মাধ্যমিকের বাংলা রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের আফ্রিকা প্রশ্ন ও উত্তর - Africa by Rabindranath Tagore Questions and Answers

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের আফ্রিকা প্রশ্ন ও উত্তর: প্রতিবছর মাধ্যমিক বাংলা পরীক্ষায় মাধ্যমিক বাংলা সাজেশন (Africa by Rabindranath Tagore Questions and Answers Madhyamik Bengali Suggestion) থেকে অনেক প্রশ্ন আসে। তাই আমরা আপনাদের জন্য নিয়ে এসেছি মাধ্যমিক বাংলা সিলেবাসের রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের "আফ্রিকা" র সমস্ত প্রশ্নোত্তর। 

এখানে মাধ্যমিক বাংলা ‘আফ্রিকা’ কবিতার প্রশ্ন উত্তর যেমন বহু বিকল্প ভিত্তিক প্রশ্ন (MCQ), অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্ন (SAQ), সংক্ষিপ্ত উত্তরভিত্তিক প্রশ্ন এবং রচনাধর্মী প্রশ্নগুলি তুলে ধরা হল। যে গুলি পশ্চিমবঙ্গ মাধ্যমিক বাংলা পরীক্ষার জন্য খুব গুরুত্বপূর্ন। নিচে Africa by Rabindranath Tagore Questions and Answers ‘আফ্রিকা’ কবিতার MCQ, SAQ প্রশ্ন উত্তর গুলি যত্ন সহকারে পড়ুন ও জ্ঞানভাণ্ডার বৃদ্ধি করুন।

মাধ্যমিকের বাংলা রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের আফ্রিকা প্রশ্ন ও উত্তর - Africa by Rabindranath Tagore Questions and Answers




মাধ্যমিকের বাংলা রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের আফ্রিকা প্রশ্ন ও উত্তর - Africa by Rabindranath Tagore Questions and Answers



আফ্রিকা - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

‘আফ্রিকা’ কবিতাটি প্রখ্যাত সাহিত্যিক রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘পত্রপুট’ কাব্য থেকে গৃহিত হয়েছে। আলোচ্য পোস্টে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘আফ্রিকা’ কবিতার গুরুত্বপূর্ণ বহু বিকল্প ভিত্তিক প্রশ্ন (MCQ), অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্ন (SAQ), সংক্ষিপ্ত উত্তরভিত্তিক প্রশ্ন এবং রচনাধর্মী প্রশ্নগুলি তুলে ধরা হল।



আফ্রিকা MCQ প্রশ্নোত্তর - আফ্রিকা কবিতার MCQ প্রশ্নোত্তর (বহু বিকল্পভিত্তিক প্রশ্নোত্তর) - Africa MCQ Questions and Answers

1. কবি আদিম যুগের যে বিশেষণ ব্যবহার করেছেন তা হল-

[A] অপমানিত

[B] দৃষ্টি অতীত

[C] চেতনাতীত

[D]উদ্ভ্রান্ত

উত্তরঃ [D]উদ্ভ্রান্ত


2. স্রষ্টা নিজের সৃষ্টিকে বারবার বিধ্বস্ত করছিলেন, কারণ—

[A] আসন্ন সন্ধ্যার শেষ রশ্মিপাত

[B] নিজের প্রতি অসন্তোষ 

[C] বিভীষিকার প্রচণ্ড মহিমা

[D] সত্যের বর্বর লােভ

উত্তরঃ [B] নিজের প্রতি অসন্তোষ


3. “ছিনিয়ে নিয়ে গেল তােমাকে”-কে ছিনিয়ে নিয়ে গেল?

[A] প্রাচী ধরিত্রী

[B] ছায়াবৃত্ত 

[C] কৃপণ আলাে

[D] রুদ্র সমুদ্রের বাহু

উত্তরঃ [D] রুদ্র সমুদ্রের বাহু


4. আফ্রিকা বিদ্রুপ করছিল—

[A] ভীষণকে

[B] ভয়ংকরকে

[C] নতুন সৃষ্টিকে

[D] শঙ্কাকে

উত্তরঃ [A] ভীষণকে


5. ‘রুদ্র সমুদ্রের বাহু’ আফ্রিকাকে ছিনিয়ে গিয়েছিল যেখান থেকে-

[A] পশ্চিম দিগন্ত থেকে

[B] দেবস্থান থেকে 

[C]প্রাচী ধরিত্রীর বুকের থেকে

[D] সূর্যহারা বনানী থেকে

উত্তরঃ [C]প্রাচী ধরিত্রীর বুকের থেকে


6. ‘নিনাদ’ শব্দটির অর্থ কী?

