আকবরের শাসনকালে মুঘল সাম্রাজ্যের বিস্তৃতি: Expansion Of The Mughal Empire During The Under Of Akbar
আকবরের শাসনকালে মুঘল সাম্রাজ্যের বিস্তৃতি: Expansion Of The Mughal Empire During The Under Of Akbar
প্রশ্ন: আকবরের শাসনকালে মুঘল সাম্রাজ্যের বিস্তৃতির বিবরণ দাও (Review the expansion of the Mughal Empire under Akbar).
উত্তর: ১৫৫৬ খ্রিস্টাব্দে হুমায়ুনের আকস্মিক মৃত্যুর পর তাঁর পুত্র আকবর দিল্লির সিংহাসনে বসেন। কিন্তু তখন তিনি ছিলেন নিতান্তই নাবালক। তাই বিশ্বস্ত বৈরাম খাঁ ছিলেন তার অভিভাবক। ১৫৫৬ থেকে ১৫৬০ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত সময়ে বৈরাম খাঁ -ই ছিলেন মুঘল সাম্রাজ্যের প্রকৃত কর্ণধার। নানা কারণে তাঁর প্রতি অসন্তুষ্ট হয়ে আকবর ১৫৬০ খ্রিস্টাব্দে বৈরামকে পদচ্যুত করে শাসনদায়িত্ব নিজের হাতে তুলে নেন এবং রাজ্যজয় ও সুদৃঢ়করণের কাজে আত্মনিয়ােগ করেন।
❏ রাজ্যবিজয়ের উদ্দেশ্য:- তিনি সর্বপ্রথম সমগ্র উত্তর ভারত ও মধ্য ভারতকে একই শাসনাধীনে আনতে সক্ষম হন এবং দক্ষিণ ভারতেও মুঘল-আধিপত্য প্রসার করেন। রাজ্যবিজয় সম্পর্কে আকবরের মত হল, “ রাজা সর্বদা প্রতিবেশী রাজ্য দখলে সচেষ্ট থাকবেন; তা না হলে প্রতিবেশী রাজ্য তাঁর বিরুদ্ধে অস্ত্রধারণ করবে। সেনাদলকে যুদ্ধে অভ্যক্ত রাখা দরকার, তা না -হলে সৈন্যরা অকেজো হয়ে পড়বে। ” আকবরের রাজ্যবিস্তার নীতি বর্ণনা করতে গিয়ে বিভারিজ বলেছেন যে, “ আকবর ছিলেন একজন শক্ত ও দৃঢ় সাম্রাজ্যবাদী, যাঁর সাম্রাজ্যবাদী সূর্যের কাছে লর্ড ডালহৌসীর সাম্রাজ্যবাদ। তারকা ম্লান হয়ে যায় ” (“ Akbar was a strong and stout_annexationist before whose sun the modest star of Lord Dalhousie pales. ") গবেষক ভন নাের (Von Noer) -এর মতে, “নিছক রাজ্যজয়ের নেশায় আকবর যুদ্ধে প্রবৃত্ত হননি। এ কাজে তার অন্যতম প্রেরণা ছিল পৈতৃক রাজ্য পুনরুদ্ধার করে ভারতের রাজনৈতিক ঐক্য ও সংহতি স্থাপন করা।” আকবরের ঘনিষ্ঠ বন্ধু ও তার সভাপণ্ডিত আবুল ফজল বলেছেন যে, “আঞ্চলিক স্বৈরাচারী রাজাদের অত্যাচারে জর্জরিত সাধারণ মানুষকে মুক্তি ও শান্তিদানের উদ্দেশ্যেই আকবর রাজ্যবিজয়-নীতি গ্রহণ করেন।” এই মত সর্বাংশে না-হলেও বহুলাংশে সত্য। কারণ, কেবল লুণ্ঠন ও দখলের জন্যই তিনি রাজ্যবিজয় করেননি। বংশগতভাবে উচ্চাকাঙ্ক্ষা ও সাম্রাজ্যবাদী মনােভাব তার ছিল ঠিকই, তবে তার সাথে সুশাসন ও প্রজানুরঞ্জনের আদর্শকে যুক্ত করে আকবর তার সাম্রাজ্যবাদকে এক মহত্তর রূপ দিতে সক্ষম হয়েছিলেন।
