তোমার প্রিয় বই প্রবন্ধ রচনা PDF: বিভিন্ন পরীক্ষার জন্য তোমার প্রিয় বই প্রবন্ধ রচনা PDF একটি গুরুত্বপূর্ন বিষয়। তাই আমরা আপনাদের জন্য নিয়ে এসেছি তোমার প্রিয় বই প্রবন্ধ রচনা PDF. নিচে তোমার প্রিয় বই প্রবন্ধ রচনা PDF টি যত্নসহকারে পড়ুন ও জ্ঞানভাণ্ডার বৃদ্ধি করুন।
তোমার প্রিয় বই প্রবন্ধ রচনা
ভূমিকা:
মানুষের চাহিদা ও রুচির সঙ্গে প্রিয় ও অপ্রিয় বিষয়টি অবশ্যই জড়িয়ে আছে। ‘যার যা প্রিয়’- তার টান সেদিকেই থাকবে। কেউ নাটক পড়তে ভালোবাসে, কেউ উপন্যাস পড়তে ভালোবাসে, কেউ ছোটোগল্প পড়তে ভালোবাসে, আবার কেউবা রহস্যজনক গোয়েন্দা গল্প পড়তে ভালোবাসে। কিন্তু আমি নাটক পড়তে ভালোবাসি। উপন্যাস, ছোটোগল্প পড়ি না এমন নয়, কবিতা পাঠ করতে ভালোবাসি না তা নয়, কিন্তু কী যেন একটা ভাব আমার মধ্যে কাজ করে যা আমাকে নাটক পড়তে প্রেরণা জোগায় এবং সমস্ত নাট্যকারদের মধ্যে মনোজ মিত্র আমার সর্বাধিক প্রিয়। তাঁর লেখা ‘চাকভাঙা মধু’ নাটকটি আমার পড়া শ্রেষ্ঠ নাটকগুলির মধ্যে একটি।
প্রিয় নাটকের বিষয়বস্তু:
নাটকটির বিষয়বস্তু সুন্দরবন অঞ্চলের এক দরিদ্র ওঝা পরিবার এবং মহাজন পরিবারকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে। মহাজন অঘোর ঘোষ দরিদ্র মানুষদের সামান্য টাকা দিয়ে জমিজমা এমনকি ঘরবাড়ি পর্যন্ত লিখিয়ে নেয় এবং সময় শেষ হলে সেখানে এসে অন্যায়ভাবে- ‘লাল খাতা মেলে ধরে।’ এই নাটকে দুটি শিবির। শোষক শিবিরে আছে অঘোর ঘোষ; ছেলে শংকর। দাসী দাক্ষায়নী এবং দুই বেয়ারা। অন্যদিকে শোষিত শিবিরে আছে ওঝা মাতলা; তার মেয়ে বাদামি এবং মাতলা ওঝার কাকা জটা, এ ছাড়া উপস্থিত ও অনুপস্থিত গ্রামবাসী। নাটকের শুরুতে আমরা জানতে পারি মহাজন অঘোর ঘোষ কালাচের কামড়ে মরতে বসেছে ৷ সমস্ত গ্রামবাসী যখন তার মৃত্যকামনা করছে তখন গ্রামের মধ্যে মাতলা ওঝার বাড়িতে এসেছে দাক্ষায়নী। উদ্দেশ্য মাতলা ওঝাকে নিয়ে যেতে হবে মহাজন অঘোর ঘোষকে বাঁচানোর জন্য। এখন যে মানুষটা গোটা গ্রামকে একটা সময় শোষণ করেছে তাকে বাঁচানো কি মাতলা ওঝার উচিত কাজ হবে ! নাটকে নাট্যকারের মানসকন্যা বাদামি তখন পিতা মাতলাকে প্রেরণা দেয়। আর ফুকনা, ষষ্ঠী, মাতলার কাকা জটা একাজে বাধা দেয়। অবশেষে মাতলা শিল্পীর Stand -এ গিয়ে দাঁড়াল এবং অঘোর ঘোষকে বাঁচাল। তারপর আমরা দেখলাম যে মানুষটা মরতে বসেছিল, জীবন ফিরে পাওয়ার পরও তার শোষক মানসিকতার এতটুকু পরিবর্তন হয়নি, নির্দ্বিধায় বলে- ‘দে আমার