তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায় এর জন্ম ও পারিবারিক পরিচয় - Birth And Family Of Tarasankar Bandyopadhyay
১৮৯৮ খ্রিষ্টাব্দের ২৩ জুলাই পশ্চিমবঙ্গের বীরভূম জেলার লাভপুর গ্রামে জমিদার পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা-মায়ের নাম হরিদাস বন্দ্যোপাধ্যায় ও প্রভাবতী দেবী। তাদের বাড়িতে নিয়মিত কালী ও তারা মায়ের পুজো হতো। তার বাবা মা দুজনেই ছিলেন অত্যন্ত ধর্মপরায়ণ ও আদর্শনিষ্ঠ। তারাশঙ্করের জন্মগ্রহণ করার আগে প্রভাবতী দেবী ও হরিদাসের জ্যেষ্ঠপুত্রের মৃত্যু হয়। তাই তাদের পরিবারে তারা মায়ের পুজো শুরু হওয়ার ঠিক দশমাস পরে তারাশঙ্করের জন্ম হয়৷ তিনি মায়ের দয়ায় জাত হয়েছিলেন বলেই তার নাম রাখা হয় তারাশঙ্কর।
Also Read: প্রেমেন্দ্র মিত্র র জীবনী
তারাশঙ্কর ছোটবেলায় মাদুলি, তাবিচ, কবচ এবং বহু সংস্কারের গন্ডিতে বড় হয়ে ওঠেন। আসলে সততা, ধর্মভাব, ভক্তি ও ধর্মশাস্ত্রীয় বিশ্বাস তিনি পেয়েছিলেন মায়ের কাছ থেকে। যদিও পরবর্তী জীবনে এ সব বিশ্বাস নিয়ে অনেক দ্বিধা দ্বন্দ্ব ও জিজ্ঞাসা তার মনকে আলোড়িত করেছে। প্রগতিশীল চিন্তার শরিক হয়েছেন।
তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায় এর শৈশব ও শিক্ষা - Educational Life Of Tarasankar Bandyopadhyay
তারাশঙ্করের বাল্যজীবন কাটে গ্রামের পরিবেশেই গ্রামের স্কুল থেকে। তারাশঙ্কর লাভপুরের যাদবলাল হাই স্কুল থেকে ১৯১৬ সালে এন্ট্রান্স (প্রবেশিকা) পরীক্ষায় প্রথম বিভাগে উত্তীর্ণ হয়ে প্রথমে সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজে এবং পরে সাউথ সুবার্বন কলেজে (এখনকার আশুতোষ কলেজ) ভর্তি হন। তিনি সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজে ইন্টারমিডিয়েট পড়ার সময় অসহযোগ আন্দোলনে যোগ দেন। স্বাস্থ্যভঙ্গ এবং রাজনৈতিক কার্যকলাপের কারণে তার পক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠক্রম সম্পূর্ণ করা সম্ভব হয়নি।
ভারতীয় স্বাধীনতা আন্দোলনের সাথে সক্রিয়ভাবে যুক্ত থাকার কারণে ১৯৩০ খ্রিষ্টাব্দে গ্রেপ্তার হলেও পরে মুক্তি পেয়ে যান। এরপর নিজেকে সাহিত্যে নিয়োজিত করেন। ১৯৩২ সালে তিনি প্রথমবার শান্তিনিকেতনে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সাথে দেখা করেন। একই বছরে তার প্রথম উপন্যাস "চৈতালী ঘূর্ণি" প্রকাশ পায়।
Also Read: বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় এর জীবনী
তারাশঙ্কর ১৯৪০ খ্রিষ্টাব্দে বাগবাজারে একটি বাড়ি ভাড়া করে নিজের পরিবারকে কলকাতায় নিয়ে আসেন ও ১৯৪১-এ তিনি বরাহনগরে চলে যান। তারাশঙ্কর ১৯৪২-এর বীরভূম জেলা সাহিত্য সম্মেলনের সভাপতিত্ব করেন এবং ফ্যাসিবিরোধী লেখক ও শিল্পী সংগঠনের সভাপতি হন।[২] তিনি ১৯৭০ সালে বঙ্গীয় সাহিত্য-পরিষদের সভাপতি নির্বাচিত হয়েছিলেন।
তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায় এর রাজনৈতিক জীবন
তারাশঙ্কর কংগ্রেসের কর্মী হয়ে সমাজসেবামূলক কাজ করেন এবং এর জন্য তিনি কিছুদিন জেলও খাটেন। একবার তিনি ইউনিয়ন বোর্ডের প্রেসিডেন্টও হয়েছিলেন। ১৯৫২ খ্রিষ্টাব্দে তিনি পশ্চিমবঙ্গের বিধান পরিষদের সদস্য হন।
তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায় এর লেখার বৈশিষ্ট্য
তার লেখায় বিশেষ ভাবে পাওয়া যায় বীরভূম-বর্ধমান অঞ্চলের সাঁওতাল, বাগদি, বোষ্টম, বাউরি, ডোম, গ্রাম্য কবিয়াল সম্প্রদায়ের কথা। ছোট বা বড় যে ধরনের মানুষই হোক না কেন, তারাশঙ্কর তার সব লেখায় মানুষের মহত্ত্ব ফুটিয়ে তুলেছেন, যা তার লেখার সবচেয়ে বড় গুণ। সামাজিক পরিবর্তনের বিভিন্ন চিত্র তার অনেক গল্প ও উপন্যাসের বিষয়। সেখানে আরও আছে গ্রাম জীবনের ভাঙনের কথা, নগর জীবনের বিকাশের কথা।
