মাধ্যমিকের বাংলা আশাপূর্ণা দেবীর জ্ঞানচক্ষু প্রশ্ন ও উত্তর - Gyanchokkhu by Ashapurna Devi Questions and Answers

আশাপূর্ণা দেবীর জ্ঞানচক্ষু প্রশ্ন ও উত্তর: মাধ্যমিক বাংলা প্রশ্ন উত্তর (Madhyamik Bengali Question Answer): প্রতিবছর মাধ্যমিক বাংলা পরীক্ষায় মাধ্যমিক বাংলা সাজেশন (Madhyamik Bengali Suggestion) থেকে অনেক প্রশ্ন আসে। তাই আমরা আপনাদের জন্য নিয়ে এসেছি মাধ্যমিক বাংলা সিলেবাসের আশাপূর্ণা দেবীর "জ্ঞানচক্ষু" র সমস্ত প্রশ্নোত্তর। 

এখানে মাধ্যমিক বাংলা ‘জ্ঞানচক্ষু’ গল্পের প্রশ্ন উত্তর যেমন বহু বিকল্প ভিত্তিক প্রশ্ন (MCQ), অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্ন (SAQ), সংক্ষিপ্ত উত্তরভিত্তিক প্রশ্ন এবং রচনাধর্মী প্রশ্নগুলি তুলে ধরা হল। যে গুলি পশ্চিমবঙ্গ মাধ্যমিক বাংলা পরীক্ষার জন্য খুব গুরুত্বপূর্ন। নিচে Gyanchokkhu by Ashapurna Devi  ‘জ্ঞানচক্ষু’ গল্পের MCQ, SAQ প্রশ্ন উত্তর গুলি যত্ন সহকারে পড়ুন ও জ্ঞানভাণ্ডার বৃদ্ধি করুন।

মাধ্যমিকের বাংলা আশাপূর্ণা দেবীর জ্ঞানচক্ষু প্রশ্ন ও উত্তর - Gyanchokkhu by Ashapurna Devi Questions and Answers





মাধ্যমিকের বাংলা আশাপূর্ণা দেবীর জ্ঞানচক্ষু প্রশ্ন ও উত্তর - Gyanchokkhu by Ashapurna Devi Questions and Answers



জ্ঞানচক্ষু - আশাপূর্ণা দেবী

‘জ্ঞানচক্ষু’ গল্পটি প্রখ্যাত সাহিত্যিক আশাপূর্ণা দেবীর ‘কুমকুম’ গল্প সংকলন থেকে গৃহিত হয়েছে। আলোচ্য পোস্টে আশাপূর্ণা দেবীর ‘জ্ঞানচক্ষু’ গল্পের গুরুত্বপূর্ণ বহু বিকল্প ভিত্তিক প্রশ্ন (MCQ), অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্ন (SAQ), সংক্ষিপ্ত উত্তরভিত্তিক প্রশ্ন এবং রচনাধর্মী প্রশ্নগুলি তুলে ধরা হল।



জ্ঞানচক্ষু গল্পের লেখক পরিচিতি

জন্ম এবং শৈশব: ১৯০৯ খ্রিস্টাব্দের ১৮ জানুয়ারি উত্তর কলকাতার এক রক্ষণশীল পরিবারে আশাপূর্ণা দেবীর জন্ম হয়। তাঁর আদি বাড়ি ছিল হুগলির বেগমপুরে। কোনাে স্কুল কলেজে আশাপূর্ণা দেবীর পড়ার সুযােগ হয়নি। মাত্র পনেরাে বছর বয়সে কালিদাস গুপ্তের সঙ্গে আশাপূর্ণা দেবীর বিয়ে হয়। দীর্ঘজীবনে একজন গৃহবধু ও মায়ের ভূমিকা পালনের পাশাপাশি তিনি বহু অনবদ্য সাহিত্য সৃষ্টি করেছেন।

কর্মজীবন ও সাহিত্যজীবন: তেরাে বছর বয়সে তার প্রথম লেখা শিশুসাথী পত্রিকায় ছাপা হয়। তার প্রথম প্রকাশিত বই ছােট ঠাকুরদার কাশীযাত্রা (১৯৩৮)। তাঁর প্রথম উপন্যাস প্রেম ও প্রয়ােজন (১৯৪৪)। তার লেখায় মধ্যবিত্ত পুরুষ ও নারী চরিত্র নানা মহিমায় প্রকাশ পেয়েছে। আশাপূর্ণা দেবী আধুনিক মেয়েদের কথা বলেছেন। কিন্তু আধুনিকতার বিলাসীদের প্রশ্রয় দেননি। তাঁর লেখা একদিকে যেমন বাঙালি নারীদের উজ্জীবিত করেছে, অন্যদিকে তেমনই পুরুষদের মানসিকতার দিকটিও তুলে ধরেছে। তিনি বিরামহীনভাবে সত্তর বছরেরও বেশি বয়স পর্যন্ত লিখে গিয়েছেন। সহজ কথাটা সহজে বলার মতাে কঠিন কাজটাই আশাপূর্ণা দেবী আজীবন ধরে করে গেছেন। লেখা দেওয়ার ব্যাপারে কাউকে তিনি কখনও বিমুখ করতে পারতেন না। তাঁর এই বিশেষ স্বভাবটির জন্য কাগজের লােকেরা সবসময়ই তাঁর শরণাপন্ন হতেন। তাঁর প্রকাশিত বইয়ের মধ্যে রয়েছে ১৭৬টি উপন্যাস, ৩০টি ছােটোগল্প সংকলন, ৪৭টি ছােটোদের বই, ২৫টি অন্যান্য সংকলন। বিভিন্ন ভারতীয় ভাষায় তার ৬৩টি গ্রন্থ অনূদিত হয়েছে। তাঁর রচিত ট্রিলজি প্রথম প্রতিশ্রুতি, সুবর্ণলতা, বকুলকথায় তিনি নারী সমাজের আশা-আকাঙ্ক্ষা ও দুঃখ বেদনার কথা বলেছেন।

পুরস্কার: প্রথম প্রতিশ্রুতি গ্রন্থের জন্য ১৯৭৮ খ্রিস্টাব্দে তিনি দেশের সর্বোচ্চ সাহিত্য সম্মান জ্ঞানপীঠ পুরস্কার লাভ করেন। এ ছাড়াও সাহিত্যকৃতির জন্য তিনি পেয়েছেন রবীন্দ্র পুরস্কার’, ‘সাহিত্য অকাদেমি পুরস্কার, বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিলিট ডিগ্রি ও সরকারি খেতাব।

মৃত্যু: ১৯৯৫ খ্রিস্টাব্দের ১৩ জুলাই তাঁর দেহাবসান হয়।

উৎস: আশাপূর্ণা দেবী রচিত কুমকুম গল্পসংকলন থেকে জ্ঞানচক্ষু’ গল্পটি গৃহীত হয়েছে। 



জ্ঞানচক্ষু গল্পের বিষয়সংক্ষেপ

আশাপূর্ণা দেবী রচিত ‘জ্ঞানচক্ষু’ গল্পে আমরা তপন নামের একজন ছােটো ছেলের কথা পাই, যার কাছে লেখকমাত্রেই ধরাছোঁয়ার বাইরের কোনাে মানুষ। তারা যে আর পাঁচজন মানুষের মতােই সাধারণভাবে জীবন যাপন করেন, সেটা তপনের ধারণাতেই ছিল না। কিন্তু তপনের এই ধারণা ভেঙে যায় যখন সে শােনে তার সদ্যবিবাহিতা ছােটোমাসির স্বামী, অর্থাৎ তার নতুন মেসােমশাই একজন সত্যিকার লেখক'। সে এই দেখে আশ্চর্য হয়ে যায় যে, লেখক হওয়া সত্ত্বেও তিনি তপনের বাবা, ছােটোমামা বা মেজোকাকুর মতাে সিগারেট খান, দাড়ি কামান, ঘুমােন কিংবা স্নান করেন। 