❏ উত্তর ভারত ও মধ্য ভারত বিজয়: ১৫৬১ খ্রিস্টাব্দে আদম খাঁ'র নেতৃত্বে মুঘলবাহিনী মালবের রাজা বজবাহাদুরকে পরাজিত করে মালব দখল করে। বজবাহাদুর ছিলেন সংস্কৃতিবান শাসক। পির মহম্মদ মালবের শাসক নিযুক্ত হন। কিন্তু তার দুর্বলতার সুযােগে বজবাহাদুর মালব পুনর্দখল করে নেন। এরপর আকবরের সেনাপতি আবদুল্লা খাঁ উজবেক বজবাহাদুরকে চূড়ান্তভাবে পরাজিত করে মালবকে আকবরের প্রত্যক্ষ শাসনাধীনে আনেন।
❏ ১৫৬৪ খ্রিস্টাব্দে আকবর আসফ খাঁ কে গড়কাতাঙ্গা বা গণ্ডোয়ানা বিজয়ে প্রেরণ করেন। তখন গণ্ডোয়ানার রানি দুর্গাবতী তাঁর নাবালক পুত্র বীরনারায়ণের অভিভাবিকা হিসেবে ওই রাজ্য শাসন পরিচালনা করেছিলেন। দুর্গাবতী বীরত্বের সাথে যুদ্ধ করেও শেষ পর্যন্ত মুঘলবাহিনীর হাতে পরাজিত হন এবং আত্মহত্যা করেন। অবশ্য কয়েক বছর পরে ওই রাজ্যেরই জনৈক বংশধর চন্দ্র শাহ কে গণ্ডোয়ানার সিংহাসনে স্থাপন করে আকবর ওই রাজ্যের সাথে প্রীতির সম্পর্ক স্থাপন করেন।
❏ বিচক্ষণ ও দূরদৃষ্টিসম্পন্ন আকবর বুঝেছিলেন যে, কেবল সামরিক শক্তির দ্বারা রাজ্য জয় করে সেই রাজ্যকে সুসংহত করা সম্ভব নয়। তা ছাড়া, তখনও আফগান জাতি মুঘলদের শত্রুরূপে বিরাজমান। এই অবস্থায় তিনি ভারতীয় যােদ্ধা জাতি রাজপুতদের সাথে ‘বশ্যতামূলক মিত্রতা'র নীতি অনুসরণ করেন। আত্মীয়তা অম্বর বা জয়পুরের রাজা বিহারীমল আকবরের বশ্যতা স্বীকার করলে সম্রাট স্বয়ং বিহারীমলের কন্যাকে বিবাহ করেন এবং বিহারীমলের পুত্র ভগবান দাসের কন্যার সাথে নিজ পুত্র জাহাঙ্গীরের বিবাহ দেন। আকবর বিকানিরের রাজ কন্যাকেও বিবাহ করেন। তা ছাড়া ভগবানদাস ও মানসিংহকে মনসবদার-পদে নিযুক্ত করেন। এইভাবে তিনি আত্মীয়তা ও সমঝােতার দ্বারা রাজপুত জাতিকে মুঘলদের মিত্রে পরিণত করেন। অতঃপর জয়সলমির, যােধপুর, বঁদি প্রভৃতি স্থানের রাজপুত রাজারা আকবরের মৈত্রী-বন্ধনে আবদ্ধ হন।
❏ অধিকাংশ রাজপুত রাজ্য আকবরের ‘ বশ্যতামূলক মিত্ৰতা’র অধীনে এলেও মেবার। ছিল এর ব্যতিক্রম। মেবারের রানা উদয় সিংহ আকবরকে ‘ বিদেশি ’ আখ্যা দিয়ে তার সাথে কোনােরকম সহযােগিতা বা বন্ধুত্বকে অস্বীকার করেন। কিন্তু আকবর জানতেন, উত্তর ভারতে মুঘল - প্রভুত্ব স্থাপন করতে হলে মেবার জয় ছিল আবশ্যিক। তা ছাড়া, মেবারের রাজধানী চিতাের ছিল গুজরাটের সাথে দিল্লির