[A] গর্জন

[B] চিৎকার 

[C] ভয়ংকর শব্দ

[D] শব্দ

উত্তরঃ [D] শব্দ


7. “তােমার ভাষাহীন ক্রন্দনে বাষ্পকুল অরণ্যপথে পঙ্কিল হল ধূলি তােমার – মিশে।” (শূন্যস্থান পূরণ করাে)

[A] আফ্রিকার দুর্গম জঙ্গলে

[B] রক্তে অশ্রুতে 

[C] অপমানিত ইতিহাসে

[D] অবরুদ্ধ ইতিহাসে

উত্তরঃ [B] রক্তে অশ্রুতে


8. “শিশুরা খেলছিল —”। (শূন্যস্থান পূরণ করাে)

[A] মাঠে মাঠে

[B] বাষ্পকুল অরণ্যপথে

[C] গুপ্ত গহ্বরে 

[D] মায়ের কোলে

উত্তরঃ [D] মায়ের কোলে


9. মানুষ ধরার দলের নখ ছিল—

[A] শেয়ালের চেয়ে তীক্ষ্ণ

[B] নেকড়ের চেয়ে তীক্ষ্ণ 

[C] হায়নার চেয়ে তীক্ষ্ণ 

[D] সিংহের চেয়ে ধারালাে    

উত্তরঃ [B] নেকড়ের চেয়ে তীক্ষ্ণ


10. প্রদোষকাল’ রুদ্ধশ্বাস কেন?

[A] দ্বার রুদ্ধ থাকায়  

[B] অত্যাচারের আবহাওয়ায়  

[C] ঝঞ্ঝাবাতাসে 

[D] শৌর্যের।

উত্তরঃ [C] ঝঞ্ঝাবাতাসে


11. গুপ্ত গহ্বর থেকে কারা বেরিয়ে এল?

[A] দস্যুরা  

[B] দুষ্কৃতীরা 

[C] পশুরা 

[D]আদিম মানুষেরা 

উত্তরঃ [C] পশুরা


12. পশুরা কী ঘোষণা করল ?

[A] রাত্রির আগমন বার্তা  

[B]দিনের অন্তিমকাল  

[C] অশুভ সময় 

[D]অশনি সংকেত 

উত্তরঃ [B]দিনের অন্তিমকাল


13. কাকে আহ্বান করা হল?

[A] সাহিত্যিককে 

[B] যুগাস্তের কবিকে 

[C] শুভ দিনকে 

[D] শুভ সময়কে

উত্তরঃ [B]  যুগাস্তের কবিকে


14. আসন্ন সন্ধ্যার শেষ রশ্মিপাতে’ কবিকে কোথায় দাঁড়াতে অনুরোধ করা হয়েছে ?

[A] আফ্রিকার মাটিতে  

[B] মানহারা মানবীর দ্বারে 

[C] দিনের অস্তিম সময়ের সামনে 

[D] ঝঞ্ঝাবাতাসে।

উত্তরঃ [B] মানহারা মানবীর দ্বারে 


15. দাঁড়াও ওই মানহারা মানবীর দ্বারে;’—উদ্ধৃতাংশে মানহারা মানবী’ বলতে বোঝানো হয়েছে—

[A] আফ্রিকা মহাদেশকে 

[B] বসুধাকে 

[C] ভারতবর্ষকে 

[D] পশ্চিম দুনিয়াকে

উত্তরঃ [A] আফ্রিকা মহাদেশকে


16. যুগান্তের কবিকে কী বলতে বলেছেন কবি?

[A] ক্ষমা করো 

[B] সুন্দরের আরাধনা করো 

[C] অত্যাচার থামাও 

[D] ক্ষমাই শেষ কথা।

উত্তরঃ [A] ক্ষমা করো


17. কীসের মধ্যে সভ্যতার শেষ পুণ্যবাণী ঘোষিত হবে?

[A] মানহারা মানবীর মধ্যে 

[B] যুগাত্তের প্রাস্তে 

[C] হিংস্র প্রলাপের মধ্যে 

[D] দিনের অস্তিমে।

উত্তরঃ [C] হিংস্র প্রলাপের মধ্যে


18. সেই হোক তোমার সভ্যতার শেষ পুণ্যবাণী’—সভ্যতার শেষ পুণ্যবাণী-

[A] বিদ্বেষ ত্যাগ করো 

[B] ক্ষমা করো 

[C] ভালোবাসো 

[D] মঙ্গল করো।

উত্তরঃ [B] ক্ষমা করো 



আফ্রিকা অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর - আফ্রিকা কবিতার SAQ অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর - Africa SAQ Question Answer

১. স্রষ্টা নিজের প্রতি অসন্তোষে কী করেছিল?

উত্তরঃ স্রষ্টা নিজের প্রতি অসন্তোষে নতুন সৃষ্টিকে বারবার বিধ্বস্ত করছিল।

২. স্রষ্টা অধৈর্য হয়ে কী করেছিল? উত্তরঃ স্রষ্টা অধৈর্য হয়ে ঘনঘন মাথা নাড়ছিল।

৩. ‘শঙ্কাকে চাচ্ছিলে হার মানাতে’ – কেমন করে?

উত্তরঃ বিভীষিকার প্রচণ্ড মহিমায় তাণ্ডবের দুন্দুভিনিনাদে আপনাকে উগ্র করে শঙ্কাকে হার মানাতে চাচ্ছিল।

৪. ‘কালাে ঘােমটার নীচে’ কী ছিল?

উত্তরঃ কালো ঘোমটার নীচে আফ্রিকার মানবরূপ ঢাকা পড়েছিল।

৫. ‘এল ওরা লােহার হাতকড়ি নিয়ে’- লােহার হাতকড়ি দিয়ে কী করেছিল?