ছােটোমাসির বিয়ে উপলক্ষ্যে মামাবাড়িতে এসেছে তপন। তার অধ্যাপক ছােটো মেসাে মশাইয়েরও কলেজ ছুটি থাকায় তিনিও শ্বশুরবাড়িতে রয়ে গিয়েছিলেন কিছুদিন। এই সময়ই তপন তার প্রথম গল্পটি লিখে ফেলে। তপনের গল্প লেখার কথা জানতে পেরে তার ছােটোমাসি গল্পখানি একরকম জোর করেই তুলে দেয় ছােটোমেসাের হাতে। তিনি গল্পটির প্রশংসা করেন এবং সন্ধ্যাতারা পত্রিকায় তা ছাপানাের প্রতিশ্রুতি দেন। এরপর বাড়ির লােকজনের ঠাট্টা ও ইয়ার্কির মধ্যেই তপন তার লেখা গল্পটি ছাপার অক্ষরে দেখতে পাওয়ার আশায়। দিন গুনতে থাকে। এরমধ্যে তপন আরও দু-তিনটি নতুন গল্প লিখে ফেলে।

এদিকে দিন চলে যায়, তপনের লেখা গল্পটি প্রকাশিত হয় না। এ বিষয়ে সে যখন হাল প্রায় ছেড়েই দিয়েছে তখনই একদিন তার বাড়িতে ছােটোমাসি ও মেসাের আগমন হয় সন্ধ্যাতারা পত্রিকা হাতে নিয়ে। সেখানে সে নিজের চোখে দেখে, লেখকসূচিতে তার নাম প্রকাশিত হয়েছে—প্রথম দিন’ (গল্প), শ্ৰতিপন কুমার রায়। মেলােমশাই অবশ্য জানিয়ে দেন যে কাঁচা হাতের লেখা হওয়ার জন্য তপনের লেখাটিতে তাকে কিছু সংশােধন করতে হয়েছে। একসময় দেখা যায়, তপনের কৃতিত্বের পুরােটাই যেন চাপা পড়ে গেছে তার মেসসার কৃতিত্বের আড়ালে। 

তপনের দুঃখ পাওয়ার অবশ্য এখানেই শেষ নয়। গল্পটি পড়তে গিয়ে সে দেখে কারেকশানের নামে তার: লেখক মেসাে গল্পটি আগাগােড়াই পালটে ফেলেছেন। গল্পের প্রতিটি বাক্যই তপনের কাছে ঠেকেছে নতুনের মতাে। সে কিছুতেই গােটা গল্পটির সঙ্গে নিজেকে লেখক হিসেবে মেলাতে পারে না। গভীর দুঃখ ও হতাশায় তপন সংকল্প করে, এরপর যদি কখনও পত্রিকায় লেখা ছাপতে দিতে হয়, তাহলে সে নিজেই গিয়ে সেটা দেবে। কখনােই সে আর অন্যের কৃতিত্বের ভাগীদার হবে না। আর এভাবেই সাহিত্যিক বা লেখক এবং সাহিত্যসৃষ্টি সম্পর্কে তপনের জ্ঞানচক্ষু খুলে যায়।



জ্ঞানচক্ষু গল্পের নামকরণ

যে-কোনাে সাহিত্যকর্মের নামকরণ করা হয় বিষয়বস্তু, চরিত্র বা ভাব অনুযায়ী, আবার কখনও তা হয় ব্যঞ্জনাধর্মী। যে-কোনাে সাহিত্যসৃষ্টির জীবনযাপন—এই সত্য উপলদ্ধি করেছে তপন। তপনের লেখা প্রথম ক্ষেত্রেই নামকরণ একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। ‘জ্ঞানচক্ষু’ গল্পের নামকরণটি মূলত ব্যঞ্জনাধর্মী। জ্ঞানচক্ষু’ কথাটির অর্থ হল অন্তদৃষ্টি বা জ্ঞানরুপ দৃষ্টি। এই গল্পের একেবারে শেষ পর্যায়ে দেখা যায় তপন চরিত্রটির প্রকৃত জ্ঞানচক্ষুর উন্মীলন হয়েছে। এই গল্পে প্রাথমিকভাবে তপনের জ্ঞানচক্ষুর উন্মােচন ঘটেছে যখন প্রথমবার সে তার লেখক ছােটো মেসােকে দেখেছে। লেখকরা যে অন্য জগতের বাসিন্দা নন, বাস্তবের চেনা মানুষদের মতােই তাদের গল্পটি নতুন মেলােমশাই অর্থাৎ ছােটোমেসাে কিছু সংশােধন করে সন্ধ্যাতারা পত্রিকায় ছাপিয়ে দেন। কিন্তু ছাপার অক্ষরে নিজের লেখাটি সকলের সামনে পড়তে গিয়ে তপন মনে খুব আঘাত পায়। কারণ সে বুঝতে পারে, মেলােমশাই সংশােধনের নামে পুরাে লেখাটাই বদলে দিয়েছেন। সেটাকে আর নিজের বলে চিনতেই পারে না তপন। লজ্জায়, অপমানে, দুঃখে সে যেন মাটিতে মিশে যায়। নিজের গল্প পড়তে বসে, অন্যের লেখা লাইন পড়তে গিয়ে তপনের ভিতরে গ্লানিবােধ জেগে ওঠে। সে সংকল্প করে, লেখা যদি ছাপতেই হয় তাহলে পত্রিকা দফতরে নিজে গিয়ে তা দিয়ে আসবে। নিজের সেই লেখাটি না ছাপলেও দুঃখ থাকবে না তার। সেখানে তপনেরই নিজস্বতা থাকবে, অন্য কেউ সেই কৃতিত্বের ভাগীদার হবে না। এভাবেই আত্মমর্যাদা ও নিজের লেখার প্রতি অধিকারবােধ তপনের জ্ঞানচক্ষুর উন্মেষ ঘটিয়েছে। তাই বলা যায়, গল্পের ‘জ্ঞানচক্ষু নামকরণটি যথাযথ হয়েছে।



জ্ঞানচক্ষু MCQ প্রশ্নোত্তর - জ্ঞানচক্ষু গল্পের MCQ প্রশ্নোত্তর (বহু বিকল্পভিত্তিক প্রশ্নোত্তর)

১. তপনের লেখা গল্প তার মেসোমশাইকে কে দিয়েছিল?

(ক) মা 

(খ) বড়োমাসি 

(গ) ছোটোমাসি 

(ঘ) বাবা

উত্তরঃ (গ) ছোটোমাসি


২. কাকে দেখে তপনের চোখ মার্বেলের মতন হয়ে গেল?

(ক) দিদি 

(খ) নতুন মেসোমশাই 

(গ) বাবা 

(ঘ) নতুন পিসেমশাই

উত্তরঃ (খ) নতুন মেসোমশাই


৩. নতুন মেসাে মশাই ছিলেন একজন-

(ক) লেখক 

(খ) গায়ক 

(গ) শিক্ষক 

(ঘ) কোনোটিই নয়

উত্তরঃ (ক) লেখক


৪. “ছোটোমাসি সেই দিকেই ধাবিত হয়।” ছোটোমাসি ধাবিত হয়—

(ক) ছোটোমেসোর দিকে 

(খ) রান্নাঘরের দিকে 

(গ) তপনের দিকে 

(ঘ) ছাদের দিকে

 উত্তরঃ (ক) ছোটোমেসোর দিকে।


৫. তপনের কোন্ মেসোমশাই বই লেখেন?

(ক) বড়ো মেসোমশাই 

(খ) ছোটো মেসোমশাই 

(গ) মেজো মেসোমশাই

 (ঘ) সেজো মেসোমশাই

উত্তরঃ (খ) ছোটো মেসোমশাই


৬. তপনের ছোটোমেসো ‘এদেশের কিছু হবে না’ বলে মন্তব্য করে কী দেখতে চলে যান?

(ক) তাজমহল 

(খ) চিড়িয়াখানা 

(গ) জাদুঘর 

(ঘ) সিনেমা

উত্তরঃ (ঘ) সিনেমা


৭. তপনের ছোটোমেসো কী উপলক্ষ্যে শ্বশুরবাড়িতে এসেছেন?

(ক) পৈতে 

(খ) বিয়ে 

(গ) অন্নপ্রাশন 

(ঘ) শ্রাদ্ধ

উত্তরঃ (খ) বিয়ে


৮. তপনের লেখা গল্পটি নিয়ে কে চলে গিয়েছিলেন?

(ক) তপনের মেসোমশাই 

(খ) তপনের ছোটোমাসি 

(গ) তপনের মা 

(ঘ) তপনের বাবা

উত্তরঃ (গ) তপনের মা


৯. তপন কটা গল্প লিখেছিল?

