয়ে স্টেশনে চলে গিয়েছিল। তাতে লোকেরা উচ্ছবকে চুরির অপবাদ দিয়ে জেলে নিয়ে গিয়েছিল।


25. “তোমরা রা কাড়না ক্যান”– কে, কাদের উদ্দেশে এই কথা বলেছিল ?

Ans: আলোচ্য কথাটি উচ্ছব তার স্ত্রী-সন্তানদের উদ্দেশে বলেছিল।


26. “গরিবের গতর এরা শস্তা দেখে”- কে, কাকে, কাদের প্রসঙ্গে এই কথা বলেছিল?

Ans: মহাশ্বেতা দেবীর ভাত’ গল্পের বাসিনী উচ্ছবকে বড়ো বাড়ির মানুষজনদের সম্বন্ধে এই কথা বলেছিল।


27. “তার জন্য দই পেতে ইসবগুল দিয়ে শরবত করে দিতে হত”- কার জন্যে, কে শরবত করে দিতেন?

Ans: ‘ভাত’ গল্পে বড়ো বাড়ির বড়ো বউ শ্বশুরমশাইয়ের জন্য শরবত করে দিতেন।


28. ভাত খাবে কাজ কৱবে’-এ কথা কে বললে?

Ans: ভাত খাবে কাজ করবে’ এ কথা বললে বামুনঠাকুর।


29. কাৱ নিয়মে এ সংসাৱে সবকিছুই চলে?

Ans: বড়াে পিসির নিয়মে এ সংসারে সবকিছুই চলে।


30. বড়াে পিসির বিয়ে নিয়ে কাৱা কী বলে?

Ans: বড় পিসির বিয়ে নিয়ে বড়ােবাড়ির লােকেরা বলে, তাঁর বিয়ে হয়েছে ঠাকুরের সঙ্গে।


31. আজকাল বড়াে পিসির কথায় যেন কী থাকে?

Ans: আজকাল বড়াে পিসির কথায় কেমন যেন একটা ঠেস থাকে।


32. মেজোবউ উনান পাড়ে বসেছে কেন?

Ans: শাশুড়ির মাছ খাওয়া বুঝি ঘুচে যাচ্ছে, তাই মাছভাত বেঁধেবেড়ে তাকে খাওয়ানাে তার কাজ।


33. শ্বশুৱ বড়াে বউয়ের কাছে কীসেৱ মতাে?

Ans: শশুর বড়াে বউয়ের কাছে ঠাকুরদেবতার মতাে।


34. যজ্ঞি-হােমের জন্য কী কী কাঠ কত পরিমাণ করে?

Ans: যজ্ঞি-হােমের জন্য বেল, ক্যাওড়া, অশ্বত্থ, বট, তেঁতুল গাছের কাঠ আধমন করে।


35. তান্ত্রিক বাড়ির বুড়াে কর্তাৱ প্রাণটুকু কীভাবে ধরে রাখবেন?

Ans: তান্ত্রিক হােম করে বাড়ির বুড়াে কর্তার প্রাণটুকু ওই হাত-আরশিতে ধরে রাখবেন।


36. “ওরা কিছুকাল ঠিকে কাজ করবে।” –কারা?

Ans. বাসিনীর বোন এবং ভাজ অর্থাৎ ভাইবউ কিছুকাল ঠিকে কাজ করবে।


37. “সেগুলো সব এক মাপে কাটতে হবে।” —মাপ উল্লেখ কাঠগুলোর নাম লেখো।

Ans. বেল, ক্যাওড়া, অশ্বত্থ, বট, তেঁতুল—এই পাঁচ রকমের কাঠের প্রতিটি দেড়হাত লম্বা করে কাটতে হবে।


38. বাড়ির ছেলেবাবুদেৱ কার জন্যে কী চালের ভাত রান্না হয়?

Ans: বাড়িতে ভাত রান্না হয় বড়ােবাবুর জন্য কনকপানি চাল, মেজো ও ছােটোবাবুর জন্য পদ্মজালি চাল।


39. উৎসব লােকটি কী নামে পরিচিত?

Ans: উৎসব লােকটি উচ্ছব নাইয়া নামে পরিচিত।


40. ঝড়-জলে মাতলাৱ গর্ভে যা গেছে তার খোঁজে উচ্ছব পাগল থাকায় তাৱ কী খাওয়া হয়নি?

Ans: তার খাওয়া হয়নি ত্রাণের বিলি করা রান্না খিচুড়ি।


41. “তাকে বড়ো উতলা করে।” –কাকে, কী বড়ো উতলা করে?

Ans. বড়ো বাড়ির গরম ভাতেব গল্প উচ্ছবকে খুবই উতলা করে।


42. “উচ্ছবের মাথার মধ্যে যে মেঘ চলছিল তা সরে যায়।”—কীভাবে মেঘ সরে গেল?

Ans. বুড়োকর্তার মৃত্যুর কারণে রান্না করা সামগ্রী ফেলে দিতে হবে জেনে উচ্ছব নিশ্চিন্ত হয়। কারণ সে ফেলে দেওয়া ভাত অনায়াসে খেতে পারবে। এইভাবে তার মাথার মধ্যেকার দুশ্চিন্তার মেঘ সরে যায়।


43. অ উচ্ছব, মনিবের ধান যায় তাে তুই কাদিস কেন?—তাৱ জবাবে উচ্ছব কী বলে?

Ans: জবাবে উচ্ছব বলে যে, লক্ষ্মী আসতে না আসতে ভাসান যাচ্ছে, সে এতটুকু কাঁদবে না !


44. যে বাদায় উচ্ছবের বাস, সেখানে কী মেলে?

Ans: যে বাদায় উচ্ছবের বাস সেখানে মেলে শুধু গুগলি, গেঁড়ি, কচুশাক আর সুসনি শাক।


45. যে রাতে ঝড় হয় সেই সন্ধ্যায় অনেকদিন বাদে পেট ভরে উচ্ছব কী কী খেয়েছিল?

Ans. যে রাতে ঝড় হয়, সেই সন্ধ্যায় উচ্ছব হিক্কে সেদ্ধ, গুগলি সেদ্ধ নুন আর লংকা পোড়া দিয়ে পেট ভরে খেয়েছিল |


46. “উচ্ছব টের পায় না কিছু।” – কীসের টের পায় না?

Ans. খিদের তাড়নায় অস্থির উচ্ছবকে বাসিনী কিছুটা ছাতু এনে খেতে দেয়। কিন্তু তার খিদের কাছে ছাতুটুকু ছিল খুব সামান্য | তাই উচ্ছব কিছু টের পায় না।


47. “উচ্ছবের মাথায় এখন বুদ্ধি থির।” —এখানে উচ্ছবের কোন্ বুদ্ধি স্থির হওয়ার কথা বলা হয়েছে?