সুদ দে’। একটা সময় সে মাতলার মানস কন্যার বাদামির দিকে হাত বাড়ালে বাদামি কলসভর্তি বিষধর সাপকে মধুর কলস বলে তার হাতে তুলে দিতে যায়, কিন্তু মাতলার চালাকিতে সাপের মৃত্যু হলে নারীসম্ভ্রম ও সর্বহারার মানবতাবাদকে বজায় রাখতে বাদামি অঘোর ঘোষকে সড়কি চালিয়ে খুন করে এবং আগামী প্রজন্মকে অঘোর ঘোষের হাত থেকে রক্ষা করে। এখানেই নাটকটি সকল মানুষের মন কেড়ে নিয়েছে।
প্রিয় নাটকের চরিত্র পরিচয়:
নাটকটির চরিত্র লিপিতে দুটি শিবির লক্ষণীয়। শোষক শিবিরে স্বয়ং মহাজন অঘোর ঘোষ। তিনি পুরাতনপন্থী জমিদার। শোষণই তাঁর চরিত্র মানসিকতার শেষ কথা। ছেলে শংকর ব্যবসায়ী। তার কাছে মানুষের খাবার আর পশুর খাবারের গুরুত্ব একই রকম। চরিত্রটি সুযেগাসন্ধানী এবং মিছরির ছুরির মতো। স্বার্থ ফুরালে তিনি কেটে পড়েন আবার স্বার্থ পুরণের জন্য তিনি মানুষকে শুধু কথা দিয়ে ভোলান এমন নয় তাকে তিনি স্বপ্ন দেখাতেও কম করেন না। দাক্ষায়নী মহাজন অঘোর ঘোষের রক্ষিতা। তিনি গ্রামের খবর মহাজনকে দিয়ে তার চাকরি বহাল রেখেছেন। বেয়ারা দুজন অঘোর ঘোষের পালকিবাহক। তারা সবসময় মহাজনকে মেনে চলে নিজেদের চাকরি বহাল রাখার জন্য। শোষিত শিবিরে আছে মাতলা। সে বড়ো ধরনের ওঝা। তার মেয়ে বাদামি মাতলাকে বলে- মাঝে মাঝে সাধ হয় আমি বিষ খেয়ে ঝাড়ন হই। অত্যস্ত দরিদ্র হলেও গর্ভবর্তী বাদামিকে সুখে রাখতে চায়। তার আগন্তুক সন্তানকে পৃথিবীর আলো দেখাতে চায়। মেয়ে বাদামিও বাপের ঘরে অতি কষ্টে থাকলেও তাদের মধ্যে বাৎসল্য সম্পর্ক অটুট। বাদামির স্বামী হরিশ তাকে পরিত্যাগ করছে। তাই বাবা মাতলাই এখন তার একমাত্র আশ্রয়। মাতলার কাকা জটা অত্যন্ত ধুরন্ধর হলেও বাস্তববাদী। চিরকাল তারা মহাজনের অত্যাচারে পিষ্ট। গ্রামবাসী সকলে মহাজনের বিরুদ্ধে অবস্থান করেছে। নাটক শেষে তাই দেখতে পাই বাদামি মহাজনকে সড়কি দিয়ে মারতে গেলে মহাজন পালানোর চেষ্টা করলে সমস্ত গ্রামবাসী তাকে ঘিরে ধরছে এবং অবশেষে মহাজনের মৃত্যু হয়েছে।
প্রিয় নাটকের সংলাপ:
এই নাটকের সংলাপ দীনবন্ধু মিত্রের নীলদর্পণের মতো জীবন্ত নাট্যচরিত্রগুলির মুখে ব্যবহৃত সংলাপ চরিত্রগুলিকে আরও সজীবতা দান করেছে। তার পাশাপাশি নাট্যকারের কাব্যিক সংলাপ মাঝে মাঝে পাঠককে আবিষ্ট করেছে। যেমন-
1. কাব্যিক সংলাপ: “বিকেলের হলদে রোদ্দুর মাতলা ওঝার জীর্ণ কুঁড়েঘরের চালে চিকচিক করছে। উঠোনে ছড়িয়ে আছে লম্বা গাছের ছায়া, অল্প অল্প কাঁপছেও।” (নাট্যকার)