(ক) একটা 

(খ) দুটো

(গ) চারটে 

(ঘ) তিনটে

উত্তরঃ (খ) দুটো


১০. ছোটো মেসোমশাই তপনের গল্প হাতে পেয়ে কী বলেছিলেন?

(ক) আর-একটা লেখার কথা 

(খ) আরও দুটো গল্প দেওয়ার কথা

(গ) এই গল্পটাই একটু কারেকশান করার কথা 

(ঘ) কোনোটাই নয়

উত্তরঃ (গ) এই গল্পটাই একটু কারেকশান করার কথা


১১. তপন বিয়েবাড়িতে কী নিয়ে এসেছিল?

(ক) ব্যাট ও বল 

(খ) গল্পের বই 

(গ) গানের খাতা 

(ঘ) হোমটাস্কের খাতা

উত্তরঃ (ঘ) হোমটাস্কের খাতা


১২. তপন তার গল্পটা লিখেছিল—

(ক) দুপুরবেলা 

(খ) সন্ধ্যেবেলা 

(গ) বিকেলবেলা 

(ঘ) গভীর রাতে

উত্তরঃ (ক) দুপুরবেলা


১৩. কোন পত্রিকায় তপনের লেখা ছাপা হয়েছিল?

(ক) ধ্রুবতারা 

(খ) ভারতী 

(গ) সাহিত্যচর্চা 

(ঘ) সন্ধ্যাতারা

উত্তরঃ (ঘ) সন্ধ্যাতারা


১৪. তপনের লেখা গল্পটার নাম কি ছিল—

(ক) ছুটি 

(খ) অবসর 

(গ) প্রথম দিন 

(ঘ) কোনোটাই নয়

উত্তরঃ (গ) প্রথম দিন


১৫. সারা বাড়িতে শোরগোল পড়ে যাওয়ার কারণ

(ক) তপনের ছেটোমাসির বিয়ে 

(খ) তপনের গল্প পত্রিকায় ছাপা হয়েছে 

(গ) তপন পরীক্ষায় প্রথম হয়েছে 

(ঘ) সবগুলি সঠিক

উত্তরঃ (খ) তপনের গল্প পত্রিকায় ছাপা হয়েছে


১৬. তপনের লেখা গল্প তার মেসোমশাইকে কে দিয়েছিল?

(ক) মা 

(খ) বড়োমাসি 

(গ) ছোটোমাসি 

(ঘ) বাবা

উত্তরঃ (গ) ছোটোমাসি


১৭. কাকে দেখে তপনের চোখ মার্বেলের মতন হয়ে গেল?

(ক) দিদি 

(খ) নতুন মেসোমশাই 

(গ) বাবা 

(ঘ) নতুন পিসেমশাই

উত্তরঃ (খ) নতুন মেসোমশাই


১৮. নতুন মেসোমশাই ছিলেন একজন-

(ক) লেখক 

(খ) গায়ক 

(গ) শিক্ষক 

(ঘ) কোনোটিই নয়

উত্তরঃ (ক) লেখক


১৯. “ছোটোমাসি সেই দিকেই ধাবিত হয়।”ছোটোমাসি ধাবিত হয়—

(ক) ছোটোমেসোর দিকে 

(খ) রান্নাঘরের দিকে 

(গ) তপনের দিকে 

(ঘ) ছাদের দিকে

উত্তরঃ (ক) ছোটোমেসোর দিকে 


২০. তপনের কোন্ মেসোমশাই বই লেখেন?

(ক) বড়ো মেসোমশাই 

(খ) ছোটো মেসোমশাই 

(গ) মেজো মেসোমশাই 

(ঘ) সেজো মেসোমশাই

উত্তরঃ (খ) ছোটো মেসোমশাই


২১. তপনের ছোটোমেসো ‘এদেশের কিছু হবে না’ বলে মন্তব্য করে কী দেখতে চলে যান?

(ক) তাজমহল

(খ) চিড়িয়াখানা 

(গ) জাদুঘর 

(ঘ) সিনেমা

উত্তরঃ (ঘ) সিনেমা


২২. তপনের ছোটোমেসো কী উপলক্ষ্যে শ্বশুরবাড়িতে এসেছেন?

(ক) পৈতে 

(খ) বিয়ে 

(গ) অন্নপ্রাশন 

(ঘ) শ্রাদ্ধ

উত্তরঃ (খ) বিয়ে


২৩. তপনের লেখা গল্পটি নিয়ে কে চলে গিয়েছিলেন?

(ক) তপনের মেসোমশাই 

(খ) তপনের ছোটোমাসি 

(গ) তপনের মা 

(ঘ) তপনের বাবা

উত্তরঃ (গ) তপনের মা


২৪. তপন কটা গল্প লিখেছিল?

(ক) একটা 

(খ) দুটো

(গ) চারটে 

(ঘ) তিনটে

উত্তরঃ (খ) দুটো


২৫. ছোটো মেসোমশাই তপনের গল্প হাতে পেয়ে কী বলেছিলেন?

(ক) আর-একটা লেখার কথা

(খ) আরও দুটো গল্প দেওয়ার কথা

(গ) এই গল্পটাই একটু কারেকশান করার কথা 

(ঘ) কোনোটাই নয়

উত্তরঃ (গ) এই গল্পটাই একটু কারেকশান করার কথা


২৬. তপন বিয়েবাড়িতে কী নিয়ে এসেছিল?

(ক) ব্যাট ও বল 

(খ) গল্পের বই 

(গ) গানের খাতা 

(ঘ) হোমটাস্কের খাতা

উত্তরঃ (ঘ) হোমটাস্কের খাতা


২৭. তপন তার গল্পটা লিখেছিল—

(ক) দুপুরবেলা 

(খ) সন্ধ্যেবেলা 

(গ) বিকেলবেলা 

(ঘ) গভীর রাতে

উত্তরঃ (ক) দুপুরবেলা


২৮. কোন পত্রিকায় তপনের লেখা ছাপা হয়েছিল?

(ক) ধ্রুবতারা 

(খ) ভারতী 

(গ) সাহিত্যচর্চা 

(ঘ) সন্ধ্যাতারা

উত্তরঃ (ঘ) সন্ধ্যাতারা


২৯. তপনের লেখা গল্পটার নাম কি ছিল—

(ক) ছুটি 

(খ) অবসর 

(গ) প্রথম দিন 

(ঘ) কোনোটাই নয়

উত্তরঃ (গ) প্রথম দিন


৩০. সারা বাড়িতে শোরগোল পড়ে যাওয়ার কারণ-

(ক) তপনের ছেটোমাসির বিয়ে 

(খ) তপনের গল্প পত্রিকায় ছাপা হয়েছে 

(গ) তপন পরীক্ষায় প্রথম হয়েছে 

(ঘ) সবগুলি সঠিক

উত্তরঃ (খ) তপনের গল্প পত্রিকায় ছাপা হয়েছে



জ্ঞানচক্ষু অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর - জ্ঞানচক্ষু গল্পের SAQ অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর - দশম শ্রেনীর জ্ঞানচক্ষু গল্পের প্রশ্ন উত্তর

১. তপনের গল্প পড়ে ছােটোমাসি কী বলেছিলেন?

উত্তরঃ তপনের গল্প পড়ে ছোটোমাসি প্রশংসা করেছিল এবং একইসঙ্গে সন্দেহ বশত জিজ্ঞেস করেছিল যে, সে গল্পখানা কারো নকল করে লেখেনি তো।

২.কোন কথা শুনে তপনের চোখ মার্বেল হয়ে গিয়েছিল?

উত্তরঃ তপনের নতুন মেসোমশাই একজন লেখক- একথা শুনে তপনের চোখ মার্বেল হয়ে গিয়েছিল।

৩. তপনের লেখা কোন গল্প ততক্ষণে ছােটোমেসোর হাতে চলে গেছে?

উত্তরঃ তপনের বিদ্যালয়জীবনের প্রথম দিনের অভিজ্ঞতাকে অবলম্বন করে লেখা গল্প ‘প্রথমদিন’।

৪. ‘মেসােকে দেখে জ্ঞানচক্ষু খুলে গেল তপনের’- কেন এমন উক্তি?

উত্তরঃ তপনের ধারণা ছিল যে লেখকরা অন্য জগতের মানুষ। সেইজন্য তার লেখক-মেসোকে দেখে তার জ্ঞানচক্ষু খুলে গিয়েছিল।

৫. ‘মেসাের উপযুক্ত কাজ হবে সেটা’ – কোন কাজের কথা বলা হয়েছে?