Ans. বড়ো বাড়ির ফেলে দেওয়া ভাত উচ্ছব খাবে–উচ্ছবের এই বুদ্ধি স্থির হওয়ার কথাই এখানে বলা হয়েছে।


48. “এলে পরে নদীর পাড়ে সারবন্দি ছরাদ হবে।” – কার আসার কথা বলা হয়েছে?

Ans. এখানে মহানাম শতপতির আসার কথাই বলা হয়েছে।


49. “অনেক তোড়জোড় হয়।” –তোড়জোড়ের কারণ কী?

Ans. বাড়ির বুড়োেকতার মৃতদেহ রাতের মধ্যে সৎকার করতে হবে— এই কারণেই তোড়জোড় শুরু হয়|


50. উচ্ছব কত পরিমাণ কাঠ কেটেছিল?

Ans. উচ্ছব আড়াই মণ কাঠ কেটেছিল


51. “সকাল থেকেই বোঝা গিয়েছিল সর্বনাশের বহরখানা।”—–কোন্ সর্বনাশের কথা বলা হয়েছে?

Ans. প্রবল বাতাসে মাতলা নদীর জল পাড় ছাপিয়ে উচ্ছব ও তার প্রতিবেশীদের বাড়িঘর তছনছ করে দিয়েছিল বউ, ছেলেমেয়েদের হারিয়ে উচ্ছব বিপন্ন হয়ে পড়ে। এখানে এই সর্বনাশের কথাই এখানে বলা হয়েছে |


52. “টিনের বেশ একটা মুখবন্ধ কৌটো ছিল ঘরে।” –সেই কৌটোতে কী ছিল?

Ans. উচ্ছবের মুখবন্ধ টিনের কৌটোতে জমির জন্য করা দরখাস্তের নকল ছিল।


53. “এসব কাজে বিঘ্ন পড়লে রক্ষে আছে?”—কোন্ কাজে, কী ধরনের বিঘ্ন পড়েছিল?

Ans. বুড়োকর্তাকে বাঁচানোর জন্য হোম-যজ্ঞ করা হচ্ছিল। এই সময় বাড়ির তিন ছেলে হোম ছেড়ে উঠে যাওয়ার জন্যই বিঘ্ন পড়েছিল বলে মনে করা হয়েছে |


54. “রাতে রাতে কাজ সারতে হবে।” –কোন্ কাজ, কেন রাতে রাতে সারতে হবে?

Ans. মৃত বুড়োকর্তার সৎকারের কাজ রাতে রাতে সারতে হবে না হলে দোষ লাগবে।


55. “বাসিনী থমকে দাঁড়ায়।” কী কারণে বাসিনী থমকে দাঁড়ায়?

Ans. উঁচ্ছব ভাতের ডেকচি নিয়ে দৌড়ে পালাতে থাকে| বাসিনী তাকে অশৌচ ভাত খেতে নিষেধ করে। তখন উচ্ছব বাদার কামটের মতো হিংস্র চোখে তার দিকে তাকায়। উচ্ছবের এমন মূর্তি দেখে বাসিনী থমকে দাড়ায়|


56. “তান্ত্রিকের নতুন বিধেন হল” – তান্ত্রিকের নতুন বিধেনটি কি ?

Ans. তান্ত্রিকের নতুন বিধেনটি হল, ‘সর্বস্ব বেঁধে রাখো, হোম হলে খেও।” হোমের আগে খাওয়া যাবে না।


57. উচ্ছবের বউ তুমুল ঝড়বৃষ্টির সময় কী করছিল ?

Ans. উচ্ছবের বউ তুমুল ঝড়বৃষ্টির সময় ছেলেমেয়েকে জাপটে জড়িয়ে ধরেছিল এবং ঠান্ডায় ও ভয়ে কাঁপছিল।


58. লেখিকা মহাশ্বেতা দেবী ‘ভাত’ গল্পে ভগবানকে নিয়ে কোন্ বিদ্রুপ করেছেন?

Ans. ‘ভাত’ গল্পে তুমুল ঝড়বৃষ্টিতে উচ্ছব ভগবানকে ডাকায় লেখিকা বলেছেন যে, দুর্যোগের মধ্যে ভগবানও বোধ হয় কাঁথামুড়ি দিয়ে ঘুমোন।


59. “সাধন দাশের কথা উচ্ছব নেয় না।” –সাধন দাশ কী বলেছিল?

Ans. সাধন দাশ উচ্ছবকে বলেছিল যে, তার পরিবারের লোকজনকে খুঁজে পাওয়া যাবে না। বানের জল উচ্ছবকেও টেনে নিয়ে যাচ্ছিল, গাছে বেঁধে সে রক্ষা পেয়েছে।


60. সতীশ মিস্তিরির কী কী ধানে মড়ক লেগেছিল?

Ans. হরকুল, পাটনাই এবং মোটা—সতীশ মিস্তিরির এই তিনপ্রকার ধানেই মড়ক লেগেছিল।


61. “তা দেখে উচ্ছব মাথায় হাত দিয়েছিল।”— কি দেখে উচ্ছব মাথায় হাত দিয়েছিল?

Ans. ধানের গোছা হওয়ার আগেই ধানের সবুজ রং চলে গিয়ে কার্তিক মাসেই ধান খড়ে পরিণত হয়েছিল। এই ঘটনা দেখেই উচ্ছব মাথায় হাত দিয়েছিল।


62. ছেলেদেৱ কেন চাকরি করা হয়ে ওঠেনি?

Ans: ছেলেদের চাকরি করা হয়ে ওঠেনি, কারণ তারা ঘুম থেকে ওঠে বেলা এগারােটায়।


63. তাস পিটানাে ছেলেগুলি অস্বস্তিতে পড়ে।’-কেন ছেলেগুলি অস্বস্তিত পড়েছিল?

Ans: ঝড়ে-জলে উচ্ছবের সর্বনাশ হয়েছে, তার মানুষও ভেসে গেছে, সেজন্য সে কাঁদছে। কান্নার এই কারণ শুনে তাস পিটানাে ছেলেগুলি অস্বস্তিতে পড়ে।


ভাত সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর


প্রশ্ন ১। ভাত খাবে কাজ কৱবে’-এ কথা কে বললে?

উ: ভাত খাবে কাজ করবে’ এ কথা বললে বামুনঠাকুর।


প্রশ্ন ২। কাৱ নিয়মে এ সংসাৱে সবকিছুই চলে?

উ: বড়াে পিসির নিয়মে এ সংসারে সবকিছুই চলে।


প্রশ্ন ৩।বড়াে পিসির বিয়ে নিয়ে কাৱা কী বলে?

উ: বড় পিসির বিয়ে নিয়ে বড়ােবাড়ির লােকেরা বলে, তাঁর বিয়ে হয়েছে ঠাকুরের সঙ্গে।


প্রশ্ন ৪। আজকাল বড়াে পিসির কথায় যেন কী থাকে?

