দৈনন্দিন জীবনে বিজ্ঞান প্রবন্ধ রচনা PDF: বিভিন্ন পরীক্ষার জন্য দৈনন্দিন জীবনে বিজ্ঞান প্রবন্ধ রচনা PDF একটি গুরুত্বপূর্ন বিষয়। তাই আমরা আপনাদের জন্য নিয়ে এসেছি দৈনন্দিন জীবনে বিজ্ঞান প্রবন্ধ রচনা PDF. নিচে দৈনন্দিন জীবনে বিজ্ঞান প্রবন্ধ রচনা PDF টি যত্নসহকারে পড়ুন ও জ্ঞানভাণ্ডার বৃদ্ধি করুন।
দৈনন্দিন জীবনে বিজ্ঞান প্রবন্ধ রচনা
ভূমিকা:
পৃথিবীতে আবির্ভূত আদিম মানুষ অস্তিত্ব রক্ষার তাগিদে প্রথম সন্ধান করে খাদ্যের। তারপর শুরু হয় তার বোধ ও চাহিদার বিবর্তন। বিশেষ প্রক্রিয়ার দ্বারা প্রকৃতির নানা বস্তুকে নিজের প্রয়োজনীয় দ্রব্যে পরিণত করার প্রয়াসেই বিজ্ঞানের জন্ম। দিন বদলের সঙ্গে সঙ্গে মানুষের অধ্যবসায়ে পরিচালিত বিজ্ঞানের বিজয়রথ আজ সর্বত্রগামী।
বিজ্ঞান নির্ভর বর্তমান জীবন:
বর্তমান যুগ বিজ্ঞাননির্ভর। তাই আজ বিজ্ঞানকে প্রত্যেকেই নিজের জীবনের সঙ্গে জড়িয়ে নিয়েছে। দৈনন্দিন জীবনের প্রতি পদক্ষেপে বিজ্ঞানের আশীর্বাদকে ভুলে গিয়ে জীবনের জয়যাত্রার কথা আমরা ভাবতেও পারি না। বিজ্ঞানের কল্যাণেই এগিয়ে চলেছে মানবসমাজ। বিজ্ঞানের এগিয়ে চলার ওপর মানবসভ্যতার এগিয়ে চলা নির্ভর করে। তাই বর্তমান জীবনে বিজ্ঞানকে বাদ দিয়ে মানবসভ্যতার অস্তিত্ব কল্পনা করা যায় না।
মানব সভ্যতার অগ্রগতিতে বিজ্ঞানের ভূমিকা:
আজ সভ্যতা আর বিজ্ঞান প্রায় সমার্থক। মানুষের অসহায়ত্ব একদিন তাকে কৌতূহলী করে তুলেছিল। বিরূপ প্রকৃতিকে কীভাবে বশে আনা যায়, সেই চিন্তাই মানুষকে সভ্যতার সোপানে পৌছে দিয়েছিল। যেদিন মানুষ প্রথম পাথরে পাথরে ঘষা লাগিয়ে আগুন জ্বালাতে শেখে সেদিন থেকেই শুরু হয় বিজ্ঞানের জয়যাত্রা। প্রস্তর যুগ, তাম্রযুগ, লৌহযুগ পেরিয়ে আজ সভ্যতা মহাকাশের যুগে এসে পড়েছে। সভ্যতা আর জীবনযাত্রার দ্রুত পরিবর্তনশীলতার ধারা অব্যাহত রয়েছে এই বিজ্ঞানের কল্যাণে। বিজ্ঞান এমন এক হাতিয়ার, যাকে মানুষ জীবনের নতুন নতুন ক্ষেত্রে প্রয়োগ করে সভ্যতার অগ্রগতিকে ত্বরান্বিত করেছে। জীবনধারণের মান উন্নয়নের জন্য নিত্যনতুন উপকরণ সৃষ্টি করেছে।
প্রতিদিনের জীবনে বিজ্ঞানের অবদান:
যে বিজ্ঞান সৃষ্টি হয়েছিল মানুষের আত্মরক্ষা এবং আত্মপ্রতিষ্ঠার প্রয়োজনে, আজ তা মানুষের প্রাত্যহিক জীবনের নিত্যসঙ্গী। দৈনন্দিন জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে বিজ্ঞানের অবদান আজ পরীক্ষিত সত্য। সুন্দরভাবে বেঁচে থাকার জন্য প্রতিটি উপকরণ, প্রতিটি উপাদান আজ মানুষ বিজ্ঞানের আশীর্বাদ হিসেবে লাভ করেছে। সকালে ঘুম থেকে উঠে দিন আরম্ভ করা থেকে পুনরায় শয্যাগ্রহণ পর্যন্ত জীবনযাত্রার প্রতিটি পদক্ষেপ আজ বিজ্ঞান-নিয়ন্ত্রিত। বলা যায়, জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত সকলে এখন বিজ্ঞানের মুখাপেক্ষী।
সুখস্বাচ্ছন্দ্য বিধানে বিজ্ঞান:
দৈনন্দিন জীবনে সর্বক্ষেত্রে আজ মানুষ বিজ্ঞানের দানে ধন্য ৷ গরমে বৈদ্যুতিক পাখার হাওয়া, শীতে উন্নতার ছোঁয়া, কর্মজীবনে ব্যবহারযোগ্য ঘড়ি, জুতো, কলম, পোশাক-পরিচ্ছদ, গৃহকর্ত্রীর শ্রম লাঘবকারী ফ্রিজ, গ্যাসের উনান, ব্যবসায়ী এবং ছাত্রদের সুবিধার জন্য হিসাবযন্ত্র, যন্ত্রগণক, বৈদ্যুতিক লিফট, গাড়ি চালানোর সুবিধার্থে স্বয়ংক্রিয় নির্দেশ ব্যবস্থা, দ্রুতগামী ভূগর্ভ রেল, বেতার, দূরদর্শন, সংবাদপত্র ইত্যাদি হাজারো স্বাচ্ছন্দ্যের উপকরণ বিজ্ঞানেরই অকুণ্ঠ দান।
অবসর বিনোদনে বিজ্ঞান:
মানুষের খেয়ে-পরে বেঁচে থাকার জৈব জীবনের ঊর্ধ্বে যে একটি তাৎপর্যময় জীবন আছে, তাকে লালন করার জন্য বিজ্ঞান দিয়েছে বেতার, দূরদর্শন, চলচ্চিত্রের মতো বিনোদন মাধ্যম। কর্মক্লান্ত মানুষ দিনের শেষে এইসব উপকরণ থেকে অবসরবিনোদনের সুযোগ পায়। মুক্তি পায় একঘেঁয়ে জীবনের অবসাদ থেকে।
চিকিৎসাক্ষেত্রে বিজ্ঞান:
চিকিৎসাবিজ্ঞানে দ্রুত উন্নতির জন্য মানুষ এখন বহু দুরারোগ্য ব্যাধি থেকে মুক্তি পাচ্ছে। দৃষ্টিহীন ফিরে পাচ্ছে দৃষ্টিশক্তি; বধির পাচ্ছে শ্রবণশক্তি। হৃদ্রোগীর হৃদ্যন্ত্রে পর্যন্ত কৃত্রিম সঞ্চালনযন্ত্র বসিয়ে আধুনিক শল্যচিকিৎসা অসাধ্যসাধন করে চলেছে। একমাত্র দুরারোগ্য ক্যানসার ছাড়া আর প্রায় সব রোগই এখন চিকিৎসায় পরাভূত। অপ্রকাশিত একটি সংবাদে জানা যায়, কানাডায় কর্মরত ভারতীয় চিকিৎসক বিজ্ঞানী ডক্টর পীযূষকান্তি লালা নাকি কোশ-বিকৃতির কারণ-নির্ণয় এবং প্রতিবিধানে প্রায় সাফল্য লাভ করে ক্যান্সার নির্মূল করার পথে অগ্রসর হয়েছেন।
খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধি ও পুষ্টিতে বিজ্ঞানের ভূমিকা:
কৃষিতে বৈজ্ঞানিক প্রযুক্তি প্রয়োগের ফলে পৃথিবীর বহুদেশ খাদ্য উৎপাদনে প্রায় স্বয়ম্ভরতা অর্জনে সক্ষম হয়েছে। এ ছাড়া বৈজ্ঞানিক প্রথায় খাদ্যদ্রব্যের পুষ্টি গুণ বাড়িয়ে দরিদ্র, রোগগ্রস্ত, শিশু ও বৃদ্ধদের পুষ্টিবৃদ্ধি সম্ভব হয়েছে। কম খরচে প্রোটিন সমৃদ্ধ খাদ্য উৎপাদনে বহু সংস্থা উল্লেখযোগ্য সাফল্য অর্জন করেছে।