উত্তরঃ তপনের লেখা গল্পটা কোনো পত্রিকায় ছাপিয়ে দেওয়ার কথা বলা হয়েছে।

৬. ‘তপনের হাত আছে’ – এমন বলার কারণ কী?

উত্তরঃ তপনের বয়সী ছেলেরা গল্প লিখলে হয় রাজা রানীর গল্প লেখে, না হয় খুন-জখম, অ্যাক্সিডেন্ট ইত্যাদি বিষয়ে। তপন নিজের বিদ্যালয় জীবনের প্রথম দিনের অভিজ্ঞতাকে অবলম্বন করে গল্প লিখেছিল। তাই একথা বলা হয়েছে।

৭. ‘দুপুরবেলা সবাই যখন নিথর নিথর’ তখন তপন কী করছিল?

উত্তরঃ তখন তপন আস্তে আস্তে একটি খাতা আর কলম নিয়ে তিনতলার সিঁড়িতে উঠে গিয়ে গল্প লিখতে শুরু করল।

৮. ‘এমন সময় ঘটল সেই ঘটনা।’ – কোন ঘটনার কথা বলা হয়েছে?

উত্তরঃ ঘটনাটি হল- তপনের ছোটোমাসি আর মেসো তাদের বাড়িতে বেড়াতে এসেছিল এবং মেসোর হাতে ছিল এক সংখ্যা ‘সন্ধ্যাতারা’।

৯. তপনের লেখা গল্পের বিষয় কী ছিল?

উত্তরঃ তপনের লেখা গল্পের বিষয় ছিল তার বিদ্যালয়-জীবনের প্রথম দিন অর্থাৎ ভর্তির দিনের অভিজ্ঞতা।

১০. ‘পৃথিবীতে এমন অলৌকিক ঘটনাও ঘটে?’ – কোন ঘটনাকে অলৌকিক বলা হয়েছে?

উত্তরঃ তপনের লেখা গল্প মুদ্রিত হয়ে হাজার হাজার ছেলের হাতে ঘুরবে- এটাই তপনের মতে অলৌকিক ঘটনা।

১১. গল্প ছাপার পর যে আহ্লাদ হওয়ার কথা তা তপনের হয়নি কেন?

উত্তরঃ কারণ, তপনের লেখা ছাপানোর পুরো কৃতিত্বটা মেসোকে দেওয়া হচ্ছিল।

১২. ‘আমাদের থাকলে আমরাও চেষ্টা করে দেখতাম৷’ – কেন এমন মন্তব্য?

উত্তরঃ তপনের মেজোকাকুর মতে, ছোটোমেসোর কারেকশনের জন্যই তপনের গল্পটি ছাপানো হয়েছিল। তাই তিনি বলেছিলেন যে ওইরকম একটি লেখক মেসো থাকলে তারাও লেখক হবার চেষ্টা করতেন।

১৩. “এর মধ্যে তপন কোথা?” – কেন এমন বলা হয়েছে?

উত্তরঃ তপনের লেখা গল্পটি কারেকশন করতে গিয়ে নতুন মেসোমশাই গল্পের আগাগোড়া পাল্টে ফেলেছিলেন এবং গল্পের প্রতিটি লাইন তপনের কাছেই আনকোরা মনে হয়েছিল। তাই এমন বলা হয়েছে।

১৪. ‘বাবা, তাের পেটে পেটে এত!’ – কেন এই উক্তি?

উত্তরঃ তপনের লেখা গল্প ‘সন্ধ্যাতারা’ পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছিল। এজন্য তপনের মা তার সন্তানের প্রশংসা করে এই কথা বলেছিল।

১৫. ‘গভীরভাবে সংকল্প করে তপন।’ – কী সংকল্প করে?

উত্তরঃ তপন সংকল্প করেছিল যে, যদি কখনো সে তার লেখা ছাপতে দেয় তো নিজে গিয়ে দেবে।

১৬. ‘গায়ে কাঁটা দিয়ে উঠলো তপনের’- তপনের গায়ে কাঁটা দেওয়ার কারণ কী?

উত্তরঃ নিজের লেখা গল্প পড়েই তপনের গায়ে কাঁটা দিয়ে উঠেছিল।

১৭. ‘যেন নেশায় পেয়েছে’- কাকে কোন নেশায় পেয়েছিল?

উত্তরঃ তপনকে গল্প লেখার নেশায় পেয়েছিল।

১৮. প্রথম গল্পটি লেখার পর তপন তার বাড়িতে কী কী নতুন নাম পেয়েছিল?

উত্তরঃ কবি, সাহিত্যিক, কথাশিল্পী।

১৯. ‘রত্নের মূল্য জহুরির কাছেই’- একথা কেন বলা হয়েছে?

উত্তরঃ তপনের নতুন মেসো একজন লেখক, তাই তপনের লেখার প্রকৃত মূল্য তিনিই বুঝবেন।

২০. ‘সূচিপত্রেও নাম রয়েছে’- কী নাম ছিল?

উত্তরঃ ‘প্রথমদিন’ (গল্প) শ্রীতপন কুমার রায়।

২১. তপনের গল্প পড়ে ছোট মাসি কী বলেছিল ? [মাধ্যমিক-২০১৭]

উত্তরঃ তপনের লেখা গল্পটির পুরোটা না পড়ে তার প্রশংসা করেন এবং গল্পটি কোথাও থেকে নকল করেছে কি না তা জিজ্ঞাসা করেন ।

২২.”সূচীপত্রেও নাম রয়েছে”— সূচীপত্রে কী লেখা ছিল ?

উত্তরঃ সূচীপত্রে লেখা ছিল ‘প্রথম দিন’ (গল্প) শ্রীতপনকুমার রায় ।

২৩ . “একটু ‘কারেকশন’ করে ইয়ে করে দিলে ছাপাতে দেওয়া চলে ।” — কে কী ছাপানোর কথা বলেছেন ? [মাধ্যমিক-২০১৮]

উত্তরঃ তপনের নতুন মেসোমশাই, যিনি একজন অধ্যাপক ও লেখক, তিনি ‘প্রথমদিন’ নাম তপনের লেখা প্রথম গল্পটি ছাপানোর কথা বলেছেন ।

২৪. “এ বিষয়ে সন্দেহ ছিল তপনের” — কোন বিষয়ে তপনের সন্দেহ ছিল ?

উত্তরঃ একজন লেখকও যে সাধারণ মানুষের মতো হতে পারে, তাদের আচরণও আর পাঁচটা সাধারণ মানুষের মতোই হয়ে থাকে, সেই বিষয়ে তপনের সন্দেহ ছিল ।

২৫. “মেসোর উপযুক্ত কাজ হবে সেটা” — কোন কাজকে ‘মেসোর উপযুক্ত কাজ’ বলে ছোটোমাসি মনে করেন ?

উত্তরঃ তপন একটা গল্প লিখেছিল । তার লেখক মেসোমশাই সেই গল্প সন্ধ্যাতারা পত্রিকায় ছাপার ব্যবস্থা করে দিলে সেটাই মেসোর উপযুক্ত কাজ হবে বলে ছোটোমাসি মনে করেন ।

২৬. “অনেক বই ছাপা হয়েছে” — কার অনেক বই ছাপা হয়েছে ?

উত্তরঃ তপনের লেখক ছোটোমেসোর অনেক বই ছাপা হয়েছে ।

২৭. লেখার প্রকৃত মূল্য কে বুঝবে বলে তপন মনে করেছিল ?

উত্তরঃ তপনের লেখক ছোটোমেসোই তার লেখার প্রকৃত মূল্য বুঝবেন বলে তপন মনে করেছিল ।

২৮. “লেখার প্রকৃত মূল্য বুঝলে নতুন মেসোই বুঝবে ।” —লেখার প্রকৃত মূল্য কেবল নতুন মেসোই বুঝবেন কেন ?

উত্তরঃ তপনের নতুন মেসো একজন নামকরা লেখক । তাই লেখক মানুষ হিসেবে তিনিই তপনের লেখার প্রকৃত মূল্য বুঝবেন ।

২৯. সন্ধ্যাতারা পত্রিকায় লেখা ছাপা প্রসঙ্গে তপনর মেসোমশাই কী বলেছিলেন ?