জলপথে যােগাযােগের কেন্দ্রভূমি। তাই বন্ধুত্বলাভে ব্যর্থ হয়ে আকবর চিতাের গণ্ডোয়ানা রাজপুতদের সাথে মেরীর আক্রমণ করেন (১৫৬৭ খ্রিঃ)। উদয় সিংহ জয়মল ও পত্ত নামক দুজন রাজপুত বীরের হাতে চিতাের দুর্গের দায়িত্ব দিয়ে গভীর জঙ্গলে আশ্রয় গ্রহণ করেন। দীর্ঘ চার মাস যুদ্ধের পর মুঘলবাহিনী চিতাের দখল করে। বহু রাজপুত রমণী অগ্নিকুণ্ডে ঝাঁপ দিয়ে প্রাণ বিসর্জন করেন। আসফ খাঁ মেবারের শাসক নিযুক্ত হন।
❏ মেবারের পতনের পর বিকানীর, কালিঞ্জর, মাড়াবার আকবরের বশ্যতা স্বীকার করে নেয়। এইভাবে সমগ্র রাজপুতানা আকবরের অধীনস্থ হয়।
❏ চিতােরের পতন ঘটলেও মেবার সরকারিভাবে আকবরের বশ্যতা অস্বীকার করে এবং মুঘলের বিরুদ্ধে যুদ্ধ-প্রস্তুতি চালিয়ে যায়। উদয় সিংহের পুত্র রানা প্রতাপ আকবরের মিত্রতার আহ্বানকে ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করেন। স্মিথের মতে, “রানা প্রতাপের অপরাধ ছিল তাঁর স্বদেশপ্রেম, তাই আকবর তাকে ধ্বংস করার সিদ্ধান্ত নেন।” সেনাপতি আসফ খাঁ ও মানসিংহের নেতৃত্বে বিরাট মুঘলবাহিনী মেবার আক্রমণ করে। ১৫৭৬ খ্রিস্টাব্দে হলদিঘাটের প্রান্তরে উভয় পক্ষের মধ্যে তুমুল যুদ্ধ হয়। শেষ পর্যন্ত রাজপুতরা পরাজিত হয় এবং রানা প্রতাপ জঙ্গলে পালিয়ে আত্মরক্ষা করেন। জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত তিনি গভীর দুঃখকষ্টের মধ্যে থেকেও মুঘল-বিরােধিতা চালিয়ে যান। মৃত্যুর পূর্বে তিনি বহু দুর্গ পুনর্দখল করতে সক্ষম হন। আকবর মেবারের বিরুদ্ধে আর কোনাে অভিযান পাঠাননি।
❏ রাজপুতানা জয়ের পর আকবর গুজরাট বিজয়ের উদ্যোগ নেন। হুমায়ুন গুজরাট জয় করলেও সেখানে স্থায়ীভাবে মুঘল-আধিপত্য স্থাপিত হয়নি। রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক কারণে আকবর গুজরাটে আধিপত্য বিস্তারে সচেষ্ট হয়েছিলেন। ব্যবসাবাণিজ্যে গুজরাট ছিল খুবই উন্নত। পারস্য, তুরস্ক ও ইউরােপের বিভিন্ন দেশের সাথে বাণিজ্যের প্রধান কেন্দ্র ছিল গুজরাটের বন্দরগুলি। তা ছাড়া বিদেশি পাের্তুগিজ ও বিদ্রোহী উজবেৰ্গণ গুজরাটে আশ্রয় নেবার ফলে আকবর ক্ষুব্ধ হয়েছিলেন। গুজরাট নিয়ন্ত্রণ করতে না-পারলে ওখান থেকেই বহিরাগত বা অভ্যন্তরীণ বিপদসৃষ্টির সম্ভাবনা ছিল। এমতাবস্থায় গুজরাটের অভ্যন্তরীণ কলহ আকবরের পরিকল্পনা রূপায়ণের সুযােগ এনে দেয়। অপদার্থ শাসক তৃতীয় মুজফ্ফর শাহকে বিতাড়িত করার জন্য গুজরাটের কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তি আকবরকে আমন্ত্রণ জানালে তিনি সসৈন্যে গুজরাট রওনা হন (১৫৭২ খ্রিঃ)। তারপর তিনি একে একে আমেদাবাদ, ব্রোচ, বরােদা, ক্যাম্বে, সুরাট প্রভৃতি স্থান দখল করে নেন। তিনি গুজরাটকে একটি মুঘল সুবায় পরিণত করেন। মির্জা আজিজ কোকা গুজরাটের শাসনকর্তা নিযুক্ত হন। গুজরাট বিজয়ের ফলে মুঘল সাম্রাজ্যের কৃষি ও বাণিজ্যে অভূতপূর্ব বিকাশ সম্ভব হয়েছিল এবং মুঘলদের সাথে ইউরােপের বাণিজ্য-সম্পর্ক সম্ভব হয়েছিল। তার রাজস্বমন্ত্রী টোডরমল এখানেই তাঁর বিখ্যাত রাজস্ব-সংক্রান্ত পরীক্ষানিরীক্ষা শুরু করে নিজেই বিখ্যাত হয়েছিলেন।
❏ গুজরাট বিজয়ের পরে আকবর বাংলা অভিযান করেন। বাংলার আফগান সুলতান সুলেমান কবনানী আকবরের বশ্যতা স্বীকার করেই শাসন চালাচ্ছিলেন। কিন্তু তাঁর পুত্র দাউদ খাঁ সিংহাসনে বসেই নিজেকে 'স্বাধীন সুলতান' বলে ঘােষণা করেন। তিনি নিজের নামে মুদ্রা চালু করেন এবং খুৎবা পাঠ করান। দাউদ খাঁ মুঘল-অধিকৃত জামানিয়া আক্রমণ করলে আকবর মুনিম খাঁ’র গুজরাট নেতৃত্বে এক অভিযান পাঠান। দাউদ খাঁ পাটনা দুর্গে আশ্রয় নেন। এবার স্বয়ং আকবর বিরাট বাহিনী নিয়ে বিহারে উপস্থিত হয়ে হাজিপুর দখল করে নেন। দাউদের পিছু নিয়ে মুনিম খাঁ বালেশ্বরের নিকটবর্তী ‘ তুকরাই ’ বা তুর্কার যুদ্ধে (১৫৭৫ খ্রিঃ) দাউদকে পরাজিত করেন।
❏ মুনিম খাঁ নববিজিত বাংলার শাসক নিযুক্ত হন। তিনি তাণ্ডা থেকে বাংলার রাজধানী গৌড়ে স্থানান্তরিত করেন। কিন্তু অল্পকালের মধ্যেই ম্যালেরিয়ার আক্রমণে তাঁর মৃত্যু হয়। ফলে মুঘলবাহিনীর মধ্যেই বিশৃঙ্খলা দেখা দেয়। সেই সুযােগে দাউদ খাঁ বাংলার কয়েকটি স্থান দখল করে নেন। অবশেষে তুরাবতী খান ও টোডরমলের যৌথ আক্রমণে রাজমহলের যুদ্ধে (১৫৭৬ খ্রিঃ) দাউদ খাঁ পরাজিত ও বন্দি হলে বাংলার স্বাধীন সুলতানির অবসান ঘটে।
❏ বাংলার মুঘল-শাসন প্রতিষ্ঠিত হলেও তা নিরুপদ্রব হয়নি। বিশেষত গ্রাম বাংলার বারাে ভূঁইয়া বারাে জন ভূম্যধিকারী মুঘলদের সাথে অসহযােগিতা চালিয়ে যান। এঁরা ইতিহাসে বারাে ভুইয়া নামে খ্যাত। এরপর আকবর উত্তর-পশ্চিম সীমান্ত অঞ্চল দখল করে মুঘল সাম্রাজ্যের নিরাপত্তাকে সুদৃঢ় করেন। ১৫৮৫ থেকে ১৫৯৬ খ্রিস্টাব্দের মধ্যবর্তী সময়ে তিনি কাবুল, কাশ্মীর, সিন্ধু ও কান্দাহার অধিকার করেন।