উ: আজকাল বড়াে পিসির কথায় কেমন যেন একটা ঠেস থাকে।


প্রশ্ন ৫। মেজোবউ উনান পাড়ে বসেছে কেন?

উ: শাশুড়ির মাছ খাওয়া বুঝি ঘুচে যাচ্ছে, তাই মাছভাত বেঁধেবেড়ে তাকে খাওয়ানাে তার কাজ।


প্রশ্ন ৬। ছেলেদেৱ কেন চাকরি করা হয়ে ওঠেনি?

উ: ছেলেদের চাকরি করা হয়ে ওঠেনি, কারণ তারা ঘুম থেকে ওঠে বেলা এগারােটায়।


প্রশ্ন ৭। শ্বশুৱ বড়াে বউয়ের কাছে কীসেৱ মতাে?

উ: শশুর বড়াে বউয়ের কাছে ঠাকুরদেবতার মতাে।


প্রশ্ন ৮।যজ্ঞি-হােমের জন্য কী কী কাঠ কত পরিমাণ করে?

উ: যজ্ঞি-হােমের জন্য বেল, ক্যাওড়া, অশ্বত্থ, বট, তেঁতুল গাছের কাঠ আধমন করে।


প্রশ্ন ৯। তান্ত্রিক বাড়ির বুড়াে কর্তাৱ প্রাণটুকু কীভাবে ধরে রাখবেন?

উ: তান্ত্রিক হােম করে বাড়ির বুড়াে কর্তার প্রাণটুকু ওই হাত-আরশিতে ধরে রাখবেন।


প্রশ্ন ১০।বাড়ির ছেলেবাবুদেৱ কার জন্যে কী চালের ভাত রান্না হয়?

উ: বাড়িতে ভাত রান্না হয় বড়ােবাবুর জন্য কনকপানি চাল, মেজো ও ছােটোবাবুর জন্য পদ্মজালি চাল।


প্রশ্ন ১১। উৎসব লােকটি কী নামে পরিচিত?

উ: উৎসব লােকটি উচ্ছব নাইয়া নামে পরিচিত।


প্রশ্ন ১২। ঝড়-জলে মাতলাৱ গর্ভে যা গেছে তার খোঁজে উচ্ছব পাগল থাকায় তাৱ কী খাওয়া হয়নি?

উ: তার খাওয়া হয়নি ত্রাণের বিলি করা রান্না খিচুড়ি।


প্রশ্ন ১৩। অ উচ্ছব, মনিবের ধান যায় তাে তুই কাদিস কেন?—তাৱ জবাবে উচ্ছব কী বলে?

উ: জবাবে উচ্ছব বলে যে, লক্ষ্মী আসতে না আসতে ভাসান যাচ্ছে, সে এতটুকু কাঁদবে না !


প্রশ্ন ১৪। যে বাদায় উচ্ছবের বাস, সেখানে কী মেলে?

উ: যে বাদায় উচ্ছবের বাস সেখানে মেলে শুধু গুগলি, গেঁড়ি, কচুশাক আর সুসনি শাক।


প্রশ্ন ১৫। উচ্ছবেৱ উপােস শুরু কবে থেকে?

উ: যবে থেকে পােকায় ধান নষ্ট করে, সেই থেকে উচ্ছবের আধপেটা, সিকিপেটা উপােস শুরু।


প্রশ্ন ১৬। বাসিনী ভাতেৱ ভাৱী ডেকচিটা ধৱতে বলায় উচ্ছব কী বলে ও কী ভাবে?

উ: উচ্ছব বলে, এই যে ধরি এবং উচ্ছবের মাথায় তখন বুদ্ধি স্থির, সে জানে, সে কী করবে।


প্রশ্ন ১৭। বাসিনী থমকে দাঁড়ায় কেন?

উ: ভাত খেতে নিষেধ করায় উচ্ছবের চোখ বাদার কামটের মতাে হিংস্র, দাঁতগুলির মধ্যে কামটের হিংস্র ভঙ্গি, তা দেখে বাসিনী থমকে দাঁড়ায়।


প্রশ্ন ১৮। উচ্ছবের আসল বাদাটাৱ খোঁজ করা হয় না কেন?

উ: উচ্ছব বড়ােবাড়ির লােকের হাতে ধরা পড়ে এবং তাকে মারতে মারতে থানায় দেওয়া হয়, সেজন্য আসল বাদার খোঁজ তার নেওয়া হয় না।


প্রশ্ন ১৯। পাঠ্যাংশে বর্ণিত ‘ভাত’ গল্পে ‘বাদা’ বলতে কীরূপ অঞ্চলকে বােঝায়?

উ: পাঠ্যাংশে বর্ণিত ভাত’ গল্পে ‘বাদা’ বলতে মূলত কৃষিজ অঞ্চলকে বােঝায়।


প্রশ্ন ২০। উচ্ছবেৱ কুঁড়েঘরখানা কী করে ভেঙে যায়?

উ: মাতলার উপচে আসা দুরন্ত জলের টানে উচ্ছবের কুঁড়েঘরখানা ভেঙে যায়।


প্রশ্ন ২১। তাস পিটানাে ছেলেগুলি অস্বস্তিতে পড়ে।’-কেন ছেলেগুলি অস্বস্তিত পড়েছিল?

উ: ঝড়ে-জলে উচ্ছবের সর্বনাশ হয়েছে, তার মানুষও ভেসে গেছে, সেজন্য সে কাঁদছে। কান্নার এই কারণ শুনে তাস পিটানাে ছেলেগুলি অস্বস্তিতে পড়ে।


প্রশ্ন ২২। এসব কথা শুনে উচ্ছব বুকে বল পায়।”—কোন্ কথা শুনে ‘উচ্ছব’ বুকে বল পায়?

উ: মেজোবউ জানতে চায় বাসিনী খাবার ঘর মুছেছে কিনা, কারণ মাছের সব রান্না শেষ হয়েছে, ঘরে তুলতে হবে। শুনে উচ্ছব বুকে বল পায়।


প্রশ্ন ২৩।ওই পাঁচ ভাগে ভাত হয়?—পাঁচ ভাগের নাম কী?

উ: পাঁচভাগে ভাতের নাম-ঝিঙেশাল, রামশাল, কনকপানি, পদ্মজালি ও মােটা সাপ্টা।


প্রশ্ন ২৪। ঝিঙেশাল চাল এবং মশাল চাল কী কী দিয়ে খায়?

উ: ঝিঙেশাল চালের ভাত নিরামিষ ডাল তরকারির সঙ্গে এবং রামশাল চালের ভাত মাছের সঙ্গে খায়।


ভাত রচনাধর্মী প্রশ্নোত্তর


1. ফুটন্ত ভাতের গন্ধ তাকে বড়াে উতলা করে —এখানে কার কথা বলা হয়েছে ? ফুটন্ত ভাতের গন্ধ কেন তাকে উতলা করে ?