উত্তরঃ সন্ধ্যাতারা পত্রিকার সম্পাদক ছিলেন তপনের মেসোমশাইয়ের পরিচিত । তপনের লেখা দেখে মেসোমশাই বলেছিলেন, তিনি যদি সন্ধ্যাতারা পত্রিকার সম্পাদককে লেখা ছাপানোর কথা বলেন তাহলে সম্পাদকমশাই না বলতে পারবেন না ।

৩০. “তবে তপনেরই বা লেখক হতে বাধা কী ?” —তপনের লেখক হতে বাধা ছিল কেন ?

উত্তরঃ তপন মনে করত লেখকরা তার মতো সাধারণ মানুষ নয়, তাঁরা হয়তো অন্য গ্রহের জীব । নতুন মেসোকে দেখে তপন বুঝতে পারল তিনি আর পাঁচজনের মতোই সাধারণ মানুষ, আকাশ থেকে পড়া কোনো জীব নন । তাই তপনেরও লেখক হতে কোনো বাধা নেই ।

৩১. তপনের লেখা গল্প দেখে তার ছোটোমেসো কী বলেছিলেন ?

উত্তরঃ তপনের লেখা গল্প দেখে তার ছোটোমেসো বলেছিলেন যে গল্পটা ভালোই হয়েছে । শুধু একটু সংশোধন করে দেওয়া দরকার । তাহলেই তার লেখা ছাপতে দেওয়া যাবে ।

৩২. কী কারণে মেসোমশাই তপনের লেখা ভালো বলেছিলেন ?

উত্তরঃ ছোটোমেসোমশাইয়ের নতুন বিয়ে হয়েছে, তাই শ্বশুরবাড়ির একটি বাচ্চা ছেলেকে খুশি করতেই মূলত তপনের মেসোমশাই লেখা ভালো হয়েছে বলেছিলেন ।

৩৩. “তপন আহ্লাদে কাঁদো কাঁদো হয়ে যায় ।” —তপনের এই অবস্থার কারণ কী ?

উত্তরঃ নতুন মেসো তপনের লেখাটা ‘কারেকশান’ বা সংশোধন করে ছাপিয়ে দিতে চাইলে তপন আহ্লাদে কাঁদো কাঁদো হয়ে যায় ।

৩৪. “আর সেই সুযোগেই দেখতে পাচ্ছে তপন—” তপন কী দেখতে পাচ্ছিল ?

উত্তরঃ তপনের নিজের ছোটোমেসো একজন লেখক হওয়ায় সে দেখতে পাচ্ছিল, লেখক মানে আকাশ থেকে পড়া কোনো জীব নন, তিনিও তপনের মতোই সাধারণ মানুষ ।

৩৫. “ছোটোমাসি সেই দিকে ধাবিত হয় ।”— ছোটোমাসি কোন দিকে ধাবিত হয় ?

উত্তরঃ মেসোমশাই যেখানে দিবানিদ্রা দিচ্ছিলেন সেদিকে ছোটোমাসি ধাবিত হয় ।

৩৬. “এইসব মালমশলা নিয়ে বসে ।” — কীসের কথা বলা হয়েছে ?

উত্তরঃ অল্পবয়সি ছেলেমেয়েরা গল্প লিখতে গিয়ে রাজারানির গল্প, খুন-জখম, অ্যাকসিডেন্ট, না খেতে পেয়ে মরে যাওয়া ইত্যাদি যেসব বিষয়ে লেখে, সেসবের কথা বলা হয়েছে ।

৩৭. “এটা খুব ভালো ।” —বক্তার এ কথা বলার কারণ কী ছিল ?

উত্তরঃ তপন তার ভরতি হওয়ার দিনের অভিজ্ঞতা আর অনুভূতির বিষয় নিয়ে গল্প লিখেছিল বলে প্রশংসা করেই তপনের মেসোমশাই মন্তব্যটি করেন ।

৩৮. “বিকেলে চায়ের টেবিলে উঠে কথাটা”— চায়ের টেবিলে কোন কথা ওঠে ?

উত্তরঃ তপনের গল্প লেখা আর মেসোমশাইয়ের তা ছাপিয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতির কথাই বিকেলে চায়ের টেবিলে ওঠে ।

৩৯. “তপন অবশ্য মাসির এই হইচইতে মনে মনে পুলকিত হয় ।” —তপনের এই পুলকের কারণ কী ?

উত্তরঃ তপনের মাসি তপনের লেখা নিয়ে মেসোমশাইয়ের কাছে গিয়ে হইচই করলে তপন মনে মনে পুলকিত হয় কারণ তার লেখার মূল্য একমাত্র মেসোমশাইয়ের পক্ষে বোঝা সম্ভব ।

৪০. “যেন নেশায় পেয়েছে”— কোন নেশার কথা বলা হয়েছে ?

উত্তরঃ তপন তার লেখক মেসোকে দেখে অনুপ্রাণিত হয়ে একটি গল্প লিখে ফেলে । ছোটোমাসির উৎসাহে মেসো তার গল্প ছাপিয়ে দেওয়ার দায়িত্ব নেন । এরপর থেকেই তপনকে লেখার নেশায় পায় । তারপর সে দু-তিনটে গল্পও লিখে ফেলে ।



জ্ঞানচক্ষু গল্পের সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর - Gyanchokkhu Short Type Question and Answer


১) “যে ভয়ংকর আহ্লাদটা হবার কথা, সে আহ্লাদ খুঁজে পায় না।”- ‘আহ্লাদ’ হবার কথা ছিল কেন? ‘আহ্লাদ খুঁজে না পাওয়ার’ কারণ কী? ১+২ [মাধ্যমিক ২০১৯]

উত্তরঃ আশাপূর্ণা দেবীর লেখা ‘জ্ঞানচক্ষু’ গল্পে নিজের লেখা গল্প ছাপা হলে তপনের আহ্লাদ হবার কথা ছিল।

তপনের লেখা গল্প ‘সন্ধ্যাতারা’ পত্রিকায় ছাপানো হলে একসংখ্যা পত্রিকা সঙ্গে নিয়ে নতুন মেসো তপনদের বাড়িতে আসেন। কিন্তু বাড়ির সকলে তপনের প্রশংসা না করে তার নতুন মেসোর প্রশংসা করেছিল। কারণ, তিনি নাকি গল্পটা অল্পবিস্তর ‘কারেকশন’ করেছিলেন এবং তার পরিচিতির জন্যই গল্পটা ছাপা হয়েছিল। এইসব কথার জন্য তপন কোনো আহ্লাদ খুঁজে পায়নি।


২) “রত্নের মূল্য জহুরির কাছেই।” – এমন উক্তির কারণ কী?

উত্তরঃ আশাপূর্ণা দেবীর লেখা ‘জ্ঞানচক্ষু’ গল্পে তপনের মনে হয়েছিল “রত্নের মূল্য জহুরির কাছেই”।

তপন একজন প্রতিভাবান কিশোর লেখক। সে তার লেখক মেসোকে দেখে অনুপ্রাণিত হয়ে একটি গল্প লিখেছিল। নিজের লেখা গল্প পড়ে তপন নিজেই আশ্চর্যচকিত হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু তার গল্পের মূল্য অন্য কেউ বুঝবে কি না এবিষয়ে তার সন্দেহ ছিল। তবে, নতুন মেসো যেহেতু একজন লেখক তাই তিনি তপনের গল্পের মূল্য বুঝবেন। এইজন্য একথা বলা হয়েছে।


৩) “পৃথিবীতে এমন অলৌকিক ঘটনাও ঘটে?” – কোন্ ঘটনাকে অলৌকিক বলা হয়েছে? কেন বলা হয়েছে? ১+২

উত্তরঃ আশাপূর্ণা দেবীর লেখা ‘জ্ঞানচক্ষু’ গল্পে যখন তপনের নতুন মেসো একসংখ্যা ‘সন্ধ্যাতারা’ পত্রিকা নিয়ে তপনদের বাড়িতে এসেছিল, তখন তপনের এরকম মনে হয়েছিল।

তপন একজন প্রতিভাবান কিশোর লেখক। তপনের স্বপ্ন ছিল যে তার লেখা গল্প একদিন ছাপানো হবে। তবে, সেই স্বপ্ন যে এত সহজে পূরণ হওয়ার নয়, এটাও সে জানত। তার লেখা গল্প ছাপার অক্ষরে হাজার হাজার ছেলের হাতে ঘুরবে, এটাই তপনের কাছে অলৌকিক ঘটনা বলে মনে হয়েছিল।