দক্ষিণ ভারত বিজয় : উত্তর ভারত বিজয়ের পর আকবর দক্ষিণ ভারত বিজয়ে উদ্যোগী হন। উত্তর ও দক্ষিণের সমন্বয়ে এক ঐক্যবদ্ধ ভারত গড়ে তােলাই ছিল তার স্বপ্ন। কেবল রাজ্যজয় ছাড়াও কিছু বাস্তব প্রয়ােজন আকবরকে দক্ষিণ ভারত অভিযানে বাধ্য করেছিল। কারণ তখন দক্ষিণ ভারতে আহম্মদনগর, বিজাপুর, গােলকুণ্ডা ও খাদেশ — এই চারটি রাজ্য ছিল। কিন্তু এদের মধ্যে মিল তাে ছিলই না, পরন্তু ছিল পারস্পরিক দ্বন্দ্ব। ফলে পাের্তুগিজরা খুব সহজেই দক্ষিণে আধিপত্য বিস্তার করতে থাকে। তারা ভারতীয়দের ধর্মান্তরিত করতে থাকে এবং অত্যাচারও চালাতে থাকে। এমনকি সিয়াপন্থী দক্ষিণ ভারতীয় রাজ্য গুলিও ধর্মীয় অত্যাচার চালাতে থাকে। ড. ত্রিপাঠীর মতে, “রাজনৈতিক বিশৃঙ্খলা, ধর্মীয় ও জাতিগত গোঁড়ামির শিকার এবং বিধর্মীদের অত্যাচার, যা দক্ষিণ ভারতে চলছিল, তা আকবরের পক্ষে নীরবে সহ্য করা সম্ভব ছিল না।”
❏ এই অবস্থায় আকবর প্রথমে দক্ষিণে রাজ্যগুলিকে তার বশ্যতা স্বীকারের আহ্বান জানান। কিন্তু একমাত্র খান্দেশ ছাড়া কেউই সে আহ্বানে সাড়া দেয়নি। তখন তিনি প্রথমে আহম্মদনগরের বিরুদ্ধে একটি অভিযান পাঠান। আহম্মদনগরের নাবালক সুলতানের পিতৃস্বসা চাঁদবিবি বিপুল বিক্রমে যুদ্ধ চালিয়ে যান। শেষ পর্যন্ত উভয়ের মধ্যে এক চুক্তি স্বাক্ষরিত হয় (১৫৯৬ খ্রিঃ)। আহম্মদনগর মুঘলের বশ্যতা স্বীকার করে। কিন্তু কয়েক বছরের মধ্যেই দক্ষিণের রাজ্যগুলি মিলিতভাবে মুঘল-বিরােধিতা শুরু করলে আকবর আবার আহম্মদনগর আক্রমণ করেন। এবারে বীরের মতাে যুদ্ধ করে চাঁদ সুলতানা নিহত হন। আহম্মদনগর মুঘল-অধিকৃত হয় (১৬০০ খ্রিঃ)।
❏ এদিকে খান্দেশের নতুন সুলতান মিরন সিংহাসনে বসেই আকবরের বশ্যতা অস্বীকার করেন। আকবর স্বয়ং খান্দেশ আক্রমণ করে বুরহানপুর দখল করেন। মিরন দুর্ভেদ্য অসিরগড় দুর্গে আশ্রয় নেন। দীর্ঘ ছয় মাস খন্দেশ চেষ্টা করেও আকবর দুর্গ দখলে ব্যর্থ হন। অতঃপর তিনি চাতুরির আশ্রয় নিয়ে এবং দুর্গরক্ষীদের উৎকোচে বশীভূত করে দুর্গ দখল করেন (১৬০১ খ্রিঃ)। এরপর আকবর আর কোনাে রাজ্যবিজয় করেননি।
❏ এইভাবে শক্তি ও সম্প্রীতির মিশ্রণে আকবর প্রায় সমগ্র উত্তর ও মধ্য ভারত এবং দক্ষিণ ভারতের কিছু অঞ্চলে এক সুবিস্তৃত সাম্রাজ্য গড়ে তুলেছিলেন।
আমাদের কথা: যদি কোনো প্রশ্নের উত্তর বা বানান ভুল থাকে, এই ভুল আমাদের অনিচ্ছাকৃত এর জন্য আমরা ক্ষমা প্রার্থী। সঠিকটা অবশ্যই কমেন্ট করে জানান আমরা পরবর্তী ক্ষেত্রে আপডেট করে দেব।
Please do not share any spam link in the comment box