Ans: বিশিষ্ট কথাসাহিত্যিক মহাশ্বেতা দেবীর লেখা ‘ ভাত ’ গল্প থেকে নেওয়া প্রশ্নোদ্ধৃত উক্তিতে গল্পের প্রধান চরিত্র উচ্ছব তথা উৎসব নাইয়ার কথা বলা হয়েছে। 

মাতলা নদীর বন্যায় এক রাতের মধ্যে ঘর – বাড়ি , স্ত্রী – ছেলে – মেয়ে হারিয়ে উচ্ছব পাগল হয়ে যায়। পাগল উচ্ছব কারও কথা শােনে না। ঝড় – জলের দাপটে মাতলার গর্ভে চলে যাওয়া সব কিছু খুঁজে খুঁজে হয়রান উচ্ছব রান্না করা খিচুড়ি পর্যন্ত খায়নি। 

তারপর যখন তার হুঁশ হল ততদিন খিচুড়ি বন্ধ ড্রাইডাল ছাড়া কিছুই তার জোটেনি। চালগুলি চিবিয়ে জল খেয়ে কোনােমতে বেঁচে থাকা উচ্ছব মৃত আপনজনদের জন্য কাঁদে না , হঠাৎ ভাত খাওয়ার আশায় বাসিনীর সঙ্গে। 

সে কলকাতায় বড়াে বাড়িতে কাজ নেয়। তীব্র ক্ষুধা নিয়ে যজ্ঞের জন্য আবশ্যক আড়াই মণ কাঠ সে ভাত খাওয়ার আশায় কেটে ফেলে। তান্ত্রিকের নির্দেশমতাে যজ্ঞশেষের আগে সমস্ত রান্না করতে হবে , কিন্তু ভাত খাওয়া যাবে যজ্ঞ শেষ হলে। 

যজ্ঞ – হােম চলাকালীন সময়ে উচ্ছব বাড়ির লােকজনের কথাবার্তায় রান্না শেষ হওয়ার ইঙ্গিত পায় আর মনে মনে ভাত খাওয়ার আশাকে তীব্রতর করতে থাকে। 

কবে সে পেটপুরে ভাত খেয়েছে তার মনে নেই। এমনকি যেদিন উচ্ছব সব হারায়। সেদিনও সে হিঞে আর গুগলিসেদ্ধ নুন আর লঙ্কাপােড়া দিয়ে খেয়েছিল। 

তারপর থেকে ভাতের গন্ধ পাওয়ার জন্যে সে গ্রাম ছেড়ে শহরে এসেছে। আজ সেই ভাত পাওয়ার তার সামনে এসেছে। সেই উত্তেজনায় ফুটন্ত ভাতের গন্ধে উচ্ছব উতলা হয়ে ওঠে।


2. মহাশ্বেতা দেবীর ‘ভাত’ ছোটোগল্প অবলম্বন করে ঝড়জল বন্যার রাতটির বর্ণনা দাও।

Ans. ঝড়জল বন্যার রাতের বর্ণনা: প্রশ্নে উদ্ধৃত ঝড়জল বন্যার রাত উচ্ছবকে সর্বস্বান্ত করে দিয়েছিল। সেদিন সন্ধ্যাতেই অনেকদিন পর সপরিবারে উচ্ছব পেট পুরে ভাত খেয়েছিল। খেতে খেতে চন্নুনীর মা বলেছিল যে, দেবতার গতিক ভালো নয়। নৌকা নিয়ে যারা বেরিয়েছিল, তাদের নৌকা সহ ডুবে মরে যাওয়ার আশঙ্কাও সে প্রকাশ করেছিল। এরপরই শুরু হয় প্রবল ঝড়-বৃষ্টি। ঝড়-বৃষ্টিতে উচ্ছবদের কাঁচা বাড়ির মাঝ খুঁটিটি ‘মাতাল আনন্দে টলছিল’ ধনুষ্টংকার রোগীর মতো। তাই উচ্ছব সর্বশক্তি দিয়ে ঘরের মাঝখানের  খুঁটিটা মাটির দিকে চেপে ধরে ছিল। কিন্তু তার মনে হচ্ছিল মা বসুন্ধরা যেন সেই খুঁটি রাখতে চাইছেন না, ঠেলে বের করে দিতে চাইছেন। তাই ভয়ে ভগবানের নাম নিতে থাকে সে। অন্যদিকে, ছেলেমেয়েকে জাপটে ধরে তার বউ ঠান্ডায় এবং ভয়ে কাঁপতে থাকে। এ সময়েই হঠাৎ বিদ্যুতের ঝলকানিতে উচ্ছব দেখতে পায় মাতাল মাতলা নদীর সফেন জল বাতাসের তোড়ে দ্রুত ছুটে আসছে। পরে একসময় জল নেমে গেলেও উচ্ছবের ঘরের সব কিছু এবং তার পরিবারকে উচ্ছব আর খুঁজে পায়নি, সব কিছু ভাসিয়ে নিয়ে যায় সেই জল। বানের জলে ভেসে যাওয়া উচ্ছব গাছে বেধে কোনোক্রমে প্রাণে বাঁচে। এভাবে ঝড়জল-বন্যার সেই রাত উচ্ছবের জীবনে সর্বনাশ ডেকে এনেছিল।


3. “যা আর নেই, যা ঝড়-জল-মাতলার গর্ভে গেছে তাই খুঁজে খুঁজে উচ্ছব পাগল হয়েছিল।”—দুর্যোগটির বর্ণনা দাও। দুর্যোগটি উচ্ছবকে কীভাবে প্রভাবিত করেছিল?

Ans. দুর্যোগের বর্ণনা: মহাশ্বেতা দেবীর ‘ভাত’ ছোটোগল্পে আমরা দেখি, দুর্যোগের দিন সন্ধ্যাবেলায় চন্নুনীর মা খেতে খেতে বলছিল যে, দেবতার গতিক ভালো নয়। তারপরে রাত বেড়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই প্রবল দুর্যোগে উচ্ছবদের কাঁচা বাড়ির মাঝখানের খুঁটিটি ‘মাতাল আনন্দে টলছিল’ ধনুষ্টংকার রোগীর মতো। তাই ঘরের মাঝখানের খুঁটিটা উচ্ছব মাটির দিকে সর্বশক্তি দিয়ে চেপে ধরেছিল এবং ভয়ে ভগবানের নাম নিচ্ছিল। অন্যদিকে, ছেলেমেয়েদের জাপটে ধরে তার বউ ঠান্ডায় আর ভয়ে কাঁপছিল। এসময় হঠাৎ বিদ্যুতের আলোর ঝলকানিতে উচ্ছব দেখে, মাতাল মাতলা নদীর সফেন জল বাতাসের তোড়ে দ্রুত ছুটে আসছে। নিমেষের মধ্যে সেই বানের জল উচ্চবের বউ ছেলেমেয়েকে ভাসিয়ে নিয়ে যায়। গাছে বেঁধে কোনোক্রমে প্রাণে বেঁচে যায় উচ্ছব