৪) “এর মধ্যে তপন কোথা?” – কীসের মধ্যে তপন ছিল না? এরকম মন্তব্যের কারণ কী? ১+২

উত্তরঃ আশাপূর্ণা দেবীর লেখা ‘জ্ঞানচক্ষু’ গল্পে দেখা যায় যে তপনের নিজের লেখা গল্পে সে নিজেই ছিল না। অর্থাৎ, সেই গল্পে কোথাও তপনের নিজের হাতের ছোঁয়া ছিল না।

তপনের লেখা প্রথম গল্পটি তার নতুন মেসো ‘সন্ধ্যাতারা’ পত্রিকায় ছাপিয়ে দিয়েছিলেন। কিন্তু গল্পটি তিনি এমনভাবে কারেকশন করেছিলেন যে সেই গল্পের প্রতিটি লাইন তপনের কাছে আনকোরা মনে হয়েছিল। এইজন্য বলা হয়েছে যে সেই গল্পের মধ্যে কোথাও তপন ছিল না।


৫) “তপনের মাথায় ঢােকে না- সে কী পড়ছে।” – তপন কী পড়ছিল? তা পড়ার সময় কেন তার মাথায় ঢোকেনি? ১+২

উত্তরঃ আশাপূর্ণা দেবীর লেখা ‘জ্ঞানচক্ষু’ গল্পে তপন ‘সন্ধ্যাতারা’ পত্রিকায় প্রকাশিত তার নিজের লেখা গল্প পড়ছিল।

তপনের নতুন মেসো যেহেতু একজন লেখক তাই অনেক পত্রিকার সম্পাদকের সঙ্গে তার পরিচিতি ছিল। তিনি ‘সন্ধ্যাতারা’ পত্রিকার সম্পাদককে বলে তপনের গল্পটা ছাপিয়ে দিয়েছিলেন। কিন্তু ছাপার অক্ষরে নিজের গল্প পড়তে গিয়ে তপন বুঝতে পারে যে তার লেখক মেসো কারেকশনের নাম করে তার গল্পটা আগাগোড়া পাল্টে ফেলেছিলেন। এইজন্য তপনের মাথায় ঢােকে না সে কী পড়ছে।


৬) ‘সারা বাড়িতে শোরগোল পড়ে যায়’—সারা বাড়িতে শোরগোল পড়ে যাওয়ার কারণ কী?

উত্তরঃ শোরগোল পড়ে যাওয়ার কারণ : প্রতীক্ষার অবসান ঘটিয়ে তপনের লেখা গল্প। ছেপে বেরোলে সারা বাড়িতে শোরগোল পড়ে যায়। জ্ঞানচক্ষু গল্পে দেখা যায়—তপনের কাচা হাতের গল্পটিকে মেসো সংশোধন করে নিজের প্রভাব খাটিয়ে সন্ধ্যাতারা সম্পাদককে দিয়ে প্রকাশ করিয়েছেন। জীবনের প্রথম গল্প ছাপার অক্ষরে প্রকাশিত হলে অনাবিল উত্তেজনায় তপন আনন্দে মাতোয়ারা হয়। আর সেই খবরে সারা বাড়িতে শোরগোল পড়ে যায়।


৭) “ক্রমশ ও কথাটা ছড়িয়ে পড়ে।”—কোন কথা, ওই কথা ছড়িয়ে পড়ায় কী ঘটেছিল?

উত্তরঃ কারেকশানের কথা : তপনের প্রকাশিত গল্পটি আসলে ছোটো মেসোমশাই কিছুটা কারেকশান করে দিয়েছেন—এই কথাটা ক্রমশ ছড়িয়ে পড়ে বাড়িতে।

মেসোর মহত্তের কথা : ছোটো মেসোমশাই-এর কারেকশানের কথা বাড়ির সবাই জেনে গেলে তপনের গল্প লেখার কৃতিত্ব খানিকটা কমে যায়। তপনের বাবা, কাকা, ছোটো মেসোমশাই-এর হাতের ছোঁয়াকে বেশি গুরুত্ব দিতে চান। সেদিন পারিবারিক আলোচনায় তপনের গল্পের কথা উঠলেও নতুন মেসোর মহত্ত্বের কথা ঘুরে ফিরে আসে।


৮) “এ বিষয়ে সন্দেহ ছিল তপনের।”—কোন বিষয়ে কেন তপনের সন্দেহ ছিল ?

উত্তরঃ তপনের সন্দেহ নিরশন : আশাপূর্ণা দেবী রচিত জ্ঞানচক্ষু নামক গল্প থেকে অংশটি গৃহীত হয়েছে। তপন জানত না যে, লেখকরা তার বাবা, কাকা কিংবা মামার মতো একজন সাধারণ মানুষ। তার সন্দেহ দূর হয় ছোটো মেসোমশাইকে দেখে। তিনি একজন লেখক। কিন্তু অন্য সাধারণ মানুষের মতো দাড়ি কামান। সিগারেট খান, খাবার অতিরিক্ত হলে ফিরিয়ে দেন, স্নান করেন, ঘুমোন। এমনকি আর সকলের মতো খবরের কাগজের খবর নিয়ে গল্প কিংবা তর্ক করেন। অবসর সময়ে সিনেমা দেখেন কিংবা বেড়াতেও বের হন। এসব দেখে তপনের সন্দেহ দূর হয় ও সে বিশ্বাস করে লেখকরাও সাধারণ মানুষ।


৯) তপনের মনে হয় আজ যেন তার জীবনে সবচেয়ে দুঃখের দিন। কী কারণে তপনের এরূপ মনে হয়েছিল ?

উত্তরঃ তপনের মনে হওয়ার কারণ : তপনের প্রথম লেখা গল্পটি নতুন মেসোমশাই-এর সুপারিশে সন্ধ্যাতারা পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছিল। ছাপা গল্পটি পাঠ করে তপন। অবাক হয়ে যায়। কারণ তার নতুন মেসোমশাই গল্পটিকে ঠিকঠাক করতে গিয়ে সম্পূর্ণ পাল্টে দিয়েছেন। ছাপানো গল্পের মধ্যে তপন নিজেকে খুঁজে পায় না। তার মনে হয় অন্য কারোর লেখা ছাপা হয়েছে। শ্রী তপন কুমার রায় নাম দিয়ে। নিজের সৃষ্টিকে পরিবর্তিত হতে দেখে তপনের মন বেদনায় ভরে ওঠে।


১০) ‘যেন নেশায় পেয়েছে’-কীসের নেশা, কীভাবে তাকে নেশায় পেয়েছে?

উত্তরঃ লেখার নেশা : আশাপূর্ণা দেবীর জ্ঞানচক্ষু গল্পে তপনের গল্প লেখার নেশার কথা বলা হয়েছে।

লেখার প্রতি আসক্তি : তপন একজন সাহিত্য প্রেমী বালক। গল্প লেখা ও সেগুলি ছাপা ইত্যাদি বিষয় সম্পর্কে তার প্রচণ্ড কৌতূহল ছিল। মাসির বিয়ের পর লেখক মেসোমশাইকে খুব কাছ থেকে দেখতে পায় এবং গল্প লেখার রহস্যও তার কাছে পরিষ্কার হয়ে যায়। তপন একটি গল্প লিখে ছোটোমাসিকে দেখালে মাসি সেটা মেসোমশাইকে দেখায়। তখন তিন সেটা পত্রিকায় ছাপিয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেয়। এতে আরও উৎসাহিত হয়ে তপন একের পর এক গল্প লেখার নেশায় মগ্নহয়ে ওঠে।


১১) “বুকের রক্ত ছলকে ওঠে তপনের”—কখন এবং কেন তপনের এরকম অনুভূত হয়েছিল?

উত্তরঃ তপনের অনুভূতি : পুজোর ছুটির অনেকদিন পর ছোটোমাসি আর মেসোমশাই হাতে একখানা সন্ধ্যাতারা পত্রিকা নিয়ে তপনদের বাড়িতে বেড়াতে এসেছিলেন। সেই দিন তপনের এইরকম অনুভূতি হয়েছিল। সাহিত্য রচনা এবং প্রকাশ সম্পর্কে তপনের দারুণ কৌতুহল ছিল তাই ছােটো মেসোমশাই তার লেখা গল্প সন্ধ্যাতারা পত্রিকায় ছাপানোর জন্য যখন নিয়ে গিয়েছিলেন তখন তপন উৎসাহিত হয়। তবে অপেক্ষা করতে করতে তপন গল্প। প্রকাশের আশা ছেড়ে দিয়েছিল। ঠিক এই সময় ছোটো মাসি আর মেসোমশাই সন্ধ্যাতারা পত্রিকা নিয়ে তাদের বাড়িতে আসায় তার গল্প প্রকাশের আবেগ উৎকণ্ঠায় তপনের এরকম অনুভূতি হয়েছিল।


১২) রত্নের মূল্য জহুরির কাছে। রত্ন এবং জহুরি বলতে কী বোঝানো হয়েছে?