উত্তরঃ লোহার হাতকড়ি দিয়ে তারা আফ্রিকার নিরীহ মানুষদের দাস বানিয়েছিল।

৬. ‘এল মানুষ ধরার দল’ – এদের প্রকৃতি কেমন?

উত্তরঃ এরা ছিল সভ্যতার গর্বে অন্ধ এবং এদের নখ ছিল আফ্রিকার নেকড়ের নখের চেয়েও তীক্ষ্ণ।

৭. ‘নগ্ন করল আপন নির্লজ্জ অমানুষতাকে’- কীভাবে?

উত্তরঃ আফ্রিকার সহজ সরল মানুষের উপর অকথ্য নির্যাতন করে ঔপনিবেশিক শক্তি নিজেদের নির্লজ্জ অমানুষতাকে প্রকাশ করেছিল।

৮. ‘পঙ্কিল হলাে ধূলি’- কীভাবে?

উত্তরঃ আফ্রিকার মানুষের রক্তে-অশ্রুতে পঙ্কিল হয়েছিল ধূলি।

৯. ‘সমুদ্রপারে সেই মুহূর্তেই তাদের পাড়ায় পাড়ায়’- কী হচ্ছিল?

উত্তরঃ সমুদ্রপারে সেই মুহূর্তেই তাদের পাড়ায় পাড়ায় মন্দিরে বাজছিল পূজার ঘণ্টা। 

১০. কবির সংগীতে কী বেজে উঠেছিল?

উত্তরঃ কবির সংগীতে বেজে উঠেছিল সুন্দরের আরাধনা।



আফ্রিকা কবিতার সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর - Africa Short Type Question and Answer

1. “সেখানে নিভৃত অবকাশে তুমি”- সেখানে বলতে কোন খানের কথা বলা হয়েছে? নিভৃত অবকাশে সে কী করছিল? ১+২

উত্তরঃ বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘আফ্রিকা’ কবিতা থেকে নেওয়া উদ্ধৃত অংশে ‘সেখানে’ বলতে ‘বনস্পতির নিবিড় পাহারায়’ স্থিত ‘কৃপণ আলোর অন্তঃপুরের’ কথা বলা হয়েছে।

নিভৃত অবকাশে সে অর্থাৎ আফ্রিকা দুর্গমের রহস্য সংগ্রহ করছিল এবং চিনে নিচ্ছিল জলস্থল ও আকাশের দুর্বোধ্য সংকেতগুলি। সেখানে সে ‘বিরূপের ছদ্দবেশে’ ভয়ংকরকে বিদ্রূপ করছিল এবং ‘বিভীষিকার প্রচণ্ড মহিমায়’ নিজেকে উগ্র করে ভয়কে হার মানাতে চাচ্ছিল।


2. “মন্দিরে বাজছিল পূজার ঘণ্টা” – কোন্ মন্দিরের কথা বলা হয়েছে? সেখানে পূজার ঘণ্টা কেন বেজেছিল? ১+২

উত্তরঃ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘আফ্রিকা’ কবিতা থেকে নেওয়া উদ্ধৃত অংশে সাম্রাজ্যবাদী ইউরোপীয়দের পাড়ায় পাড়ায় যে মন্দির রয়েছে, সেই মন্দিরের কথা বলা হয়েছে।

সাম্রাজ্যবাদীরা আফ্রিকার উপর অমানুষিক অত্যাচার করেছিল কিন্তু তাদের নিজের দেশে শান্তি শৃঙ্খলা বজায় রেখেছিল। ঔপনিবেশিক প্রভুদের পাড়ায় পাড়ায় মন্দিরে ঘন্টা-ধ্বনি অব্যাহত ছিল। সেখানে সকাল-সন্ধ্যায় দয়াময় দেবতার নামে পূজার ঘন্টা বাজত।


3. “নগ্ন করল আপন নির্লজ্জ অমানুষতাকে”- কারা এমন করেছিল? কীভাবে তারা তাদের অমানুষতা প্রকাশ করেছিল? ১+২

উত্তরঃ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘আফ্রিকা’ কবিতা থেকে নেওয়া উদ্ধৃত অংশে সভ্যতার মুখোশধারী সাম্রাজ্যবাদী ইউরোপীয়দের কথা বলা হয়েছে। আফ্রিকায় এসে তারা তাদের ‘নির্লজ্জ অমানুষতাকে’ উন্মুক্ত করেছিল।

প্রাকৃতিক সম্পদের লোভে সাম্রাজ্যবাদীরা পশুর মতো আফ্রিকার উপর ঝাঁপিয়ে পড়েছিল। একদিকে তারা দুহাত দিয়ে আফ্রিকার সম্পদ লুঠ করেছিল, আরেকদিকে তারা আফ্রিকার মানুষকে অকথ্য নির্যাতন করেছিল। এইভাবে, তারা তাদের অমানুষতা প্রকাশ করেছিল।


4. “চিরচিহ্ন দিয়ে গেল তােমার অপমানিত ইতিহাসে।”- কারা কীভারে চিরচিহ্ন দিয়ে গিয়েছিল? ১+২