উচ্ছবের উপরে দুর্যোগের প্রভাব: দুর্যোগের আকস্মিকতায় সাময়িকভাবে উচ্ছবের বুদ্ধি লোপ পায়। বউ-ছেলেমেয়ে সহ সবকিছু ফিরে পাবার আশায় শুনসান বাড়ি ছেড়ে তাই সে নড়ে না। লঙ্গরখানায় দেওয়া খিচুড়ি তাই তার খাওয়া হয় না। কয়েকদিন পর সরকার শুকনো চাল দিলে দীর্ঘদিন যাবৎ উপোসি উচ্ছব তা চিবিয়েই কয়েকদিন কাটায়। এ সময় মাঝে মাঝেই তার মনে পড়ে সেই দুর্যোগের রাতটার কথা। তার মনে হয়, দীর্ঘদিন ধরে ভাত না খেয়ে সে ভূত হয়ে যাচ্ছে, ভাত খেলেই সে পুনরায় মানুষ হবে এবং বউ-ছেলেমেয়ের দুঃখে কাঁদতে পারবে। তাই কয়েকদিন পেট পুরে ভাত খেতে সে কলকাতা যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়।


4. “তারপরই মনে পড়ে যে রাতে ঝড় হয়।”—কোন্ কথার পর ঝড়ের রাতের কথা উদ্দিষ্ট ব্যক্তির মনে পড়ে? কোন্ কোন্ কথা এ প্রসঙ্গে মনে পড়ে তার?

Ans. মনে পড়ার পরিপ্রেক্ষিত: মহাশ্বেতী দেবীর ‘ভাত’ ছোটোগল্প থেকে সংকলিত এই উদ্ধৃতিটিতে উচ্ছব নাইয়ার কথা বলা হয়েছে। ধান খেতে আগুন লাগার কথা মনে পড়ার পরে উচ্ছবের ঝড়ের রাতের কথা মনে পড়ে।

প্রসঙ্গত মনে পড়া কথাগুলি: উচ্ছব নাইয়ার এ প্রসঙ্গে মনে পড়েছিল যে, অনেকদিন পর সেই সন্ধ্যায় সে পরিবার সহ পেটপুরে খেয়েছিল। অনেকটা হিঞে শাক সেদ্ধ, গুগলি সেদ্ধ, নুন এবং লংকাপোড়া দিয়ে মেখে ভাত খেয়েছিল সে। সেদিন উচ্ছবের মতো গ্রামের সকলেই পেট পুরে খেয়েছিল। চন্নুনীর মা খাওয়ার সময় বলেছিল যে, ভগবানের লক্ষণ ভালো নয় ৷ সে আরও বলেছিল যে, নৌকো নিয়ে যারা বেরিয়েছে, তারা নৌকা-সহ ডুবে মরতে পারে। এরপর উচ্ছবের মনে পড়ে ঘরের মাঝ খুঁটিটা মাটির দিকে ঠেলে ধরে রাখার কথা। ধরণি যেন সেই খুঁটি উপড়ে ফেলতে চাইছিল। ভগবানের নাম নিয়েছিল উচ্ছব। তারপর বিদ্যুতের চমকে সে দেখেছিল, মাতলার সফেন জল ছুটে আসছে। তারপর আর কিছু মনে পড়ে না তার নিজের পরিচয় পর্যন্ত। উচ্ছব ভাবে, তার কাগজ-ভরা, সুন্দর কৌটোটির কথা। আরও ভাবে, ভগবান যদি তার বউ-ছেলেমেয়েদের বাঁচিয়ে রাখত, তবে সে শত হাতির শক্তি পেত। সেই কৌটোটি নিয়ে তবে সপরিবারে সে ভিক্ষায় বেরোত। সতীশবাবুর নাতির ফুড খাওয়ার কৌটোটি উচ্ছব চেয়ে এনেছিল। অমন সুন্দর কৌটো থাকলে প্রয়োজনে একমুঠো চাল ফুটিয়েও নেওয়া যায়।


5. “মারতে মারতে উচ্ছবকে ওরা থানায় নিয়ে যায়।”—কারা, কেন উচ্ছবকে মারতে মারতে থানায় নিয়ে যায়?

Ans. উদ্দিষ্ট ব্যক্তিবর্গ কর্তৃক উচ্ছবকে মারার কারণ: মহাশ্বেতা দেবীর ‘ভাত’ ছোটোগল্পে মাতলা নদীর বন্যায় সর্বস্ব হারানো উচ্ছব ভাতের আশায় তার গ্রামতুতো বোন বাসিনীর মনিবের বাড়ি কলকাতায় চলে আসে। সেখানে ভাত খাওয়ার বিনিময়ে তাকে সেই বাড়ির বড়োকর্তার আয়ুবৃদ্ধির জন্য করা হোমযজ্ঞের কাঠ কাটতে হয়েছিল। এদিকে তান্ত্রিকের বিধান অনুযায়ী, যজ্ঞ শেষ না হওয়া পর্যন্ত কোনো কিছু খাওয়া বারণ ছিল। তাই খিদের জ্বালায় অস্থির হয়ে-পড়া উচ্ছবও ভাত খেতে পারেনি। মাঝে বাসিনীর দেওয়া ছাতু জল খেয়ে খিদে মেটানোর চেষ্টা করে উচ্ছব। যদিও এই সামান্য খাবারে তার পেট ভরেনি। তার সামনে অপ্রত্যাশিত সুযোগ চলে আসে বড়োকর্তার মৃত্যুর পরে। বড়ো পিসিমার নির্দেশে রান্না খাবার ফেলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত হলে উচ্ছব ভাতের বড়ো ডেকচিটা চেয়ে নেয় ফেলে দেওয়ার জন্য। তারপরে দ্রুত হেঁটে, পরে এক দৌড়ে স্টেশনে গিয়ে মনের সুখে ভাত খায়। অনেকদিন পরে আশ মিটিয়ে ভাত খেয়ে স্টেশনেই তৃপ্ত উচ্ছব সেই পেতলের ডেকচিটি জাপটে, তার কানায় মাথা ছুঁয়ে ঘুমিয়ে পড়ে। পরদিন ভোরে পুলিশ ঘুমন্ত উচ্ছবকে স্টেশনেই ধরে ফেলে এবং পেতলের ডেকচি চুরির অপরাধে তাকে মারতে মারতে থানায় নিয়ে যায়।


6. “বাদার ভাত খেলে তবে তো সে আসল বাদাটার খোঁজ পেয়ে যাবে একদিন।”—–‘বাদা’ কাকে বলে? উদ্দিষ্ট ব্যক্তির এই রকম মনে হওয়ার কারণ কী?