উত্তরঃ রত্ন ও জহুরি: আশাপূর্ণা দেবী রচিত জ্ঞানচক্ষু নামাঙ্কিত গল্পে রত্ন বলতে তপনের লেখা গল্পটিকে এবং জহুরি বলতে তপনের ছোটো মেসোকে বোঝানো হয়েছে।

তপন যে গল্পটি লিখেছিল তা দেখে তার ছোটো মাসি যথেষ্ট ভালো বললেও প্রকৃত বিচারকের রায় দরকার ছিল তপনের। আর এই বিষয়ে লেখক হিসাবে পরিচিত তার ছোটোমেসো যে যোগ্য ব্যক্তি তাতে কারো সন্দেহ থাকতে পারে না। তাই রত্নের মূল্য ও গুরুত্ব যেমন একজন জহুরি সবথেকে ভালো বোঝেন। তেমনই তপনের গল্পের কদরও ছোটোমেসোই বুঝতে পারবে।


১৩) ‘শুধু এ দুঃখের মুহর্তে গভীরভাবে সংকল্প করে তপন।” কোন দুঃখের মুহুর্তের কথা বলা হয়েছে। তপন কী সংকল্প নিয়েছিল ?

উত্তরঃ দুঃখের মুহূর্ত: সন্ধ্যাতারা পত্রিকায় নিজের ছাপা গল্প পড়তে গিয়ে যখন তপন বুঝল গল্পটি ছোটো মেসোমশাই আগাগোড়া কারেকশান করে দিয়েছেন। নিজের গল্পে নিজেকে না পেয়ে তপন খুব দুঃখ পেয়েছিল।

তপনের সংকল্প: এই দুঃখের মুহূর্তে তপন সংকল্প করে, যদি কখনো নিজের লেখা ছাপতে দেয়, তবে কারো মাধ্যমে নয়, নিজে গিয়ে পত্রিকা অফিসে দিয়ে আসবে। যদি তাতে তার গল্প ছাপা না হয় তবুও। কারণ কেউ সুপারিশ করে তার লেখা ছেপে দিয়েছে এমন কথা যেমন অপমানের, তেমনই কষ্টের। নিজের লেখা পড়তে গিয়ে অন্যের লেখা পড়া খুবই কষ্টকর।



জ্ঞানচক্ষু গল্পের রচনাধর্মী প্রশ্নোত্তর - Gyanchokkhu Descriptive Questions and Answers


১) “তপন আর পড়তে পারে না। বােবার মতাে বসে থাকে।”- তপনের এরকম অবস্থার কারণ বর্ণনা করাে। ৫ [মাধ্যমিক ২০১৮]

উত্তরঃ আশাপূর্ণা দেবীর ‘জ্ঞানচক্ষু’ গল্পে তপন একটা গল্প লিখেছিল। তার সেই গল্প যখন ছাপা হল, নিজের লেখা গল্প পড়তে গিয়ে তপন হতবাক হয়েছিল।

ছোটোমাসির বিয়ে উপলক্ষে মামাবাড়িতে এসে তপন জানতে পেরেছিল তার নতুন মেসো একজন লেখক। তাকে দেখেই জ্ঞানচক্ষু খুলে গিয়েছিল তপনের। সে ভাবে, নতুন মেসো যদি একজন লেখক হন তবে তপনের বা লেখক হতে বাধা কোথায়? এরপর সে হোমটাস্কের খাতায় আস্ত একখানা গল্প লিখে ফেলে। সেই গল্প ছোটোমাসির হাত ধরে নতুন মেসোর কাছে পৌঁছায়। গল্প পড়ে লেখক মেসো তপনের অনেক প্রশংসা করেন এবং সেই গল্পটি কোনো পত্রিকায় ছাপিয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন।

তার লেখা গল্প হাজার হাজার ছেলের হাতে হাতে ঘুরবে- এই স্বপ্ন নিয়ে তপন অধীর আগ্রহে দিন গুনতে থাকে। দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর একদিন নতুন মেসো একসংখ্যা সন্ধ্যাতারা পত্রিকা নিয়ে তপনদের বাড়িতে আসেন। তপন বুঝতে পারে তার স্বপ্ন পূরণ হয়েছে।

কিন্তু ছাপার অক্ষরে নিজের লেখা গল্প পড়তে বসে তপন বুঝতে পারে সেই গল্পে তার হাতের ছোঁয়া নেই। নতুন মেসো সেই গল্পটা আগাগোড়া কারেকশন করে নতুন রূপ দিয়েছেন, যে গল্পের প্রতিটা লাইন তার কাছে অপরিচিত। এইজন্য তপন আর পড়তে পারে না, বােবার মতাে বসে ছিল।


২) “শুধু এই দুঃখের মুহুর্তে গভীরভাবে সংকল্প করে তপন”- কী সংকল্প করেছিল? তার ‘এই দুঃখের মুহুর্তের’ প্রেক্ষাপট আলোচনা করো। ১+৪

উত্তরঃ আশাপূর্ণা দেবীর লেখা ‘জ্ঞানচক্ষু’ গল্পে তপন সংকল্প করেছিল যে যদি কোনোদিন তার লেখা ছাপাতে দিতে হয় তো সে নিজে গিয়ে সম্পাদককে তার লেখা দিয়ে আসবে- তাতে তার গল্প ছাপানো হোক বা না হোক।

ছোটোমাসির বিয়ে উপলক্ষে মামার বাড়িতে গিয়েছিল তপন। সেখানে সে নিজের হোমটাস্কের খাতায় একটা আস্ত গল্প লিখে ফেলেছিল। আসলে, তপনের নতুন মেসো ছিল একজন লেখক এবং তাকে দেখেই তপনের লেখক হওয়ার বাসনা জেগেছিল। যাইহোক, তপনের গল্প ছোটোমাসির হাত দিয়ে নতুন মেসোর কাছে পৌঁছায়। মেসো তপনের লেখার প্রশংসা করেন এবং সেই গল্প কোনো পত্রিকায় ছাপিয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন। তপন কৃতার্থ হয়ে বসে বসে দিন গুনতে থাকে।

বেশ কিছুদিন পর নতুন মেসো একসংখ্যা ‘সন্ধ্যাতারা’ নিয়ে তপনদের বাড়িতে এলেন। পত্রিকা দেখে তার বুকের রক্ত ছলকে উঠেছিল। সে বুঝতে পেরেছিল যে তার স্বপ্ন পূরণ হয়েছে।

সত্যিই তপনের গল্প ছাপা হয়েছিল। কিন্তু গল্পটা কারেকশন করার এবং ছাপিয়ে দেওয়ার পুরো কৃতিত্বের দাবীদার হয় তার মেসো। গল্প ছাপা হলে যে আহ্লাদ হবার কথা, সেই আহ্লাদ খুঁজে পায়না তপন।

গল্পটা পড়তে গিয়ে তপন বুঝতে পারে যে নতুন মেসো আগাগোড়া কারেকশন করে পুরো গল্পটাই পাল্টে ফেলেছেন। সেই গল্পে তপনের হাতের ছোঁয়া ছিল না- সবকটা লাইন তার অপরিচিত। বইটা ফেলে রেখে ছাদে গিয়ে সে শার্টের তলাটা দিয়ে চোখ মুছে। এরপরেই তপন এই সংকল্প করেছিল।


৩) ‘জ্ঞানচক্ষু’ গল্প অবলম্বনে তপনের চরিত্র বিশ্লেষণ করো। ৫

উত্তরঃ আশাপূর্ণা দেবীর লেখা ‘জ্ঞানচক্ষু’ গল্পের কেন্দ্রীয় চরিত্র হল তপন। আলোচ্য গল্পে তার জ্ঞানচক্ষু উন্মোচিত হওয়ার ঘটনাই তুলে ধরা হয়েছে। গল্পটি পড়ে তপনের চরিত্র সম্পর্কে যা জানা যায় তা হল-