উত্তরঃ কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘আফ্রিকা’ কবিতায় কবি সংক্ষেপে আফ্রিকার ‘অপমানিত ইতিহাসের’ কথা তুলে ধরেছেন। আগ্রাসনকামী ইউরোপীয়রা আফ্রিকার অপমানিত ইতিহাসে চিরচিহ্ন দিয়ে গিয়েছিল।

মূল ভূখণ্ড থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়ায় আফ্রিকা একসময় সভ্য জগতের কাছে অবহেলিত ছিল। কিন্তু কালক্রমে লোভী সাম্রাজ্যবাদীদের চোখ পড়ে আফ্রিকার উপর। তারা সেখানকার প্রাকৃতিক সম্পদ লুঠ করে এবং নিরীহ-নিষ্পাপ মানুষকে অত্যাচার করে আফ্রিকার ইতিহাসকে লাঞ্ছিত করেছিল।


5. “চিরচিহ্ন দিয়ে গেল তােমার অপমানিত ইতিহাসে”–‘ইতিহাস’ কীভাবে অপমানিত হল ?

উত্তরঃ পরাধীনতার গ্লানিতে, মানুষের সম্মানহীনতায় আফ্রিকার ইতিহাস হল অপমানিত। সেই অপমানের চিহ্ন চিরস্থায়ী করে দিয়ে গেছে বর্বর, লােলুপ, হিংস্র ইউরােপীয় সাম্রাজ্যবাদী শক্তিগুলি।


6. “নতুন সৃষ্টিকে বারবার করছিলেন বিধ্বস্ত”—কে, কেন বিধ্বস্ত করছিলেন?

উত্তরঃ নতুন সৃষ্টি তথা পৃথিবীর প্রতি প্রবল অসন্তোষে স্বয়ং স্রষ্টা বিধাতা তাকে বারবার বিধ্বস্ত, অর্থাৎ ভেঙে-গড়ে দেখছিলেন।


7. “ছিনিয়ে নিয়ে গেল তােমাকে, আফ্রিকা”—আফ্রিকাকে কে কোথায় ছিনিয়ে নিয়ে গেল?

উত্তরঃ ‘আফ্রিকা’ কবিতায় কবি কল্পনা করেছেন, সৃষ্টির যুগে স্রষ্টা যখন বারবার নিজের সৃষ্টি ভেঙে-চুরে নিখুঁত করে গড়ার চেষ্টায় রত, তখন উত্তাল সমুদ্র প্রাচ্যদেশ থেকে আফ্রিকা মহাদেশের ভূখণ্ডকে আলাদা করে ছিনিয়ে নিয়ে গিয়েছিল।


8. “গর্বে যারা অন্ধ তােমার সূর্যহারা অরণ্যের চেয়ে…” তারা কী করল?

উত্তরঃ বিপুল বিশ্বের গর্বান্ধ সাম্রাজ্যবাদী শক্তিগুলি লােহার হাতকড়ি দিয়ে আফ্রিকার মানুষদের সুকৌশলে শৃঙ্খলিত করল।


9. “অপরিচিত ছিল তােমার মানবরূপকার মানবরূপ অপরিচিত ছিল ?

উত্তরঃ সভ্যতার উগ্রতা আফ্রিকাকে তেমনভাবে স্পর্শ করেনি বলে তার মানবিকতা বােধের চিরস্নিগ্ধ রূপটি অবশিষ্ট পৃথিবীর কাছে সম্পূর্ণ অপরিচিত ছিল। রহস্যময় জগতের অচেনা সৌন্দর্যের ছায়া যেন সর্বদা ঘিরে থাকে আফ্রিকাকে।


10. “তােমার ভাষাহীন ক্রন্দনে…” ভাষাহীন ক্রন্দন কার ছিল?

উত্তরঃ নিজস্ব সত্তার রহস্য উন্মােচনে মগ্ন ‘আফ্রিকা’ অকস্মাৎ সাম্রাজ্যবাদীদের দ্বারা আক্রান্ত হলে, সে উগত ‘ভাষাহীন ক্রন্দনে’ ভেসে গিয়েছিল।


11. ….অপরিচিত ছিল তােমার মানবরূপ/উপেক্ষার আবিল দৃষ্টিতে।”—কার মানবরূপ, কাদের কাছে উপেক্ষার আবিল দৃষ্টিতে উপেক্ষিত ছিল?

উত্তরঃ প্রশ্নোপ্ত পঙক্তিটিতে আফ্রিকা মহাদেশের মানবরূপ যেন তার অরণ্য- আচ্ছাদিত ‘কালাে ঘােমটার নীচে’ সাম্রাজ্যবাদী দেশগুলির কাছে ‘উপেক্ষার আবিল দৃষ্টিতে অপরিচিত ছিল।


12. “পঙ্কিল হল ধূলি তােমার রক্তে অশ্রুতে মিশে…”—কীভাবে এমন পরিস্থিতি তৈরি হল?