বিজ্ঞানের ক্ষতিকর ও ধ্বংসাত্মক ক্ষমতা:
বিজ্ঞানের আবিষ্কার হয়েছিল মানুষের জীবনকে ভয় থেকে মুক্তি দিতে। কিন্তু বৈজ্ঞানিক প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে মানুষ আজ সভ্যতাকে ধ্বংস করার ক্ষমতা অর্জন করেছে। একদিকে তৈরি হচ্ছে মারাত্মক মারণাস্ত্র, অন্যদিকে বিজ্ঞানের সহায়তায় কারখানায় তৈরি হচ্ছে জীবনধ্বংসী ভেজাল খাদ্য ও ওষুধ। পৃথিবীর শক্তিমান রাষ্ট্রগুলি অত্যাধুনিক মারণাস্ত্র তৈরির প্রতিযোগিতায় নেমে বিশ্ববাসীকে সন্ত্রস্ত করে তুলেছে। ফলে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের আশঙ্কায় মানুষ প্রহর গুণছে।
বিজ্ঞানের সার্থকতা প্রতিপাদন:
বিজ্ঞান তো বিশুদ্ধ জ্ঞানপ্রক্রিয়া মাত্র। তাকে কাজে লাগিয়ে পৃথিবীর একশ্রেণির ক্ষমতালোভী রাজনৈতিক নেতা পৃথিবীকে নষ্ট করার খেলায় মেতেছেন। বিজ্ঞানকে তাঁরা বন্দি করে রেখেছেন তাদের কুটিল চক্রান্তের কারাগারে। কিন্তু বিজ্ঞানের সার্থকতা মানুষের কল্যাণে। প্রকৃতির নির্দয় অধীনতা থেকে মানুষকে মুক্ত করে বিজ্ঞানের জয়যাত্রা সূচিত হয়েছিল। সেই জয়যাত্রাকে অব্যাহত রেখে সভ্যতার মোহন মূর্তি অটুট রাখার দায়িত্ব বিজ্ঞানের নয় মানুষের।
উপসংহার:
সকলে মুখে বলে বিজ্ঞান সকলের জন্য। কিন্তু বিজ্ঞানের প্রভাবকে দৈনন্দিন জীবনে সকল মানুষের মধ্যে আজও ছড়িয়ে দেওয়া সম্ভব হয়নি। দরিদ্র সাধারণ মানুষ আজও বিজ্ঞানের নানান সুবিধা থেকে বঞ্চিত। অনেক গ্রামীণ পরিবেশে আজও বিদ্যুৎ পৌছায়নি। অন্যদিকে, দৈনন্দিন জীবনে বিজ্ঞানের আবিষ্কার স্বাচ্ছন্দ্য দিচ্ছে সত্য, কিন্তু তার অভিযান্ত্রিকতা মানুষের জীবনের স্বাভাবিক আনন্দকে নষ্ট করে দিচ্ছে। তাই ক্রমে সকলে ‘যন্ত্রমানব’ হয়ে উঠছে।
Also Read:
Download দৈনন্দিন জীবনে বিজ্ঞান প্রবন্ধ রচনা
File Details:-
File Format:- Pdf
Quality:- High
File Size:- 3 Mb
File Location:- Google Drive
Download: Click Here to Download
Also Read:
Others Important Link
Syllabus Link: Click Here
Question Paper Link: Click Here
Admit Card Link: Click Here
Result Link: Click Here
Latest Job: Click Here
Age Calculator: Click Here
Please do not share any spam link in the comment box