2. প্রতিবাদী সংলাপ: “আমরা ওঝাগিরি জানি, তুমরা জান না, এমন কালে তুমরা কত্তার কাজে লাগো না, দুটো পয়সা কামাতি পারো না, তাই বুঝি সব মোচড় মারো ? (বাদামি)
3. আশাবাদী সংলাপ: “ওই অঘোর ঘোষকে দিয়ে আমি তোদের সব অভাব মিটিয়ে দেব। আমি আড়তদার মানুষ স্পষ্টাস্পষ্টি কথা। অঘোর ঘোষকে বাঁচিয়ে দে, আমি দেখব ... হরিষ তুই আর তোর বাচ্চাটা যেন বাঁচে।” (শংকর)
4. মানবিক সংলাপ: “দ্যাও, বাঁচায়ে দ্যাও। কি হবে ট্যাকায় , কি হবে পয়সায় ... ও বাপ, তুমি না ওঝা ! তোমার হাতের গুণ যে কী বাপ, দ’বার টান মেরে ফুঁক পড়লি, তরতর করে পালাব বিষ ... পালাবার পথ পায় না।” (বাদামি)।
এ ছাড়া নাটকে ব্যবহৃত হয়েছে একাধিক প্রবাদ-প্রবচন, অপশব্দ, প্রচলিত গ্রামীণ শব্দ; বিভিন্ন ধ্বন্যাত্মক শব্দ।
নাটকের বিশিষ্টতা:
1. নাটকটি তৎকালীন সময়ে থিয়েটার ওয়ার্কশপের প্রযোজনায় কলকাতার রঙ্গনা মঞে অভিনীত হয় (১৬ মে , ১৯৭২ খ্রিস্টাব্দ) এবং নাট্যকার বিভাস চক্রবর্তীর পরিচালনায় তা বিশেষভাবে মঞঞ্জু সফলতা লাভ করে।
2. নাট্যচরিত্রগুলির মুখে ব্যবহৃত প্রত্যেকটি সংলাপ নাটকটিকে শিল্পসার্থক করে তুলেছে।
3. সুন্দরবন অঞ্চলের ওঝা পরিবার ও মহাজন পরিবারের চিত্রের মধ্য দিয়ে নাট্যকার গণনাট্য আন্দোলনের পথ সুগম করে প্রতিবাদকে মুখ্য করে তুলেছেন।
4. নাট্যকারের কাব্যময় সংলাপ এবং দক্ষতা নাটককে ‘রিডিং ড্রামা’ হিসেবে সার্থকতা দান করেছে।
উপসংহার:
‘চাকভাঙা মধু’ আদতে মধু নয়, মাটির কলসের মধ্যে মুখবাঁধা বিষধর সাপ। তাকে নিয়ে নাট্যকার নাটকে আদি থেকে অন্ত পর্যন্ত এত সুন্দরভাবে রূপ দান করেছেন যে তা পাঠক, তথা শ্রোতাকে অতি সহজে আকৃষ্ট করবে। নাটকটির চরিত্র সংলাপ এবং পরিকল্পনা আমার কাছে অত্যন্ত আকর্ষণীয় মনে হয়েছে। তাই পাঠান্তে অন্য সকল নাটক থেকে এর গঠন পরিকল্পনা অনেকখানি পৃথক হওয়ায় নাটকটি আমার সবচেয়ে প্রিয়।
Also Read:
❏ Bengali to English Translation writing Pdf
❏ বাংলা ব্যাকরণ বাক্য ও বাচ্য Pdf
Download তোমার প্রিয় বই প্রবন্ধ রচনা
File Details:-
File Format:- Pdf
Quality:- High
File Size:- 3 Mb
File Location:- Google Drive
Download: Click Here to Download
Also Read:
Others Important Link
Syllabus Link: Click Here
Question Paper Link: Click Here
Admit Card Link: Click Here
Result Link: Click Here
Latest Job: Click Here
Age Calculator: Click Here
Please do not share any spam link in the comment box