উত্তরঃ পৃথিবীর বহু সাম্রাজ্যবাদী শক্তি নিজেদের শক্তি ও উপনিবেশ গড়ার লক্ষে স্বাধীন আফ্রিকা মহাদেশের মানুষকে শৃঙ্খলিত করল। বর্বর, অমানুষিক অত্যাচার চালালাে। এভাবেই এমন পরিস্থিতি তৈরি হল।


13.‘এসো যুগান্তের কবি,’—কবির ভূমিকাটি কী হবে? (মাধ্যমিক, ২০১৭)

উত্তরঃ যুগাস্তের কবি কল্পিত ভাবমূর্তি। বিশ্বকবির অভিলাষ অনুযায়ী এই কল্পিত কবি আফ্রিকায় অন্ধকার যুগের অবসান ঘটাতে আফ্রিকায় ক্ষমার বাণী প্রচার করবেন। ৫০ ‘যুগান্তের কবি’কে রবীন্দ্রনাথ কোথায় দাঁড়াতে বলেছেন? উত্তর যুগান্তের কল্পিত কবিকে রবীন্দ্রনাথ মানহারা, সাম্রাজ্যবাদীদের দ্বারা লাঞ্ছিত আফ্রিকার দ্বারপ্রান্তে গিয়ে দাঁড়াতে বলেছেন।


14.’মানহারা মানবী’ কে?

উত্তরঃ কবি রবীন্দ্রনাথের মানবিক কল্পনায় লুণ্ঠিতা রমণীর মতোই আফ্রিকা লাঞ্ছিত, সর্বহারা। নখ দাঁতসম্পন্ন সাম্রাজ্যবাদীরা তার মানবতাকে লুণ্ঠন করে তাকে মানহারা করেছে।


15. ‘বলো ক্ষমা করো’–কে, কেন এই বাণী উচ্চারণ করবে?

উত্তরঃ  কবিকল্পিত ‘যুগান্তের কবি’ সাম্রাজ্যবাদী সভ্য পশুদের হয়ে সর্বহারা, মানবতালুণ্ঠিত, অত্যাচারিত আফ্রিকাবাসীদের কাছে ক্ষমাপ্রার্থনার জন্য এই বাণী উচ্চারণ করবে।


16. হিংস্র প্রলাপের মধ্যে – হিংস্র প্রলাপ কী ?

উত্তরঃ  সাম্রাজ্যবাদের শেষ কথাই হল দখল, লুণ্ঠন ও পাশবিক অত্যাচার। সুতরাং আফ্রিকা দখলকারী সাম্রাজ্যবাদীদের উগ্র আস্ফালনই হল হিংস্র প্রলাপ।


17. সভ্যতার শেষ পুণ্যবাণী।’—‘পুণ্যবাণী’টি কী?

উত্তরঃ মানবতার পূজারি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর নিষ্পাপ কণ্ঠে ‘ক্ষমা করো’ এই বিশুদ্ধ উচ্চারণকেই সভ্যতার শেষ পুণ্যবাণী’ বলে মনে করেছেন |


18.‘ক্ষমা করো’ উচ্চারণটি সভ্যতার শেষ পুণ্যবাণী হয়ে উঠবে কেন?

উত্তরঃ  মানবতাবাদী রবীন্দ্রনাথ জানতেন হিংসা দিয়ে হিংসাকে জয় করা যায় না। তাই ‘ক্ষমা করো’ এই বিশুদ্ধ উচ্চারণটিকে ক্ষমার মহিমা প্রচারে তিনি ‘পুণ্যবাণী’ করে তুলতে চেয়েছেন।


19. ‘কৃপন আলাের অন্তঃপুরে’-কবিতা অনুসারে বক্তব্যটি লেখ।

উত্তরঃ বক্তব্য : রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচিত আফ্রিকা কবিতায় আফ্রিকার ভৌগােলিক, রাজনৈতিক সম্পর্কে মরমি বিশ্লেষণ রয়েছে। বনস্পতির নিবিড় আলিঙ্গনে, অরণ্যের দুর্ভেদ্য আলাে ছায়ায় আবৃত থাকে আফ্রিকা। নিরক্ষীয় জলবায়ুর অন্তর্গত হওয়ার জন্য বৃহৎ পাতা বিশিষ্ট গাছের সৃষ্টি হয় এখানে। অসংখ্য বৃক্ষ ঘন সন্নিবিষ্ট হওয়ায় অতি সামান্য আলােটুকু প্রবেশের অধিকার পায় না। অন্ধকারে আবৃত থাকে আফ্রিকার অধিকাংশ প্রান্তর।


20. বিদ্রপ করেছিল ভীষণকে অথবা, বিরূপের ছদ্মবেশে কে কিভাবে ভীষণকে বিদ্রুপ করেছিল?

উত্তরঃ ভীষণকে ব্যঙ্গ : আফ্রিকা নামাঙ্কিত কবিতায় রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর পৃথিবীর অন্য মহাদেশ থেকে বিছিন্ন আফ্রিকাকে ধীরে ধীরে সাবলম্বী হতে দেখেছিলেন। নিভৃত অবকাশে দুর্গমের রহস্য সংগ্রহ করেছিল বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ এ ভূখণ্ড। চিনেছিল জল, স্থল। আকাশের দুর্বোধ সংকেত। প্রকৃতি তাকে দিয়েছিল অপার রহস্যময়তা। অতীত জাদু মন্ত্র জাগাচ্ছিল আফ্রিকার চেতনাতীত মনে। আফ্রিকার ওপর সাম্রাজ্যবাদী শক্তির আস্ফালনকে আফ্রিকা নিজেই চিনে নিতে চাইছিল। সেই ভীষণ শক্তিশালী শক্তিকে ব্যঙ্গ করার স্পর্ধা অর্জন করেছিল।


21. এল ওরা লােহার হাতকড়ি নিয়ে, ওরা বলতে কাদের কথা বলা হয়েছে। লােহার হাতকড়ি নিয়ে আসার কারণ কী?