১) প্রতিভাবান: তপন একজন প্রতিভাবান কিশোর লেখক। নতুন মেসোকে দেখে যখন সে জানল যে লেখকরা সাধারণ মানুষের মতো হয়, তখন সে ভাবল যে তারও তবে লেখক হতে বাধা নেই। আর তারপরেই একাসনে বসে আস্ত একটা গল্প লিখে ফেলেছিল।

২) ভাবুক: তপন স্বভাবত একজন ভাবুক প্রকৃতির ছেলে। এই ভাবুক স্বভাবের জন্য নিজের বিদ্যালয় জীবনের প্ৰথম দিনের স্মৃতিকে অবলম্বন করে গল্প লিখতে পেরেছিল। আবার, ছোটো মেসোকে দেখার আগে পর্যন্ত লেখক সম্পর্কে তার কোনো ধারণা ছিল না। তবে, লেখকরা যে কেমন হতে পারে সেই নিয়ে অনেক কিছু ভেবে রেখেছিল যে।

৩) মর্যাদাবোধ: তপনের গল্প ছাপা হলে লেখক হিসেবে সে যত প্রশংসা পেয়েছিল, গল্পটা ছাপিয়ে দেওয়ার জন্য নতুন মেসো তার থেকে বেশি প্রশংসা অর্জন করেছিল। এতে তপন অপমানিত বোধ করেছিল।

৪) বাস্তববুদ্ধি: ছোটোমাসি যখন তপনের লেখা গল্পটা নতুন মেসোর কাছে নিয়ে যাচ্ছিল, তপন তখন মুখে ‘না-আ-আ’ বলে আপত্তি করলেও মনে মনে ভেবেছিল যে তার লেখার প্রকৃত মূল্য কেবল তিনিই বুঝবেন।

৫) মানসিক দৃঢ়তা: নতুন মেসো তপনের গল্পটা কারেকশনের নামে আগাগোড়া পাল্টে দিয়েছিল। এইজন্য তপন মনে মনে প্রতিজ্ঞা করেছিল যে এরপর সে নিজের গল্প নিজে গিয়ে ছাপতে দিয়ে আসবে, তাতে সে গল্প ছাপা হোক বা না হোক।


৪) ‘জ্ঞানচক্ষু’ গল্পের নামকরণের যথার্থতা বিশ্লেষণ করো। ৫

উত্তরঃ আশাপূর্ণা দেবীর লেখা একটি ভিন্ন স্বাদের ছোটগল্প হল ‘জ্ঞানচক্ষু’। জ্ঞানচক্ষু কথার আক্ষরিক অর্থ হল জ্ঞান রূপ চক্ষু। জ্ঞানচক্ষু খুলে গেলে মানুষ প্রকৃত সত্যের সন্ধান পায়।

আলোচ্য গল্পের প্রধান চরিত্র তপন নামের একটি ছেলে। ছোটোমাসির বিয়ে উপলক্ষে সে মামাবাড়িতে এসেছিল। যার সঙ্গে ছোটোমাসির বিয়ে হল, সেই নতুন মেসো নাকি একজন লেখক। এর আগে লেখকদের সম্পর্কে তপনের কোন ধারণা ছিল না। তারা যে আর পাঁচজন সাধারণ মানুষের মতোই হয়, সে একথা জানত না। এই লেখক-মেসোকে দেখেই তপনের জ্ঞানচক্ষু খুলে যায়। সেও গল্প লিখতে শুরু করে এবং তার প্রথম গল্প পড়ে নতুন মেসো সেটি ছাপিয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতিও দেন।

সেই গল্প ছাপা হলে আরেকবার জ্ঞানচক্ষু খুলে যায় তপনের। গল্পটা লেখার জন্য তপন যেটুকু বাহবা পেয়েছিল, গল্পটা ছাপিয়ে দেওয়ার সুবাদে নতুন মেসো তার থেকে বেশি প্রশংসা কুড়িয়েছিলেন। আবার, ছাপার অক্ষরে নিজের গল্প পড়তে গিয়ে সে বুঝতে পারে যে মেসো তার গল্পটা আগাগোড়া কারেকশন করেছেন এবং সেই গল্পে তপন নিজেকে খুঁজে পায় না। সেদিন সে মনে মনে প্রতিজ্ঞা করেছিল যে এরপর কোনোদিন কোনো গল্প ছাপাতে হলে সে নিজে গিয়ে পত্রিকার দপ্তরে দিয়ে আসবে।

সুতরাং দেখা যাচ্ছে, তপনের জ্ঞানচক্ষু উন্মোচিত হওয়াই এই গল্পের প্রধান বিষয়বস্তু। সেই অর্থে এই গল্পের নামকরণ সার্থক হয়েছে বলা যেতে পারে।


৫)‘ জ্ঞানচক্ষু‘ গল্পে তপনের জীবনের সবচেয়ে সুখের দিনটি কিভাবে দুঃখের দিনে পরিণত হল তা নিজের ভাষায় লেখ।

উত্তরঃ বাংলা সাহিত্যের অন্যতম লেখিকা আশাপূর্ণা দেবী রচিত  ‘জ্ঞানচক্ষু ‘ শীর্ষক ছোটগল্পের কেন্দ্রীয় চরিত্র তপনের সুখের দুঃখের দিনে পরিণত হয়েছিল।

তপনের জীবনের সুখের দিন : মামার বাড়িতে গিয়ে লেখা তপনের একটি গল্প সঙ্গে নিয়ে গিয়েছিল ।তিনি তপনকে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, তাঁর লেখা গল্পটি ‘ সন্ধ্যাতারা ‘ পত্রিকার সম্পাদক কে বলে ছাপানোর ব্যবস্থা করে দেবেন। এরপর বেশ কিছু দিন কোন খবর না আসায় তপন অনেকটা আশাহত হয়ে গেলে হঠাৎ তপনের বাড়িতে – “ছোট মাসি আর মেসো একদিন বেড়াতে এল, হাতে এক সংখ্যা সন্ধ্যাতারা।” সেই পত্রিকা দেখে এবং তাতে তপনের লেখা গল্পের কথা মনে করে পুলকিত হয়ে ওঠে। এটাই ছিল তাঁর সবচেয়ে সুখের দিন ।

সুখের দিন দুঃখের দিনে পরিণত হওয়া:  তবে সেই সুখের দিনে শেষ পরিণতি তপনের কাছে হয়ে উঠেছিল অত্যন্ত বেদনার্ত। পত্রিকায় প্রকাশিত গল্পটি একদিকে যেমন কারেকশন করতে হয়েছে অন্যদিকে মেসোর সুপারিশেই তা ছাপা হয়েছে- বাড়িসুদ্ধ এরকম আলোচনা ছড়িয়ে পড়তে থাকে। এতে তখন মনে মনে খুব কষ্ট পায়। এরপর মায়ের আদেশ গল্পটি পড়তে গিয়ে তখন দেখে-” এর প্রত্যেকটি লাইন তো নতুন আনকোরা ,তপনের অপরিচিত।” অর্থাৎ অসম্পূর্ণ গল্প লিখে দিয়েছেন তার পাকা হাতে কলমে ।একমাত্র শিরোনাম ছাড়া তাতে তপনের  কোনো অস্তিত্বই নেই। কিছুক্ষণ গড়িয়ে পড়ার পর তপন বইটা ফেলে রেখে বইটা ফেলে রেখে চলে যায় ।আসলে দুঃখে -কষ্টে তপন ছাদে উঠে গিয়ে কেঁদে ফেলে সংকল্প করে -“যদি কখনো লেখা ছাড়তে দেয় তখন নিজে গিয়ে দেবে। নিজের কাছে লেখা ছাপা হয় হোক, না হয় না হোক ” এভাবে তপনের সুখের মুহূর্তটি শেষে দুঃখের মুহূর্তে  পরিণত হয়েছিল।



Google News এ আমাদের ফলো করুন


Gksolves Google News

ঘোষণা: বিনামূল্যে আমাদের দেওয়া নোটস, সাজেশান, প্রশ্ন উত্তর ইত্যাদি স্টাডি ম্যাটেরিয়াল PDF এবং ভিডিও ক্লাস ভালো লাগলে, আমাদের এই পোস্টের লিংক আপনার বন্ধুদের ফেসবুক, WhatsApp এ শেয়ার করে তাদের পড়ার সুযোগ করে দিন।

Post a Comment

0 Comments
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.