ভারতের মূর্ত প্রতীক রাজা রামমোহন রায় প্রবন্ধ রচনা PDF: বিভিন্ন পরীক্ষার জন্য ভারতের মূর্ত প্রতীক রাজা রামমোহন রায় প্রবন্ধ রচনা PDF একটি গুরুত্বপূর্ন বিষয়। তাই আমরা আপনাদের জন্য নিয়ে এসেছি ভারতের মূর্ত প্রতীক রাজা রামমোহন রায় প্রবন্ধ রচনা PDF. নিচে ভারতের মূর্ত প্রতীক রাজা রামমোহন রায় প্রবন্ধ রচনা PDF টি যত্নসহকারে পড়ুন ও জ্ঞানভাণ্ডার বৃদ্ধি করুন।
ভারতের মূর্ত প্রতীক রাজা রামমোহন রায় প্রবন্ধ রচনা
অনুরূপে: (১) আধুনিক ভারতের জনক।
ভূমিকা:
ঊনবিংশ-শতকে পাশ্চাত্য শিক্ষার বিস্তারের ফলে যে-সব মনীষী আধুনিক চিন্তা-চেতনা ও কর্মে সামাজিক কুসংস্কার ও কূপমণ্ডূকতার অবসান ঘটাতে নিজেদের নিয়োজিত করেছিলেন, তাঁদের মধ্যে রাজা রামমোহন রায় হলেন অগ্রগণ্য। ফারসি আরবি ও সংস্কৃতে সুপণ্ডিত রামমোহন ভারতবর্ষে ইংরেজি শিক্ষিতদের মধ্যে অগ্রণী ছিলেন। প্রাচ্য ও পাশ্চত্যে শিক্ষাচিন্তায় তার বিহার ছিল অনায়াস, স্বচ্ছন্দ। এই মহান মনীষী সম্পর্কে শ্রীমতী কোলেটের মন্তব্য অত্যন্ত শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণীয়- "Rammohan stand in History as the úniving bridge, over which India marches from her unmeasured past to her incaúcuúabúe frture". (S. D. Couuet: Life and Letter of Raja Rammohan', P- 79)
জন্ম, বংশপরিচয় ও শিক্ষা:
১৭৭২ (মতান্তরে ১৭৭৪) খ্রিস্টাব্দে হুগলি জেলার রাধানগর গ্রামে রামমোহন রায়ের জন্ম হয়। পিতা রামকান্ত, মাতা তারিণী দেবী। রামমোহনের পিতৃকূল ছিল নিষ্ঠাবান বৈষুব, কিন্তু তার মাতৃকুল শাক্ত। পিতামাতার এই ধর্মবিশ্বাসের চেতনা রামমোহনকে ধর্মের তাৎপর্য অনুসন্ধান করেছিল। তিনি আরবি ও ফারসি ৷ শেখার মাত্র জন্য নয় বছর বয়সে পাটনা যান। শিক্ষা সমাপনাস্তে সংস্কৃত ভাষা শিক্ষার উদ্দেশ্য কাশী গমন করেন। এই তিনটি ভাষা শিক্ষার ফলে তিনি ভারতীয় ব্রহ্মবাদ এবং ইসলামের একেশ্বরবাদের দ্বারা প্রভাবিত হন। বাংলাদেশের রংপুরের কালেক্টর জন ডিগবির কাছে কাজ করার সময়ে ইংরেজি শাসনকার্যের ভাষা হওয়াতে অল্পসময়ে তিনি ইংরেজনবিশ হয়ে ওঠেন।
রামমোহনের কর্মজীবন ও ধর্মসংস্কার:
১৮৫১ খ্রিস্টাব্দে ‘আত্মীয় সভা’ গঠন করে ধর্মের নামে কুসংস্কার ও গোঁড়ামি বিরুদ্ধে তিনি জেহাদ ঘোষণা করে করেন- “আমি কখনো হিন্দুধর্মকেআক্রমণ করিনি, আমি শুধু কুসংস্কার ও গোঁড়ামিকে আক্রমণ করেছি।” ১৮২৮ খ্রিস্টাব্দে তিনি একেশ্বরবাদ প্রচারের উদ্দেশে ‘ব্রায়সভা প্রতিষ্ঠা করেন। ১৯৩০ খ্রিস্টাব্দে এটি ‘ব্রাষ্মসমাজ’ নামে পরিচিত হয়। ফারসি ভাষায় লেখা তুহাফাত-উল-মুয়াহিদিন’ এবং ইংরেজি ভাষায় লেখা 'The percepts of Jesus' গ্রন্থদ্বয়ে তিনি হিন্দুধর্মের মাহাত্ম্য রক্ষা করেন। ১৮১৬ খ্রিস্টাব্দে ‘বেদান্তসার’ এবং ‘কঠ’ ‘কেন’, ‘ঈশ’, ‘মণ্ডূক’ ও এই পাঁচটি উপনিষদের বাংলা অনুবাদ করেন।
সমাজ সংস্কারক রূপে রামমোহন:
জাতির নবনজীবনে এক দরদি বাস্তববাদী সংস্কারক রূপে রাজা রামমোহন রায় জাতপাত, অস্পৃশ্যতা, বর্ণ প্রথা, পুরোহিত, প্রাধান্য, সতীদাহ প্রথা, বাল্যবিবাহ, গঙ্গাসাগরে সন্তান বিসর্জন ইত্যাদির তীব্র বিরোধিতা করেছিলেন। সামাজিক বৈষম্যের অবসান ঘটিয়ে জাতিধর্মবর্ণ, স্ত্রী-পুরুষ উচ্চনীচ নির্বিশেষে এক সুস্থ সাম্যবাদী সমাজগঠনের স্বপ্ন দেখেছিলেন। রামমোহনের ঐকান্তিক চেষ্টায় ১৮৯২ খ্রিস্টাব্দে "রেগুলেশন- XVII" আইন দ্বারা সতীপ্রথা নিষিদ্ধ হয়েছিল। পিতৃসম্পত্তিতে কন্যাদের পূর্ণ আইনগত অধিকাব স্থাপনের জন্য ১৮২২ খ্রিস্টাব্দে তিনি যাজ্ঞবল্ক্য ও ব্যাসস্মৃতি তুলে ধরে শাস্ত্রে এবং সম্পত্তিতে নারীর আইনগত অধিকারের স্বীকৃতি প্রতিষ্ঠিত করেছিলেন। জমিদারি অত্যাচার ও প্রজাপীড়নের বিরুদ্ধেও সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিলেন তিনি।
রামমোহনের শিক্ষাসংস্কার:
পাশ্চাত্যবাদী রামমোহন মনে করতেন জাতির সামগ্রিক উন্নতিতে পুথিগত জ্ঞান বা তাত্ত্বিকতার চেয়ে পাশ্চাত্য বিজ্ঞান, দর্শন, আইন, অর্থনীতি, রাষ্ট্রনীতির ওপর বিশেষভাবে জোর দেওয়া প্রয়োজন। ১৮২৩ খ্রিস্টাব্দে কলকাতার টাউন হলে এক বক্তৃতায় তিনি বলেছিলেন- “ভারতীয়দের মানসিক উৎকর্ষের জন্য ইউরোপীয় সান্নিধ্য খুব বেশি করে দরকার।” রামমোহনেরই সুবাদে ১৮৩০ খ্রিস্টাব্দে আলেকজান্ডার ডাফ কর্তৃক ‘জেনারেল অ্যাসেম্বলিজ ইন্সটিটিউশন’ (স্কটিশচার্চ কলেজ ) প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল।
রামমোহন রায়ের সাহিত্য জীবন:
রামমোহন রায়ের সাহিত্য জীবন প্রধানত উনিশ প্রধানত উনিশ শতকের দ্বিতীয় ও তৃতীয় দশক জুড়ে বিস্তৃত। কলকাতার বাস করার সময় বাংলাদেশে বেদান্ত চর্চার ক্ষীণ অবস্থা দেখে তিনি ১৮১৫ খ্রিস্টাব্দে ‘বেদান্তগ্রন্থ’ রচনা করেন। এ ছাড়া তার নিজকৃত ‘বেদান্ত-ভাষ্য’, প্রাচীন সংস্কৃত গ্রন্থ ‘বেদান্তসার’ (১৮১৫), ‘উপনিষদের অনুবাদ’ (১৮১৫-১৮১৯) প্রভৃতি উল্লেখযোগ্য। বুদ্ধি ও যুক্তির দীপ্তি, আবেগ ও সনাতনী মনোভাবের পিছুটান মুছে কুসংস্কার ও প্রথার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়ে রামমোহন নানা বিতর্কমূলক রচনা গড়ে তোলেন। যেমন- ‘ভট্টাচার্যের সহিত বিচার’ (১৮১৭), ‘উৎসবানন্দ বিদ্যাবাগীশের সহিত বিচার’ (১৮১৮), ‘পথ্যপ্ৰদান’ (১৮২৩) ইত্যাদি। তাঁর অন্যান্য রচনার মধ্যে ‘ব্রসংগীত’ (১৮২৮), ‘গৌড়ীয় ব্যাকরণ’ (১৮৩৩), 'সম্বাদকৌমুদী' বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।
বাংলা গদ্যে রামমোহন:
ফোর্ট উইলিয়ম কলেজের গদ্যচর্চার পরে বাংলা গদ্যে প্রথম দৃঢ়তা এনেছিলেন রামমোহন রায়। রবীন্দ্রনাথের মতে, তিনি গ্রানাইট শিলার ওপর রচনা গদ্যকে স্থাপন করেছিলেন। তর্কবির্তকের মধ্য দিয়ে রামমোহন বাংলা গদ্যকে করেছেন শানিত ও ব্যবহারিক। বাস্তবতা, যুক্তিনিষ্ঠা, পার্থিব ও অপার্থিব চিন্তা-চেতনার মধ্য দিয়ে রামমোহন বাংলা গদ্যে যে ভারবহন ক্ষমতা এনে দিয়েছিলেন, তা অনেকখানি ত্রুটিমুক্ত।
উপসংহার:
পাশ্চাত্য চিন্তায় প্রতিভাবান ব্যক্তিত রাজা রামমোহন রায়ই আধুনিক ভারতের প্রথম পথিকৃৎ। সাম্য, মৈত্রী ও স্বাধীনতার বরেণ্য পূজারি হিসেবে তিনিই ‘ভারতের আধুনিক মানুষ’ তথা নবযুগের প্রবর্তক। ১৮৩৩ খ্রিস্টাব্দে ২৭ সেপ্টেম্বর সুদূর ইংল্যান্ডের ব্রিস্টল শহরে তাঁর জীবনবাতি নির্বাপিত হয়। উনিশ শতকের নবজাগরণের মূর্ত প্রতীক হিসেবে, পুরুষাকারের জীবন্ত প্রতীক হিসেবে, সমাজসংস্কারক হিসেবে রাজা রামমোহন রায় আমাদের মাঝে অমর হয়ে থাকবেন।
Also Read:
Download ভারতের মূর্ত প্রতীক রাজা রামমোহন রায় প্রবন্ধ রচনা
File Details:-
File Format:- Pdf
Quality:- High
File Size:- 3 Mb
File Location:- Google Drive
Download: Click Here to Download
Also Read:
Others Important Link
Syllabus Link: Click Here
Question Paper Link: Click Here
Admit Card Link: Click Here
Result Link: Click Here
Latest Job: Click Here
Age Calculator: Click Here
Please do not share any spam link in the comment box