উত্তরঃ সাম্রাজ্যবাদী শক্তির মানুষ : তথাকথিত সাম্রাজ্যবাদী শক্তির মানুষদের রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর আফ্রিকা কবিতায় ওরা বলে চিহ্নিত করেছেন।

লােহার হাতকড়ি :সাম্রাজ্যবাদী শক্তির মানুষরা বারবার আফ্রিকার ওপর অত্যাচার করে। কালাে রঙের এই মানুষদের তারা উপেক্ষার দৃষ্টিতে দেখে। এই সহজ সরল জীবনযাপনে অভ্যস্ত মানুষদের নিজের ভূমি থেকে বিতাড়িত করা হয়। তাদের হাতে পরিয়ে দেওয়া হয় দাসত্বের শৃঙ্খল। বিপন্ন হয় আফ্রিকার স্বাধীনতা।


22. নখ যাদের তীক্ষ্ণ তােমার নেকড়ের চেয়ে–তােমার বলতে কাদের কথা বলা হয়েছে, কাদের নখ কেন নেকড়ের থেকে তীক্ষ্ণ ?

উত্তরঃ আফ্রিকা মহাদেশ : তােমার বলতে আফ্রিকা মহাদেশের কথা বলা হয়েছে।

সাম্রাজ্যবাদী শক্তির হিংস্রতা : দুর্ভেদ্য জঙ্গলে পরিবৃত আফ্রিকার হিংস্র আরণ্যক প্রাণীদের অন্যতম হল নেকড়ে। নেকড়ের তীক্ষ্ণ নখের থেকেও সূচালাে ও ধারালাে হল সাম্রাজ্যবাদী শক্তির আগ্রাসন। পশ্চিমী দুনিয়া আফ্রিকার ওপর বর্বর উল্লাসে ঝাপিয়ে পড়ে। এদের আগ্রাসনের কথা বলতে গিয়ে কবি ‘নখ যাদের তীক্ষ্ণ এই বাক্য বন্ধটি প্রয়ােগ করে দুনিয়ার লােলুপ হিংস্রতাকে সঠিকভাবে চিহ্নিত করেছেন। কবি এখানে সাম্রাজ্যবাদী শক্তির প্রতি ঘৃণা প্রকাশ করে আলােচ্য উক্তিটি প্রকাশ করেছেন।


23. স্রষ্টা যখন নিজের প্রতি অসন্তোষে’—স্রষ্টা কে? তিনি নিজের প্রতি অসন্তুষ্ট হয়েছিলেন কেন?

উত্তরঃ আলোচ্য উদ্ধৃতির উৎস কবি রবীন্দ্রনাথের ‘আফ্রিকা’ কবিতাটি। কবি ‘স্রষ্টা’ বলতে বিশ্ববিধাতা পরমেশ্বরকে চিহ্নিত করেছেন।

শিল্পীর কাছে তার সৃষ্টি পরম সাধনার। সৃষ্টিকে নিখুঁত করে গড়ে তোলার কাজে জগদীশ্বর মগ্ন হয়েছেন কিন্তু সৃষ্টি মনের মতো না হওয়ায় তিনি অসন্তুষ্ট হয়েছেন। হৃদয়ের উৎসে সৃষ্টির রূপ যেভাবে জেগে উঠেছে, বাস্তবের পটভূমিতে তাকে সেইভাবে রূপায়িত করার তাগিদে পরমেশ্বর নিজের প্রতি অসন্তুষ্ট হয়ে উঠেছিলেন।


24. তাঁর সেই অধৈর্যে ঘন-ঘন মাথা নাড়ার দিনে’–এই ‘ঘন-ঘন মাথা নাড়া’ কথাটির দ্বারা কী বোঝানো হয়েছে? 

উত্তরঃ  বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচিত ‘আফ্রিকা’ কবিতা থেকে উদ্ধৃতাংশটি গৃহীত।

সভ্যতার আদিলগ্নে সৃষ্টিকে নিখুঁত করে গড়ে তোলার সাধনায় নিমগ্ন ছিলেন জগৎস্রষ্টা পরমেশ্বর। প্রকৃত স্রষ্টামাত্রই চির-অস্থির, চির-অতৃপ্ত। জগৎস্রষ্টা ঈশ্বরের হৃদয়ও সৃষ্টির প্রতি অসন্তোষে অস্থির হয়ে উঠেছিল। নিজের সৃষ্টির সঙ্গে একাত্ম হতে না পারার যন্ত্রণাই তাঁকে অধৈর্য, অসন্তুষ্ট করে তুলেছে। স্রষ্টার হৃদয়ের অতৃপ্তির সেই নেতিবাচক ভাবই প্রকাশ পেয়েছে আলোচ্য উদ্ধৃতিটিতে।