Also Read: উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী র জীবনী
তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায় এর চলচ্চিত্র
তারাশঙ্করের উপন্যাস, গল্প ও নাটক নিয়ে চল্লিশটিরও বেশি চলচ্চিত্র নির্মিত হয়েছে। সত্যজিৎ রায়ও তারাশঙ্করের জলসাঘর এবং অভিযান উপন্যাসের সফল চিত্ররূপ দিয়েছেন। তার যেসব রচনা চলচ্চিত্রে রূপায়িত হয়েছে সেগুলির মধ্যে আছে: জলসাঘর , অভিযান ইত্যাদি।
তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায় রচিত গ্রন্থাবলি
- নিশিপদ্ম
- চৈতালি ঘূর্ণি
- পাষাণপুরী
- নীলকণ্ঠ
- ধাত্রীদেবতা
- গণদেবতা
- মন্বন্তর
- পঞ্চগ্রাম
- কবি
- অভিযান
- হাঁসুলীবাঁকের উপকথা
তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায় এর ছোটোগল্প
- জলসাঘর
- প্রতিধ্বনি
- কামধেনু
- বিষপাথর
Also Read: আশাপূর্ণা দেবী র জীবনী
তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায় প্রাপ্ত পুরস্কার ও সম্মান
১৯৫৫ খ্রিষ্টাব্দে তিনি পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারের কাছ থেকে “রবীন্দ্র পুরস্কার” লাভ করেন। ১৯৫৬ খ্রিষ্টাব্দে “সাহিত্য অকাদেমি পুরস্কার” পান। ১৯৫৭ খ্রিষ্টাব্দে তিনি চীন সরকারের আমন্ত্রণে চীন ভ্রমণে যান। এর পরের বছর তিনি অ্যাফ্রো-এশিয়ান লেখক সঙ্ঘের কমিটি গঠনের প্রস্ততিমূলক সভায় যোগদানের উদ্দেশ্যে সোভিয়েত ইউনিয়ন গমণ করেন। এর পর তিনি তাসখন্দে অনুষ্ঠিত অ্যাফ্রো-এশিয়ান লেখক সম্মেলনে ভারতীয় প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেন। ১৯৬২ খ্রিষ্টাব্দে তারাশঙ্কর ভারত সরকারের পদ্মশ্রী ও ১৯৬৮ খ্রিষ্টাব্দে পদ্মভূষণ উপাধিতে ভূষিত হন।
- শরৎস্মৃতি পুরস্কার
- জগত্তারিণী স্মৃতিপদক
- রবীন্দ্র পুরস্কার
- সাহিত্য অকাদেমী পুরস্কার
- জ্ঞানপীঠ পুরস্কার
- পদ্মশ্রী ও পদ্মভূষণ উপাধি
তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায় এর মৃত্যু - Death Of Tarasankar Bandyopadhyay
মৃত্যু : সেপ্টেম্বর ১৪, ১৯৭১ সালে।
Also Read:
❏ বাংলা সাহিত্যের বিখ্যাত চরিত্র ও তাদের স্রষ্টা PDF
❏ কবি সাহিত্যিক এর ছদ্মনাম এর তালিকা
❏ প্রাবন্ধিক রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
❏ বিখ্যাত বাংলা সাহিত্যিক ও তাদের রচনা
❏ Bengali to English Translation writing Pdf
❏ পত্র লিখন ইংরেজি ও বাংলা Pdf
❏ বাংলা সাহিত্যের প্রশ্নোত্তর Pdf
❏ বাংলা সাহিত্যের বিভিন্ন রচনার পূর্ব নাম Pdf
❏ বিখ্যাত বাংলা চলচিত্র ও পরিচালকের নামের তালিকা
❏ বাংলা সাহিত্যের ইতিহাস প্রশ্ন ও উত্তর
❏ বাংলা সাহিত্যে বিখ্যাত সাহিত্যিক ও তাদের সৃষ্টি
❏ ডাউনলোড বাংলা প্রতিবেদন রচনা
❏ অনুবাদ লিখন বাংলা থেকে ইংরাজি Pdf
❏ বাংলা সাহিত্যের MCQ প্রশ্নোত্তর Pdf
❏ বাংলা ও বিশ্ব সাহিত্যের বিভিন্ন চরিত্র ও তার স্রষ্ঠা Pdf
❏ বাংলা সাহিত্যের বিভিন্ন চরিত্র ও তার স্রষ্টা Pdf
❏ বাংলা সাহিত্যের গুরত্বপূর্ণ প্রশ্নোত্তর Pdf
❏ বাংলা সাহিত্যের Mcq প্রশ্নোত্তর Pdf
❏ কবি সাহিত্যিকদের সাহিত্যকর্ম মনে রাখার উপায়
❏ কবি সাহিত্যিকদের ছদ্মনামের তালিকা Pdf
❏ বাংলা সাহিত্য কর্মের প্রধান চরিত্র Pdf
❏ গুরত্বপূর্ণ বাংলা বই ও তার লেখক Pdf
❏ একই নামে ভিন্নধর্মী গ্রন্থ ও লেখক Pdf
❏ পুরষ্কার সম্পর্কিত প্রশ্ন উত্তর Pdf
Others Important Link
Syllabus Link: Click Here
Question Paper Link: Click Here
Admit Card Link: Click Here
Result Link: Click Here
Latest Job: Click Here
Age Calculator: Click Here
Please do not share any spam link in the comment box