Ans. বাদা: মহাশ্বেতা দেবীর ‘ভাত’ ছোটোগল্প থেকে গৃহীত উদ্ধৃতাংশে থাকা ‘বাদা’ শব্দটির অর্থ হল জল-জঙ্গলপূর্ণ নীচু জমি।

এরকম মনে হওয়ার কারণ: ঝড়-বৃষ্টির যে রাতে উচ্ছব তার স্ত্রী ও পুত্র কন্যাকে হারিয়েছিল, সেদিন সন্ধ্যায় উচ্ছব অনেকদিন পরে পেট ভরে সপরিবারে ভাত খেয়েছিল। তারপর সর্বস্বান্ত উচ্ছব তার বন্যাবিধ্বস্ত ভিটেতে উন্মাদের মতো কয়েকদিন পড়ে ছিল তাই লঙ্গরখানার রান্না খিচুড়ি তার খাওয়া হয়নি’। তার যখন সম্বিত ফেরে তখন রান্না খাবার দেওয়া বন্ধ হয়ে গেছে। কাঁচা চাল চিবিয়েই তাই তার দিন কাটতে থাকে। উচ্ছব যার জমিতে কাজ করত, সেই সতীশ মিস্তিরিও তাকে ভাত দিতে অস্বীকার করে। ভাতের আকাঙ্ক্ষাতেই উচ্ছব কলকাতায় গ্রামতুতো বোন বাসিনীর মনিববাড়িতে কাজ করতে আসে। সুন্দরবনের নোনা জলের বাদার অধিবাসী উচ্ছব দেখে যে, বাসিনীর মনিবদের মিষ্টিজলের বাদায় হওয়া নানাপ্রকার চালে তাদের ঘর ভরে আছে। সে-বাড়ির বড়োকর্তার মৃত্যু হলে তারা যখন বাড়ির সমস্ত ভাত এবং অন্যান্য রান্না খাবার ফেলে দেওয়ার ব্যবস্থা করে, তখন অভুক্ত উচ্ছব আর মাথা ঠিক রাখতে পারে না। বাসিনীর হাত থেকে অশৌচ বাড়ির ভাতের ডেচকিটা ছিনিয়ে নিয়ে সে স্টেশনে ছুটে আসে এবং সেখানেই ভাতে হাত দিয়ে সে স্বর্গসুখ লাভ করে উচ্ছব। তার মনে হয়, মিঠে জলের বাদার ভাত খেলেই সে ‘আসল বাদা’ অর্থাৎ ‘অন্নের দেশ’-এর খোঁজ পেয়ে যাবে।


7. মহাশ্বেতা দেবীর ‘ভাত’ ছোটোগল্পে উচ্ছবের চরিত্রটি বিশ্লেষণ করো।

Ans. দুর্ভাগ্যপীড়িত: মহাশ্বেতা দেবীর ‘ভাত’ ছোটোগল্পের কেন্দ্রীয় চরিত্র উৎসব নাইয়া নিম্নবর্গীয় সমাজব্যবস্থার একজন প্রতিনিধি। ভাগ্যের ফেরে মাতলার বন্যায় বউ ছেলেমেয়েকে হারায় সে। ভেসে যায় তার মাথা গোঁজার আশ্রয়টুকুও। কিন্তু প্রাকৃতিক দুর্যোগ উৎসবের জীবন থেকে সব কিছু কেড়ে নিলেও কেড়ে নিতে পারেনি তার আদিম প্রবৃত্তিকে, যে প্রবৃত্তির নাম খিদে। তাই প্রিয়জন হারানোর শোক কাটিয়ে ওঠার আগেই তার মধ্যে জেগে ওঠে ভাতের জন্য হাহাকার।

মমতা ও ভালোবাসাপ্রিয়: হাভাতে উৎসবের জীবনে বিপর্যয় নেমে আসার আগে পর্যন্ত তার মধ্যেও কোমলতার স্পর্শ ছিল। তাই সতীশ মিস্তিরির তিন ধানে মড়ক লাগলে ধানের প্রতি পরম মমতায় কেঁদে ভাসায় এই গরিব ভাগচাষি। ভেসে যাওয়া ঘরের চালের নীচ থেকে পরিচিত স্বর শোনার আশায় নাওয়াখাওয়া ভুলে বসে থাকে উৎসব। অসম্ভব জেনেও পাগলের মতো বলতে থাকে, “রা কাড় অ চন্নুনীর মা !”

মানবিকতা: পরম আকাঙ্ক্ষিত ভাতের স্পর্শে ‘প্রেত’ উচ্ছবের ভিতর থেকে জেগে ওঠে ‘মানুষ’ উৎসব। তাই বড়ো বাড়ি থেকে নিয়ে আসা ডেকচির ভাত খেতে খেতে সে মনে মনে সেই ভাত তুলে দেয় বউ ছেলেমেয়ের মুখে… “চন্নুনী রে। তুইও খা, চন্নুনীর মা খাও, ছোটো থোকা খাঁ, আমার মধ্যে বসে তোরাও খা।"

সর্বহারা বঞ্চিত: আসলে উৎসবের মতো বঞ্ছিত, প্রান্তিক মানুষদের সমাজজীবনে ব্যক্তিনামেরও কোনো মূল্য নেই। তাই আমরা দেখি তার নিরুৎসব জীবনে সে আর উৎসব থাকেনি, তার নাম হয়ে দাঁড়িয়েছে উচ্ছব নাইয়া।


8. মহাশ্বেতা দেবীৱ লেখা ‘ভাত’ গল্পের কাহিনি সংক্ষেপে লেখাে। ওই প্রসঙ্গে গল্পের নামকরণ কতখানি সার্থক আলােচনা করাে।

Ans. ভাত খাবে কাজ করবে: নাম তার উৎসব। অবশ্য সে উচ্ছব নাইয়া নামে পরিচিত। মাতলা নদীর তীরে বাদা অঞ্চলের মানুষ সে। তার বাদায় ধান তেমন ফলে না। সেখানে মেলে গুগলি-গেঁড়ি-কচুশাক-সুসনি শাক। ভাতের খিদে তাই মেটে না। তা যেন আগুন হয়ে জ্বলতে থাকে। তার ওপর উচ্ছব লােকটা তুমুল ঝড়জলে ও মাতলার জলােচ্ছ্বাসে চিরকালের মতাে হারিয়েছে বউ- ছেলেমেয়ে। ওই নিরন্ন ক্ষুধার্ত হতভাগ্য মানুষটাকে কলকাতার বড়ােবাড়ির চাকরানি বাসিনী নিয়ে আসে হােম-যজ্ঞির কাঠকুটো কাটার কাজে। ভাত খাবে, তার বিনিময়ে কাজ করবে। বাসিনীর দয়ার কারণ হল উচ্ছব তার গা-সম্পর্কের দাদা।