25.‘গর্বে যারা অন্ধ তোমার সূর্যহারা অরণ্যের চেয়ে। — উদ্ধৃতাংশটির অন্তর্নিহিত অর্থ বিশ্লেষণ করো।

উত্তরঃ উদ্ধৃতাংশটির উৎস কবি রবীন্দ্রনাথ রচিত ‘আফ্রিকা’ কবিতা। পৃথিবীর ইতিহাসে জ্ঞান-বিজ্ঞান এবং মানবসভ্যতার অগ্রগতির অন্যান্য ক্ষেত্রে শ্রেষ্ঠত্ব অর্জন করেছে পশ্চিমি দুনিয়া। সেই শ্রেষ্ঠত্ব তাদের

উদ্ধত, অহংকারী এবং অমানবিক করে তুলেছে। শিক্ষা, প্রাচুর্য এবং আধুনিকতার অহংকারে উন্মত্ত শ্বেতাঙ্গ শাসকশ্রেণির মনুষ্যত্ব বিনষ্ট হয়েছে। বনস্পতির ছায়ায় ঘেরা, মায়াময় আফ্রিকার সহজসরল জনজীবনে অত্যাচারের অভিশাপ বয়ে এনেছে ক্ষমতার দম্ভে অন্ধ রাষ্ট্রনায়করা। নিবিড় বনস্পতির ঘন পল্লব ভেদ করে সূর্যের আলো প্রবেশ করতে পারে না বলে আফ্রিকা যেমন অন্ধকারাচ্ছন্ন, উন্নাসিক সভ্যজাতিও তেমনি গর্বে অন্ধ।



আফ্রিকা রচনাধর্মী প্রশ্ন - আফ্রিকা কবিতার রচনাধর্মী প্রশ্নোত্তর - Africa Descriptive Questions and Answers

1. “চিরচিহ্ন দিয়ে গেল। তােমার অপমানিত ইতিহাসে।”– ‘তােমার’ বলতে কার কথা বলা হয়েছে? তার ‘অপমানিত ইতিহাসের’ সংক্ষিপ্ত পরিচয় দাও। ১+৪ [মাধ্যমিক ২০১৯]

উত্তরঃ বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘আফ্রিকা’ কবিতা থেকে নেওয়া উদ্ধৃত অংশে ‘তোমার’ বলতে আফ্রিকার কথা বলা হয়েছে।

গভীর অরণ্য বেষ্টিত হওয়ায় আফ্রিকা একসময় সভ্য জগতের কাছে অবহেলিত ছিল। কিন্তু বিশ শতকের প্রথমার্ধে ইউরোপের শক্তিধর দেশগুলি আফ্রিকার বিশাল প্রাকৃতিক সম্পদের কথা জানতে পারে। এরপরেই আফ্রিকা সাম্রাজ্যবাদীদের কু’নজরে পড়েছিল।

বাইরের জগতের কাছে ইউরোপীয়রা সভ্য এবং শিক্ষিত বলেই পরিচিত। কিন্তু আফ্রিকায় এসেই তারা সভ্যতার মুখোশ খুলে ফেলল। তারা দেখিয়ে দিল যে তারা কতটা লোভী, কতটা বর্বর। আফ্রিকার অরণ্যে যে নেকড়ে থাকে তার থেকেও তীক্ষ্ণ নখবিশিষ্ট সাম্রাজ্যবাদীর দল ঝাঁপিয়ে পড়েছিল আফ্রিকার উপর। দুহাত দিয়ে আফ্রিকার সম্পদ লুঠ করার পাশাপাশি তারা আফ্রিকার সহজসরল মানুষদেরকে অকথ্য অত্যাচার করতে লাগল। তাদের রক্তে এবং চোখের জলে আফ্রিকার মাটি কর্দমাক্ত হয়ে উঠল।

আফ্রিকায় আগত সাম্রাজ্যবাদী শক্তিকে কবি বলেছেন “মানুষ ধরার দল”। সভ্যতার গর্বে অন্ধ হয়ে তারা ভুলে গেল সাধারণ মনুষ্যত্বের কথা। তারা ‘লোহার হাতকড়ি নিয়ে’ আফ্রিকার কৃষ্ণাঙ্গ মানুষদের বন্দি বানিয়ে ক্রীতদাস হিসেবে ইউরোপে চালান করতে লাগল। এইভাবে সাম্রাজ্যবাদীরা আফ্রিকা এবং তার সন্তানদের উপর অত্যাচার করে আফ্রিকার ইতিহাসকে অপমানিত করেছিল।


2. “এল ওরা লোহার হাতকড়ি নিয়ে”- ওরা কারা? ওরা আফ্রিকাতে কী কী করেছিল তার সংক্ষিপ্ত পরিচয় দাও। ১+৪

উত্তরঃ বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘আফ্রিকা’ কবিতা থেকে নেওয়া উদ্ধৃত অংশে ‘ওরা’ বলতে ইউরোপীয় সাম্রাজ্যবাদীদের বোঝানো হয়েছে।