ভাতের আশায় দুর্বল শরীরও শক্তিমান: বাসিনীর মুখে উচ্ছব কেন, গায়ের সবাই শুনেছে বাসিনীর মুনিবের বাড়িতে ভাতের হেলাফেলা। ভাঁড়ারে ঢােল ঢােল ভরতি চালের পাহাড়ের প্রমাণ পাওয়ার পর কথাটা উচ্ছবের মিছে মনে হয় না। চালের নামও অনেক। ভাতই রান্না হয় পাঁচ রকম চালের। হােম-যজ্ঞি উপলক্ষ্যে রান্নারও খুব ঘটা। শােকে-দুঃখে আর উপপাসে দিন কাটাতে কাটাতে উচ্ছব দুর্বল। তবু ভাত খাবে, এই আশায় যেন বলবান হয়ে হােম-যজ্ঞির পাঁচ রকমের আড়াই মন কাঠ কেটে ফেলে। পরিশ্রমের ফলে খিদে প্রচণ্ড রকম চাগিয়ে উঠলেও ভাত জোটে না। তান্ত্রিকের বিধান হল হােম-যজ্ঞ যতক্ষণ চলবে, ততক্ষণ বাড়িতে খাওয়া চলবে না।

অশুচি ভাত ভক্ষণ: বাড়িতে হােম-যজ্ঞির কারণ হল বাড়ির বুড়াে কর্তা লিভার ক্যানসারে মুমূর্ষ। ডাক্তারদের কথামতাে হােম-যজ্ঞির আয়ােজন। এতে নাকি রােগের নিরাময় হবে। কিন্তু যজ্ঞ হল আর বুড়ােও মরল। যজ্ঞ শেষে ভাত মিলবে আশায় ঘুম থেকে উঠে উচ্ছব শােনে মৃতের বাড়ির রান্না অশুচি। খাওয়া চলবে না। বড়াে পিসিমার হুকুম, সর্ব রান্না রাস্তায় ঢেলে দিয়ে আসতে হবে। উচ্ছব এই সুযােগে ভাতভরতি একখানা বড়াে ডেকচি নিয়ে ছুটে স্টেশনে পালিয়ে গিয়ে প্রাণভরে ভাত খায়। কিন্তু যে বাদার চালে ওই অঢেল ভাত, সে-বাদা আর তার খোঁজা হয় না।

নামকরণ সার্থক: গল্পের নাম দেওয়া হয়েছে ভাত। ভাতকে বিষয় করে মহাশ্বেতা দেবী এই গল্প ছাড়াও আরও কয়েকটি গল্প লিখেছেন। ভাতের অভাব গরিব সংসারের সবচয়ে বড় সমস্যা। খিদে মেটানাের এই বস্তুটি গরিবের কাছে সহজলভ্য নয় বলেই, ভাতের আকাঙ্ক্ষা তাদের পিঠে চাবুক হাঁকড়িয়ে যেন পাগল করে তােলে। গল্পের শুরুতেই বলা হয়েছে যে, নিরন্ন উপােসি লােকটা কাজ করতে এসেছে ভাতের বিনিময়ে। তার পারিশ্রমিক মজুরি নয়, টাকাকড়ি নয়। শুধু ভুখা পেটে দু-মুঠো ভাত। যজ্ঞি বাড়ির গরম ভাতের গন্ধে তার ক্ষুধা উতলা হয়ে ওঠে। কিন্তু কাঙ্ক্ষিত ভাত অধরা থেকে যায় তান্ত্রিকের বিধানে। যজ্ঞ শেষ না হলে খাওয়া হবে না। এরপর আরও বিপত্তি ঘটে। অসুস্থ বুড়াে কর্তা মরে গিয়ে নাকি বাড়ির সব রান্না অশুচি করে দিয়েছে। অশুচি ভাত খাওয়া নিষিদ্ধ। কিন্তু খিদে আর ভাতের তীব্র আকাঙ্ক্ষা কোনাে বিধিনিষেধই মানে না। উচ্ছব ওই অশুচি ভাত খেয়ে স্বর্গসুখ অনুভব করে। তার মৃত স্ত্রী-কন্যা-পুত্রের বুভুক্ষু আত্মাও যেন তার আহারের মধ্য দিয়ে অতৃপ্ত ক্ষুধা পরিতৃপ্ত করে। গল্পে ভাত এইভাবে অর্থবহ ও তাৎপর্যপূর্ণ হয়ে উঠেছে। কাজেই ভাত হল কাহিনির কেন্দ্রীয় ভাবনা ও গল্পের চালিকাশক্তি। কাজেই গল্পের ‘ভাত’ নামকরণ সার্থক।


9. “ দাঁতগুলাে বের করে সে কামটের মতােই হিংস্র ভঙ্গি করে কে , কার প্রতি এরূপ আচরণ করেছিল ? তার এরূপ আচরণের কারণ বিশ্লেষণ করাে।

Ans: প্রখ্যাত কথাসাহিত্যিক মহাশ্বেতা দেবীর ‘ ভাত ‘ ছােটগল্পের মুখ্য চরিত্র উচ্ছব নাইয়া তার গ্রাম্য সম্পর্কিত বােন বাসিনীর প্রতি এমন আচরণ করেছিল। 

গল্পে বুড়াে কর্তার মৃত্যুর পরে তার মৃতদেহ শ্মশানের উদ্দেশ্যে নিয়ে যাওয়ার পরে বড় পিসিমার কথায় বাড়ির সব রান্না ফেলে আসতে বলেন। আর ঠিক সেই মূহুর্তেই উচ্ছব স্থির করে নেয় যে সে কী করবে। সুদূর সুন্দরবন থেকে শুধুমাত্র খাবারের সন্ধানে সে এসেছিল শহরের বড়াে বাড়িতে কাজ করতে। কিন্তু বুড়াে কর্তাকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য হােম – যজ্ঞ শেষ না হলে খাওয়া হবে না – এই যুক্তিতে সে তার চরম আকাঙ্খিত খাবার থেকে বঞ্চিত হয়েছিল। এর মধ্যে সে নানা রকম চালের এবং খাবারের গল্প শুনেছে ও দেখেছে। আর তাই তাে- ফুটন্ত ভাতের গন্ধ তাকে বড়াে। উতলা করে। 

কিন্তু ভাত জোটেনি উচ্ছবের। কিন্তু আজ যখন বাসিনী ভাত ফেলতে গেল তখন উচ্ছব ভাতের ডেকচি নিয়ে সে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ যে সে কী করবে ? ডেকচি নিয়ে প্রথমে হনহনিয়ে হাঁটা তারপর দৌড়ানাে শুরু করে। যে ভাতের জন্য তার দীর্ঘ সময়ের অপেক্ষা , সেই ভাত এখন তার হাতের মুঠোয়। এই সময়েই যখন বাসিনী তাকে ‘ অশুচ বাড়ির ভাত খেতে নিষেধ করে তা সহ্য করা কঠিন হয়ে পড়ে উচ্ছবের পক্ষে। সে ফিরে দাঁড়ায় এবং কামটের মতাে হিংস্র চোখে বাসিনীর দিকে তাকায়। তার দাঁত বের করা মুখ ভঙ্গি কামটের মতাে হিংস্র লাগে বাসিনীর। 


10. মহাশ্বেতা দেবীর ‘ভাত’ রচনাটি ছোটোগল্প হিসেবে কতখানি সার্থক, তা আলোচনা করো।

Ans. বিষয়বস্তু: মহাশ্বেতা দেবীর ‘ভাত’ একটি ছোটোগল্প। ঝড়জল বন্যার এক রাতে সুন্দরবনের ভাগচাষি উচ্ছব নাইয়ার ঘরবাড়ি এবং স্ত্রী-সন্তান বানের জলে ভেসে যায়। প্রাথমিকভাবে শোক ও তারপর খিদের তাড়না তাকে পাগল করে তোলে। তার চাষ করা জমির মালিক সতীশ মিস্তিরির কাছে ভাতের প্রার্থনা করে ব্যর্থ হয়ে ক-দিন পেটপুরে ভাত খাওয়ার আশায় সে কলকাতায় চলে যায়। গ্রামতুতো বোন বাসিনীর মনিববাড়িতে গিয়ে পেটপুরে ভাত খাওয়ার চুক্তিতে সারাদিন হাড়ভাঙা পরিশ্রম করে সে। কিন্তু বিকেলে সেই ‘বড়ো বাড়ি’র বৃদ্ধের মৃত্যু ঘটলে দীর্ঘদিন ধরে ভাত না খাওয়া উচ্ছব প্রমাদ গোনে। তাই যখন সেই অশৌচ বাড়ির রাঁধা ভাত ফেলে দেওয়ার উপক্রম হয়, তখন মরিয়া উচ্ছব বাসিনীর হাত থেকে ভাতের একটা পেতলের ডেকচি নিয়ে এক দৌড়ে স্টেশনে চলে যায়। সেই ভাত পেটপুরে খেয়ে সেখানেই সে শুয়ে পড়ে। ভোরে পেতলের ডেকচি চুরির অপরাধে পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে থানায় নিয়ে যায়। যে বাদার জমির বিপুল ও উন্নত ধান ‘বড়ো বাড়ি’কে বড়ো করে তুলেছিল, সেই ‘আসল বাদাটার খোঁজ’, বন্ধ্যা বাদার অধিবাসী উচ্ছবের আর পাওয়া হয় না।

সার্থকতা: সুতরাং, উচ্ছবের ভাত খাওয়াকে কেন্দ্র করেই সুন্দরবন ও কলকাতার পটভূমিতে ‘ভাত’ ছোটোগল্পের মাত্র কয়েকদিনের কাহিনি গড়ে উঠেছে। এ গল্পে তাই স্থান-কাল-ঘটনাগত ঐক্য বজায় রাখা হয়েছে। তা ছাড়া, ‘ঘটনার ঘনঘটা’, ‘তত্ত্ব’, বা ‘উপদেশ’ও এখানে অনুপস্থিত। উচ্ছব এবং আরও চার-পাঁচটি চরিত্র নিয়েই গল্পটি বিস্তার লাভ করেছে। সমাপ্তিতে উচ্ছবের জেলে যাওয়া এবং ‘আসল বাদাটার খোঁজ না পাওয়ার মধ্যে যেমন চমক রয়েছে, তেমন তা গল্পটিকে চরম ক্লাইম্যাক্সে পৌঁছেও দিয়েছে। ‘ভাত’ তাই নিঃসন্দেহে একটি শিল্পসার্থক ছোটোগল্প।


11. “ তুমি কি বুঝবে সতীশবাবু ! ” সতীশবাবু কী বুঝবে না ? কেন বুঝবে না ? সতীশবাবু উচ্ছবের সঙ্গে কেমন আচরণ করেছিল ? 

Ans. আলােচ্য অংশটি মহাশ্বেতা দেবীর ভাত ’ গল্প থেকে নেওয়া হয়েছে। ভাত না। খেলে কীরূপ ক্ষুধার যন্ত্রণা সহ্য করতে হয় , উচ্ছব তা বুঝতে পেরেছে। একারণেই উচ্ছব জানিয়েছে সতীশবাবু ভাত না খেতে পারার জ্বালা বুঝতে পারবে না। 

সতীশবাবু আর্থিক দিক থেকে স্বচ্ছল। উচ্ছবের মতাে যে নদীর পাড়েও থাকে , মেটে ঘরেও থাকে না। তার পাকা ঘর ঝড়ে ভেঙে যায়নি , এছাড়া তার ধান – চাল। সম্পূর্ণ নিরাপদে আছে। তাই দেশজোড়া দুর্যোগের সময়েও তার ঘরে রান্না হয়েছে। উচ্ছবের আর্থিক অবস্থা ভালাে নয়। তার যা কিছু ছিল তাতেও ভগবানের মার পড়েছে। 

তুমুল ঝড়বৃষ্টিতে মাতলার জলে উচ্ছবদের সংসার সর্বনাশ হয়ে যায়। একে উচ্ছবের ঘরদোর বিপর্যস্ত তার ওপর স্ত্রী – পুত্র হারিয়ে যায় এ হেন অবস্থায় হতদরিদ্র উচ্ছবদের পেটের জ্বালা সতীশবাবু কোনােমতেই বুঝতে পারবে না। তুমুল ঝড়বৃষ্টিতে উচ্ছবদের সংসার বিপর্যস্ত হয়ে গেলে সে সম্পূর্ণ একাকী হয়ে পড়ে। কয়েকদিন ধরে অভুক্ত থাকার জন্য উচ্ছব খিদের জ্বালায় ছটফট করে। খিদের জ্বালা মিটানাের জন্য সে সতীশবাবুর কাছে ভাতের প্রার্থনা করে , কিন্তু সতীশবাবু জানায় তাকে ভাত দিলে পঙ্গপালের মতাে মানুষ তার কাছে ভিড় করবে। প্রচণ্ড ক্ষুধার তাড়নায় উচ্ছব ভাত ভাত করছে শুনে সতীশবাবু মন্তব্য করেছে তার মতিভ্রম হয়েছে। উচ্ছবকে ভাত না দিয়ে সতীশবাবু নিষ্ঠুর , অমানবিক কাজ করেছে।


Google News এ আমাদের ফলো করুন


Gksolves Google News


ঘোষণা: বিনামূল্যে আমাদের দেওয়া নোটস, সাজেশান, প্রশ্ন উত্তর ইত্যাদি স্টাডি ম্যাটেরিয়াল PDF এবং ভিডিও ক্লাস ভালো লাগলে, আমাদের এই পোস্টের লিংক আপনার বন্ধুদের ফেসবুকWhatsApp এ শেয়ার করে তাদের পড়ার সুযোগ করে দিন।

Post a Comment

0 Comments
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.