গভীর অরণ্য বেষ্টিত হওয়ায় আফ্রিকা একসময় সভ্য জগতের কাছে অবহেলিত ছিল। কিন্তু বিশ শতকের প্রথমার্ধে ইউরোপের শক্তিধর দেশগুলি আফ্রিকার বিশাল প্রাকৃতিক সম্পদের কথা জানতে পারে। এরপরেই আফ্রিকা সাম্রাজ্যবাদীদের কু’নজরে পড়েছিল।

বাইরের জগতের কাছে ইউরোপীয়রা সভ্য এবং শিক্ষিত বলেই পরিচিত। কিন্তু আফ্রিকায় এসেই তারা সভ্যতার মুখোশ খুলে ফেলল। তারা দেখিয়ে দিল যে তারা কতটা লোভী, কতটা বর্বর। আফ্রিকার অরণ্যে যে নেকড়ে থাকে তার থেকেও তীক্ষ্ণ নখবিশিষ্ট সাম্রাজ্যবাদীর দল ঝাঁপিয়ে পড়েছিল আফ্রিকার উপর। দুহাত দিয়ে আফ্রিকার সম্পদ লুঠ করার পাশাপাশি তারা আফ্রিকার সহজসরল মানুষদেরকে অকথ্য অত্যাচার করতে লাগল। তাদের রক্তে এবং চোখের জলে আফ্রিকার মাটি কর্দমাক্ত হয়ে উঠল।

আফ্রিকায় আগত সাম্রাজ্যবাদী শক্তিকে কবি বলেছেন “মানুষ ধরার দল”। সভ্যতার গর্বে অন্ধ হয়ে তারা ভুলে গেল সাধারণ মনুষ্যত্বের কথা। তারা ‘লোহার হাতকড়ি নিয়ে’ আফ্রিকার কৃষ্ণাঙ্গ মানুষদের বন্দি বানিয়ে ক্রীতদাস হিসেবে ইউরোপে চালান করতে লাগল। এইভাবে সাম্রাজ্যবাদীরা আফ্রিকা এবং তার সন্তানদের উপর অত্যাচার করে আফ্রিকার ইতিহাসকে অপমানিত করেছিল।


3. “হায় ছায়াবৃতা” – ‘ছায়াবৃতা’ বলার কারণ কী? তার সম্পর্কে কবি কী বলেছেন সংক্ষেপে লেখাে। ১+৪ [মাধ্যমিক ২০১৭]

উত্তরঃ বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘আফ্রিকা’ কবিতা থেকে নেওয়া উদ্ধৃত অংশে আফ্রিকাকে ছায়াবৃতা বলা হয়েছে। আফ্রিকার বুকে গভীর অরণ্য থাকায় সেখানে সূর্যের আলোও প্রবেশ করতে পারে না। সবসময় ছায়াচ্ছন্ন থাকে বলে কবি আফ্রিকাকে ছায়াবৃতা বলেছেন।

আলোচ্য কবিতায় কবি আফ্রিকার জন্মলগ্ন থেকে ঔপনিবেশিক শাসনকাল পর্যন্ত বিস্তৃত সময়কালকে তুলে ধরেছেন।

সৃষ্টির আদি লগ্নে রুদ্র সমুদ্রের বাহু প্রাচী ধরিত্রীর বুকের থেকে আফ্রিকাকে ছিনিয়ে নিয়ে গিয়েছিল এবং তাকে স্থাপন করেছিল বনস্পতির নিবিড় পাহারায়, যেখানে আলোও প্রবেশ করে না। সেই নিরালায় বসে আফ্রিকা নিজেকে দুর্গম করে তুলছিল এবং প্রকৃতির সঙ্গে আত্মস্থ হয়ে জল, স্থল, আকাশের দুর্বোধ্য সংকেতগুলি আয়ত্ত করছিল। নিজেকে উগ্ররূপে সাজিয়ে সে ভয়ংকরকে বিদ্রূপ করেছিল এবং ভয়কেও হার মানিয়েছিল। এভাবে বহুকাল আফ্রিকা সভ্য জগতের কাছে অপরিচিত ছিল।

তারপর সেখানে এল সভ্যতার গর্বে অন্ধ ইউরোপীয় দুর্বৃত্তরা। কবির ভাষায় ‘মানুষ ধরার দল’। আফ্রিকার নেকড়ের চেয়েও তীক্ষ্ণ নখ নিয়ে তারা ঝাঁপিয়ে পড়েছিল আফ্রিকার উপর। সম্পদ লুঠ করার পাশাপাশি তারা আফ্রিকার সহজ সরল মানুষগুলোকে ক্রীতদাস বানিয়ে ইউরোপে পাচার করেছিল। এইভাবে সাম্রাজ্যবাদী শক্তি আফ্রিকার ইতিহাসকে কলঙ্কিত করেছিল।



Google News এ আমাদের ফলো করুন


Gksolves Google News

ঘোষণা: বিনামূল্যে আমাদের দেওয়া নোটস, সাজেশান, প্রশ্ন উত্তর ইত্যাদি স্টাডি ম্যাটেরিয়াল PDF এবং ভিডিও ক্লাস ভালো লাগলে, আমাদের এই পোস্টের লিংক আপনার বন্ধুদের ফেসবুক, WhatsApp এ শেয়ার করে তাদের পড়ার সুযোগ করে দিন।

Post a Comment

0 Comments
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.